দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কমিশনার (তদন্ত) মিঞা মুহাম্মদ আলি আকবার আজিজী বলেছেন, ‘জনগণের দেওয়া ট্যাক্সের টাকায় সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন হয়। যাদের টাকায় আমাদের বেতন হয়, আমরা আবার তাদের প্রভু সেজে যাই। সরকারি কর্মচারীরা আল্লাহর দেওয়া যোগ্যতার সম্পূর্ণ ব্যবহার করে ঈমানদারির সঙ্গে নাগরিকদের সেবা দিতে দায়বদ্ধ। যে সৃষ্টিকর্তাকে ভয় করে, সে অন্যায় করতে পারে না।’

তিনি বলেন, ‘আমরা নিজ নিজ অবস্থানে প্রত্যেকেই বিচারক। যদি আমরা আমাদের পরিবারে নিজের আয়ের চেয়ে বেশি উপহার বা তৈজষপত্র দেই তবে সন্তানদের সামনে কীভাবে জবাবদিহি করবো। আমরা নিজে সৎ থাকবো এবং পরিবারের সদস্যদেরকে সৎ পথে রাখবো।’

তিনি রোববার সকালে খুলনা জেলা শিল্পকলা একাডেমি মিলনায়তনে দুদকের আয়োজনে খুলনা সদরে অবস্থিত সরকারি দপ্তরগুলোর সেবাবঞ্চিত ও হয়রানির শিকার নাগরিকদের অভিযোগ বিষয়ে গণশুনানি অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।

প্রধান অতিথি তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘তোমরা হতাশ হবে না। পরিবারকে যেমন সেবা করতে হবে, তেমনি লব্ধজ্ঞান প্রজাতন্ত্রের কাজে ব্যবহার করতে হবে।’ সরকারি কর্মচারীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই দুর্নীতি বন্ধে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, একই সঙ্গে মানসম্মত সেবা প্রদানের নিশ্চয়তাও দিতে হবে।’

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন দুদক কমিশনার (অনুসন্ধান) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.

) হাফিজ আহসান ফরিদ। খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত জানান দুদকের খুলনা সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ।

বিভাগীয় কমিশনার মো. ফিরোজ সরকার, দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন, পুলিশের খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মো. রেজাউল হক, খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার ও পুলিশ সুপার টি এম মোশাররফ হোসেন বক্তৃতা করেন।

গণশুনানিতে খুলনা সদরে অবস্থিত সকল সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, ব্যাংক ও অর্থিক প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী, বিশিষ্ট নাগরিক ও অভিযোগ উত্থাপনকারী ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।

‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে তারুণ্যের একতা, গড়বো আগামীর শুদ্ধতা’ এই শ্লোগান নিয়ে সেবা বঞ্চিত ও হয়রানির শিকার নাগরিকদের অভিযোগ সরাসরি শুনতে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে দুদক। বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে সেবা পেতে ঘুষ, দুর্নীতি, হয়রানির শিকার ব্যক্তিরা অনুষ্ঠানে তাদের অভিযোগ তুলে ধরেন। উত্থাপিত অভিযোগের বিষয়ে দুদক কর্তৃক তাৎক্ষণিক তদন্ত করার নির্দেশ বা উপযুক্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করা হয়।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: অন ষ ঠ ন সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

‘ফিরিয়ে দাও’ থেকে ‘ধূসর সময়’: সিডনিতে একই মঞ্চে মাইলস ও আর্টসেল

সিডনির বসন্তের সন্ধ্যা। লিভারপুলের হুইটল্যাম লেজার সেন্টারের বাইরে তখন লম্বা লাইন—হাতে পতাকা, কাঁধে ব্যাগ, চোখে প্রত্যাশা। সাউন্ডচেকের শব্দ ভেসে আসছে বাইরে। ভেতরে যেন উন্মুখ এক ‘সাগর’, যেখানে মিশে আছে দুই প্রজন্মের মুখ, কণ্ঠ আর স্মৃতি। শনিবার রাতটি হয়ে উঠেছিল প্রবাসী বাঙালিদের জন্য এক ব্যতিক্রমী উৎসব—বাংলাদেশের ব্যান্ড সংগীতের দুই যুগের দুই প্রতীক, মাইলস ও আর্টসেল; প্রথমবারের মতো একই মঞ্চে গান করল সিডনিতে।
‘গ্রিনফিল্ড এন্টারটেইনমেন্ট’ আয়োজিত এই ‘মিউজিক ফেস্ট’ ঘিরে প্রবাসী বাংলাদেশিদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস তৈরি হয়েছিল, তা যেন উপচে পড়ল সেই রাতে। টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার পরপরই সব শেষ। অনুষ্ঠান শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে থেকেই সিডনির দক্ষিণ-পশ্চিম উপশহর লিভারপুলের রাস্তাগুলো ভরে গেল গানের ভক্তে।

আয়োজনের আগে ভিডিও বার্তায় মাইলস জানায় তাদের উচ্ছ্বাস। ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য হামিন আহমেদ বলেন, ‘সিডনি বরাবরই আমাদের কাছে বিশেষ কিছু। সম্ভবত ১৯৯৬ সালে আমরাই প্রথম বাংলাদেশি ব্যান্ড হিসেবে অস্ট্রেলিয়ায় পারফর্ম করি। এরপর এ নিয়ে অন্তত পঞ্চমবারের মতো সিডনিতে এলাম। এখানকার দর্শকদের ভালোবাসা সব সময়ই অবিশ্বাস্য।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানতাম এটি স্মরণীয় একটি আয়োজন হতে যাচ্ছে। আমরা চেয়েছি সবাই একসঙ্গে গাইবে, চিৎকার করবে—ভক্তরা সেটাই করেছেন।’ গিটারিস্ট তুজো যোগ করেন, ‘অস্ট্রেলিয়ার পাঁচটি শহরে ট্যুর করছি, কিন্তু সিডনির আবহ একেবারেই আলাদা। দর্শকেরা আমাদের রাতটিকে স্মরণীয় করে দিয়েছেন।’

মঞ্চে আর্টসেল

সম্পর্কিত নিবন্ধ