চটকদার বিজ্ঞাপন দিয়ে এখনও অনলাইনে ‘চাঁদপুরের ইলিশ’ নামে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণা থেমে নেই। জাটকা ইলিশ রক্ষায় ইলিশ ধরা নিষিদ্ধের সময় এই সংঘবদ্ধ চক্রের কাছে কম দামে ‘চাঁদপুরের ইলিশ’ কিনতে গিয়ে প্রতারিত হয়েছেন  অসংখ্য ক্রেতা। প্রতাকদের কাছে বিকাশ বা অন্য কোনো উপায়ে টাকা পরিশোধ করে শেষ পর্যন্ত ইলিশ মেলেনি। পরবর্তীতে এমন সংবাদ সমকালসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে প্রচার হওয়ায় সক্রিয় হয় পুলিশের গোয়েন্দা সংস্থা। সম্প্রতি ঢাকায় ডিবির জালে ধরা পড়ে ৫ প্রতারক সদস্য। এরপর প্রতারকদের তৎপরতা কয়েকদিন থামলেও জুন তথা ইলিশের মওসুমের শুরুর মাসে আবার সক্রিয় হয়ে ওঠে প্রতারক চক্র। জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কাছে এমন সব অভিযোগ আবারও আসতে শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন এবং জেলা পুলিশ সুপার মুহম্মদ আব্দুর রকিব প্রতারণা ঠেকাতে নতুন করে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন।

জেলা প্রশাসন বলছে, চাঁদপুরে এখন থেকে অনলাইনে স্থানীয় ইলিশ বিক্রি করতে নিতে হবে জেলা প্রশাসনের নিবন্ধন। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি ‘বিশেষ বিজ্ঞপ্তি’ দেওয়া হয়েছে গত বুধবার।

ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘চাঁদপুর জেলা সুস্বাদু ইলিশ মাছের জন্যে বিখ্যাত। সেই স্বাদ অক্ষুণ্ন রাখা, ইলিশের মূল্য নিয়ন্ত্রণসহ জেলার মান সমুন্নত রাখার বিষয়ে জেলা প্রশাসন বিভিন্নভাবে প্রতিনিয়ত উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে।’

এতে আরও বলা হয়, ‘চাঁদপুর জেলার ইলিশের নাম করে বিভিন্ন অসাধু ব্যবসায়ী ভুয়া ফেসবুক পেজ খুলে প্রতিনিয়ত দেশবাসীর সঙ্গে প্রতারণা করে যাচ্ছে। চাঁদপুর জেলা প্রশাসন এ ধরনের প্রতারণা রোধে ইলিশ মাছের অনলাইন ব্যবসায়ীদের তালিকা তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে।’ ইলিশের অনলাইন ব্যবসার জন্যে আগ্রহী প্রার্থীদেরকে জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে যোগ্যতা সাপেক্ষে নির্ধারিত ফরম এ আবেদন করতে হবে এবং বর্ণিত কাগজপত্র দাখিল করার মাধ্যমে নিবন্ধন গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিন বলেন, ‘অনলাইনে ইলিশ বিক্রির নামে প্রতারণার অভিযোগ নিয়মিতই আসছে। এর কবল থেকে সাধারণ মানুষ, প্রবাসী, এমনকি প্রশাসনের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাও বাদ যাননি। তাই প্রতারণা ঠেকাতে এ উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করছি, এর সুফল সারাদেশের মানুষ পাবে।’

এদিকে, ‘অনলাইনে চাঁদপুরের ইলিশ ক্রয়ে প্রতারক হতে সাবধান!’- এমন সচেতনতামূলক একটি প্রচার চালিয়েছে পুলিশ সুপার আব্দুর রকিবের তত্ত্বাবধায়নে চাঁদপুর জেলা পুলিশ। সেখানে একটি হটলাইন নম্বর (০১৩২০১১৬৮৯৮) দিয়ে অনলাইন ক্রেতাদের উদ্দেশে বলা হয়েছে, ‘ইলিশ মাছ কেনার সময় সতর্ক থাকুন, ক্যাশ অব ডেলিভারি পদ্ধতি অর্থাৎ মাছ হাতে পাওয়ার পর টাকা পরিশোধ করুন।’ এছাড়া আরও বলা হয়, ‘ইলিশ মাছের লোভনীয় অফার দেখে প্রতারণার ফাঁদে পা দেবেন না এবং কোনোভাবেই পণ্য পাওয়ার আগে টাকা পাঠাবেন না।’

এদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল ইমরান সমকালকে বলেন, ‘আমাদের কাছে ৪১ জন অনলাইন ব্যবসায়ী এবং তাদের প্রতিষ্ঠানের নাম রয়েছে, যেগুলো বহু আগে থেকেই চাঁদপুর মৎস্য বিভাগ ও চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ হয়ে আসছে। কিন্তু ইলিশের দাম বৃদ্ধিসহ নানান কারণে অনেকেই এই ব্যবসা ছেড়ে দিয়েছেন। তাদের ফার্মের নামটা ব্যবহার করে প্রতারক চক্র ভিডিও-অডিও ছাড়ছে বলে জেনেছি। আগে এই অনলাইন ব্যবসায় কখনোই নিবন্ধন সিস্টেম ছিলো না।’ তিনি মনে করেন, ‘এখন জেলা প্রশাসক যেই উদ্যোগ নিয়েছেন, এতে প্রতারণার সুযোগ কম থাকবে।’

‘চাঁদপুর রূপালি ইলিশ’ নামে পেইজবুক পেজের সত্ত্বাধিকারী মুফতী মহীবুল্লাহ সাকী বলেন, ‘আমরা প্রশাসনের তালিকাভুক্ত। ওনাদের কাছে যে ৪১ জনের তালিকা রয়েছে, এর মধ্যে আমারটাও রয়েছে। তবে নিবন্ধন করতে হবে, তা জানি না।’

এ ইলিশ অনলাইন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমার ফেসবুক পেজও ক্লোন করে প্রতারকরা ব্যবহার করেছে।’ তিনি বলেন, ‘প্রতারকদের কায়দাটাই অভিনব! নিবন্ধনটা ব্যবসায় নিশ্চয়তা দেবে, কিন্তু যত নিবন্ধন আর তালিকাই করেন, খুব বেশি কাজ হবে না। কাজ হবে ২টা জিনিসে। প্রথমত- মাছ অর্ডার দেওয়ার সময় তাকে ডেলিভারির আগে টাকা না দেওয়া এবং চাঁদপুর মাছ ঘাটে ওই অনলাইন ব্যবসায়ীর সম্পর্কে খবর নেওয়া। আর দ্বিতীয়ত- পুলিশ যদি দ্রুত মোবাইল ট্র্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারকদের ধরার ব্যবস্থা নয়।’

উল্লেখ্য, চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার সুস্বাদু রূপালি ইলিশের জন্য বিখ্যাত চাঁদপুরকে ২০১৭ সাল থেকেই ‘ইলিশের বাড়ি’ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। অবশ্য এর আগ থেকেই যুগ যুগ ধরে চাঁদপুরের ইলিশের খ্যাতি দেশের বাইরে বিদেশেও ছড়িয়ে রয়েছে। এছাড়া জেলার মৎস্য অবতরণকেন্দ্র ‘বড় ষ্টেশন মাছঘাট’ থেকে সবচেয়ে বেশি ইলিশ যায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আবার এই ঘাটে বরিশাল, বরগুনাসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশও আসে। তবে চাঁদপুরের ৭০ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে পদ্মা-মেঘনার ইলিশের বিশেষ রকম স্বাদ থাকায় এর সুযোগ নিয়ে অনলাইনে প্রতারণা চলে।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

বাঙালি মুসলিমদের নিশানা করেই কি আসামে আদিবাসীদের অস্ত্র দিচ্ছে রাজ্য সরকার

ভারতের আসাম রাজ্যের বিজেপি সরকার তীব্র বিতর্ক সত্ত্বেও গতকাল বৃহস্পতিবার আদিবাসীদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দেওয়ার কাজ শুরু করেছে। ওই দিনই জানানো হয়েছে, অনলাইনে আবেদন করে রাজ্যের ‘অরক্ষিত ও প্রত্যন্ত’ এলাকায় বসবাসকারী ‘মূল নিবাসী উপজাতি গোষ্ঠীর’ মানুষ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহ করতে পারবেন।

ভারতের সংবাদপত্র ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসসহ স্থানীয় কয়েকটি সংবাদপত্রের খবরে বলা হয়, বিজেপিশাসিত রাজ্যের বিজেপিদলীয় মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার অতীতের একাধিক ভাষণ থেকে এটা স্পষ্ট যে ‘অরক্ষিত’ এলাকা বলতে এমন অঞ্চলকে বোঝানো হয়েছে, যেখানে বাঙালি-বংশোদ্ভূত মুসলিমরা বসবাস করেন।

রাজ্যের একাংশের মানুষ নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে শুক্রবার বলেন, এর ফলে উত্তর-পূর্ব ভারতে সহিংসতা বৃদ্ধির আশঙ্কা দেখা দিল।

ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নাগরিকের হাতে অস্ত্র থাকা প্রয়োজন: মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত

অস্ত্র দেওয়ার সিদ্ধান্তের পক্ষে সাফাই গাইতে গিয়ে বৃহস্পতিবার পোর্টাল চালু করার সময় মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বশর্মা বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করে বলেন, ‘যদি আমি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত বা আন্তরাষ্ট্রীয় সীমানা অঞ্চলের কাছাকাছি থাকি, অথবা আমি এমন একটি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বাস করি, যেখানে আমার সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা খুবই কম। যদি সেখানে একটি সম্প্রদায়ের হার ৯০-৯৫ শতাংশ হয় এবং অপর সম্প্রদায় ৫ শতাংশ হয়, তবে সেখানে উত্তেজনা থাকবে। ঐতিহাসিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক—সব স্তরেই উত্তেজনা থাকবে। একটি ছোট ঘটনা এমন পরিস্থিতিও সৃষ্টি করতে পারে যেখানে ৯৫ শতাংশের সম্প্রদায় ৫ শতাংশকে আক্রমণ করে বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে পারে।’

আসামের আদিবাসীদের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়ার পক্ষে মুখ্যমন্ত্রীর আরও যুক্তি, সাধারণভাবে একটি থানায় ৬ থেকে ১২ জন কনস্টেবল থাকেন। কোনো সংঘাত হলে জেলা সদর থেকে অতিরিক্ত বাহিনী পাঠাতে দুই-তিন ঘণ্টা সময় লেগে যায়।

বিজেপির এই উগ্রবাদী মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এই দুই-তিন ঘণ্টা আমাদের নিজেদের রক্ষা করতে হবে। এবং যদি লোকেরা (আক্রমণকারীরা) এটা জানে, আক্রান্ত ব্যক্তি বা আক্রান্ত বাড়িতে একটি আগ্নেয়াস্ত্র আছে, তাহলে এটিই একটি প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করবে। প্রত্যন্ত অঞ্চলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নাগরিকদের ‘প্রথম প্রতিরক্ষক’ বলেও উল্লেখ করেন হিমন্ত।

কারা পেতে পারেন আগ্নেয়াস্ত্র

আগ্নেয়াস্ত্র সংগ্রহের জন্য ‘সেবা সেতু’ নামে একটি পোর্টালে আবেদন করা যাবে। সেবা সেতু ওয়েবসাইটে এত দিন আসাম সরকারের বিভিন্ন জনকল্যাণমূলক পরিষেবার ঘোষণা দেওয়া হতো। সেসবের পাশাপাশি এখন জানানো হয়েছে, কারা আগ্নেয়াস্ত্র পেতে পারেন।

ওয়েবসাইটে শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, আবেদনকারীকে আসামের আদিবাসী হতে হবে, তার বয়স কমপক্ষে ২১ হতে হবে এবং ‘অরক্ষিত ও প্রত্যন্ত’ অঞ্চলে বসবাস করতে হবে। আবেদনকারীর অপরাধমূলক কোনো ব্যক্তিগত ইতিহাস থাকা চলবে না এবং তার বিরুদ্ধে কোনো মামলাও থাকা চলবে না।

সেবা সেতু ওয়েবসাইটে শর্তে আরও বলা হয়, আবেদনকারীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে হবে। ২০১৬ সালের অস্ত্র আইন মোতাবেক উপযুক্ত প্রশিক্ষণও থাকতে হবে।

তবে প্রচারমাধ্যমের বক্তব্য অনুসারে, আসামের মুখ্যমন্ত্রী ‘অরক্ষিত অঞ্চল’ বলতে বাঙালি মুসলিম অধ্যুষিত অঞ্চলকে বোঝালেও সেবা সেতুতে অরক্ষিত অঞ্চলের কোনো সংজ্ঞা দেওয়া হয়নি। বন্দুক সংগ্রহ করার আগে আরও একাধিক বিষয়—যেমন কেন তার আগ্নেয়াস্ত্র প্রয়োজন—এ বিষয়ে আবেদনকারীকে লিখিতভাবে তার বক্তব্য রাজ্য সরকারকে জানাতে হবে।

ভারতের বর্তমান অস্ত্র আইন অনুসারে একজন সাধারণ বেসামরিক নাগরিকের পক্ষে আইনগতভাবে অস্ত্র কেনা বা সংগ্রহ করা প্রায় অসম্ভব। আসাম সরকারের এই নতুন নির্দেশনা অস্ত্র সংগ্রহ করাকে অনেক সহজ করে দেবে বলে আসামের সাধারণ মানুষই মনে করছেন।

নাগরিক সমাজের বিরোধিতা

আজ শুক্রবার প্রথম আলোর সঙ্গে এই বিষয়ে আসামের বেশ কয়েকজন বিশিষ্ট নাগরিক কথা বলেন। তাঁদের মধ্যে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘এক বিপজ্জনক পরিস্থিতি আসামে তৈরি হতে চলেছে।’

ওই ব্যবসায়ী বলেন, এটা অস্বীকার করার কোনো কারণ নেই যে আসামে এই মুহূর্তে প্রায় ৪০ শতাংশ মুসলিম রয়েছেন, যাঁদের বড় অংশই বাঙালি মুসলমান। আসামে যে জনবিন্যাসের একটা পরিবর্তন হচ্ছে তা–ও অনস্বীকার্য। কিন্তু তার অর্থ এই নয়, সমাজের একটি বৃহৎ অংশের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র তুলে দিয়ে পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করা হবে।

আসামের ওই ব্যবসায়ী আরও বলেন, যে রাজ্যে বা দেশে সাধারণ মানুষের হাতে বেশি অস্ত্র থাকে, সেখানে সাধারণভাবেই বেশি মানুষের মৃত্যু হয়, যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ যুক্তরাষ্ট্র। সেখানে মাঝেমধ্যেই স্কুল-কলেজে গুলি চলে। আসামে সুকৌশলে পরিস্থিতিকে সেই দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।

আরও পড়ুনআসামে কাদের লক্ষ্য করে আদিবাসী, মূল নিবাসীদের আগ্নেয়াস্ত্র রাখার অনুমতি দিল হিমান্তের সরকার৩০ মে ২০২৫

উত্তর-পূর্ব ভারতে একসময় কর্মরত এক জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তার মতে, এর ফলে আসামসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও পশ্চিমবঙ্গের উত্তর অংশেও সহিংসতা বাড়বে।

সাবেক পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘বন্দুক এমন এক জিনিস, যা এক জায়গায় থেমে থাকে না। একেকটি বন্দুকের বিরাট আয়ু হয়, যত্নে রাখলে একেকটি বন্দুক দীর্ঘদিন কাজ করে। ফলে এই আগ্নেয়াস্ত্র ধীরে ধীরে কালোবাজারে বিক্রি হবে এবং তা গোটা উত্তর-পূর্ব ভারতে ছড়িয়ে পড়বে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গেও ঢুকে পড়বে। আসামের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্ত রয়েছে।’

সাবেক ওই কর্মকর্তা আরও বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারত অত্যন্ত স্পর্শকাতর জায়গা, যার সীমান্তের মাত্র ২ শতাংশ রয়েছে ভারতের সঙ্গে। বাকি ৯৮ শতাংশ অন্যান্য দেশের সঙ্গে।

অবসরপ্রাপ্ত ওই পুলিশ কর্তা বলছিলেন, ‘সেসব দেশের সঙ্গে নানা কারণে ভারতের সম্পর্ক বেশ খানিকটা নড়বড়ে অবস্থায় রয়েছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, তা ঈশ্বরই জানেন।’

উত্তর-পূর্ব ভারতের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের কথায়, এর ফলে শুধু আসামে নয়, উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যান্য রাজ্যে সহিংসতা বাড়বে। কারণ, এই বন্দুক সেখানেও পৌঁছবে।

ওই গবেষক বলেন, ‘আমার মনে হয় এই কাজটি ইচ্ছাকৃতভাবে করা হলো। আসামের মুখ্যমন্ত্রী হয়তো এভাবে নিজেকে জাতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরতে চাইছেন। কারণ, তিনি দেখেছেন, মুসলিম সমাজের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক অবস্থান নিয়ে ভারতের রাজনৈতিক নেতারা তাঁদের রাজনৈতিক জীবনে চরম উন্নতি করেছেন।’

আরও পড়ুনবাংলাদেশি অনুপ্রবেশ নিয়ে হিমন্তের বিতর্কিত মন্তব্য, নিন্দা জানাল বিরোধীরা১৮ মে ২০২৪

সম্পর্কিত নিবন্ধ