ক্ষমতাকেন্দ্রিক নয়, সংস্কারের পক্ষে জোট চায় এবি পার্টি
Published: 1st, July 2025 GMT
আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জু বলেছেন, তাঁর দল মতাদর্শ কিংবা ক্ষমতাকেন্দ্রিক কোনো জোটের পক্ষে নয়, বরং বৈষম্যবিরোধী ও সংস্কারের পক্ষের সব গণতান্ত্রিক শক্তির জোট গঠনে আগ্রহী।
গত জুলাইয়ে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রশ্নে সবাই এক হয়েছিল। তাহলে আজ সংস্কার নিয়ে এত দ্বিধা কেন, সেই প্রশ্ন তোলেন মজিবুর রহমান মঞ্জু।
আজ মঙ্গলবার ৩৬ দিনব্যাপী এবি পার্টির জুলাই উদ্যাপন কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এ অনুষ্ঠান ছিল।
এবি পার্টির ৩৬ দিনব্যাপী জুলাই উদ্যাপন কর্মসূচির উদ্বোধন করেন জুলাই শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা ও সন্তান আরিয়ানা কাজী নুজাইরাহ।
অনুষ্ঠানে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের জুলাই ঘোষণাপত্র চূড়ান্ত করতে না পারা অন্তর্বর্তী সরকারের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতাদের মনে রাখতে হবে, রাজনীতিতে দিল্লির মতো কোনো বিদেশি শক্তি যেন আর বাংলাদেশের মাথায় ছড়ি ঘোরাতে না পারে। জুলাই শহীদদের ভুলে গেলে আমাদের অস্তিত্ব প্রশ্নের মুখে পড়বে।’
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য আবদুল লতিফ মাসুম বলেন, ‘আবারও বিভেদ–বিভাজনের রাজনীতি আমরা চাই না। কিন্তু কিছু কিছু রাজনৈতিক দলের মধ্যে আবারও আমরা সে লক্ষণ দেখছি।’
শহীদ নাজমুল কাজীর স্ত্রী মারিয়া সুলতানা রাখি বলেন, ‘হাজারো মানুষ তাদের স্বজন হারিয়েছে। এত মানুষ জীবন দিল, তার বিনিময়ে আমরা আর নতুন কোনো ফ্যাসিবাদ এই বাংলায় দেখতে চাই না।’
চব্বিশের জুলাইয়ের কথা স্মরণ করে এবি পার্টির সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বলেন, ‘গত জুলাইয়ে একটি রাজনৈতিক দল বলেছিল, আমরা এই ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে নেই। সেই দলগুলোই এখন সংস্কারের বিষয়ে বলছে, তাদের বাদ দিয়ে কোনো সংস্কার হবে না। আমরা কিন্তু সেই দিনগুলোর কথা ভুলিনি।’
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন দলের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল ওহাব মিনার, ভাইস চেয়ারম্যান দিদারুল আলম, বি এম নাজমুল হক, হেলাল উদ্দিন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার সাদাত প্রমুখ।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
শুভ জন্মাষ্টমী আজ
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে দুর্বলের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং দুষ্টের দমন ও শিষ্টের লালন করতে পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়েছিলেন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ—এই বিশ্বাস পোষণ করেন সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। শ্রীকৃষ্ণের এই আবির্ভাব তিথি শুভ জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়।
সনাতন ধর্মের মানুষ বিশ্বাস করেন, পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই শক্তিকে দমন করে মানবজাতির কল্যাণ এবং ন্যায়নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য মহাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটেছিল। আজ শনিবার শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথি।
জন্মাষ্টমী উপলক্ষে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। গতকাল শুক্রবার এক বাণীতে তিনি বলেন, ছাত্র-শ্রমিক-জনতার ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত অন্তর্বর্তী সরকার সম্প্রীতির বন্ধন অটুট রাখতে বদ্ধপরিকর। সমাজে বিদ্যমান শৃঙ্খলা, ভ্রাতৃত্ববোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিকে কেউ যেন নষ্ট করতে না পারে, সে জন্য সবাইকে সজাগ থাকতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, সমাজে সাম্য ও শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে শ্রীকৃষ্ণ আজীবন ন্যায়, মানবপ্রেম ও শান্তির বাণী প্রচার করেছেন। শ্রীকৃষ্ণ যেখানেই অন্যায়-অবিচার দেখেছেন, সেখানেই অপশক্তির হাত থেকে শুভশক্তিকে রক্ষার জন্য আবির্ভূত হয়েছেন।
মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, আবহমানকাল থেকে এ দেশের মানুষ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। শ্রীকৃষ্ণের আদর্শ ও শিক্ষা পারস্পরিক সৌহার্দ্য ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধনকে আরও সুদৃঢ় করবে। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে ভরপুর বৈষম্যমুক্ত এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান তিনি।
বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে আজ সকাল আটটায় দেশ-জাতির মঙ্গল কামনায় শ্রীশ্রী গীতাযজ্ঞ, বেলা তিনটায় ঐতিহাসিক কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিল ও রাতে শ্রীকৃষ্ণপূজা অনুষ্ঠিত হবে।
পূজা উদ্যাপন পরিষদ ও মহানগর সর্বজনীন পূজা কমিটি জানিয়েছে, রাজধানীর পলাশীর মোড়ে আজ বেলা তিনটায় কেন্দ্রীয় জন্মাষ্টমী মিছিলের উদ্বোধন করবেন সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান, নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল এম নাজমুল হাসান, বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল হাসান মাহমুদ খাঁন ও নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল মো. মঈন খান।