বাসচাপায় প্রাণ গেল বাবার, পা বিচ্ছিন্ন মেয়ের, বিভিন্ন স্থানে নিহত ৯
Published: 19th, May 2025 GMT
পাঁচ বছরের মেয়ে উম্মে তুরাইফাকে স্কুলে নিয়ে যাচ্ছিলেন জাহেদুল ইসলাম শান্ত (২৭)। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা জেসমিন আক্তার। পথে বাসচাপায় পিষ্ট হয়ে বাবা-মেয়ের একটি করে পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। হাতের হাড় ভেঙে যায় জেসমিনের। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়ার পর শান্তকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। সোমবার মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনা ঘটেছে রাজশাহী বাঘা উপজেলার বানিয়াপাড়ায়। শান্ত পাশের জেলা নাটোরের লালপুর উপজেলার জামতলা গ্রামের প্রবাসী এজাহার আলীর ছেলে। তিনি হার্ডওয়্যার ব্যবসায়ী ছিলেন। তাঁর মেয়ে তুরাইফা বাঘার গ্রিন হ্যাভেন স্কুলের প্লে শ্রেণিতে পড়ে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকালে মোটরসাইকেলে মেয়েকে স্কুলে রাখতে যাচ্ছিলেন শান্ত। সঙ্গে একই মোটরসাইকেলে ছিলেন তাঁর স্ত্রী জেসমিন। পথে বাঘা পৌরসভার বানিয়াপাড়া এলাকায় ঢাকাগামী সুপারসনি নামে যাত্রীবাহী বাসের সঙ্গে মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় তুরাইফা ও শান্তর ডান পা হাঁটুর ওপরের অংশ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। ছিটকে সড়কে পড়ে ডান হাতের হাড় ভেঙে আহত হন জেসমিন। তিনজনকে রামেক হাসপাতালে পাঠানো হলে শান্তকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। বাঘা থানার ওসি আ ফ ম আছাদুজ্জামান জানান, বাস জব্দ করা হয়েছে। চালক পলাতক।
ঠাকুরগাঁওয়ে ট্রাক-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে তিন অডিট কর্মকর্তা নিহত: এদিকে ঠাকুরগাঁওয়ের বীরগঞ্জ উপজেলায় ট্রাক ও মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে তিন অডিট কর্মকর্তাসহ ৪ জন নিহত ও ৩ জন আহত হয়েছেন। আহতদের অবস্থা আশঙ্কাজনক। সোমবার ভোরে ঠাকুরগাঁও-রংপুর মহাসড়কের ২৬ মাইল নামক স্থানে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– ঠাকুরগাঁও জেলা অ্যাকাউন্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স অফিসের অডিটর জুলফিকার আলী (৪৬), সহকারী অডিটর ইমরুল হোসেন (৪৫), দিনাজপুর হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপার দেলোয়ার হোসেন (৫০) ও গাড়িচালক মানিক হোসেন (৩২)। আহতরা হলেন– বালিয়াডাঙ্গি হিসাবরক্ষণ অফিসের সহকারী অডিটর মিজানুর রহমান সরকার, একই অফিসের সুপার আল মামুন ও দিনাজপুর জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের সুপার নাহিদ হোসেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঠাকুরগাঁও থেকে একটি মাইক্রোবাসে করে অডিট বিভাগের বেশ কয়েকজন রংপুরে একটি প্রশিক্ষণে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন। পথে বীরগঞ্জের ২৬ মাইল নামক স্থানে বিপরীত দিক থেকে আসা সিমেন্টভর্তি ট্রাকের সঙ্গে তাদের গাড়ির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ঘটনাস্থলেই দু’জন মারা যান। আহত হন ৫ জন। আহতদের উদ্ধার করে ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে আরও দু’জন মারা যান।
হবিগঞ্জে দুই বাসের সংঘর্ষে নিহত তিন, আহত ২০: এদিকে হবিগঞ্জের বাহুবল উপজেলায় দুই বাসের সংঘর্ষে তিনজন নিহত ও ২০ জন আহত হয়েছেন। সোমবার ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের চারগাঁও এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– বাসচালক আবুল কালাম ও যাত্রী তৌকির আহমেদ। নিহত আরেক বাসচালকের নাম জানা যায়নি। পুলিশ জানায়, বিকেলে সিলেট থেকে ছেড়ে যাওয়া কুমিল্লাগামী একটি বাস উপজেলার মিরপুর চারগাঁও এলাকায় পৌঁছলে ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা আরেক বাসের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কুমিল্লাগামী বাসচালকসহ দু’জন প্রাণ হারান। আহত ২০ যাত্রীকে হবিগঞ্জ জেলা সদর আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তাদের মধ্যে তৌকির মারা যান।
মাগুরায় শিশুসহ দু’জন নিহত: মাগুরায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় শিশুসহ দু’জন নিহত হয়েছেন। সদর উপজেলার ইছাখাদা ও কেচুয়াডুবি এলাকায় গতকাল এ দুর্ঘটনা ঘটে। মাগুরা হাইওয়ে পুলিশের এসআই মাহাবুবুর রহমান জানান, সকালে মাগুরা-ঝিনাইদহ সড়কের ইছাখাদা এলাকায় মাহিন্দ্রার সঙ্গে বাস ও ব্যাটারিচালিত ভ্যানের সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাহিন্দ্রায় থাকা আব্দুস সালাম খান (৬০) ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। দুপুরে মাগুরা-যশোর মহাসড়কের কেচুয়াডুবি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে গোল্ডেন লাইন পরিবহনের একটি বাসের চাপায় মারা গেছে মারিয়া নামে এক শিশু।
কুষ্টিয়ায় তরুণ নিহত: কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে বাস, মোটরসাইকেল ও ট্রাক্টরের সংঘর্ষে সুরুজ আলী (২২) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। দুপুরে কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী আঞ্চলিক মহাসড়কের কুমারখালী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের পাশে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
সিরাজগঞ্জে কৃষক নিহত:সিরাজগঞ্জের তাড়াশে মোটরসাইকেলের ধাক্কায় হাতেম আলী (৫৩) নামে এক কৃষক নিহত হয়েছেন। সোমবার দুপুরে উপজেলার তাড়াশ- মহিষলুটি আঞ্চলিক সড়কে এ ঘটনা ঘটে। চাঁদপুরের মতলব উপজেলার মতলব-বাবুরহাট পেন্নাই সড়কের বরদিয়া আড়ং বাজার এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশার ধাক্কায় জীবন দালাল (৬৫) নামের এক মুদি ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে।
রাজধানী ট্রাকের ধাক্কায় ব্যবসায়ী নিহত: রাজধানীর বিমানবন্দরের কাওলা মহাসড়কে গতকাল দ্রুতগামী ট্রাকের ধাক্কায় রাজন মোল্লা (৩৫) নামে এক ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ফাহিম ও মামুন নামে দু’জন। গতকাল ভোর রাতে কাওলা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত রাজনের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার কাদেরপাড়া গ্রামে। তিনি স্ত্রী ও এক মেয়েকে নিয়ে মিরপুর এলাকায় ভাড়া থাকতেন। উত্তরা ৯ নম্বর সেক্টরে তাঁর গার্মেন্ট যন্ত্রাংশের ব্যবসা ছিল। রাতে মালপত্র ডেলিভারি দিয়ে ভোরে দুই বন্ধুকে নিয়ে বাসায় ফেরার পথে দুর্ঘটনার কবলে পড়েন তিনি। পুলিশ জানায়, ঘাতক ট্রাক জব্দ করা হয়েছে। চালক পলাতক। তাঁকে ধরতে অভিযান চালানো হচ্ছে।
প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সমকাল প্রতিবেদক ও সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন সড়ক ম ত য এ দ র ঘটন অফ স র স র স ঘর ষ উপজ ল র ব যবস য় স মব র ঠ ক রগ ন ন হত এল ক য় এ ঘটন
এছাড়াও পড়ুন:
উইম্বলডনে কেন ‘ভূমিকম্প’
এবার উইম্বলডনের শুরুতেই আলোচনায় ‘ভূকম্পন’। না, খেলার সময় কোর্টের মাটি বা স্থাপনা কেঁপে ওঠেনি। তবে প্রথম ও দ্বিতীয় রাউন্ডে যে ধরনের ফল হয়েছে, তাতে টেনিস–বিশ্বে ভূকম্পনই অনুভূত হয়েছে। দ্বিতীয় রাউন্ডের মধ্যেই (একটি ম্যাচ শুক্রবার পর্যন্ত স্থগিত) বাদ পড়ে গেছেন ৩৬ বাছাই খেলোয়াড়। যা টেনিসে নতুন রেকর্ড।
এর আগে তৃতীয় রাউন্ডের আগে সর্বোচ্চ ৩৫ বাছাই বাদ পড়েছিলেন ২০২০ ফ্রেঞ্চ ওপেনে। এবারের উইম্বলডনে দ্বিতীয় রাউন্ডের ভেতরেই বিদায় নিয়েছেন গত মাসে ফ্রেঞ্চ ওপেনের চ্যাম্পিয়ন কোকো গফ ও ছেলেদের তৃতীয় বাছাই আলেক্সান্ডার জভেরভ। শুধু প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়েছেন শীর্ষ ১০ বাছাইয়ের আটজন। যা ১৯৬৮ সালে টেনিসে উন্মুক্ত যুগ শুরুর পর সবচেয়ে বেশি।
অবাক করার মতো তথ্য আছে আরও। মেয়েদের শীর্ষ ৫ বাছাইয়ের মধ্যে তৃতীয় রাউন্ডে জায়গা করতে পেরেছেন শুধু র্যাঙ্কিংয়ের ১ নম্বরে থাকা আরিয়ানা সাবালেঙ্কা, উন্মুক্ত যুগে এমনটা ঘটল মাত্র দ্বিতীয়বার। প্রশ্ন হচ্ছে, এবারের উইম্বলডনে এত বেশি ‘তারকা-পতন’ কেন?
বিবিসি এর কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছে। যেখানে উঠে এসেছে অন্তত পাঁচটি কারণ।
আরও পড়ুনজোকোভিচের সামনে ‘সেঞ্চুরির’ হাতছানি২০ ঘণ্টা আগেঅস্বাভাবিক আবহাওয়াএবারের উইম্বলডনে খেলোয়াড়দের লড়তে হচ্ছে চরম গরমের সঙ্গেও। উইম্বলডনের ইতিহাসে এবারই প্রথম উদ্বোধনী দিনে সবচেয়ে বেশি গরম রেকর্ড করা হয়েছে—সোমবার ও মঙ্গলবার তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি ছিল। খেলোয়াড়দের বরফের প্যাক, ঠান্ডা তোয়ালে ও প্রচুর পানি দেওয়া হয়েছে পরিস্থিতি সহনশীল করার জন্য। তবু কেউ কেউ শারীরিক অসুস্থতা ও ক্লান্তির কথা জানিয়েছেন। ব্রিটিশ ক্যামেরন নরি যেমন বলেছেন, আবহাওয়া ‘শরীরের জন্য একধরনের ধাক্কা ছিল’।
গরমে ভুগছেন খেলোয়াড়েরা