টাঙ্গাইলে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরকে অন্যত্র বদলির জন্য জেলা প্রশাসক কাছে লিখিত আবেদন করেছেন ১২ জন ইউপি সদস্য।

মঙ্গলবার (১ জুলাই) দুপুরে টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক বরাবর এই লিখিত আবেদন করেন তারা। 

আবেদনকারী ইউপি সদস্যরা হলেন- মোছা.

কল্পনা বেগম, মোছা. নুরনাহার বেগম, মোছা. ছবিয়া বেগম, মো. সুমন খান, মো. লুৎফর রহমান, মো. নয়ন মিয়া, মো. হারুন অর রশিদ, ইয়াছিন, মোহাম্মদ কায়সার আহমেদ, মো. ফরমান আলী, মো. মনিরুজ্জামান ও মো. আক্তার হোসেন। 

আরো পড়ুন:

দৌলতপুরে পরীক্ষা দিতে এসে হামলার শিকার ২ শিক্ষার্থী

কুমিল্লায় বিএনপি অফিসে অগ্নিসংযোগ, ককটেল বিস্ফোরণ

লিখিত আবেদন থেকে জানা যায়, টাঙ্গাইল সদর উপজেলাধীন ৮ নং বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদে প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবির যোগদানের পর থেকে ইউপি সদস্যদের অবমূল্যায়নের পাশাপাশি অসৌজন্যমূলক আচরণ করে আসছেন। ইউপি সদস্যদের পরামর্শ না করে সামাউন কবির তার মতো স্থানীয় প্রভাবশালীদের সঙ্গে আঁতাত করে পরিষদের সব কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন। 

ইউনিয়নের জনসাধারণের জন্ম/মৃত্যু নিবন্ধনসহ যে কোনো কাজে আসলে আইনের ভয় দেখিয়ে তাদের নিকট থেকে সরকারি ফি’র বাহিরে অতিরিক্ত টাকা গ্রহণ করেন। এতে জনসাধারণ সরকারি সেবা থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি সাধারণ জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে মৌখিকভাবে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

আবেদনে থেকে আরো জানা যায়, সামাউন কবির বাঘিল ইউনিয়নে আসার আগে যেসব ইউনিয়নে চাকরি করেছেন প্রত্যেকটি ইউনিয়নে একই ধরনের আচারণ করেছেন। তিনি কয়েকবার শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হয়েছেন। এই ধরনের লোকের জন্য আমাদের পরিষদের কাজ চালানো সম্ভব নয়। তাকে অন্যত্র বদলির জন্য দাবি জানাচ্ছি।

এ বিষয়ে জানতে একাধিকবার বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

বাঘিল ইউনিয়ন পরিষদের প্রশাসক মো. মেহেদী হাসান বলেন, “পরিষদের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সামাউন কবিরের বিরুদ্ধে অনিয়ম, দুর্নীতির বিষয়ে লিখিত আবেদনের বিষয়ে আমি কিছু জানি না।”

টাঙ্গাইলের জেলা প্রশাসক শরীফা হক ও স্থানীয় সরকারের উপ-পরিচালক মো. শিহাব রায়হানের মোবাইলে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তারা ফোন রিসিভ করেননি।

ঢাকা/কাওছার/মাসুদ

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর অভ য গ সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

বিদেশে বিনিয়োগের অনুমোদন পেয়েছে তিন প্রতিষ্ঠান

দেশের বাইরে ২১ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে বাংলাদেশের তিন প্রতিষ্ঠানকে পাঁচটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সেবা ও বিপণনের ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতেই তারা দেশের বাইরে মূলধন বিনিয়োগের মাধ্যমে কোম্পানি গঠন করবে। কোম্পানিগুলোকে রপ্তানিকারকের সংরক্ষিত কোটা (ইআরকিউ) হিসাব থেকে বিনিয়োগ করতে হবে। সম্প্রতি গভর্নরের সভাপতিত্বে কেন্দ্রীয় ব্যাংকে অনুষ্ঠিত সভায় এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ নিয়ে বাংলাদেশি ২৫ প্রতিষ্ঠান বিদেশে ৩৫টি কোম্পানি গঠনে বিনিয়োগের অনুমতি পেল।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বিদেশে কোম্পানি খোলার অনুমতি পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস সংযুক্ত আরব আমিরাতে কোম্পানি খুলবে, যার নাম হবে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস ইউএই লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি ইআরকিউ থেকে ১০ লাখ ডলার বিনিয়োগ নেবে। করিম টেক্সটাইল নামের একটি কোম্পানি সংযুক্ত আরব আমিরাতে ৫ লাখ ডলার বিনিয়োগ নিয়ে করিম রিসোর্সেস ইউএই গঠন করবে। এ ছাড়া সফটওয়্যার খাতের কোম্পানি ব্রেইন স্টেশন-২৩ লিমিটেড বিদেশে তিনটি কোম্পানি গঠনের অনুমোদন পেয়েছে। প্রতিটি দেশে তারা বিনিয়োগ করবে ২ লাখ ডলার করে। মালয়েশিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও নেদারল্যান্ডসে কোম্পানি গঠন করবে।

বাংলাদেশ থেকে বিদেশে বিনিয়োগ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়। বিভিন্ন প্রয়োজনে ‘কেস টু কেস’ ভিত্তিতে ২০১৩ সাল থেকে বিদেশে বিনিয়োগের অনুমতি দিচ্ছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে এ বিষয়ে কোনো নীতিমালা ছিল না। তবে ২০২১ সালে বিদেশে মূলধন বিনিয়োগ-সংক্রান্ত একটি বিধিমালা জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। বিধিমালার আওতায় শুধু রপ্তানি আয় আছে, এমন প্রতিষ্ঠান আবেদন করতে পারে। অবশ্য বাংলাদেশ থেকে প্রতিবছর বিপুল পরিমাণ অর্থ পাচার করে বাইরে বিনিয়োগের নজির রয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত অর্থনীতির ওপর শ্বেতপত্র প্রণয়ন প্রাক্কলন অনুযায়ী দেশ থেকে গত ১৫ বছরে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচার হয়েছে। 
সম্প্রতি প্রকাশিত আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশ থেকে সর্বশেষ পাঁচ বছরে বৈধভাবে বিনিয়োগ হয়েছে মাত্র ১৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। আর ২০২৪ সাল শেষে বাংলাদেশি কোম্পানির বিদেশে বিনিয়োগ স্থিতি কমে ৩২ কোটি ২০ লাখ ডলারে নেমেছে, আগের বছর শেষে যা ৩৫ কোটি ১০ লাখ ডলার ছিল। 

আরও যত বিনিয়োগ
গত মার্চে বিদেশি বিনিয়োগ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত গ্রামীণ ট্রাস্টের নেপালি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার। একাধিক দেশে বিনিয়োগ রয়েছে বাংলাদেশি সাতটি কোম্পানির। নতুনভাবে অনুমোদন পাওয়াদের মধ্যে স্কয়ার ফার্মা আগ থেকেই কেনিয়া ও ফিলিপাইনে বিনিয়োগ নিয়েছে। বেক্সিমকো ফার্মার সৌদি আরব, মালয়েশিয়া ও শ্রীলঙ্কায় বিদেশি বিনিয়োগ রয়েছে। ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস যুক্তরাষ্ট্র, সিঙ্গাপুর ও এস্তোনিয়ায় কোম্পানি খুলেছে। ওষুধ খাতের আরেক কোম্পানি রেনেটা লিমিটেডের যুক্তরাজ্য ও আয়ারল্যান্ডে বিনিয়োগ রয়েছে।
সামিট গ্রুপের সামিট পাওয়ারের ভারতে, সামিট অ্যালায়েন্স পোর্ট ও সামিট অয়েল অ্যান্ড শিপিংয়ের সিঙ্গাপুরের দুই কোম্পানিতে বিনিয়োগ রয়েছে। স্টিল খাতের কোম্পানি বিএসআরএম কেনিয়া ও হংকংয়ে কোম্পানি খুলেছে। আকিজ শিপিংয়ের সিঙ্গাপুর ও আকিজ হোল্ডিংয়ের মালয়েশিয়ায় কোম্পানি খোলার অনুমোদন রয়েছে। এ ছাড়া মবিল যমুনা সিঙ্গাপুর ও মিয়ানমারে বিনিয়োগ নিয়েছিল। তবে মিয়ানমার থেকে বেশ আগেই তারা বিনিয়োগ গুটিয়ে এনেছে।

ডিবিএল গ্রুপ এস্তোনিয়ায়, এআইআইএম গ্লোবাল সংযুক্ত আরব আমিরাতে, এসিআই হেল্থ যুক্তরাষ্ট্রে, টেকআউট লিমিটেড শ্রীলঙ্কায়, এমবিএম গার্মেন্টস সিঙ্গাপুরে, প্রাণ ফুড ভারতে, এজে সুপার গার্মেন্টস সৌদি আরবে, কলম্বিয়া গার্মেন্টস হংকংয়ে, সাইফ পাওয়ারটেক সংযুক্ত আরব আমিরাতে এবং টাইগার আইটি নেপালে বিনিয়োগ নেওয়ার অনুমোদন পেয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বাজার সুবিধা পেতে এসব দেশে বিনিয়োগ করেছে প্রতিষ্ঠানগুলো।

সম্পর্কিত নিবন্ধ