অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নির্যাতনের অভিযোগ করলেন স্ত্রী
Published: 12th, July 2025 GMT
গোপালগঞ্জে স্বামী অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা এস এম তাজউদ্দিনের বিরুদ্ধে যৌতুকের দাবিতে মারধর, জীবননাশের হুমকি, প্রতারণার অভিযোগ করেছেন স্ত্রী নওরিন সিদ্দিকা। তবে এই অভিযোগ মিথ্যা বলে জানিয়েছেন এস এম তাজউদ্দিন।
আজ শনিবার (১২ জুলাই) সকাল ১১টায় গোপালগঞ্জ জেলা শহরের মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের বাংলাদেশ মফস্বল সাংবাদিক ইউনিয়ন গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি এ অভিযোগ করেন।
নওরিন সিদ্দিকা লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘‘পরিবারিকভাবে ২০১০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার সিংগাতী গ্রামের মৃত আওয়াল সরকারের ছেলে এস এম তাজউদ্দিনের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমাদের সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। বিয়ের এক বছর পর থেকে যৌতুকের দাবিতে আমার স্বামী তাজউদ্দিন বিভিন্ন প্রক্রিয়া অবলম্বন করে আমাকে নির্যাতন শুরু করেন। আমি সব নির্যাতন আমি সহ্য করে সংসার করেছি। আমার স্বামীর পরকীয়া আমার কাছে ধরা পড়ে যাওয়ায় আমি বাধা দেই। এরপর থেকে শুরু হয় আমার উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন। নির্যাতনের কারণে আমি রক্তাক্ত অবস্থায় বার বার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গোপালগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি। সেই রেকর্ড আমার কাছে আছে।’’
আরো পড়ুন:
মুরাদনগরে নারী নির্যাতন ও ভিডিও ছড়ানোর নেপথ্যে ‘দুই ভাইয়ের বিরোধ’
‘নারী-শিশু নির্যাতন প্রতিরোধে কুইক রেসপন্স টিম মাঠে নামছে’
তিনি অভিযোগ করেন, ‘‘আমার স্বামী ঘরের ভিতরে আটকিয়ে আমার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করেন এবং শ্বাসরুদ্ধ করে মেরে ফেলার চেষ্টা করেন। আশপাশের লোকজন টের পেয়ে ছুটে আসলে আমি বেঁচে যাই।’’
নওরিন সিদ্দিকা বলেন, ‘‘আমার সঙ্গে প্রতারণা করে আমার দুই ছেলেকে ঢাকায় নিয়ে গেছেন। আমার সঙ্গে সন্তানদের যোগাযোগ করতে দেন না।’’ স্বামীর নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে গোপালগঞ্জ আদালতে মামলা করেছেন বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, ‘‘আমার স্বামী গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী এলাকার ডিভোর্সি নারী শেখ আসমা সুলতানাকে বিয়ে করেছেন ২০২৪ সালের ৮ জুলাই। ওই বিয়ে করে তিনি আমার হোয়াটসঅ্যাপে আমাকে ডিভোর্সের কাগজ পাঠিয়েছেন, তাতে তারিখ দেয়া আছে ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪ সাল।’’
নওরিন সিদ্দিকা গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ার উপজেলার দিঘলিয়া গ্রামের শেখ দেলোয়ার হোসেনের মেয়ে। এস এম তাজউদ্দিন চাকরিসূত্রে ঢাকায় অবস্থান করেন।
এ ব্যাপারে এস এম তাজউদ্দিন বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি যৌতুকের জন্য তার (নওরিন সিদ্দিকা) উপর নির্যাতন করিনি বরং উল্টো আমার নামে গোপালগঞ্জ আদালতে তিনটি মামলা দিয়েছেন। একটি মামলায় আমি অব্যাহতি পেয়েছি।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘নওরিন সিদ্দিকা এখন আর আমার স্ত্রী নন। আমি তাকে ডিভোর্স দিয়েছি। তিনি যে সব অভিযোগ এনেছেন, তা পুরোপুরি মিথ্যা।’’
ঢাকা/বাদল/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর নওর ন স দ দ ক ম ত জউদ দ ন আম র স ব ম গ প লগঞ জ
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ