বাংলাদেশ-সিঙ্গাপুর এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বের ম্যাচ ঘিরে দর্শকদের উত্তেজনা তুঙ্গে। চার বছর পর নতুনভাবে সেজে ওঠা জাতীয় স্টেডিয়ামে বহুল আলোচিত আন্তর্জাতিক ম্যাচ, সঙ্গে হামজা চৌধুরী ও শমিত সোমের সঙ্গে ফাহামিদুলের মতো তারকাদের খেলা দেখার সুযোগ।
স্বাভাবিকভাবেই ১০ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠেয় এই ম্যাচের টিকিট নিয়ে আগ্রহ আকাশচুম্বী। ফুটবলপ্রেমীদের মুখে এটকটাই প্রশ্ন—টিকিটি কীভাবে পাওয়া যাবে?
বাফুফে আগে থেকেই ঘোষণা দিয়েছে, tickify.
টিকিট কিনতে না পেরে হতাশ হয়ে পড়েন অনেক দর্শক। হামজাদের ঘরের মাঠে অভিষেক ম্যাচ নিয়ে উন্মাদনা তৈরিতে বাফুফে সফল হলেও অনলাইন টিকিট বিক্রিতে গিয়ে সবকিছু যেন তালগোল পাকিয়ে ফেলেছে।
পরিস্থিতি বুঝে শনিবার রাতেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাফুফে জানিয়েছে, টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটটি ‘সাইবার হামলার’ শিকার হয়েছে। সাময়িক অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, শিগগিরই এ বিষয়ে সর্বশেষ অবস্থা জানানো হবে। কিন্তু এরপর প্রায় ২৪ ঘণ্টা পার হলেও আজ রাত ১০টায় এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি।
অবশ্য রাতে বাফুফের কম্পিটিশন কমিটির সদস্য তাজওয়ার আউয়াল জানিয়েছেন, টিকিট বিক্রির ওয়েবসাইটে নাকি ততক্ষণে দ্বিতীয়বারের মতো সাইবার হামলা হয়েছে। শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত না করে টিকিট বিক্রি শুরু করা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
আজ সন্ধ্যায় বাফুফে ভবনে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, প্রথম ১০ মিনিটেই ১ লাখের বেশি ব্যবহারকারী লগইন করেছেন। অথচ টিকিট ছিল মাত্র ১৮ হাজার ৩০০টি। দুই জায়গা থেকে যখন অক্রমণ হয়, তখন সমস্যা তো হবেই। সমস্যার সমাধান পুরোপুরি করেই আবার টিকটি বিক্রিতে যাওয়া উচিত বলে মনে করেন তিনি।
অনলাইন টিকিট বিক্রির বিশৃঙ্খলা নিয়ে জানতে চাইলে বাফুফের সহ–সভাপতি ফাহাদ করিম কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। তিনি বাফুফের কম্পিটিশন কমিটির চেয়ারম্যান গোলাম গাউসের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
যোগাযোগ করা হলে গাউস প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল সারা রাত আমরা কাজ করেছি। tickify কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, কিছুক্ষণের মধ্যেই আবার টিকিট বিক্রি শুরু হবে।’
তবে ঠিক কত সময় পর তা শুরু হবে, এই প্রশ্নে তিনি নির্দিষ্ট কিছু বলতে পারেননি। তবে জানিয়েছেন, আজ রাতেই নতুন করে টিকিট বিক্রি শুরু হয়ে যাওয়ার কথা। বাফুফের ফেসবুক পেজের মাধ্যমে সময়টা জানিয়ে দেওয়া হবে।
অনেকে এরই মধ্যে টাকা পরিশোধ করেও ই-মেইলে টিকিট পাননি। তাঁরা ম্যাচের দিন মাঠে গিয়ে বিপাকে পড়বেন কি না, এই প্রশ্ন আসছেই। বাফুফে জানিয়েছে, যাঁরা ঠিকভাবে টাকা দিয়েছেন, তাঁরা টিকিট পাবেন। সব ভুলভ্রান্তি সংশোধন করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তাজওয়ার।
টিকিটি বিক্রির সংখ্যা নিয়েও আছে বিভ্রান্তি। একটি সাইবার নিরাপত্তা সংস্থার দাবি, tickify-এর সার্ভার কেউ হ্যাক করে টিকিট কালোবাজারে বিক্রি করছে। তাদের ভাষ্য, tickify প্ল্যাটফর্মে একসঙ্গে চার লাখ ব্যবহারকারী প্রবেশ করতে পারে। কিন্তু শনিবার সর্বোচ্চ ৯,৭৮১ জন ব্যবহারকারী লগইন করেন। অথচ ততক্ষণে নাকি বিক্রি হয়ে গেছে ১৭ হাজারের বেশি টিকিট!
কিন্তু বাফুফের কর্মকর্তা গোলাম গাউসের দাবি, ‘গ্যালারি ও ক্লাব হাউস মিলিয়ে ১৮ হাজার ৩০০টি টিকিট ছাড়া হয়, ভিআইপিসহ সেটা দাঁড়ায় ২০ হাজারের ওপরে। শনিবার অনলাইনে ৭ হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছে।’ তবে কম্পিটিশন কমিটির সদস্য তাজওয়ার আউয়ালের দাবি ভিন্ন, ‘এখন পর্যন্ত মাত্র ৩,৫০০ টিকিট বিক্রি হয়েছে।’
কোন তথ্যটা ঠিক, তার সঠিক ব্যাখা পাওয়া যাচ্ছে না। বাফুফে এর আগে কখনো ম্যাচের সব টিকিট অনলাইনে বিক্রি করেনি। এটা তাই তাদের জন্য নতুন অভিজ্ঞতা।
অনেকে মনে করেন, ৪ জুন জাতীয় স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ-ভুটান প্রীতি ম্যাচের টিকিট আগে অনলাইনে ছেড়ে পরীক্ষামূলকভাবে দেখে নিতে পারত বাফুফে। সেটা না করে ১০ তারিখের ম্যাচের টিকিট আগে বিক্রি করছে বাফুফে। আর সেটি নিয়েই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি। যে প্রতিষ্ঠানকে টিকিটের দায়িত্ব দিয়েছে বাফুফে, তাদের সক্ষমতা যাচাইয়েরও দরকার ছিল বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এদের কোনো দিন শিক্ষা হবে না
আগের পর্বআরও পড়ুন‘বাংলাদেশের কি সুপারফোরে ওঠার চান্স আছে?’১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫