Risingbd:
2025-05-24@10:38:31 GMT

এ সপ্তাহের রাশিফল (২৪-৩০ মে)

Published: 24th, May 2025 GMT

এ সপ্তাহের রাশিফল (২৪-৩০ মে)

সাফল্য লাভের জন্য কর্ম যথেষ্ট নয়। দরকার সঠিক কর্মকৌশল, সহনশীলতা এবং কিছু বিষয়ে সচেতনতা। আর তাতেই আপনি জীবনের প্রতিটি যুক্তিসঙ্গত চাওয়াকে পাওয়ায় রূপান্তর করতে পারবেন।

পাশ্চাত্য রাশিচক্রমতে চন্দ্র ও অন্যান্য গ্রহগত অবস্থানের ওপর ভিত্তি করে চলতি সপ্তাহের বিভিন্ন রাশির জাতক-জাতিকাদের নানা বিষয়ের শুভাশুভ পূর্বাভাস ও সতর্কতা জানাচ্ছেন বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রলজার্স সোসাইটির (বিএএস) যুগ্ম মহাসচিব জ্যোতিষশাস্ত্রী ড.

চিন্ময় চৌধুরী মিথুন।

মেষ রাশি (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে অভিজ্ঞ কারো পরামর্শ নিন। প্রণয়ঘটিত বিষয় আপনার জন্য শুভ। দূর ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। শত্রু সম্পর্কে সচেতন হোন। বিনিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে সফলতা আসবে। বৈদেশিক সূত্রে লাভবান হতে পারেন।

আরো পড়ুন:

এ সপ্তাহের রাশিফল (১৭-২৩ মে)

এ সপ্তাহের রাশিফল (১০-১৬ মে)

বৃষ রাশি (২১ এপ্রিল-২১ মে): দৃঢ় মানসিকতার জন্য সফলতা পাবেন। মুক্ত ও উদার দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে পারিবারিক শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করুন। ব্যবসা-বাণিজ্য যুক্তদের  ভালো সময়। আত্মকেন্দ্রিক ও স্বার্থবাদী লোকদের থেকে সাবধান থাকুন। শারীরিক বিষয়ে যত্নশীল হোন।

মিথুন রাশি (২২ মে-২১ জুন): গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত উত্তেজিত অবস্থায় নেওয়া ঠিক হবে না। চিন্তা-ভাবনা করে ভ্রমণের দিকে অগ্রসর হওয়া উচিত। প্রেমের ক্ষেত্রে মান অভিমান চলতে পারে। অর্থ অপচয় হওয়ার যোগ আছে।

কর্কট রাশি (২২ জুন-২৩ জুলাই): নতুন ও অভিনবত্বের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। কর্মস্থলে মানসিক চাপে থাকতে পারেন। আর্থিক বিষয় নিয়ে সমস্যা তৈরি হতে পারে। অনেকে দেশের বাইরে ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। পেশাগত কাজে যথেষ্ট ব্যস্ত হয়ে পড়বেন।

সিংহ রাশি (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট): আত্মকেন্দ্রিক লোকদের দ্বারা প্রভাবিত ও পরিচালিত  হবেন না। ব্যবসায়িক লেনদেনে সতর্ক হোন। নতুন প্রেমে জড়িয়ে পড়তে পারেন। আয়-ব্যয়ের  ভারসাম্য রাখা কঠিন হবে।

কন্যা রাশি (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর): অতিরিক্ত রাগ, জেদ পারিবারিক বিষয়ে সমস্যা বাড়াবে। ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য বেশ ভালো সময়। শারীরিক বিষয় নিয়ে সমস্যা হতে পারে। নিজের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য আর্থিক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

তুলা রাশি (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর): আকস্মিক প্রতিকূলতা আপনার সফলতাকে বিঘ্নিত করবে। আর্থিক দিক ভালো যাবে। স্বাস্থ্য সচেতন হোন। আবেগতাড়িত হয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকুন। অর্থ বিনিয়োগ করা ঠিক হবে না।

বৃশ্চিক রাশি (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর): রাগ, জেদ নিয়ন্ত্রণে রাখুন। নতুন কোনো কাজের পরিকল্পনায় সাফল্য লাভ করবেন। কর্মক্ষেত্রে নানামুখী চাপের সম্মুখীন হতে পারেন। পারিবারিক ও বিবাহিত জীবনে ভুল বোঝাবুঝি ও দূরত্ব দূর হতে পারে।

ধনু রাশি (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর): পেশায় সাফল্য পাবেন। রাগ-জেদ পারিবারিক বিষয়ে সমস্যা বাড়াবে। ব্যবসায় বিনিয়োগের জন্য বেশ ভালো সময়। শারীরিক বিষয় নিয়ে সমস্যা হতে পারে। নিজের ভুল সিদ্ধান্তের জন্য অর্থ ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা আছে।

মকর রাশি (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হোন। পেশাগত উৎকর্ষতা বাড়বে। আপনার ভাগ্য বেশ সুপ্রসন্ন। প্রেম ও রোমাঞ্চ শুভ। নেতিবাচক চিন্তাভাবনা পরিহার করুন। ব্যবসা বাণিজ্যে লোকসান হতে পারে।

কুম্ভ রাশি (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): নিঃস্বার্থ মানসিকতার জন্য প্রশংসিত হবেন। নানামুখী চাপে থাকতে পারেন। দাম্পত্য ক্ষেত্রে কিছুটা সমস্যা হতে পারে। বিদেশ সংক্রান্ত যোগাযোগ শুভ। সন্তানের কোনো বিষয় দুশ্চিন্তার কারণ হতে পারে। পুরোনো কোন সমস্যার সমাধান হতে পারে।

মীন রাশি (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): প্রিয়জনের সঙ্গে মতবিরোধ হতে পারে। অফিসে কর্তৃপক্ষের আনুকূল্য পাবেন। সহকর্মীদের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করুন। দাম্পত্য জীবনে মানিয়ে চলার চেষ্টা করুন।

ঢাকা/ফিরোজ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র শ ফল ত র জন য ব যবস সমস য

এছাড়াও পড়ুন:

বাণিজ্যিক আঙুর চাষে সফলতা

দেশে বেশ কয়েক বছর ধরে নানা ধরনের বিদেশি ফল চাষ হচ্ছে। দেশের বাজারে চাহিদা থাকার কারণে অনেকে এসব ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। অনেক তরুণ চাকরির পেছনে না ছুটে গ্রামে ফিরে বাণিজ্যিক চাষে সফলতাও পেয়েছেন। বিদেশ থেকে ফিরে অনেকে আগ্রহী হচ্ছেন এসব ফল চাষে। তাদের যাত্রাপথটা সহজ ছিল না। বড় ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে গেছেন সাহসী উদ্যোক্তারা। সাম্প্রতিক সময়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় তরুণ উদ্যোক্তাদের আঙুর চাষের সাফল্য নিয়ে লিখেছেন সমকালের জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জাহিদুর রহমান

চীন, যুক্তরাষ্ট্র, ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, তুরস্ক, চিলি, আর্জেন্টিনা, ইরান ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোতে সবচেয়ে বেশি আঙুর উৎপাদন হয়। ফলটি প্রায় সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। বাংলাদেশের বাজারেও পাওয়া যায় সবুজ ও লাল বা বেগুনি রঙের আঙুর। এ দেশের শহর থেকে গ্রামাঞ্চল প্রায় সর্বত্রই এই ফলটির চাহিদা রয়েছে। আবহাওয়া, মাটি ও বাণিজ্যিক চাষের জ্ঞানের অভাবসহ নানা কারণে ফলটি চাষে আগ্রহ খুব একটা দেখা যায়নি। সাম্প্রতিক সময়ে বিদেশি এই ফল দেশেই চাষ হচ্ছে। জনপ্রিয় এই ফলটি চাষে সফলও হয়েছেন দেশের অনেক চাষি। গত কয়েক বছরে বিভিন্ন জেলায় চাষিরা লাভজনক এই ফলের বাগান গড়ে তুলেছেন। 

কৃষি কর্মকর্তা ও চাষিরা বলছেন, বাংলাদেশের মাটিতেও আঙুর চাষ করে সফল হওয়া সম্ভব। ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, নাটোর, ময়মনসিংহ, খাগড়াছড়ি, চাঁদপুর, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, ফরিদপুর, কুমিল্লা, ঠাকুরগাঁও জেলায় বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষ হচ্ছে। একদল সাহসী তরুণ উদ্যোক্তা নিজ উদ্যোগে গড়ে তুলেছেন আঙুরের বাগান। 

দেশে আঙুর চাষে গবেষণার শুরু যেভাবে
বাংলাদেশে ১৯৯০ সালে গাজীপুরের বিএডিসির উদ্যান উন্নয়ন কেন্দ্রে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে আঙুর চাষের চেষ্টা করা হয়। তবে ব্যক্তি বা বেসরকারি উদ্যোগে খুব বেশি প্রচেষ্টার কথা আগে শোনা যায়নি। বগুড়া পল্লী উন্নয়ন একাডেমি আঙুর চাষের ওপর একটি গবেষণা প্রকল্প হাতে নেয় ১৯৯৯ সালের দিকে। এর আওতায় দেশের প্রান্ত থেকে দেশি-বিদেশি জাত সংগ্রহ করে একাডেমির ২ নম্বর নার্সারিতে ২০০০ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত ট্রায়াল দেওয়া হয়। আশাব্যঞ্জক জাতগুলো ২০০৪ সালে ১ নম্বর নার্সারিতে স্থানান্তর করা হয়। নার্সারি স্থানান্তরের পর ২০০৭ সালে ৩টি, ২০০৮ সালে ৫টি, ২০০৯ সালে ৬টি, ২০১০ সালে ৭টি, ২০১১ সালে ৮টি, ২০১২ সালে ১০টি ও ২০১৩ সালে ১১টি জাত নিয়ে উৎপাদনের চেষ্টা করা হয়। এসব জাতের মোট ৫৫টি গাছের মধ্যে ৪৪টিতে ফুল-ফল ধরে।

জেলায় জেলায় আঙুর চাষ
যশোরের চৌগাছা উপজেলার কামরুজ্জামান এমিল দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রবাসজীবনে আঙুর চাষ দেখে মুগ্ধ হন। সেখান থেকেই অনুপ্রেরণা। দেশে ফিরে এসে কৃষিকে জীবনের লক্ষ্য বানান। ভাবনায় প্রথমেই ছিল আঙুর চাষ। একা পথচলা সহজ ছিল না। পাশে এসে দাঁড়ান চুয়াডাঙ্গার অভিজ্ঞ কৃষি উদ্যোক্তা মোকারম হোসেন, যিনি দীর্ঘদিন ধরে আঙুরের জাত ও উৎপাদন পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন।
দুজনের উদ্যোগের ফসল আজ দুই বিঘা জমিতে রাশিয়ান জাতের বাইকুনুর আঙুর। লতায় লতায় থোকা থোকা মিষ্টি রসালো আঙুর। এলাকার মানুষের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দুতে এখন সেই বাগান। কাছের জেলা থেকে দূরের জেলা কৃষি উদ্যোক্তারা আসছেন দেখতে, শিখতে।

চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে আঙুর চাষ। বিদেশি বাইকুনুর জাতের আঙুর চাষে সফলতা পেয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তারা। গাছ লাগানোর এক বছর পর পরিপূর্ণভাবে ফুল ও ফল ধরতে শুরু করে। এ বছর উপজেলায় ৩৫ বিঘা জমিতে আঙুর চাষ হয়েছে। উদ্যোক্তারা আশা করছেন, এ মৌসুমে ওই জমি থেকে প্রায় ৩০০ মণ আঙুর উৎপাদন হবে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।
চুয়াডাঙ্গার জীবননগরের পেয়ারাতলা গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা রুহুল আমিন রিটন ২০১৯ সালে অল্প পরিসরে পরীক্ষামূলকভাবে আঙুর চাষ শুরু করেন। শুরুতে ফলন ভালো হতো না। আঙুর গাছের জাত পরিবর্তন করেও সফলতা পাচ্ছিলেন না এই কৃষি উদ্যোক্তা। সবশেষ বাইকুনুর জাতের আঙুর চাষ করে সফলতা পান তিনি। এর পর বেশ কয়েকজন কৃষক উপজেলার বিভিন্ন গ্রামে ছোট-বড় পরিসরে আঙুর বাগান গড়ে তোলেন বাণিজ্যিকভাবে চাষ করার জন্য।

২০২৪ সালে আঙুর বাগানে ফুল আর ফল আসে। বাগান মালিকরা আশাবাদী হয়ে ওঠেন ওই এলাকার আবহাওয়া ও মাটিতে আঙুর চাষ করে সফলতা পাওয়া যাবে। এ বছর এসব বাগানে ফুল আসে অনেক। ফুল থেকে ফলে পরিণত হয়। বাগানজুড়ে থোকায় থোকায় ঝুলছে আঙুর। এ বছর বাইকুনুর জাতের আঙুর বাগানে মার্চ মাসের শুরু থেকে গাছে ফুলে ভরে যায়। ফুল আসার ২০-২৫ দিনের মধ্য ফলে রূপ নেয়। এখন ফল পেকে গেছে, বিক্রি শুরু হয়েছে। 

আঙুর চাষি আশরাফুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর বাগানে পরিপূর্ণ ফল আসে; যা দেখে আমরা প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। প্রতিটি গাছে ১৫-২০ কেজি ফল ধরেছে। নিয়মিত পরিচর্যা করতে হচ্ছে। বাজারে আঙুরে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ৩৫ বিঘা জমি থেকে এ মৌসুমে প্রায় ৩০০ মণ আঙুর উৎপাদন হবে। যার বাজারমূল্য প্রায় ৩০ লাখ টাকা।’
লাল, কালো আর সবুজ রঙের আঙুরে ভরে উঠেছে ময়মনসিংহের একটি ছোট্ট বাগান। মাত্র ৭ শতাংশ জমিতে ১৩ জাতের বাহারি আঙুর চাষ করে নজর কেড়েছেন কলেজপড়ুয়া তরুণ সুমন মিয়া। সুমন মিয়া বলেন, ইউটিউব ও ফেসবুকে বিভিন্ন দেশের চাষ পদ্ধতি দেখে ২০২২ সালে যশোর থেকে ভারতীয় জাতের ২৭টি আঙুরের চারা এনে তিনি নিজ বাড়ির পাশে রোপণ করেন। প্রথম বছর ফলনে আশানুরূপ মিষ্টতা না থাকায় হতাশ হন সুমন। এর পর দুই বছর ধরে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে চলতি বছর নতুনভাবে বাগান সাজান। নাটোর, রাজশাহী, ফরিদপুর, জামালপুরসহ বিভিন্ন এলাকা থেকে ১৩ জাতের ৬০টি চারা সংগ্রহ করেন। ২৫টি গাছ নষ্ট হয়ে গেলেও বাকি ৩৫টি গাছে এবার ফলন ভালো হয়েছে। আঙুর বাগানে শুধু ছত্রাকনাশক ব্যবহার করতে হয়। এ ছাড়া অন্য রাসায়নিকের প্রয়োজন হয় না। এ মাসের শুরু থেকে পাকতে শুরু করেছে আঙুর। আগামী মাসের শেষে পুরো বাগানের ফল বিক্রি শেষ হবে।

ময়মনসিংহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক নাছরিন আক্তার বানু বলেন, জেলায় বাণিজ্যিকভাবে আঙুর চাষের উদাহরণ নেই। অনেকের ধারণা, এখানকার মাটিতে আঙুর টক হবে। এই ধারণা ভুল প্রমাণ করেছে সুমনের বাগান। তাঁর বাগানের আঙুর মিষ্টি। আঙুরের চারা তৈরিতেও সুমন দক্ষ হয়ে উঠছেন।
খাগড়াছড়ির দীঘিনালার হরিকুমার মহাজনপাড়া (মায়াফাপাড়া) এলাকার বাসিন্দা বিভাস ত্রিপুরা (৪৮)। শখের বশে ২০১২ সালে নিজ বসতবাড়ির পেছনে একটি আঙুর গাছ লাগিয়েছিলেন। সে আঙুর গাছে পাঁচ বছর পর থেকে ফলন আসছে। একটি গাছে প্রতি বছর ১৫ থেকে ২০ কেজি আঙুর হয়। এ বছর তাঁর গাছে বেশ আঙুর ধরেছে।

প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে বাণিজ্যিক চাষে সফল হয়েছেন চাঁদপুরের যুবক কামরুজ্জামান প্রধানিয়া। মাত্র ২০ শতক জমিতে আঙুর চাষ করেছেন তিনি। তাঁর সংগ্রহে এখন পর্যন্ত ১৮ দেশের ৮৫টি জাতের আঙুর গাছ আছে। এরই মধ্যে ফলন ভালো হওয়ায় আঙুর বাজারজাত করেছেন। প্রতিদিন জেলা-উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মানুষ এই বাগান দেখতে আসেন।
শেরপুরের প্রত্যন্ত পাহাড়ি এলাকায় প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে চাষ হয়েছে আঙুর ফল। ভারত থেকে চারা সংগ্রহ করে নিজের ১৫ শতাংশ জমিতে রোপণ করেছেন উদ্যোক্তা জলিল মিয়া। এরই মধ্যে সুমিষ্ট ফল এসেছে বাগানে। জলিল মিয়ার আশা, এবার বাগান থেকেই ফল বিক্রি করে লাভবান হবেন। তাঁর আঙুর বাগান দেখে অনেকেই এর আবাদে আগ্রহী হচ্ছেন।
এ ছাড়া ঝিনাইদহের আব্দুর রশিদ, রানা, যশোরের রুহুল আমিন, মনসুর, চুয়াডাঙ্গার মো. সজল, মোকারম হোসেন, মাজেদুল, নুর কাদির, সাদ্দাম, নাটোরের আমজাদ হোসেন, নওগাঁর আবুল কালাম আজাদ, কুড়িগ্রামের রুহুল আমিন, ফরিদপুরের শেখ ফরিদ আঙুর চাষে সফলতা পেয়েছেন। প্রযুক্তিনির্ভর প্রতিষ্ঠান সয়েল চার্জার টেকনোলজিও আঙুর নিয়ে কাজ করছে।  

চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ
উদ্যান ফসল সম্প্রসারণ এবং তরুণ উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের টিস্যু কালচার ল্যাবরেটরি কাম হর্টিকালচার সেন্টার স্থাপন ও উন্নয়ন প্রকল্প। এই প্রকল্পের পরিচালক তালহা জুবাইর মাসরুর বলেন, আমাদের পরিচিত মাটি, আলো, বৃষ্টিতেই চাষ হচ্ছে বিদেশি ফল আঙুর। বাণিজ্যিক আকারে চাষ হওয়া আঙুরের স্বাদ ও চেহারা প্রায় অবিকল সেই আমদানি করা আঙুরের মতো। আঙুর চাষে সঠিক পরিচর্যার গুরুত্ব অপরিসীম। কিছু বিষয় কঠোরভাবে মানতে হয়– নির্দিষ্ট সময়ে প্রুনিং ও ট্রেনিং, শুষ্ক মৌসুমে হালকা সেচ, বর্ষায় পানি নিষ্কাশন নিশ্চিত, রোগবালাই নিয়ন্ত্রণে স্প্রে, পুষ্টিতে ভার্মিকম্পোস্ট ও অনুখাদ্য ব্যবহার জরুরি। কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বা বেসরকারি গবেষণা সংস্থাগুলো থেকে আঙুরের নিজস্ব জাত এখনো উদ্ভাবন হয়নি। আমাদের প্রকল্পের মাধ্যমে ৯টি হর্টিকালচার সেন্টারে বিভিন্ন জাতের আঙুরের জার্মপ্লাজম সংগ্রহ করা হয়েছে। টিস্যু কালচারের মাধ্যমে সম্ভাবনাময় এসব জাতের চারা তৈরির কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। এ ছাড়া উদ্যোক্তাদের প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আঙুরের মতো লাভজনক ফসলের চাষ সম্প্রসারণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।   

তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষির ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, সঠিক জাত নির্বাচন ও উদ্যোক্তাভিত্তিক চাষ ব্যবস্থাপনার ওপর। বাইকুনুর জাতের আঙুর চাষ একটি পরীক্ষিত সাফল্য। সরকারিভাবে প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তি সহায়তা ও কারিগরি পরামর্শ দিয়ে এসব চাষ সম্প্রসারণে কাজ করা হচ্ছে। তাঁর মতে, বাইকুনুর আঙুর শুধু একটি ফলই নয়, বরং এটি বাংলাদেশের কৃষিতে এক সাহসী পদক্ষেপ। সরকারের প্রকল্প ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন কার্যক্রম আরও জোরদার হলে আগামীতে বাইকুনুরসহ অন্যান্য জাতের আঙুর হতে পারে দেশের অর্থকরী রপ্তানিযোগ্য ফলের অন্যতম প্রতিনিধি। রঙে কালচে-বেগুনি, ফলনে ভারী, স্বাদে মিষ্ট বাইকুনুর জাতটি রাশিয়ায় ব্যাপক জনপ্রিয়। প্রতিটি ফলের গড় ওজন ১০–১২ গ্রাম, একটি থোকা ৭০০-৯০০ গ্রাম পর্যন্ত হয়। আর সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এটি ৮০-৯০ দিনের মধ্যেই পরিপক্ব হয়। ফলে বর্ষাকাল শুরুর আগেই ফল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাণিজ্যিক আঙুর চাষে সফলতা