পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইদের মানববন্ধন
Published: 19th, May 2025 GMT
চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনে মানববন্ধন করেছেন ৪০তম ব্যাচের অব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ (ক্যাডেট) উপপরিদর্শকেরা (এসআই)।
আজ সোমবার সকাল ১০টার দিকে রাজধানীর গুলিস্তানে পুলিশ সদর দপ্তরের সামনের সড়কের এক পাশে এই মানববন্ধন কর্মসূচি শুরু হয়। মানববন্ধন শেষে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড বহন করেন। স্লোগানের মধ্যে ছিল—‘এক বছরের পরিশ্রম, বৃথা কেন জানতে চাই’, ‘দাবি মোদের একটাই, চাকরি পুনর্বহাল চাই’, ‘রাষ্ট্রের বোঝা নয়, সেবক হতে চাই’, ‘বেতন ছাড়া ৩৬৫ দিন, আমার চাকরি ফিরিয়ে দিন’, ‘লাল সবুজের বাংলায়, বৈষম্যের ঠাঁই নাই’।
মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা বলেন, প্রশিক্ষণরত অবস্থায় গত বছরের অক্টোবর থেকে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের মধ্যে ‘অযৌক্তিক’ কারণ দেখিয়ে চার ধাপে ৩২১ জনকে ক্যাডেট এসআইকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। কোনো ধরনের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ তাঁদের দেওয়া হয়নি। চাকরি ফিরে পেতে তাঁরা গত ৫ ও ৬ জানুয়ারি সচিবালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। তখন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের আশ্বাসে তাঁরা কর্মসূচি স্থগিত করছিলেন। সে সময় দাবি মেনে নেওয়ার জন্য ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু দাবি মানা হয়নি। এর পরিপ্রেক্ষিতে তাঁরা আবার আন্দোলনে নেমেছেন।
আরও পড়ুনসচিবালয়ের সামনে থেকে শিক্ষানবিশ এসআইদের সরিয়ে দিল পুলিশ১৪ জানুয়ারি ২০২৫অব্যাহতি পাওয়া রুবেল চন্দ্র দাস প্রথম আলোকে বলেন, ‘অযৌক্তিক কারণে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। ছয় মাস ধরে আমরা দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু আমাদের কথা কেউ শুনছে না। সচিবের পক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও তার বাস্তবায়ন হয়নি। আমরা অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করছি। এ জন্য পুলিশ হেডকোয়ার্টারের সামনে এসেছি, যাতে আইজিপি আমাদের বিষয়টি বিবেচনা করেন।’
অব্যাহতি পাওয়া আরেক এসআই রকিবুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘চাকরি না থাকায় পরিবার নিয়ে বিপাকে আছি। এখন আমাদের দেশের সেবা করার কথা, কিন্তু রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছি। তাই আমরা চাকরি ফিরে পেতে আইজিপি মহোদয়ের সুদৃষ্টি কামনা করছি।’
রাজশাহীর সারদা পুলিশ একাডেমিতে প্রশিক্ষণ চলাকালে শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে চার ধাপে ৪০তম ব্যাচের ৩২১ জন ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। নাশতা না খেয়ে হট্টগোল, প্রশিক্ষকের আদেশ না শোনা, অমনোযোগিতার মতো কারণ দেখানো হয়। অব্যাহতি পাওয়ার পর থেকে তাঁরা চাকরিতে পুনর্বহালের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন।
আরও পড়ুনঅব্যাহতি দেওয়া ৩২১ শিক্ষানবিশ এসআইকে নিয়োগের দাবি হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের১২ জানুয়ারি ২০২৫আরও পড়ুনঅব্যাহতি পাওয়া শিক্ষানবিশ এসআইরা আজও অনশনে১৪ জানুয়ারি ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
রবিবার হাইকোর্টের সামনে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের অবস্থান কর্মসূচি
আগামীকাল রবিবার ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ রিট বাতিলের দাবিতে হাইকোর্টের সামনে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি করবে ঢাকাস্থ সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা।
শনিবার (১৭ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেওয়া হয়।
কারিগরি ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি মো. মাসফিক ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেন, আগামীকাল রবিবার (১৮ মে) ঢাকাস্থ সকল পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীরা হাইকোর্টের সামনে ক্রাফট ইনস্ট্রাক্টরদের অবৈধ রিট বাতিলের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করবে।
এদিকে কারিগরি ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় উপদেষ্টা সাইদুর রহমান স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, কারিগরি ছাত্র আন্দোলন, বাংলাদেশ দেশের কারিগরি শিক্ষার্থীদের স্বার্থরক্ষায় একটি অরাজনৈতিক ও অগ্রণী ছাত্র সংগঠন। সংগঠনটি দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কারিগরি ছাত্র সমাজকে অবহিত করতে আজকের সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের পদোন্নতি মামলার রায় বাতিলের দাবিতে ১৮ মে সারাদেশে পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটগুলোতে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হবে। কারণ সম্প্রতি হাইকোর্ট কর্তৃক ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদে পদোন্নতি সংক্রান্ত মামলার রায় স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী শুনানির সম্ভাব্য তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ১৮ মে।
সাইদুর রহমান বলেন, “কারিগরি ছাত্র সমাজ পূর্বের রায়কে সম্পূর্ণরূপে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং আমরা কারিগরি ছাত্র সমাজ এই মামলার রায় সম্পূর্ণ বাতিল চাই। আমরা জানি, ক্রাফট ইন্সট্রাক্টরদের মূল কাজ হলো ল্যাব পরিচালনায় সহায়তা এবং প্রাকটিক্যাল ক্লাসে যন্ত্রাংশ সরবরাহ করা। শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে তারা এসএসসি অথবা এইচএসসি ভোকেশনাল পাস। এই যোগ্যতায় তারা ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষার্থীদের পাঠদানে অক্ষম এবং অযোগ্য। তাই শিক্ষক পদে তাদের পদোন্নতি অযৌক্তিক। তাদের জন্য মন্ত্রণালয় ভিন্নভাবে চিন্তাভাবনা চালাচ্ছে, যে কীভাবে তাদের সিস্টেমে প্রমোশন দেওয়া যায়। তারাও তাদের সিস্টেমে প্রমোশন পাবে এ বিষয়ে সুন্দর পদক্ষেপ নিয়েছে মন্ত্রণালয়। প্রমোশন পাওয়ার অধিকার সবার আছে তবে সেটা হতে হবে যৌক্তিক।”
“আমরা সুস্পষ্টভাবে বলছি-জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর (শিক্ষক) পদে পদোন্নতির জন্য ভিন্ন কোনো মানদণ্ডে বা বাছাই ছাড়া সুযোগ সৃষ্টি করা যাবে না। শিক্ষকদের জুনিয়র ইন্সট্রাক্টর পদটি কেবলমাত্র ডিপ্লোমা ইন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিগ্রিধারীরা (বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) এর মাধ্যমে বাছাইকৃত হয়ে নিয়োগ পায়। যারা এই পদে আসতে চায় তারা নির্দিষ্ট যোগ্যতা নিয়ে বিপিএসি এর পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে যোগ্যতার ভিত্তিতে আসুক। কোনো স্পেশালভাবে এই পদে কারো পদোন্নতি নিয়ে আসার সুযোগ নাই। আমরা চাই, ১৮ তারিখ হাইকোর্ট এ মামলাটি বাতিল করে দিয়ে কারিগরি শিক্ষার স্বচ্ছতা ও মান রক্ষায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করুক।”
ঢাকা/রায়হান/টিপু