খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের (খুবি) সহকারী ছাত্রবিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদের ওপর হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষার্থীর সনদ স্থগিতসহ বিভিন্ন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। এছাড়া তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

শনিবার (৩ মে) বিকেলে খুবি উপাচার্য অধ্যাপক ড.

মো. রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

হামলায় অভিযুক্ত মোবারক হোসেন নোমান বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের ১৮তম ব্যাচের অনিয়মিত শিক্ষার্থী।

আরো পড়ুন:

খুবি সাংবাদিক সমিতির নেতৃত্বে রমিন-মিরাজ

খুলনায় মোটরসাইকেল থামিয়ে যুবককে গুলি করে হত্যা

সিদ্ধান্তের বিষয়টি নিশ্চিত করে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম জানান, অভিযুক্ত ছাত্র মোবারক হোসেন নোমান খুবির একজন অনিয়মিত ছাত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদের ওপর অতর্কিতে হামলার ঘটনায় শনিবার বিকেলে সিন্ডিকেটের জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সিন্ডিকেট ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে নিন্দা প্রস্তাবসহ তার ছাত্রত্ব সাময়িক স্থগিত, ক্যাম্পাসে প্রবেশ নিষিদ্ধ, স্নাতক পর্যায়ের সনদ স্থগিত এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়েরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এছাড়াও উদ্ভূত ঘটনা তদন্তের জন্য তিন সদস্যের কমিটি গঠন করে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে।

তিনি আরো জানান, অভিযুক্ত ওই ছাত্রের বিরুদ্ধে এর আগেও অনেক গুরুতর অভিযোগ ছিল। সেসব অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু তাতেও সে সংশোধন হয়নি।

শুক্রবার (২ মে) রাত সাড়ে ৯টার দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের সামনে অভিযুক্ত নোমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী ছাত্রবিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদের ওপর অতর্কিতভাবে হামলা চালান। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে তাকে উদ্ধার করে খুলনা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার রাতেই ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীরা হামলাকারী মোবারক হোসেন নোমানকে আজীবনের জন্য ক্যাম্পাসে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন। শনিবারও (৩ মে) তার শাস্তির দাবিতে শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে মিছিল করেন।

ঢাকা/নুরুজ্জামান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন য র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করল ভারত, নিয়ন্ত্রণরেখায় বড় সংঘর্ষ

ভারতের উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে বলে দাবি করেছে বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ)। তবে ওই পাকিস্তানি সীমান্তরক্ষীর পরিচয় প্রকাশ করেনি তারা।

এদিকে পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটকের দাবি করার পর কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণরেখায় (এলওসি) পাকিস্তান ও ভারতের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এটিকে সাম্প্রতিক সময়ে উভয় দেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ বলে মনে করা হচ্ছে।

রোববার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

সংবাদমাধ্যমটি বলছে, ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) শনিবার রাজস্থানের আন্তর্জাতিক সীমান্ত থেকে এক পাকিস্তানি রেঞ্জারকে আটক করেছে। এ ঘটনা এমন সময় ঘটল, যখন পাকিস্তান গত ২৩ এপ্রিল বিএসএফ কনস্টেবল পূর্ণম কুমার সাহুকে আটক করে। পাঞ্জাবের ফিরোজপুর সেক্টরে কৃষকদের পাহারা দেওয়ার দায়িত্বে ছিলেন সাহু।

এদিকে আটক হওয়া পাকিস্তানি রেঞ্জারের পরিচয় এখনও প্রকাশ করা হয়নি। তিনি বর্তমানে বিএসএফের রাজস্থান ফ্রন্টিয়ারের হেফাজতে আছেন।

ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সীমান্তে ভুল করে পার হওয়া সৈন্যদের ফেরত দেওয়ার একটি প্রচলিত প্রক্রিয়া আছে। কিন্তু সম্প্রতি উত্তেজনা বেড়ে যাওয়ায় পাকিস্তান সাহুকে ফেরত দিচ্ছে না, ফলে ভারতও পাকিস্তানি রেঞ্জারের ফেরতের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি।

এদিকে এনডিটিভির প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, রেঞ্জারকে আটক করার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাকিস্তানের সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণরেখার (এলওসি) বিভিন্ন সেক্টরে বিনা উসকানিতে গুলি চালাতে শুরু করে। এটি ১০ দিন ধরে চলা সংঘর্ষের ধারাবাহিকতার অংশ।

ভারতীয় সেনাবাহিনীর বেশ কয়েকটি সূত্র জানিয়েছে, কাশ্মিরের কুপওয়ারা, বারামুলা, পুঞ্চ, রাজৌরি, মেন্ধর, নৌশেরা, সুন্দরবানি এবং আখনুর সেক্টর জুড়ে এই হামলা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনীও উপযুক্ত জবাব দিয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

এটি সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে সবচেয়ে বড় সংঘর্ষ, যেখানে একসঙ্গে সবচেয়ে বেশি পাকিস্তানি পোস্ট অংশ নেয়। অবশ্য এখনও পর্যন্ত কোনও প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে বিএসএফ সদস্য সাহুর মুক্তির জন্য একাধিক বৈঠক হলেও পাকিস্তান এখনও কোনও সময়সীমা বা অবস্থান স্পষ্ট করেনি।

এই গোলাগুলির ঘটনা এমন এক সময়ে ঘটল যখন কয়েকদিন আগেই জম্মু ও কাশ্মিরের পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছেন। ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার পর কাশ্মিরে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।

সম্প্রতি অধিকৃত কাশ্মিরে পর্যটকদের ওপর বন্দুকধারীদের হামলার জেরে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে পৌঁছেছে।

এদিকে পেহেলগামের ভয়াবহ ওই হামলার জেরে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। দুই দেশের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত। জবাবে সিমলা চুক্তি স্থগিত ও ভারতীয় বিমানের জন্য নিজেদের আকাশসীমা বন্ধের ঘোষণা দেয় পাকিস্তান।

এই পরিস্থিতির মধ্যে পাকিস্তান শনিবার “আবদালি” ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষামূলক উৎক্ষেপণ করেছে। ভারতের কর্মকর্তারা এটিকে “খোলামেলা উসকানি” বলে মন্তব্য করেছেন। ৪৫০ কিমি রেঞ্জের এই ক্ষেপণাস্ত্র পাকিস্তান “সিন্ধু মহড়ার” অংশ হিসেবে পরীক্ষা করেছে বলে জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ