দেশকে নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে: মেজর হাফিজ
Published: 24th, May 2025 GMT
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেছেন, বাংলাদেশকে আবার নতুন করে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে যে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে তা সমাধানে প্রধান উপদেষ্টা ও উপদেষ্টা পরিষদের প্রতি অনুরোধ করেছেন তিনি।
আজ শনিবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম হলে দ্বীপ জেলা ভোলা নাগরিক ঐক্য ফোরাম আয়োজিত ‘ভোলা জেলার উন্নয়ন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব এ কথা বলেন হাফিজ উদ্দিন।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘বর্তমান সরকার তাদের আমরা সবাই সাপোর্ট (সমর্থন) করেছি। আওয়ামী লীগ ছাড়া সবাই তাদের আমরা সমর্থন দিয়েছি; কিন্তু তাদের কাছ থেকে তো আমরা গণতন্ত্র চাই। যে গণতন্ত্রের জন্য ১৭ বছর জনগণ ভোট দিতে পারে নাই। সে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কত মানুষ জীবন দিল।’ তিনি আরও বলেন, ‘কিন্তু টেলিভিশন খুললে উপদেষ্টাদের বক্তব্য শুনি। নির্বাচনের কোনো কথাবার্তা নাই। দুনিয়ার কথা বলে, নির্বাচন সম্বন্ধে কোন কথা বলে না। দু–একজন বলে নির্বাচন দিলে তো বিএনপি ক্ষমতায় আসবে। ভাই এটা কি আমাদের অপরাধ। জনগণ যদি বিএনপিকে ভোট দেয় তো আমাদের দোষটা কি। তারা তো সবাইকে দেখেছে, সবাইকে চিনেছে।’
হাফিজ উদ্দিন আরও বলেন, সরকারের ৯ মাস চলে গেলেও একটা অভিযোগপত্র দেয়নি। তারা খালি মুখে মুখেই বিচার করে, মুখে মুখেই সংস্কার করে। আওয়ামী লীগ দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দেশটিকে ফোকলা করে দিয়ে বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে। সেই বিষয়ে কোনো কথা নেই। তিনি বলেন, যে মুহূর্তে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রয়োজন, সেই মুহূর্তে ক্রমেই গণতন্ত্রকে আস্তে আস্তে যেন দূরে ঠেলে দেওয়া হয়েছে।
বর্তমানে যারা উপদেষ্টা পরিষদে আছেন, তাঁরা দেশের সাধারণ মানুষের জন্য কি করেছেন এমন প্রশ্ন করে বিএনপির এই নেতা বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোকে নানা ধরনের অপবাদ দেওয়া হচ্ছে। এরা অতীতে সব সংগ্রামে জনগণের পাশে থেকে স্বৈরশক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। ফ্যাসিস্ট আওয়ামী সরকারকেও বিদায় করেছে সাধারণ মানুষ।
দ্বীপজেলা ভোলা নাগরিক ঐক্য ফোরামের সদস্যসচিব মো.
আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য সাবেক সংসদ সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য হায়দার আলী, দ্বীপজেলা ভোলা নাগরিক ঐক্য ফোরামের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল মালেক প্রমুখ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র উপদ ষ ট সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ আবারও রাস্তায় নামবে: জামায়াত নেতা রফিকুল
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি এখন দেশের ১৮ কোটি মানুষের দাবি বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ‘এই সনদ নির্বাহী আদেশের মাধ্যমে জারি করা হোক এবং প্রয়োজনে গণভোটের আয়োজন করা হোক। তবে এই গণভোট অবশ্যই জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগেই হতে হবে, নির্বাচনের পরে নয়।’
আজ বুধবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জুলাই সনদের বাস্তবায়ন প্রক্রিয়া নিয়ে তৃতীয় ধাপে তৃতীয় দিনের আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রফিকুল ইসলাম খান। এ সময় উপস্থিত ছিলে জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ।
জুলাই সনদের বাস্তবায়নে দেরি হলে জনগণ স্বাভাবিকভাবেই আবারও রাস্তায় নেমে আসবে বলে মন্তব্য করেন রফিকুল ইসলাম খান। তিনি বলেন, ১৯৯০ সালের গণ-অভ্যুত্থানের পর সে সময়কার দলগুলোর ঐকমত্য থাকা সত্ত্বেও ক্ষমতায় থাকা দলগুলো সেটি (তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা) যথাসময়ে বাস্তবায়ন করেনি। পরে আন্দোলনের মাধ্যমেই তা সংবিধানে যুক্ত হয়।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিল হয়েছিল বিচারপতি খায়রুল হকের রায়ের মাধ্যমে। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার করে এ রায় দেওয়ানো হয়েছিল। তাই বিচার বিভাগকে আবার বিতর্কের মুখে না ফেলে সংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পক্ষে জামায়াত।
জামায়াতের আরেক সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, ঐকমত্য কমিশন একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে চারটি বিকল্প নিয়ে কাজ করেছে, যার মধ্যে কমিশন সংবিধানিক আদেশের প্রস্তাবটি সমর্থন করেছে। এই আদেশের মাধ্যমে জুলাই সনদের ২২টি আর্টিকেল বাস্তবায়িত হতে পারে। এটি আইনিভাবে সবচেয়ে শক্তিশালী ভিত্তি।
এক প্রশ্নের জবাবে হামিদুর রহমান বলেন, সংবিধানের মৌলিক কাঠামো পরিবর্তন করার এখতিয়ার সংসদের নেই, এবং এ ধরনের পরিবর্তন করতে হলে অবশ্যই গণভোটের প্রয়োজন হয়।
জামায়াতে ইসলামী জনগণের অভিপ্রায়কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে জামায়াতের এ সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, জনগণের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষাই হচ্ছে দেশের সর্বোচ্চ আইন।
জুলাই সনদের যে আদর্শ ও চেতনা, তা বাস্তবায়ন হওয়া উচিত এবং যারা এই আদর্শের পথে হাঁটবে না, জনগণ তাদের ব্যাপারে সঠিক সিদ্ধান্ত নেবে বলে মনে করেন হামিদুর রহমান আযাদ। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ এটি প্রমাণ করে যে এ দেশের তরুণসমাজ ও জনগণ নতুন রাজনৈতিক ব্যবস্থা চায় এবং জুলাই বিপ্লবের যোদ্ধাদের পক্ষেই রয়েছে।