Samakal:
2025-12-03@08:04:55 GMT

গাড়িবিলাস

Published: 4th, February 2025 GMT

গাড়িবিলাস

সোমবার প্রকাশিত সমকালের শীর্ষ প্রতিবেদনমতে, এ পর্যন্ত সরকারিভাবে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা নিয়ে গাড়ি কিনেছেন ৪ হাজার ২০০ আমলা। এ সত্ত্বেও বেশির ভাগ কর্মকর্তা অবৈধভাবে সরকারি গাড়ি ব্যবহার করছেন। এতে প্রতি মাসে চালক, রক্ষণাবেক্ষণ ও আনুষঙ্গিক খরচ হচ্ছে ২১ কোটি টাকা। সে হিসাবে বার্ষিক খরচ দাঁড়ায় ২৫২ কোটি টাকা। 

২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ সরকার সচিবদের জন্য গাড়ি ক্রয়ে সুদমুক্ত ঋণ সুবিধা চালু করে। মূলত আমলাদের বাগে আনতে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাদের জন্য নানা সুবিধার বন্দোবস্ত করেছিলেন। এটি ছিল তারই ধারাবাহিকতা। প্রতিবেদনে সাবেক এক সচিব এ নীতিকে ঘুষ হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। যখন গণঅভ্যুত্থানের প্রতিনিধিত্বকারী সরকারের উপদেষ্টাদের বিরুদ্ধে একই অভিযোগ ওঠে, তখন তা অত্যন্ত বেদনা ও হতাশার।

প্রতিবেদনমতে, উপদেষ্টাদের কারও কারও বিরুদ্ধে তিন-চারটি গাড়ি ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ এবং মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম দুটি গাড়ি ব্যবহার করছেন। তাঁর জন্য চালক বরাদ্দ রয়েছে ৩ জন। অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ একাই ব্যবহার করছেন তিনটি গাড়ি। এভাবে অনেকেই একাধিক গাড়ি ব্যবহার করছেন, যা আইন ও নৈতিকতার পরিপন্থি।

অর্থ সচিব, খাদ্য সচিব, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ সচিব, ডাক ও টেলিযোগাযোগ সচিব এবং তাদের পিএস বেআইনিভাবে আলাদা গাড়ি ব্যবহার করছেন। অন্যান্য মন্ত্রণালয়ের সচিব, অতিরিক্ত সচিব, যুগ্ম সচিব ও উপসচিবদের বিরুদ্ধেও এ অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া পরিবারের জন্য রেখেছেন আলাদা যানবাহন। 

একটি মিথ্যা হাজার মিথ্যার জন্ম দেয়। তেমনিভাবে একটি অসৎ পন্থা আরও বহু অসততার দিকে ঠেলে দেয়। এ কারণে পরিবহন পুল থেকে সচিবদের জন্য গাড়ি সরবরাহ নীতি বন্ধ হওয়ার পরও বিভিন্ন অজুহাতে মন্ত্রণালয়গুলো গাড়ি কেনা বাড়িয়েছে। সুতরাং, প্রত্যাশিতভাবে আওয়ামী সরকার গাড়ি কেনার ক্ষেত্রে সুদমুক্ত যে ঋণ সুবিধা চালু করেছিল, তা রাষ্ট্রীয় তহবিল তছরুপের পথ প্রশস্ত করেছে। অর্থাৎ সদিচ্ছা ও স্বচ্ছতা না থাকায় একটি দুর্নীতি অন্যান্য দুর্নীতির পথ উন্মুক্ত করেছে। এই তো, ২০১৭ সাল থেকে উপসচিবদেরও একই ঋণ সুবিধা দেওয়া শুরু হয়। প্রতিবেদনমতে, শুরুতে গাড়ি কিনতে ২০ লাখ এবং চালক, তেল বাবদ ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ২০১৭ সালে গাড়ি বাবদ ৩০ লাখ এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ৫০ হাজার টাকা বাড়ানো হয়। 
গবেষক ও সাবেক আমলা আকবর আলি খান ‘পরার্থপরতার অর্থনীতি’ গ্রন্থে সমাজের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়া দুর্নীতিকে ‘সামগ্রিক কাঠামোগত’ সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তাঁর মতে, এ ধরনের দুর্নীতি নিরন্তর প্রতিক্রিয়া বা চেইন রিঅ্যাকশন সৃষ্টি করে। ‘এক ধরনের দুর্নীতি অন্য ধরনের দুর্নীতির জন্ম দেয়, এক খাত হতে দুর্নীতি অন্য খাতে সংক্রমিত হয়।’ সচিবদের পর উপসচিবদের ঋণ সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রেও তাঁর এ মন্তব্য প্রযোজ্য। 

বাংলাদেশ এখন পাঁচ দশকের রাষ্ট্রীয় অব্যবস্থাপনা ও দু্‌র্নীতির কবলে নিমজ্জিত। কাঠামোগত দুর্নীতির কারণে পুরো ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। এ পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হলে আমাদের দরকার নতুন রাজনৈতিক কাঠামো, যা ‘শুয়রের বাচ্চাদের’ অর্থনীতি থেকে বেরিয়ে আসবে। রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেই এসব জঞ্জাল মুক্ত করা সম্ভব। তবে সেই আশা এখনও বহুদূর।
আমলা ও উপদেষ্টাদের গাড়িবিলাস নিয়ে যে প্রতিবেদন দেখা যাচ্ছে, তা স্পষ্টত গণভ্যুত্থানের ‘স্পিরিট’-এর পরিপন্থি। ইতোমধ্যে কয়েকটি বিষয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সমালোচনা উঠলে সরকার তাদের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনা করেছে। আশা করি, গাড়ি বরাদ্দে যেসব অব্যবস্থাপনা রয়ে গেছে, সেগুলোর শিগগিরই নিরসন হবে। 

ইফতেখারুল ইসলাম: সহসম্পাদক, সমকাল
Iftekarulbd@gmail.

com 
 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব যবহ র করছ ন ঋণ স ব ধ উপদ ষ ট ত কর ছ র জন য সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

বিইউপিতে এমডিএস-প্রফেশনাল প্রোগ্রামে ভর্তির সুযোগ

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ বিভাগে ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষে মাস্টার্স অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজ (এমডিএস-প্রফেশনাল) প্রোগ্রামে ভর্তির প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ১৬ মাস মেয়াদি এমডিএস (প্রফেশনাল) প্রোগ্রামের ১২তম ব্যাচে ভর্তির জন্য আবেদন আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহী প্রার্থীরা ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আবেদন করতে পারবেন। আবেদন ফি এক হাজার টাকা।

ভর্তি আবেদনের যোগ্যতা

আগ্রহী প্রার্থীকে ইউজিসি অনুমোদিত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যেকোনো বিষয়ে চার বছর মেয়াদি স্নাতক (সম্মান) ডিগ্রিধারী হতে হবে।

বিএ–বিএস (পাস) বা সমমান ডিগ্রিধারীদের ক্ষেত্রে উন্নয়নসংশ্লিষ্ট বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

সশস্ত্র বাহিনীর কর্মকর্তা–সদস্য, যাঁদের উপরিউক্ত কোনো ডিগ্রি রয়েছে, তাঁরাও আবেদন করতে পারবেন। বিএ–বিএস (পাস) ডিগ্রিধারী প্রার্থীদের সশস্ত্র বাহিনীতে ৫ (পাঁচ) বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।

ন্যূনতম জিপিএ–২.৫০ অথবা দ্বিতীয় শ্রেণি বা বিভাগ থাকতে হবে।

ভর্তি পরীক্ষা ও ভাইভা

ভর্তির জন্য আবেদনকারীদের ১০০ নম্বরের একটি ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে হবে (লিখিত ৮৫ নম্বর ও ভাইভা ১৫ নম্বর)।

এ পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের ইংরেজি ভাষা ও ব্যাকরণ, গাণিতিক ও তথ্য বিশ্লেষণ দক্ষতা, সাধারণ জ্ঞান ও সমসাময়িক বিষয়াদি সম্পর্কে জ্ঞান মূল্যায়ন করা হবে।

ভাইভার সময় সব মূল একাডেমিক সার্টিফিকেট, মার্কশিট বা ট্রান্সক্রিপ্টস ও অ্যাডমিশন টেস্টের অ্যাডমিট কার্ড সঙ্গে রাখতে হবে।

লিখিত ভর্তি পরীক্ষা ও ভাইভার ফলাফলের ভিত্তিতে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হবে।

প্রোগ্রামের খরচ

প্রোগ্রামের মোট খরচ ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ভর্তি ফি, রেজিস্ট্রেশন ফি ও সেমিস্টার ফি বাবদ ৩৯ হাজার ৬০০ টাকা ভর্তির সময় দিতে হবে। এ ছাড়া দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেমিস্টারে কোর্স ও অন্যান্য ফি বাবদ ২৭ হাজার ৪০০ টাকা করে এবং চতুর্থ সেমিস্টারে কোর্স ও থিসিস বা প্রজেক্ট পেপারস ফি বাবদ ৩৫ হাজার ৬০০ টাকা দিতে হবে।

আরও পড়ুনবিইউপি ভর্তি আবেদনের সময় বৃদ্ধি০১ ডিসেম্বর ২০২৫

জেনে রাখুন

১৬টি কোর্স ও থিসিস বা প্রজেক্ট পেপারসহ মোট ৫২ ক্রেডিট ঘণ্টার বিশেষায়িত পাঠ্যক্রম।

ক্লাস ও পরীক্ষা হবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে বেলা ১টা পর্যন্ত (৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনে অনুষ্ঠিত হবে)।

শিক্ষার মাধ্যম: ইংরেজি।

আবেদনপ্রক্রিয়া: ওয়েবলিংক থেকে অনলাইনে ফরম পূরণ করে আবেদন করতে হবে।

আবেদনে গুরুত্বপূর্ণ তারিখ

আবেদনপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৫ (বর্ধিত)।

লিখিত ভর্তি পরীক্ষার তারিখ ও সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত।

ভাইবার তারিখ ও সময়: ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫, সকাল ১০টা থেকে।

ভর্তি কার্যক্রম: ১ থেকে ১২ জানুয়ারি ২০২৬।

ক্লাস শুরু: ২৩ জানুয়ারি ২০২৬ থেকে।

ভর্তি বিজ্ঞপ্তি

আরও পড়ুনবিনা মূল্যে গুগলের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক কোর্স, আবেদনসহ জেনে নিন সব০২ ডিসেম্বর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ