শহিদুল আলমদের জাহাজের ওপর দিয়ে উড়ে গেল ‘ইসরায়েলি সামরিক বিমান’
Published: 5th, October 2025 GMT
বাংলাদেশের খ্যাতিমান আলোকচিত্রী শহিদুল আলমসহ একদল সাংবাদিক, চিকিৎসক ও অধিকারকর্মী যে জাহাজে চড়ে গাজার দিকে যাচ্ছেন, সেটির ওপর দিয়ে আজ উড়েছে একটি সামরিক বিমান। সেটি ইসরায়েলের সামরিক বিমান বলে ধারণা করেছেন ওই জাহাজে থাকা উইলিয়াম আলেকজান্ডার। আজ রোববার বিকেলে ভূমধ্যসাগরে গাজার দিকে এগিয়ে যেতে থাকা জাহাজ ‘কনশানস’ থেকে করা ফেসবুক লাইভে ওই বিমানটি উড়ে যেতে দেখা যায়।
শহিদুল আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক অ্যাকাউন্ট থেকে করা ওই ফেসবুক লাইভে অধিকারকর্মী উইলিয়াম আলেকজান্ডারকে কথা বলতে দেখা যায়। তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘আমাদের চারপাশে কয়েকবার ঘোরার পর একটি বড় সামরিক বিমান এইমাত্র সরাসরি আমাদের মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেল। নিঃসন্দেহে এটা অপ্রয়োজনীয়। তারা আমাদের ওপর একটি চক্কর দিয়েই সম্ভবত সব তথ্য সংগ্রহ করতে পারত। এরপর তারা থাউজেন্ড ম্যাডলিন ফ্লিটের দিকে চলে গেছে। সম্ভবত আরও কিছু তথ্য নেওয়ার জন্য এ কাজ করেছে তারা। এটি ইসরায়েলের বিমান, সে বিষয়ে আমরা শতভাগ নিশ্চিত নই। তবে আমাদের মাথার ওপর দিয়ে আর কে এভাবে সামরিক বিমান ওড়াতে পারে, তা আমার জানা নেই। আমার ধারণা, তারা আমাদের ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু তাদের এসব কাজ উত্তেজনা তৈরির চেষ্টামাত্র।’
বিমানটি উড়ে যাওয়ার সময় লাইভ ভিডিওতে কনশানসের আরেক যাত্রী সতর্কবার্তা দেন, ‘সতর্ক থাকুন। খুব ধীরে ধীরে এগোবেন। স্বাভাবিক থাকুন। তাদেরকে আমাদের সঙ্গে খেলতে দেবেন না।’
পরে উইলিয়াম জাহাজের ভেতরের ওষুধ ও মেডিকেল সরঞ্জাম দেখিয়ে বলেন, ‘আমার পেছনে প্রচুর ওষুধ ও স্বাস্থ্যসেবা সরঞ্জাম রয়েছে। এগুলো আমরা কনশানস জাহাজে করে গাজায় নিয়ে যাচ্ছি।’
জাহাজের ক্যাপ্টেন ম্যাডেলেইন হাবিব বলেন, ‘আমি সত্যিই আশা করছি, এবার আমরা গাজায় পৌঁছাব। সত্যিকারে একটি শান্তিপ্রক্রিয়ার আশা করছি এবং আমাদের আটকানো হবে না। আমরা ফিলিস্তিনিদের জন্য একটি স্থায়ী করিডর চাই, যাতে তারা সমুদ্রসীমায় প্রবেশ করতে পারে। আমরা শুধু ত্রাণ নিয়ে আসার জন্য মানবিক করিডরের কথা বলছি না। বলছি এমন একটি করিডরের কথা, যাতে ফিলিস্তিনিরা সমুদ্রে বাণিজ্য করতে পারে, যা তাদের মৌলিক অধিকার।’
ভিডিওতে ওই জাহাজে থাকা মার্কিন প্রামাণ্যচিত্র নির্মাতা টম হায়েস বলেন, ‘একজন আমেরিকান হিসেবে আমাদের এখন কী করা উচিত? আমার এখন কী করা উচিত? সব আমেরিকানের কী করা উচিত? বৈশ্বিক সম্প্রদায়ের কী করা উচিত? আমাদের অবশ্যই প্রতিটি ফোরামে, সম্ভাব্য প্রতিটি উপায়ে নিরলসভাবে কাজ করতে হবে, যাতে ফিলিস্তিনিদের স্বাধীনতা ও নিজেদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের পথ সুগম হয়।’
কনশানস জাহাজটি আন্তর্জাতিক উদ্যোগ ‘ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশন (এফএফসি)’ ও ‘থাউজেন্ড ম্যাডলিনস টু গাজা (টিএমটিজি)’ নৌবহরের অংশ, যা গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছে দিতে এবং ইসরায়েলের অবরোধ ভাঙতে চেষ্টা করছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
নেত্রকোনায় এনসিপির নেতার বাড়ির ফটকে আগুন
নেত্রকোনায় জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) প্রীতম সোহাগের বাড়ির ফটকে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত ১২টার দিকে সদর উপজেলার গজিনপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। রাজনৈতিক বিরোধের জের ধরে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দুর্বৃত্তরা এ কাজ করেছে বলে দাবি প্রীতমের।
প্রীতম সোহাগ বলেন, ‘রোববার রাত ১২টার দিকে কে বা কারা বাড়ির ফটকের সামনে আগুন দেয়। এতে আমার স্ত্রীর স্যান্ডেল ও পাপোশ পুড়ে যায়। এ ছাড়া ওপরে থাকা বিদ্যুতের কার্ড মিটারের ক্ষতি হয়। তবে বড় ধরনের কোনো ক্ষতি হয়নি, আগুন নিভে যায়।’
আগুনের বিষয়টি আজ সোমবার সকাল ছয়টার দিকে টের পেয়েছেন জানিয়ে প্রীতম বলেন, ‘গতকাল রাতে জেলা শহর থেকে আমার স্ত্রীকে নিয়ে বাড়িতে এসে রাত ১০টার দিকে গেট বন্ধ করে ঘুমিয়ে পড়ি। আজ সকালে লোকজন আমাকে ঘুম থেকে ডেকে জানান যে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে রাস্তায় আমার চাচাতো ভাই এনামুল হকের মুদিদোকান আছে। তিনি আমার বাড়ি থেকে একটি মোটরসাইকেলে তিনজনকে বের হতে দেখেছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ওই দুর্বৃত্তরাই আগুন ধরিয়ে সঙ্গে সঙ্গে চলে যায়।’
এ বিষয়ে নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, এনসিপি নেতার বাড়ির ফটকে দুর্বৃত্তরা আগুন দিয়েছে বলে তিনি শুনেছেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।