সরাইলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দিনভর যানজট, ভোগান্তি চরমে
Published: 19th, May 2025 GMT
ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৩৪ কিলোমিটার অংশের মধ্যে ১৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থেমে থেমে দিনভর দীর্ঘ যানজট চলছে। আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল উপজেলার বেড়তলা, সরাইল বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে ইসলামাবাদ পর্যন্ত ১৫ কিলোমিটার এলাকায় গতকাল রোববার দিবাগত রাত দুইটা থেকে থেমে থেমে এ যানজট চলছে। আজ রাজ পৌনে ৯টার দিকেও দেখা গেছে এ পরিস্থিতি।
স্থানীয় বাসিন্দা, যানবাহনচালক ও হাইওয়ে পুলিশের ভাষ্য, একদিকে সরু মহাসড়ক ও অন্যদিকে বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরে বড় আকারের গর্ত ও মোড়ের অব্যস্থাপনাকে কেন্দ্র করে এ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
সড়ক ও জনপথ এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ নৌবন্দর থেকে সরাইল বিশ্বরোড মোড় হয়ে আখাউড়া স্থলবন্দর পর্যন্ত সড়ককে চলমান চার লেনে উন্নীতকরণ কাজ ধীরগতিতে চলছে ছয় বছর ধরে। মহাসড়কের এক পাশের কাজ প্রায় শেষ হয়েছে। এই সরু এক পাশ দিয়েই দীর্ঘদিন ধরে যানবাহনকে ধীরগতিতে চলতে হচ্ছে।
সোমবার সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের চারপাশে অসংখ্য ছোট-বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। দূরপাল্লার যানবাহন মহাসড়কের গোলচত্বর এলাকায় এসে চলতে হচ্ছে ১ থেকে ৫ কিলোমিটার গতিতে। এসব গর্ত অতিক্রম করতে পণ্যবাহী যানবাহনকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এটি মহাসড়কে যানজটের অন্যতম কারণ। মাঝেমধ্যে এসব গর্তে যানবাহন বিকল হয়ে পড়ছে।
স্থানীয় লোকজন জানান, রোববার দিবাগত রাত দুইটা থেকে বিশ্বরোড মোড় থেকে যানজট সৃষ্টি হয়। সকাল আটটার পর থেকে যানজট বাড়তে থাকে। সকাল ১০টার দিকে আশুগঞ্জ গোলচত্বর থেকে সরাইল উপজেলার বেড়তলা, বিশ্বরোড মোড় ও কুট্টাপাড়া মোড় হয়ে ইসলামাবাদ পর্যন্ত যানজট ছড়িয়ে পড়ে। বিকেল সাড়ে পাঁচটা পর্যন্ত থেমে থেমে এ অবস্থা চলতে দেখা গেছে। সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত সময়ে কয়েকবার কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়ক ও সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই আঞ্চলিক মহাসড়কে যানজট ছড়িয়ে পড়তে দেখা গেছে। শত শত নারী-পুরুষকে হেঁটে গন্তব্যে ছুটতে দেখা গেছে। জেলার অভ্যন্তরীণ এবং দূরপাল্লার যানবাহনের হাজারো নারী-পুরুষকে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে।
একটি প্রাইভেট কারের যাত্রী আশীতিপর এক ব্যক্তি প্রশ্ন করেন এ ভোগান্তির শেষ কোথায়? হবিগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী যাত্রীবাহী বাসের চালক মোস্তফা মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুরো রাস্তায় যে সময় লাগে তার চেয়ে বেশি সময় লাগে বিশ্বরোড মোড় পার হতে। আমরা আছি মহা সমস্যায়।’ পণ্যবাহী কাভার্ড ভ্যানচালক জুয়েল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে দুবার এ পথে আসতে হয়। আশুগঞ্জ গোলচত্বর আর সরাইল বিশ্বরোড মোড় গোলচত্বরের কথা মনে অইলে এ পথে আসতে মন চায় না।’
ঈদুল আজহার আর কয়েক সপ্তাহ বাকি। নির্বিঘ্নে ঈদযাত্রার জন্য এখনো কোনো উদ্যোগ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। এমন পরিস্থিতিতে ঈদযাত্রার মানুষকে দুর্ভোগে পড়তে হতে পারে।
সরাইল খাঁটিহাতা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: য নজট
এছাড়াও পড়ুন:
অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ
দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।
এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।
শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।
সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।
হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।
পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫