জয়পুরহাটের আক্কেলপুর উপজেলায় সরকারি বিনামূল্যের পাঠ্যবই কেজি দরে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে। রোববার বই বোঝাই একটি ভ্যান স্থানীয় জনতা আটকে দিলে বিষয়টি ফাঁস হয়। উপজেলার শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার নিয়ম বহির্ভূতভাবে বইগুলো বিক্রির কথা স্বীকারও করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রধান শিক্ষক বিদ্যালয়ের পুরনো বই শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ফেরত নিয়ে কেজিপ্রতি ২০ টাকা দরে বিক্রি করেছেন। প্রায় চার মণ বই ব্যবসায়ী জালাল হোসেনের কাছে বিক্রি করা হয়। সেগুলো ভ্যানে সরিয়ে নেওয়ার সময় বিষয়টি লোকজনের নজরে এলে তারা সেগুলো আটকে দেন।
স্থানীয় যুবক নূরনবী হোসেন বলেন, ‘আমাদের সামনে দিয়ে সরকারি বইবোঝাই ভ্যান যাওয়া দেখে সন্দেহ হয়। তখন আমরা সেটি আটকে দিয়ে ক্রেতাকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি শ্রীকৃষ্টপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বই কিনে নিয়ে যাচ্ছেন বলে স্বীকার করেন। আপাতত বইগুলো আমাদের জিম্মায় রেখেছি।’
বই বিক্রির কথা স্বীকার করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শওকত আনোয়ার বলেন, ‘বইগুলো অনেকদিন ধরে জমা হয়ে থাকায় বিক্রি করেছি। আমার এভাবে বিক্রি করা ঠিক হয়নি। আগেও এভাবে বিক্রি করলেও কোনো সমস্যা হয়নি। বিগত বছরে যেগুলো বিক্রি করেছি, সে টাকা দিয়ে বাগান করেছিলাম।’
এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে বই ফেরত নেওয়া বা বিক্রির কোনো বিধান নেই। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক কাউকে না জানিয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিক্রি করেছেন। বিষয়টি তদন্ত করে তাঁর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পের বিমা দাবি নিষ্পত্তির অনুরোধ বিটিএমএর
গত বছরের জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের সময় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার বিমা দাবি নিষ্পত্তি করে ক্ষতিপূরণ দিতে সরকারের প্রতি দাবি জানিয়েছে বস্ত্রকলের মালিকদের সংগঠন বিটিএমএ। তাদের অভিযোগ, বিমা কোম্পানিগুলো নানা ধরনের পদ্ধতিগত জটিলতা ও পলিসির শর্তের অপব্যাখ্যা করে বিমা দাবি পরিশোধে বিলম্ব করছে। অনেক ক্ষেত্রে দাঙ্গা, হাঙ্গামা ও রাজনৈতিক অস্থিরতা–সংক্রান্ত ক্ষতির অজুহাতে বিমা দাবি সরাসরি প্রত্যাখ্যানের ইঙ্গিত দেওয়া হচ্ছে, যা বিমাশিল্পের মূলনীতির পরিপন্থী।
আজ বুধবার অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদকে দেওয়া এক চিঠিতে বিমা দাবি পরিশোধের অনুরোধ জানান বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, ‘গত বছরের জুলাই-আগস্টে দেশব্যাপী সৃষ্ট অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতিতে আমাদের অনেক সদস্যের কারখানা, গুদাম ও অন্যান্য স্থাপনা ব্যাপক ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের শিকার হয়েছে। আকস্মিক এই সহিংসতায় শিল্পপ্রতিষ্ঠানগুলোর উৎপাদনব্যবস্থা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হয়েছে।’
বিটিএমএ সভাপতি বলেন, সব ধরনের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি মোকাবিলায় প্রায় প্রতিটি ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানই যথাযথ প্রিমিয়াম পরিশোধের মাধ্যমে বিমা কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অগ্নিসহ বিভিন্ন ঝুঁকির বিপরীতে বিমা পলিসি নিয়েছে। দুর্ভাগ্যবশত, ঘটনার পর বছর পেরিয়ে গেলেও অধিকাংশ বিমা দাবি নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি নেই।
চিঠিতে বিটিএমএ সভাপতি জানান, গত ৩ মার্চ সাধারণ বীমা করপোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার উত্থাপিত বিমা দাবি নিয়ে সভা হয়। এতে বিমা দাবি নিয়ে বিভিন্ন বিমাপ্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা বিভিন্নভাবে ক্ষতির বিবরণ ও ব্যাখ্যা দেন। সভায় সিদ্ধান্ত হয়, ঘটনাগুলো গণ-অভ্যুত্থানের সময়ে হওয়ায় তা স্ট্যান্ডার্ড ফায়ার পলিসি (এসএফপি) বা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অল রিস্ক (আইএআর) পলিসির আওতায় কোনো বিমা দাবি পরিশোধযোগ্য হবে না। এমন পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পকারখানার মালিকেরা চরম হতাশায় ভুগছেন।
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) থেকে সব নন-লাইফ বিমা কোম্পানিকে সুস্পষ্ট প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে গত বছরের জুলাই-আগস্টের ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত শিল্পপ্রতিষ্ঠানের বিমা দাবি সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে নিষ্পত্তির জন্য নির্দেশনা দেওয়ার অনুরোধ করেছেন বিটিএমএর সভাপতি শওকত আজিজ। তিনি বলেন, বিমা আইন অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে দাবি নিষ্পত্তির বিধানটির কার্যকর প্রয়োগ নিশ্চিত করা দরকার।