জাতীয় স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই চুক্তি করতে হবে: তানিয়া রব
Published: 17th, May 2025 GMT
জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল-জেএসডির সিনিয়র সহ-সভাপতি তানিয়া রব বলেছেন, মিয়ানমারের সঙ্গে মানবিক করিডর ও চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবস্থাপনার বিষয়ে সাম্প্রতিক উদ্যোগগুলো জনমনে শঙ্কার সৃষ্টি করেছে। এসব সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে এবং জনগণের মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে অগ্রসর হওয়া উচিত।
শনিবার সকালে খুলনার উমেশচন্দ্র পাবলিক হলে জেএসডির বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। তানিয়া রব বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে সরকার যদি এসব উদ্যোগ গ্রহণ করে, তবে এর যৌক্তিকতা ও সম্ভাব্য সুফল সম্পর্কে জনগণকে স্পষ্টভাবে জানাতে হবে। কোন চুক্তিতে বাংলাদেশ কী কী সুবিধা পাবে, তা জনসমক্ষে উপস্থাপন না করলে এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য ও স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠবে।
তিনি আরও বলেন, ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে যেন আর কোনো ফ্যাসিবাদ জন্ম না নিতে পারে, সে জন্য সাংবিধানিক ও রাজনৈতিক সংস্কার জরুরি। গণতান্ত্রিক ধারায় দেশকে ফিরিয়ে আনতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অপরিহার্য। এই দুই লক্ষ্য বাস্তবায়নে জাতীয় ঐক্যের কোনো বিকল্প নেই।
সভায় সভাপতিত্ব করেন জেএসডি খুলনা মহানগরের সভাপতি লোকমান হাকিম। আরও বক্তব্য দেন জেএসডির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি মোহাম্মদ তৌহিদ হোসেন, এম এ আউয়াল, মশিউর রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা খান আবদুল লতিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুল ইসলাম, জেএসডি খুলনা জেলার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যক্ষ শেখ আবদুল খালেক, কেন্দ্রীয় সাংস্কৃতিক সম্পাদক ফারজানা দীবা, সমাজ সেবা সম্পাদক সৈয়দ বিপ্লব আজাদ, জলবায়ু সম্পাদক মীর জিল্লুর রহনান, সহ-দপ্তর সম্পাদক ফারহান হাবীব প্রমুখ।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হলেও সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না
দেশের মানুষ জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসে। কিন্তু জাতীয় সংগীত গাইতে বাধা দেওয়া হলেও অন্তর্বর্তী সরকার কোনো পদক্ষেপ নিচ্ছে না। দেশে পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী জাতীয় সংগীতসহ মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে।
জাতীয় সংগীতকে কটাক্ষ এবং বগুড়ায় উদীচীর কর্মসূচিতে হামলার প্রতিবাদে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন কর্মসূচিতে বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের বিপরীত পাশে সত্যেন সেন চত্বরে এ কর্মসূচির আয়োজন করে বাংলাদেশ উদীচী শিল্পীগোষ্ঠী।
সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচি শুরু হয়। এরপর হয় সংক্ষিপ্ত সমাবেশ। আবার সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে এ আয়োজন শেষ হয়। সমাবেশ থেকে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে বাধা সৃষ্টিকারীদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান বক্তারা।
এ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন উদীচীর সহসভাপতি মাহমুদ সেলিম। ৩০ লাখ শহীদের রক্ত এবং দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীনতা ও জাতীয় সংগীত পেয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সেই জাতীয় সংগীত যখন গাইতে দেওয়া হয় না, তখন প্রশাসন কিছু বলে না, সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয় না। তখন মনে সন্দেহ জাগে এই সরকার কি স্বাধীনতার পক্ষের?
সূচনা বক্তব্যে উদীচীর সাধারণ সম্পাদক অমিত রঞ্জন দে বলেন, পূর্ণাঙ্গ সরকার না থাকায় একটি গোষ্ঠী নানাভাবে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে ভূলুণ্ঠিত করার চেষ্টা করছে। এ দেশের নতুন প্রজন্মের মধ্যেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রবাহিত। সুতরাং কোনোভাবেই মুক্তিযুদ্ধের অর্জনগুলোকে ধূলিসাৎ করা সম্ভব নয়।
যারা এ ধরনের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে লিপ্ত, নানাভাবে বিভিন্ন জায়গায় হেনস্তা করছে এবং উদীচীসহ প্রগতিশীল সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর অনুষ্ঠানে বাধা তৈরি করছে, অবিলম্বে এই গোষ্ঠী ও তাদের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান উদীচীর সাধারণ সম্পাদক।
জাতীয় সংগীতকে প্রাণের চেয়ে বেশি ভালোবাসেন মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাধারণ সম্পাদক প্রণয় সাহা বলেন, জাতীয় সংগীত সম্পর্কে নানা রকম কটাক্ষ করা হচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পর একদল মৌলবাদী শক্তি মনে করছে, তারা যা ইচ্ছা তা–ই বলবে। কিন্তু সেটা এ দেশের মানুষ হতে দেবে না।
আরও পড়ুনবগুড়ায় উদীচীর জাতীয় সংগীত পরিবেশন মঞ্চে হামলা১৪ মে ২০২৫বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে স্বাধীনতাবিরোধী, সাম্প্রদায়িক ও মৌলবাদী শক্তি বাধার সৃষ্টি করছে বলে মন্তব্য করেন চারণ সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন। এই চিহ্নিত অপশক্তিকে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
উদীচীর কেন্দ্রীয় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য কঙ্কণ নাগের সঞ্চালনায় সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন যুব ইউনিয়নের সাবেক নেতা গোলাম রাব্বি খান। সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর শিল্পীদের পাশাপাশি কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের শিশু-কিশোরেরাও অংশ নেয়।