নিউইয়র্কে শুরু হয়েছে ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস-২০২৫
Published: 22nd, May 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে গতকাল বুধবার শুরু হয়েছে তিন দিনের ইনমা ওয়ার্ল্ড কংগ্রেস অব নিউজ মিডিয়া-২০২৫। আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল নিউজ মিডিয়া অ্যাসোসিয়েশন (ইনমা) আয়োজিত সংবাদমাধ্যমের এই বিশ্ব সম্মেলন বিশ্বের ৫০টির বেশি দেশের ৬০০-এর বেশি শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম নির্বাহীরা অংশগ্রহণ করছেন।
‘ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম কীভাবে এগোবে—বিশ্বরাজনীতি, সার্চ ইঞ্জিনের পতন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের প্রভাব, অর্থনৈতিক সংকট—এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গের জবাব খুঁজবে এই কংগ্রেস।’আর্ল জে উইলকিনসন, নির্বাহী পরিচালক, ইনমা২১ থেকে ২৩ মে পর্যন্ত চলা এই বিশ্ব সম্মেলনে মিডিয়া ইন্ডাস্ট্রির জন্য চলমান চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ নিয়ে উচ্চপর্যায়ের আলোচনা ও বিশেষজ্ঞদের পরিচালিত সেমিনার অনুষ্ঠিত হবে। এবারের ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসের থিম ‘হাউ টু টার্ন ইকোসিস্টেম কেওস ইনটু মিডিয়া অপরচ্যুনিটি’ বা ইকোসিস্টেমের বিশৃঙ্খলাকে কীভাবে গণমাধ্যমের সুযোগে রূপান্তর করা যায়।
ইনমার নির্বাহী পরিচালক আর্ল জে উইলকিনসন সম্মেলন প্রসঙ্গ বলেছেন, ‘ভবিষ্যতের সংবাদমাধ্যম কীভাবে এগোবে—বিশ্বরাজনীতি, সার্চ ইঞ্জিনের পতন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআইয়ের প্রভাব, অর্থনৈতিক সংকট—এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গের জবাব খুঁজবে এই কংগ্রেস।’
এবারের ওয়ার্ল্ড কংগ্রসের প্রধান ইভেন্টগুলোর মধ্যে শুরুতেই ছিল শিক্ষাসফর বা স্টাডি ট্যুর। এর অংশ হিসেবে গত সোম ও মঙ্গলবার নিউইয়র্কের শীর্ষ সংবাদমাধ্যম, যেমন নিউইয়র্ক টাইমস, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল, বিবিসি, গার্ডিয়ান ও রয়টার্স কার্যালয় পরিদর্শন করেন ৮৩ জন মিডিয়া প্রতিনিধি। এরপরই রয়েছে দুই দিনব্যাপী সম্মেলন। নিউইয়র্কের টাইমস সেন্টারে ২১ ও ২২ মে অনুষ্ঠিত হচ্ছে মূল সম্মেলন।
মূল সম্মেলনের শেষ দিন রাতে দেওয়া হবে বিশ্ব মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস-২০২৫। এ জন্য নিউইয়র্কের এডিসন হোটেলের বলরুমে আয়োজিত হবে গ্লোবাল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ডস ডিনার। এ বছর ৪৯টি দেশের ২৮৬টি মিডিয়া ব্র্যান্ড থেকে ৮৩৯টি অংশগ্রহণপত্র জমা পড়ে।
কাল ২৩ মে লিঙ্কন সেন্টারে অনুষ্ঠিত হবে গভীর কৌশলভিত্তিক অধিবেশন। এ ছাড়া সম্মেলনে থাকবে নেটওয়ার্কিং ইভেন্ট, আস্ক মি এনিথিং সেশন এবং গ্লোবাল মিডিয়া নেতৃবৃন্দের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময়ের সুযোগ।
বাংলাদেশসহ দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিনিধিদের জন্য এই সম্মেলন একটি গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ, যেখানে গ্লোবাল ট্রেন্ডস, উদ্ভাবনী ধারণা ও সফল রূপান্তরের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়া সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ থেকে এবারের এই বিশ্ব সম্মেলনে অংশগ্রহণ করেছেন প্রথম আলো ও ডেইলি স্টারের প্রতিনিধিরা।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন উইয়র ক
এছাড়াও পড়ুন:
অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফির বিজ্ঞাপন বন্ধে সরকারের ৪ নির্দেশনা
অনলাইন জুয়া ও পর্নোগ্রাফির বিজ্ঞাপন বন্ধে কঠোর অবস্থানে সরকার। এসব অনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধে চারটি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ অক্টোবর) ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার দেশের সাইবার স্পেসকে নিরাপদ, নৈতিক ও প্রজন্মবান্ধব রাখতে দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সাম্প্রতিক সময়ে লক্ষ্য করা যাচ্ছে, কিছু অনলাইন প্ল্যাটফর্ম, ওয়েবসাইট, মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এবং কিছু ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় জুয়া, বেটিং ও পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন ও প্রোমোশনাল কনটেন্ট প্রচার করা হচ্ছে। এই ধরনের কার্যক্রম বাংলাদেশের সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫ এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন, ২০১২-এর পরিপন্থি।
এতে বলা হয়, সাইবার সুরক্ষা অধ্যাদেশ, ২০২৫-এর ধারা ২০(১) অনুযায়ী, সাইবার স্পেসে জুয়া বা বেটিং সম্পর্কিত পোর্টাল, অ্যাপস বা কনটেন্ট তৈরি, পরিচালনা, প্রচার, বিজ্ঞাপন প্রকাশ বা উৎসাহ প্রদান করা দণ্ডনীয় অপরাধ। একইভাবে, ধারা ২৫(১) অনুযায়ী, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক কনটেন্ট প্রচার, প্রচারে সহায়তা বা প্রচারের উদ্দেশ্যে বিজ্ঞাপন প্রকাশও অধ্যাদেশ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
অনলাইন জুয়া, পর্নোগ্রাফি ও অনৈতিক বিজ্ঞাপন প্রচার প্রতিরোধে রকার ও জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ) জরুরি ৪টি নির্দেশনা দিয়েছে-
মিডিয়া ও ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম: দেশের সব পত্রিকা, অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ডিজিটাল বিজ্ঞাপন সংস্থাকে কোনোভাবেই জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত বিজ্ঞাপন প্রচার না করতে বলা হয়েছে। ডিফল্ট অ্যাডসেন্স বা কাস্টমাইজড বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে এমন কনটেন্ট দেখানো হলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
সেলিব্রিটি ও কনটেন্ট ক্রিয়েটর: দেশি মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, ইনফ্লুয়েন্সার ও কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে, তারা কোনোভাবে জুয়া, পর্নোগ্রাফি বা অনৈতিক পণ্য-সেবার প্রোমোশনাল কার্যক্রমে অংশ নেবেন না। এ ধরনের কার্যক্রমে অংশ নেওয়া সাইবার সুরক্ষা আইন অনুযায়ী অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।
দেশি ও বিদেশি ওয়েবসাইট/অ্যাপ: বাংলাদেশে পরিচালিত বা ব্যবহারকারীর জন্য অ্যাক্সেসযোগ্য কোনো দেশি বা আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইট, অ্যাপ বা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সম্পর্কিত কনটেন্ট, বিজ্ঞাপন বা লিংক প্রচার করা যাবে না। জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি এসব কনটেন্ট মনিটরিং করবে এবং প্রয়োজনে ব্লকিং, জরিমানা বা আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্ম: মোবাইল কোম্পানি, আইএসপি, গুগল অ্যাডসেন্স, মেটা অ্যাডসহ আন্তর্জাতিক বিজ্ঞাপন প্ল্যাটফর্মগুলোকে স্থানীয় আইন ও নৈতিকতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে পপ-আপ ব্লকিং ও ফিল্টারিং নীতি কঠোরভাবে অনুসরণ করতে বলা হয়েছে।
সরকার বলেছে, নৈতিক, নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল সমাজ গঠনে সরকারি সংস্থা, মিডিয়া, প্রযুক্তি কোম্পানি ও নাগরিক সমাজের সক্রিয় ভূমিকা অপরিহার্য। যে কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে জুয়া, বেটিং বা পর্নোগ্রাফি সংক্রান্ত কনটেন্ট দেখতে পান, তারা [email protected] ঠিকানায় তা রিপোর্ট করতে পারবেন।
এতে আরো বলা হয়েছে, শুধু আইনি পদক্ষেপ নয়, সরকারের এই উদ্যোগ তরুণ সমাজের নৈতিক বিকাশ, সামাজিক মূল্যবোধ ও পারিবারিক বন্ধন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। সাইবার নিরাপত্তা, নৈতিকতা এবং দায়িত্বশীল ডিজিটাল আচরণ নিশ্চিত করতে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি), বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি), জাতীয় সাইবার সুরক্ষা এজেন্সি (এনসিএসএ), জাতীয় টেলিযোগাযোগ পযবেক্ষণ কেন্দ্র (এনটিএমসি), জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা (এনএসআই) এবং বাংলাদেশ ফিনান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) যৌথভাবে কাজ করছে।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/ফিরোজ