বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে জিলাপি খেতে চাওয়া কিশোরগঞ্জের ইটনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। প্রত্যাহার করা হয়েছে তাকে।

রাত পৌনে আটটার দিকে কিশোরগঞ্জ পুলিশ সুপার মোহাম্মদ হাছান চৌধুরী বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অফিস আদেশে ওই ওসিকে প্রত্যাহার করে জেলা পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে।

হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজের টাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক নেতার কাছে জিলাপি খেতে চেয়েছিলেন ইটনা থানার ওসি মো.

মনোয়ার হোসেন। এ–সংক্রান্ত একটি অডিও রেকর্ড সোমবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে সমালোচনা শুরু হয়।

কথোপকথনে ওসি মনোয়ার হোসেনকে বলতে শোনা যায়, ‘সেফটি সিকিউরিটি দিলাম তো সারা জীবন। তোমরা যে ১৮ লাখ টাকার কাজ করে ১০ লাখ টাকা লাভ করলা, ১০ টাকার জিলাপি কিনে তো পাবলিকেরে খাওয়ালে না। খাইয়া যে একটু দোয়া কইরা দেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের। তোমার জায়গায় আমি হইলে সুদের ওপরে টাকা আইনা আগের জিলাপি খাওয়াইতাম। দোয়াডা হইল সবার আগে।’ 

অডিওতে ওসিকে আরও বলেন, ‘ঠিক আছে, তাহলে জিলাপির অপেক্ষায় রইলাম, নাকি?’

এ সময় অপর পক্ষ থেকে বলতে শোনা যায়, ‘শুধু জিলাপি না, অন্য কিছু?’ ওসি বলেন, ‘না না, জিলাপি হইলেই হইব। এক প্যাঁচ, আধা প্যাঁচ জিলাপি দিলে হইব। বিভিন্ন পারপাসে হইলে পাবলিক খাইল আর কী, বোঝ না?’ 

এ সময় ছাত্রনেতা বলেন, ‘বিলটিল পাই, একটা অ্যামাউন্ট দেখবনে।’ এ কথার উত্তরে ওসি বলেন, ‘ঠিক আছে।’

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওসির সঙ্গে মুঠোফোনে ওই কথোপকথনে অপর প্রান্তে ছিলেন আফজাল হুসাইন ওরফে শান্ত। তিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ইটনা উপজেলার সংগঠক। তিনি ইটনা সদর ইউনিয়নের ফসলরক্ষা বাঁধের কাজ করেছেন।

কিশোরগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, মো. নাজমুল ঠাকুর নামে ইটনা সদর ইউনিয়নের বলদা খেয়াঘাট থেকে শেরপুর সেতু পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮০ মিটার ডুবন্ত বাঁধ নির্মাণ প্রকল্প বাঁধ মেরামতের একটি কাজ রয়েছে। এর প্রাক্বলিত মাটির পরিমাণ ৯ হাজার ৬ দশমিক ৫৩ ঘন মিটার। প্রাক্বলিত ব্যয় ১৯ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। আফজাল হুসাইনের দাবি এই কাজই তিনি করেন। নাজমুল ঠাকুর তার ব্যবসায়ী পার্টনার। 

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পলাশ-স্মৃতির বিয়ে স্থগিত: মুখ খুললেন গায়কের বোন পলক

বলিউডের বিখ্যাত প্লেব্যাক গায়ক, সংগীত পরিচালক পলাশ মুচ্ছাল ও ভারতের নারী ক্রিকেটার স্মৃতি মান্ধানা। দীর্ঘ পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর বিয়ের দিন চূড়ান্ত করেন এই যুগল। গায়েহলুদ, সংগীত অনুষ্ঠানও সম্পন্ন করেন। টানা কয়েক দিন বিয়ের আনন্দে মেতেছিলেন তারা। 

২৩ নভেম্বর, সাঙ্গলির সামডোলের মান্ধানার ফার্ম হাউজে পলাশ-স্মৃতির বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেদিন দুপুরে হঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হয় স্মৃতির বাবা শ্রীনীবাস মান্ধানার। পরে স্মৃতির ম্যানেজার তুহিন মিশ্রা জানান, স্মৃতি-পলাশের বিয়ে স্থগিত করা হয়েছে।

আরো পড়ুন:

‘ভারত-বাংলাদেশ অর্থনৈতিক সম্পৃক্ততা ৩৫-৩৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়াতে পারে’

ভারতে হামলার ছক, দুই বাংলাদেশিসহ ৫ জেএমবি সদস্যের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড

স্মৃতির বাবা অসুস্থ হওয়ার পর স্মৃতির হবু বর পলাশ মুচ্ছালও অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাকেও হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে চিকিৎসা নিয়ে হাসপাতাল ত্যাগ করেন এই গায়ক। এসব ঘটনার রেশ কাটার আগেই ইনস্টাগ্রামে এক নারীর সঙ্গে গায়ক পলাশের চ্যাটের (কথোপকথন) স্ক্রিনশট সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস হয়, যা দ্রুত সময়ের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। এ কথোপকথন থেকে জানা যায়, ওই নারীর নাম মেরি ডিকস্টা। তারপর নেটিজেনরা পলাশকে নিয়ে কটুক্তি শুরু করেন। ফিসফাস শুরু হয়—একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর খবর সামনে আসার পর বিয়ে ভেঙে দিয়েছেন স্মৃতি।

প্রতারণার অভিযোগে নেট দুনিয়ায় জোর চর্চা চললেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন গায়ক পলাশ। এ নিয়ে টুঁ-শব্দ করেননি তার হবু স্ত্রী স্মৃতি। মাঝে গুঞ্জন চাউর হয়, পলাশ-স্মৃতির বিয়ের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ৭ ডিসেম্বর। পরে স্মৃতির ভাই এই গুঞ্জন উড়িয়ে দেন। এবার বিয়ে নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন পলাশের বোন প্লেব্যাক গায়িকা পলক মুচ্ছাল। 

পলক ফিল্মফেয়ারকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। এ আলাপচারিতায় জানতে চাওয়া হয়, বর্তমান পরিস্থিতি কীভাবে সামাল দিচ্ছেন? জবাবে এই গায়িকা বলেন, “আমি মনে করি, পরিবারগুলো খুবই কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আপনি যেমন বললেন, আমিও সেটাই পুনরায় বলতে চাই যে, ‘আমরা এই সময়ে ইতিবাচকতায় বিশ্বাস রাখতে চাই। যতটা পারি আমরা ইতিবাচকতা ছড়িয়ে দিতে চাই। আমরাও শক্ত থাকার চেষ্টা করছি।” 

তবে পলাশ-স্মৃতির বিয়েটা শেষপর্যন্ত হবে কি না, হলে কবে হবে, তা নিয়ে কোনো তথ্য জানাননি পলক। ফলে এ জুটির ভক্ত-অনুরাগীরা উদ্বেগ কাটিয়ে উঠতে পারছেন না।  

এর আগে গায়ক পলাশের মা অমিতা হিন্দুস্তান টাইমসকে বলেন, “স্মৃতির বাবার সঙ্গে খুবই গভীর সম্পর্ক পলাশের। বলা যায়, স্মৃতির থেকেও তারা দু’জন বেশি ঘনিষ্ঠ। যখন তিনি অসুস্থ হলেন, তখন স্মৃতির আগে পলাশই সিদ্ধান্ত নেয় যে, স্মৃতির বাবা সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত তারা বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা করবে না।”  

স্মৃতির বাবা অসুস্থ হওয়ার পর পলাশ অনেক কেঁদেছেন বলে দাবি অমিতার। তার ভাষায়, “গায়েহলুদ হয়ে যাওয়ার পর আমরা তাকে বাইরে যেতে দিইনি। পলাশ অনেক কেঁদেছে। কাঁদতে কাঁদতে হঠাৎ তার শরীর খারাপ হয়ে যায়। তাকে চার ঘণ্টা হাসপাতালে রাখতে হয়। স্যালাইন দেওয়া হয়, ইসিজিসহ আরো বেশ কিছু পরীক্ষা করানো হয়। সবকিছু স্বাভাবিক আসে। কিন্তু চাপ অনেক বেশি।”  

গুঞ্জন রয়েছে, একাধিক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়ানোর কারণে স্মৃতির সঙ্গে বিয়ে ভেঙে গেছে। এজন্য বিয়ে স্থগিত করা হয়েছে। তবে এসব গুঞ্জন উড়িয়ে পলাশের মা অমিতা বলেন, “হঠাৎ স্বাস্থ্যগত সমস্যার কারণে পলাশ ও স্মৃতি তাদের বিয়ে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঘটনাটি দুজনকেই মানসিকভাবে নাড়া দিয়েছে।”  

সর্বহিত হাসপাতাল ও ক্লিনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারে ভর্তি ছিলেন স্মৃতির বাবা শ্রীনীবাস। গত ২৫ নভেম্বর সকালে হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফিরেন তিনি। শারীরিকভাবে সুস্থ রয়েছেন। 

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পলাশ-স্মৃতির বিয়ে স্থগিত: মুখ খুললেন গায়কের বোন পলক