ছোট্ট সিফাতের মরদেহ উদ্ধার, খোঁজ মেলেনি সাদাবের
Published: 12th, July 2025 GMT
ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ে সিফাত (১১) ও সাদাব (৪) নামে দুই শিশু নিখোঁজের একদিন পর পরিত্যক্ত একটি ডোবা থেকে সিফাতের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপর শিশু সাদাবের সন্ধান মেলেনি এখনও।
শনিবার চরশাখচূড়া গ্রাম থেকে নিখোঁজ ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম।
পরিবারের সদস্যদের দাবি, পাগলা থানার চরশাখচূড়া ও দিঘীরপাড় গ্রামে শুক্রবার দুপুরে খেলতে গিয়ে নিখোঁজ হয় দুই শিশু।
নিহত শিশুদের পরিবার সূত্রে জানা যায়, সৌদি প্রবাসী নূর ইসলামের ছেলে ও চরশাখচূড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র সিফাত শুক্রবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল। দিনভর তার স্বজনরা সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেন। তবে কোথাও তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শিশু সিফাতের নিখোঁজ হওয়ার ঘটনা প্রকাশ করেন স্বজনরা। এই সুযোগে এক প্রতারক চক্র অপহরণের কথা বলে নিহত শিশুটির পরিবারের কাছ থেকে মুক্তিপণের নামে কিছু টাকা আদায়ও করে নিয়ে যায়।
শনিবার সকাল ৭টার দিকে শিশুটির বাড়ি থেকে আনুমানিক ১৫০ গজ দুরে একটি পরিত্যক্ত পুকুরে তার মরদেহ ভাসতে দেখে এলাকাবাসী। পরে তারা পাগলা থানা পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। তবে, সুরতহাল রিপোর্ট অনুযায়ী মরদেহের শরীরে দৃশ্যমান কোনও আঘাতের চিহ্ন ছিল না।
নিহত শিশু সিফাতের মা সাবিনা (৪০) অভিযোগ করে বলেন, তার ছেলেকে খুন করা হয়েছে। তাদের কোনও শক্র নেই। তবে গ্রামের শহিদুলের ছেলে আরমান তার কলেজ পড়ুয়া মেয়ের সঙ্গে বাড়িতে এসে ঝগড়া করে এবং তাদের ক্ষতি করার হুমকি দিয়ে যাচ্ছিলেন।
এ ঘটনার পর থেকে আরমান গা ঢাকা দিয়েছেন বলে এলাকাবাসী জানান।
নিহত শিশু সিফাতের মামা জিসান (৩০) জানান, আমার ভাগিনা নিখোঁজ হওয়ার পর যখন খোঁজাখুঁজি করছি, এমন সময় আমার দুলাভাই নুর ইসলাম প্রবাস থেকে ফোন করে বলেন, উনার কাছে ২০ হাজার টাকা চেয়েছে ছেলেকে জীবিত উদ্ধারের জন্য। আমাকে অপহরণকারীদের ফোন নম্বর দিলে আমি ওদের সাথে যোগাযোগ করি এবং তাদের দেওয়া নম্বরে প্রথমে ২ হাজার টাকা বিকাশ করি। পরে অপহরণকারীরা উল্টা-পাল্টা কথা বললে আমি আর টাকা দেইনি।
পুলিশ জানায়, শিশু সিফাতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।
অপরদিকে নান্দাইল উপজেলার জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নের বারঘুরিয়া গ্রামের সৌদি প্রবাসী আল আমিনের সাড়ে চার বছর বয়সী ছেলে সাদাব গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার দিঘীরপাড় গ্রামে তার মায়ের সঙ্গে নানার বাড়িতে থাকতো। শুক্রবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সে ঘর থেকে বের হয় খেলার জন্য।
শিশুটির পরিবার জানায়, গত দুইদিন ধরে সে নিখোঁজ। বাড়ির আশেপাশের সব পুকুর ও সম্ভাব্য সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও শিশুটির খোঁজ না পেয়ে চরম উৎকণ্ঠায় আছে শিশুটির পরিবার।
শিশুটির মা সুমাইয়া আক্তার (২৩) দাবি করেন, তার একমাত্র ছেলেকে অপহরণ করা হয়েছে। এ ঘটনায় শিশুটির নানা সুলতান মিয়া পাগলা থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছে।
পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ ফেরদৌস আলম বলেছেন, শিশু সিফাতের ঘটনা অপহরণ ও মুক্তিপণের কোনও বিষয় নয়। এখানে পূর্বশত্রুতাসহ সম্ভাব্য বেশ কয়েকটি কারণ নিয়ে আমরা তদন্ত করছি। নিখোঁজ শিশু সাদাবকে উদ্ধারের চেষ্টা চলমান রয়েছে।
এদিকে, একই দিনে দুইজন শিশু নিখোঁজ হওয়া এবং একজন শিশুর মরদেহ উদ্ধার হওয়ায় এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ত র মরদ হ র পর ব র ন হত শ শ
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহের শশী লজে এক বেলা
২ / ৯প্রাসাদের সামনের অংশজুড়ে রয়েছে বাগান