চালের দাম বাড়ার আর সুযোগ দেব না, বরং কমবে
Published: 22nd, January 2025 GMT
অন্তর্বর্তী সরকারের খাদ্য উপদেষ্টা আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, ভারত, মিয়ানমার, পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশ থেকে পর্যায়ক্রমে ৮-৯ লাখ টন চাল আসবে। আমদানি শুরুর পর চালের দাম বাড়া বন্ধ হয়েছে। মোটা চাল যেটা আছে, সেটার দাম তিন থেকে পাঁচ টাকা কমেছে। আমরা আরও চাল আনতে থাকব। দাম বাড়ার আর সুযোগ দেব না বরং চালের দাম আরও কমবে।
গতকাল মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করা খাদ্যদ্রব্য খালাস কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে উপদেষ্টা নগরীর পতেঙ্গায় নির্মাণাধীন সাইলো পরিদর্শন করেন। এ সময় চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার ড.
সম্পর্কের অবনতি সত্ত্বেও ভারত থেকে চাল আমদানির প্রশ্নে আলী ইমাম মজুমদার বলেন, ‘বাণিজ্যকে আমরা রাজনীতির সঙ্গে মিলাচ্ছি না। ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী এবং সেখান থেকে আমদানি খরচ তুলনামূলক কম ও সস্তা। সে জন্য সেখান থেকে পণ্য আমদানি অব্যাহত আছে। পাশাপাশি মিয়ানমার আমাদের কাছে আরও চাল বিক্রি করতে চাচ্ছে। পাকিস্তান থেকে ৫০ হাজার টন চাল আমরা আমদানির ব্যবস্থা করেছি। সব মিলিয়ে ৮-৯ লাখ টন চাল আসবে।’
আসন্ন রমজান মাস ঘিরে খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তা নিয়ন্ত্রণে সরকার কী ধরনের ব্যবস্থা নিচ্ছে? এমন প্রশ্নে উপেদষ্টা বলেন, ‘রমজান মাসে খাদ্য মন্ত্রণালয় বিশেষ করে চাল ও গম সবচেয়ে বেশি দেখাশোনা করে। বাকি কিছু আইটেম দেখভাল করে টিসিবি। তা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে। টিসিবিও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। খাদ্য মন্ত্রণালয় থেকে প্রতি উপজেলায় প্রতিদিন দুই টন চাল বিক্রি শুরু হয়েছে এ মাস থেকে। রমজান মাসেও এটি থাকবে। সারাদেশে ৫০ লাখ লোকের জন্য খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি চালু হয়েছে।। দরিদ্র শ্রেণির ৫০ লাখ লোক মাসে ৩০ কেজি করে চাল পাবে ১৫ টাকা দরে। আশা করছি, রমজান মাসে দ্রব্যমূল্য সহনশীল থাকবে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: খ দ যপণ য রমজ ন ম স টন চ ল আমদ ন
এছাড়াও পড়ুন:
বইমেলায় সরোজ মেহেদীর ‘মায়াজাল’
অমর একুশে বইমেলায় এসেছে লেখক ও বিশ্লেষক সরোজ মেহেদীর প্রথম গল্পগ্রন্থ ‘মায়াজাল’। জীবনের নানা ঘটনা, দুঃখ-হাসি-কান্না, সমাজে চলা অনিয়ম-অনাচার কখনো মানবিক বোধে, কখনো ব্যাঙ্গাত্মক উপায়ে গল্পে গল্পে তুলে ধরেছেন লেখক। গল্পে গল্পে প্রচলিত শৃঙ্খল ভেঙে দেওয়ার বিদ্রোহের ডাক যেমন দিয়েছেন, আবার শুনিয়েছেন নতুন দিনের আশার কথা।
সৃজন থেকে প্রকাশিত বইটি বইমেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশের ২৮৫ নম্বর স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। দাম ১৮০ টাকা। এ ছাড়া রকমারি-সহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বইটি পাওয়া যাবে।
গত বছরের বইমেলায় সরোজ মেহেদীর করোনায় ভারত ভ্রমণ, বসবাস ও বন্দী জীবনের ভাবনা-দর্শনমূলক বই ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’ সময়ে প্রকাশ হলে তা পাঠক মহলে ব্যাপক সাড়া জাগায়।
সরোজ মেহেদী বলেন, যে জীবন যাপন করছি; যে স্নেহ, প্রীতি, প্রেম নিয়ে আমাদের রোজকার বন্ধন; যে অনাচার আর অবিচারকে সঙ্গী করে এই দেশে আমাদের দিন গুজরান; সে জীবনটার চারপাশ গল্পে গল্পে উঠে এসেছে। কখনো ব্যঙ্গ প্রকাশে, কখনো বিদ্রোহে। কখনোবা মানবিক বোধে। কখনো-সখনো দুয়ারে এসে উঁকি দিয়েছে প্রেম। পুরুষ মানুষ শেষ পর্যন্ত প্রেমিক বলে কথা! তার জীবনে প্রেম বারবার আসে! সেইসব অনুভূতি আর কথাই পাঠক গল্পে গল্পে খুঁজে পাবেন।
‘এই বই শুধু গল্পচ্ছলে বিনোদন দেয় না। পাঠককে নিয়ে যায় ইতিহাসের কাছে। একটি দুঃসময়ের সাক্ষ্য বহন করে এসব গল্প’, যোগ করেন লেখক।
‘মায়াজাল’ বইয়ের গল্পগুলো ২০১১ থেকে ২০২২ সময়ের মধ্যে রচিত। যে সময়টাতে ভীষণভাবে প্রাণবিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হচ্ছিল। এককেন্দ্রিক শাসনের চূড়ায় এসে এই সমাজকে যেন কিছু না বলার, না দেখার বোবায় ধরেছিল। সে সময়টায় লেখক গুটিকয় তাদের একজন; যারা কলমসহ বিক্রি হয়ে যাননি। ফলে প্রতিটি গল্পের পরতে পরতে সেই সমাজ, শাসনচিত্র, শাসক ও মানসচিত্র ফুটে উঠে। কখনো কথক নিজেকে নিজেই ভর্ৎসনা করেন। কখনো আবার তার জবানীতে সমাজপতিরা উঠে আসে ব্যঙ্গাত্মক উপমায়। এ শুধু গল্প নয়। গল্পচ্ছলে এক দশকের ইতিহাসের পাঠও। এই গল্প গল্পের আড়ালে সময়ের অনিবার্য সত্য তুলে ধরে। সময়ের কাছে সময়ের সাক্ষ্য বহন করে নিয়ে চলে। ফলে বহমান কাল ধরতে কখনো কেউ না কেউ এসব গল্পে চোখ তুলে তাকাবে বলে লেখক বিশ্বাস করেন।
এই বইয়ের গল্পের সঙ্গে অন্য গল্পের পার্থক্য হলো, এ গল্প পাঠককে চিরায়ত আনন্দের সঙ্গে ইতিহাসেরও পাঠ দেয়। এ গল্প পাঠককে এমন এক দুঃসময়ের সাক্ষ্য দেয় যে সময়টাতে একটা জনপদ অন্ধকারে ঢাকা পড়েছিল।
সরোজ মেহেদী একাধারে একজন একাডেমিশিয়ান, মিডিয়া বিশ্লেষক, গবেষক ও সাহিত্যিক। তিনি বর্তমানে ইউনিভাসির্টি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ-ইউল্যাবের মিডিয়া স্টাডিজ অ্যান্ড জার্নালিজম বিভাগের লেকচারার।
২০১৯ সালে জার্মানি থেকে তুর্কি ভাষায় তার প্রথম বই প্রকাশ হয়। ২০২২ সালে প্রকাশ হয় করোনায় ভারত ভ্রমণ ও বন্দী জীবনের ভাবনা-দর্শনমূলক বই ‘চেনা নগরে অচিন সময়ে’।