ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধের কারণে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের কয়েকটি ইউনিয়নের মানুষের জীবন ও জীবিকা যেভাবে হুমকির মুখে পড়েছে, তাতে আমরা শঙ্কিত না হয়ে পারি না। বাঁশবাড়িয়া সৈকত কুমিরা ফেরিঘাট পর্যন্ত চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য হলেও ব্লক বসানো হয়েছে তিন কিলোমিটারে। বাকি এক কিলোমিটার পুরোটাই অরক্ষিত। কেননা, এলাকাটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জাহাজভাঙা কারখানার মালিকদের। 

জোয়ারের আঘাতে সেই বেড়িবাঁধের ১৬টি স্থান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধু তা–ই নয়, বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাট এলাকায় সিকদার খালের স্লুইসগেটও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে বর্ষা মৌসুম নিয়ে সেখানকার বাসিন্দারা যে যারপরনাই উদ্বিগ্ন, তাতে কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই। 

প্রথম আলোর স্থানীয় প্রতিনিধি সরেজমিনে দেখতে পেয়েছেন, বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের আকিলপুর সৈকতের দক্ষিণাংশে আধা কিলোমিটারের মধ্যে তিনটি স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। বোয়ালিয়া কুল এলাকায়ও বেড়িবাঁধের কিছু অংশ জোয়ারের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সৈকতের জমাদারপাড়া এলাকায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ব্লক বেড়িবাঁধ। জমাদারপাড়া এলাকায় দুটি অংশে তিন মিটার প্রস্থের বেড়িবাঁধের উপরিতল এক মিটারের কম হয়ে গেছে।

বেড়িবাঁধ নিয়ে সীতাকুণ্ডবাসীর দুর্ভোগ অনেক দিনের। আগের বেড়িবাঁধটি বিলীন হয়ে যাওয়ায় ২০ বছর তাদের চরম দুর্ভোগের মধ্যে কাটাতে হয়েছিল। নতুন বেড়িবাঁধটি মাত্র পাঁচ বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্পটি যে পরিকল্পনাহীনতা এবং দুর্নীতিপুষ্ট, সেটা পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বক্তব্য থেকেই স্পষ্ট। সংস্থাটির কর্মকর্তারা বলছেন, বেড়িবাঁধে যে ব্লক বসানো হয়েছে, তা আকারে তুলনামূলক ছোট। এগুলো সাধারণত ঢেউ নেই, এমন নদী এলাকায় ব্যবহার করা হয়। এ ধরনের ব্লক বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উপযোগী নয়।

প্রশ্ন হলো, তৎকালীন পাউবো কর্তারা জেনেবুঝে কীভাবে এমন সর্বনাশা প্রকল্পটি অনুমোদন করেছিলেন? যাঁরা এর সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাঁদের অবশ্যই জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।

বেড়িবাঁধ নিয়ে সীতাকুণ্ডের সমস্যাটিকে স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি দুই ভাগে ভাগ করে দেখা প্রয়োজন। আসন্ন বর্ষা মৌসুমে বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার যে শঙ্কা দেখা দিয়েছে, সেটার সমাধান করতে হবে। দীর্ঘমেয়াদি সমাধানের জন্য পাউবো নতুন করে যে প্রকল্প প্রস্তাব দিয়েছে, সেটা যথাযথ প্রক্রিয়ায় যাচাই-বাছাই করেই অনুমোদন দিতে হবে। অবৈজ্ঞানিক প্রকল্প, অর্থ অপচয় আর দুর্নীতির দুষ্টচক্র থেকে যেকোনো মূল্যে বেরিয়ে আসতে হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প ব লক ব এল ক য

এছাড়াও পড়ুন:

তথ্য উপদেষ্টার সঙ্গে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের সাক্ষাৎ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলমের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরামের (বিএসআরএফ) কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ।

রবিবার (২ নভেম্বর) বিকেলে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ সাক্ষাৎ অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘সাংস্কৃতিক জাগরণেই মুক্তি’

‘নো ওয়েজ বোর্ড, নো মিডিয়া’সহ ৩৮ দাবি সংবাদকর্মীদের 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সভাপতি মাসউদুল হক জানান, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সচিবালয় বিটে কর্মরত অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২০২৪ সালের ২২ ডিসেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগে পত্র পাঠানো হলেও এখনো তা বাস্তবায়িত হয়নি। 

তিনি অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের জন্য সচিবালয়ের ক্লিনিকে স্বাস্থ্যসেবা চালুর বিষয়ে তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার সহযোগিতা কামনা করেন। এছাড়া সচিবালয়ের ১ নম্বর গেটের পাশাপাশি ৫ নম্বর গেট দিয়েও অ্যাক্রিডিটেশন কার্ডধারী সাংবাদিকদের সচিবালয়ে প্রবেশের  ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তিনি উপদেষ্টাকে অনুরোধ জানান। 

এ সময় তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা বিএসআরএফের সভাপতির প্রস্তাব আন্তরিকভাবে বিবেচনা করার আশ্বাস দেন। 

সাক্ষাৎকালে বিএসআরএফের সহ-সভাপতি মাইনুল হোসেন পিন্নু, সাধারণ সম্পাদক উবায়দুল্লাহ বাদলসহ কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা/এএএম/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ