কয়লার দাম নিয়ে দ্বন্দ্ব, আদানির সঙ্গে বসবে পিডিবি
Published: 3rd, May 2025 GMT
ভারতের আদানি গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত কয়লার দাম নিয়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) মতানৈক্য রয়েছে। এ নিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটি শিগগির আলোচনায় বসতে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার সূচকের (কোল ইনডেক্স) গড় মূল্য হিসাব করে আদানি কয়লার দাম ধরে। এ পদ্ধতিতে কয়লার দাম বেশি হয় বলে দাবি পিডিবির। অথচ সংস্থাটি সমমানের অন্য কেন্দ্রের মতো যে দেশের কয়লা, সেখানকার দাম অনুসারে বিল পরিশোধ করে। এতে আদানির দাবিকৃত বিল আর পিডিবির পরিশোধ করা অর্থের মধ্যে একটা পার্থক্য থাকছে। এই বিরোধ নিয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির মধ্যে একাধিকবার চিঠি দেওয়া-নেওয়া এবং আলোচনা হয়েছে। তবে কোনো সমাধান হয়নি।
পিডিবির এক কর্মকর্তা বলেন, পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রর সঙ্গে পিডিবির বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে কয়লা কেনায় ছাড়ের বিষয়টি রয়েছে। পায়রা ইন্দোনেশিয়া থেকে কয়লা কেনার দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে দামে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ পর্যন্ত ছাড় পায়, যার সুবিধা প্রকৃতপক্ষে পিডিবি ভোগ করে। রামপালও বছরব্যাপী কয়লা কেনার সময় ছাড়ের শর্তেই চুক্তি করে। আদানি নিজের খনির কয়লা সরবরাহ করে। তার চুক্তিতে ছাড়ের বিষয়টি নেই। ফলে কয়লার দাম বেশি নিচ্ছে ভারতীয় কোম্পানিটি।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, অন্য সব বিদ্যুৎকেন্দ্র কয়লার কেনা দাম ধরেই বিল করে। তবে চুক্তি অনুসারে আদানির কয়লার দাম নির্ধারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার সূচকের গড় মূল্য হিসাব করে। আন্তর্জাতিক দুই সূচকে বিভিন্ন মানের কয়লার দাম প্রকাশ করা হয়। দুই সূচকে উন্নতমানের কয়লার দামের গড় হিসাব করে প্রতিষ্ঠানটি। তা থেকে তারা যে মানের কয়লার ব্যবহার করে তার দাম বের করে। কিন্তু ব্যবহৃত কয়লার প্রকৃত দাম হিসাবে নিলে প্রতি টনে মূল্য ২০ থেকে ২৫ ডলার কমবে।
জানা গেছে, আওয়ামী লীগ সরকার ঠিকমতো বিল পরিশোধ না করায় আদানির বকেয়া দুই বিলিয়ন ডলারে পৌঁছে। তবে অন্তর্বর্তী সরকার আদানিকে মাসিক বিলের পাশাপাশি বকেয়াও পরিশোধ করছে। এতে বকেয়ার পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমে এসেছে বলে শুক্রবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। আদানির কর্মকর্তাদের বরাতে বার্তা সংস্থাটি জানিয়েছে, আদানির বর্তমান বকেয়ার পরিমাণ ৯০০ মিলিয়ন ডলার।
তবে পিডিবির চেয়ারম্যান রেজাউল করিম গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় সমকালকে জানান, তাদের হিসাবে বকেয়ার পরিমাণ ৯০০ মিলিয়ন ডলার হবে না। তবে বর্তমান বকেয়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ জানাতে পারেননি তিনি। চেয়ারম্যান বলেন, আদানি যেভাবে কয়লার দাম হিসাব করে তা নিয়ে আমাদের আপত্তি রয়েছে। যে দেশ থেকে কয়লা কেনা হয় সেখানকার দাম ধরে বিল পরিশোধ করি। কিন্তু আদানি আন্তর্জাতিক সূচক মূল্যের গড় ধরে কয়লার দাম হিসাব করে। ফলে কয়লার দামের পার্থক্য থেকে যায়। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য আদানি চিঠি দিয়েছে। তাদের সঙ্গে দ্রুত বসব। এক বৈঠকে সমস্যার সমাধান হবে না হয়তো। তবে আমরা আলোচনা চালিয়ে যাব।
২০১৭ সালে ভারতের ঝাড়খণ্ড রাজ্যের গোড্ডা জেলায় ১ হাজার ৪৯৮ মেগাওয়াট সক্ষমতার একটি কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের চুক্তি করে সরকার। একই বছর আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ কেনার চুক্তি করে পিডিবি। চুক্তি অনুযায়ী, এই কেন্দ্র থেকে ২৫ বছর বিদ্যুৎ কেনা হবে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কয়ল কয়ল র দ ম ন র কয়ল র হ স ব কর বক য় র পর ম ণ পর শ ধ
এছাড়াও পড়ুন:
ডাচ্–বাংলা ব্যাংকের নিট মুনাফা কমে প্রায় অর্ধেকে নেমেছে
বেসরকারি খাতের ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের পরিচালন মুনাফায় ২ হাজার কোটি টাকার রেকর্ড অতিক্রম করলেও নিট মুনাফায় বড় ধাক্কা খেয়েছে। ব্যাংকটি বিদায়ী বছরে ৪৭৩ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছে, ২০২৩ সালে যা ছিল ৮০২ কোটি টাকা। এর পরিপ্রেক্ষিতে ব্যাংকটি শেয়ারধারীদের ১০ শতাংশ নগদ ও ১০ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে।
ব্যাংকটি সূত্রে জানা গেছে, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক ২০২৪ সালে ২ হাজার ২৮৫ কোটি টাকা পরিচালন মুনাফা করে। ২০২৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৪৩১ কোটি টাকা। ওই বছর শেষে ব্যাংকটির নিট মুনাফা ছিল ৮০২ কোটি টাকা; যা ছিল দেশীয় ব্যাংকগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। তবে গত বছরে ব্যাংকটির নিট মুনাফা হয়েছে ৪৭৩ কোটি টাকা।
ব্যাংকটি মূল্য সংবেদনশীল তথ্যে জানিয়েছে, ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি সংরক্ষণ করায় মুনাফা কমে গেছে; যা ভবিষ্যতে ব্যাংকটির স্বাস্থ্য উন্নতি করতে ভূমিকা রাখবে।
এ সম্পর্কে জানতে চাইলে ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল কাশেম মো. শিরিন প্রথম আলোকে বলেন, এবার পরিচালন মুনাফা অনেক হলেও চাহিদামতো ও অতিরিক্ত নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখা হয়েছে। ভবিষ্যতের ঝুঁকি চিন্তা করে ব্যাংকের ভিত্তি শক্তিশালী করার পদক্ষেপ হিসেবে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ জন্য মুনাফা কমে গেছে। তবে শেয়ারধারীদের ঠিকই ২০ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হয়েছে।