দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে ইন্টারনেটের দাম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। আজ ১৭ মে বিশ্ব টেলিযোগাযোগ ও তথ্য সংঘ দিবস ২০২৫ উপলক্ষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে অবস্থিত বিটিআরসি ভবনের মিলনায়তনে এক আলোচনা সভায় এ কথা জানান স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া।

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় ইন্টারনেটের দাম কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানান যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চলছে জানিয়ে তিনি বলেন,  ইন্টারনেট পরিষেবা প্রদানকারী (আইএসপি) স্তরে ২০ শতাংশ দাম কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে এ ক্ষেত্রে যাঁরা স্টেকহোল্ডার আছেন, তাঁদের সহযোগিতা প্রয়োজন।

শিক্ষা খাতে ইন্টারনেট ব্যবহারে বাংলাদেশ অনেক এগিয়েছে বলেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। এর পাশাপাশি অন্যান্য খাতে, বিশেষ করে কৃষি ও স্বাস্থ্য খাতে ইন্টারনেটকে কীভাবে ব্যবহার করা যায়, সেদিকে গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলেন তিনি। ইন্টারনেটের মাধ্যমে স্থানীয় সরকার বিভাগের কাজগুলোকে আরও সহজলভ্য করার জন্য ডাক টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান এ উপদেষ্টা।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থান চলাকালে বাংলাদেশের মানুষকে ইন্টারনেট থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘ইন্টারনেট থেকে কাউকে বিচ্ছিন্ন করা মানে কারও জীবন ঝুঁকিতে ফেলা। আপনারা দেখেছেন, জুলাই অভ্যুত্থানে আন্দোলন যখন চূড়ান্ত পর্যায়ে ছিল, তখন মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করে দিয়ে, ব্ল্যাক আউট করে দিয়ে আমাদের ওপর যে নিপীড়ন চালানো হয়েছে, এ দেশের মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেটি পৃথিবী থেকে এবং আমাদের থেকেও গোপন করা হয়েছে। যখন আবার ইন্টারনেট এসেছে, তখন সে চিত্রগুলো আমরা দেখার সুযোগ পেয়েছি।’

তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশের মাধ্যমে নারীদের সুরক্ষার বিষয়ে একটি সুন্দর সাইবার স্পেস তৈরিতে কাজ করবে বলে আশাপ্রকাশ করেন আসিফ মাহমুদ।

আলোচনা সভায় প্রধান উপদেষ্টার ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিবিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব  বলেন, ‘যাঁরা ইন্টারনেটের বাইরে আছেন, তাঁদের যদি ইন্টারনেটের ভেতরে আনা যায় এবং একই সঙ্গে যাঁরা ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের বাইরে আছেন, তাঁদের যদি ডিজিটাল ডিভাইসে যুক্ত করা যায়, তাহলে এটি জীবনযাপনের মানোন্নয়নে একই সঙ্গে দারিদ্র্য বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।’ টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি–সংক্রান্ত নীতিমালায় নারী-পুরুষ সবার অংশগ্রহণকে গুরুত্ব দেওয়া হবে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপদ ষ ট দ ম কম

এছাড়াও পড়ুন:

মুসলমান বলেই রোহিঙ্গারা ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার

রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা বর্তমান সময়ে অন্যতম করুণ মানবিক সংকট বলে উল্লেখ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেছেন, শুধু মুসলমান হওয়ার কারণেই রোহিঙ্গারা এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার।

গতকাল সোমবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তুরস্কের একটি সংসদীয় প্রতিনিধিদলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় এ কথা বলেন প্রধান উপদেষ্টা। পাঁচ সদস্যের ওই প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিয়েছেন তুরস্ক-বাংলাদেশ সংসদীয় মৈত্রী গ্রুপের সভাপতি ও তুর্কি পার্লামেন্ট সদস্য মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ।

সাক্ষাতে দুই পক্ষ বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও মানবিক সহায়তার ক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা আরও জোরদার করার উপায় নিয়ে আলোচনা করে। এ সময় মেহমেত আকিফ ইয়িলমাজ বলেন, তুরস্ক ও বাংলাদেশের মধ্যে গভীর সাংস্কৃতিক ও ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দৃঢ় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর আলোকপাত করেন তিনি।

ইয়িলমাজ বলেন, তাঁদের প্রতিনিধিদল রোববার কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবির পরিদর্শন করেছে এবং তুর্কি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা, বিশেষ করে তুর্কি ফিল্ড হাসপাতালের মানবিক কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত হয়েছে। এ সময় রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের প্রতি তুরস্কের অবিচল সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা। তুর্কি উদ্যোক্তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের দুরবস্থা আমাদের সময়ের অন্যতম করুণ মানবিক সংকট। তারা শুধু মুসলমান বলেই এই ভয়াবহ পরিস্থিতির শিকার এবং তাদের নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আট বছর ধরে আশ্রয়শিবিরে থাকায় রোহিঙ্গা শিশুদের শিক্ষা ও ভবিষ্যৎ সুযোগ একেবারেই সীমিত হয়ে পড়েছে। এই অবস্থা হতাশা ও অস্থিতিশীলতার জন্ম দিতে পারে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ