বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সব রাজনৈতিক দল এখনো সংগঠিত হয়নি, তাদের সময় দরকার। কিন্তু সেই অপেক্ষায় নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া উচিত নয়। জনগণের ক্ষমতা তাদের কাছেই ফিরিয়ে দিতে হবে।’

আজ শনিবার বিকেলে বগুড়ার সূত্রাপুর সেন্ট্রাল হাইস্কুল মাঠে যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল আয়োজিত ‘তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ’–এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে নজরুল ইসলাম খান এ কথাগুলো বলেন।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কার আলোচনা সাপেক্ষে শেষ করে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন দিতে হবে। নির্বাচন কমিশন জুনের মধ্যে প্রস্তুতির কথা বলেছে, তাহলে ডিসেম্বরে নির্বাচন সম্ভব।’ তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তী, তাদের নির্দিষ্ট দায়িত্ব রয়েছে। জনগণ স্থায়ী সরকার চায়। আওয়ামী লীগ সব সেক্টর ধ্বংস করেছে। তারেক রহমান ৩১ দফা সংস্কার প্রস্তাব দিয়েছেন, যা থেকেই পুনর্গঠনের দিশা পাওয়া যাবে।’

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘ড.

ইউনূস গুণী মানুষ হলেও নাতি–নাতনিদের উপদেষ্টা করায় কিছু ভুল হচ্ছে। এখনকার সরকারে আমরা স্বাধীনভাবে কথা বলতে পারছি, যা শেখ হাসিনার আমলে সম্ভব হয়নি। কিন্তু এখনো ন্যায়বিচারের দাবিতে কথা বললেই বাধা আসে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বেকার তরুণদের জন্য সরকার কিছু করছে না। মানবিক করিডর, চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের হাতে তুলে দেওয়া ইত্যাদি বিষয়ে প্রশ্ন করলেই রোষানলে পড়তে হয়। অথচ এই অধিকার নিয়েই আমরা লড়াই করছি।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশাসহ বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

ভারী বৃষ্টিতে শুরুতে প্রস্তুতি বিঘ্নিত হলেও দুপুরের পর কর্মীদের অংশগ্রহণে মাঠ ভরে যায়। সমাবেশ চলার সময়ে নেতা–কর্মীরা বৃষ্টির মধ্যেই মঞ্চের সামনে অবস্থান করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: নজর ল ইসল ম খ ন সরক র ব এনপ

এছাড়াও পড়ুন:

অন্তর্বর্তী সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে: জাহিদ হোসেন

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন।

শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আয়োজিত বর্তমান রাজনীতি ও জাতীয় সংসদ নির্বাচন শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, মানুষ তাদের (অন্তর্বর্তী সরকার) পেছনে আছে। কিন্তু, ওনাকে (প্রধান উপদেষ্টা) যারা বিভিন্নভাবে বিতর্কিত করার চেষ্টা করে, এখনো সময় আছে লাগাম টেনে ধরুন। রাজনীতিবিদ এবং রাজনৈতিক দলগুলোকে প্রতিপক্ষ বানানোর চেষ্টা করবেন না।

উপদেষ্টাদের উদ্দেশ্য করে ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আপনারা যা ইচ্ছে তা করছেন। মনে হচ্ছে, এটা আপনাদের পৈতৃক সম্পত্তি। বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কে যাবে আসবে আপনারা সিদ্ধান্ত নেবেন, মনে হচ্ছে জনগণের কোনো দায় নেই। যেমনটা পতিত স্বৈরাচার করতো। কিন্তু, আপনারা এসব দায় ইউনূস স্যারের ঘাড়ে চাপাচ্ছেন। ড. ইউনূসকে বিতর্কিত করার জন্য উপদেষ্টা কাউন্সিলের অনেক সদস্য জড়িত।

উপদেষ্টাদের উদ্দেশে তিনি আরো বলেন, অতীতকে আপনি ভুলে যাবেন না। প্রথমে বয়ান দেওয়ার চেষ্টা করলেন যে, ৩৬ জুলাই বা ৫ আগস্ট- এটি নাকি দ্বিতীয় জন্ম; এসব কথা বলার চেষ্টা করলেন। কিন্তু ৪৭ যদি না হতো, ৭১ পেতেন না। ৭১ না হলে ২৪ হতো কিনা বিরাট বড় প্রশ্ন। কাজেই মনে রাখতে হবে, ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে অস্বীকার করার চেষ্টা করবেন না। যার যতটুকু অবদান, সেটাকে স্বীকার করার মধ্যেই সত্যিকার অর্থে বীরত্ব আছে। আপনি যে দেশের ভালো চান, সেটি প্রমাণ করুন। আর যদি এককভাবে কিছু করেন তাহলে পতিত স্বৈরাচার সরকারের মতো অবস্থা আপনাদেরও হতে পারে।

এনসিপিকে উদ্দেশ্য করে জাহিদ হোসেন বলেন, আজকে কেন আন্দোলন হবে এই উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে। কারণ আপনারা আইন আদালতকে বিশ্বাস করেন না। আইন আদালত যখন আপনাদের পক্ষে থাকে তখন আপনারা খুশি। আর যখন বিপক্ষে যায়, তখন ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন। এটা কী! এগুলো তো শেখ হাসিনার মানসিকতা। সবসময় আন্দোলন সংগ্রামে ছাত্র-জনতা মাঠে থাকে। পরে দেশের জনগণ সিদ্ধান্ত নেয় কাদেরকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। কিন্তু, এখানে এটা উল্টো হয়েছে। আপনারা নিজেদের ট্যাগ ধরে ফেলেছেন। আপনারা সব কৃতিত্ব নিজেদের দাবি করেন। অন্য সবাইকে আপনারা অপমানিত করলেন।

তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী আমাদের গর্ব। জুলাই-আগস্ট মাসে তারা সেটি প্রমাণ করেছে। সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করতে গেলে আপনারা নিজেরাই বিতর্কিত হয়ে যাবেন। আপনাদের দাবি থাকতেই পারে। কিন্তু রাত ১২টার সময় ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়ে যমুনা ঘেরাও করেন। দাবি করারও তো একটা সিস্টেম আছে। আপনারা মনে করেন, এই সরকার আপনাদের নিজের। অবশ্যই এর জন্য সরকারের কতিপয় ব্যক্তিও দায়ী। কারণ ওনারা কেউ উপদেষ্টা হয়েছেন এবং ক্ষমতা দেখাচ্ছেন। পতিত স্বৈরাচারও ক্ষমতা দেখিয়েছিল, কিন্তু টেকেনি।

অগ্নিসেনা সোশ্যাল ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান তালুকদার জহিরুল হক তুহিনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাড. জয়নুল আবেদীন প্রমুখ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দ্রুত নির্বাচনই রাজনৈতিক সংকট সমাধানের পথ: ওয়ার্কার্স পার্টি
  • কোনো দল নয়, জনগণের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে ড. ইউনূসকে এনসিপির আহ্বান
  • নির্বাচন ও সংস্কারের ‘রোডম্যাপ’ দরকার: যমুনা থেকে বেরিয়ে জামায়াতের আমির
  • সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না: জামায়াত আমির
  • সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে জনগণের আশা পূরণ হবে না
  • ‘সংস্কারের বাইরে ড. ইউনূসকে যারা নামাতে চান, তারা দিল্লির রাজনীতি করেন’
  • জনগণ স্থায়ী সরকার চায়: নজরুল ইসলাম খান 
  • খণ্ডিত নয়, পূর্ণাঙ্গ নজরুলকে চাই 
  • অন্তর্বর্তী সরকার ড. ইউনূসের নেতৃত্বে সফল হবে: জাহিদ হোসেন