রাউজানে ১২ কোটি টাকায় সড়ক করে দিলেন প্রবাসী
Published: 3rd, May 2025 GMT
রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের কমলার দিঘি- কচুখাইন সড়কটির দুরবস্থা ছিল দীর্ঘদিন। প্রায় ৪ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের কাঁচা সড়কটি অনেক দিন সংস্কার হয়নি। শেষ পর্যন্ত মানুষের কষ্ট লাঘবে এগিয়ে এসেছেন এক প্রবাসী, তিনি তাঁর ব্যক্তিগত খাত থেকে প্রায় ১২ কোটি টাকা খরচ করে সড়কটি পাকা করে দিচ্ছেন। সড়কটি ১৭ থেকে ২১ ফুট পর্যন্ত প্রশস্ত করা হচ্ছে। যা আগে ছিল ১০ থেকে ১২ ফুট। ব্যক্তি উদ্যোগে পাকা সড়ক তৈরি হওয়ায় এলাকার মানুষ দারুণ খুশি।
সড়কটি স্থায়ী ও টেকসই করতে দু’পাশে নির্মাণ করা হচ্ছে প্রতিরক্ষা দেয়াল। বন্যার পানিতে যাতে প্লাবিত না হয় সেজন্য দুই থেকে আড়াই ফুট উঁচু করে ভরাট করে ঢালাই দেওয়া হচ্ছে সড়কে। সড়কজুড়ে বসানো হচ্ছে সড়কবাতি, ক্লোজ সার্কিট (সিসিটিভি ক্যামেরা)। সড়কের দুই পাশে লাগানো হবে এক হাজার খেজুর গাছ। সড়কের ধারে স্থানে স্থানে সুপেয় পানির চাহিদা মেটাতে বসানো হবে ১০টি গভীর নলকূপ। এ ছাড়া সড়কের প্রবেশমুখে স্থাপন করা হবে জনসাধারণের জন্য গণশৌচাগার ও যাত্রীছাউনি। এই কাজে প্রায় ১২ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে ধারণা করছেন ঠিকাদার মফিজুল হক।
সরেজমিন স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সড়কটি পুনর্নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা প্রবাসী ব্যবসায়ী আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। যা সম্পূর্ণ এককভাবে প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের ব্যক্তিগত অর্থ্যায়ণে ব্যয় করা হচ্ছে। তবে এই কাজে কত টাকা ব্যয় হচ্ছে তা প্রকাশ করতে চাননা প্রবাসী ব্যবসায়ীর পরিবার।
আলহাজ মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন ফাউন্ডেশন সূত্রে জানা গেছে, বিগত সময়ে দীর্ঘদিন সড়কটি সংস্কার কাজ না করায় এবং বন্যার পানিতে ডুবে গিয়ে বিভিন্ন স্থানে খাদ হয়ে যায়। এতে যান চলাচলে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। একারণে দীর্ঘস্থায়ী টেকসই সড়ক করার এ উদ্যোগ নেন এলাকার প্রবাসী ব্যবসায়ী মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন। এছাড়া সড়কের স্থানে স্থানে যেসব সেতু- কালভার্ট সংকোচিত ছিলো সেগুলোর দুপাশে বিকল্প সেতু সংযোগ করে প্রশস্ত করা হচ্ছে। গত দুই মাস ধরে চলছে এই সড়ক নির্মাণের কাজ। ২০০ এর বেশী শ্রমিক দিন রাত কাজ করছে যেন দ্রুত সড়কটি তৈরী করে চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া যেতে পারে।
জানতে চাইলে পূর্ব কচুখাইন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক সভাপতি জাহেদুল ইসলাম বলেন, এই সড়কটি দীর্ঘদিন অবহেলিত থাকায় যান চলাচলে দুর্ভোগে ছিলো ৫ থেকে ৭ গ্রামের অন্তত ৩০ হাজার মানুষ। এখন যেভাবে পাথর ঢালায় দেয়া হচ্ছে সেটি দীর্ঘস্থায়ী টেকসই হবে। ব্যক্তি উদ্যোগে এরকম এত বড় ব্যয়ে সড়ক নির্মাণের কাজের রেকর্ড খুবই কম।
৩০ এপ্রিল বুধবার বিকেলে কচুখাইন গ্রামের মোড় হতে ঢালায় কাজ উদ্বোধন করেন এই কাজের উদ্যোক্তা মোহাম্মদ জসিম উদ্দিনের বড় ভাই আলহাজ মুহাম্মদ রফিক। এসময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন তাঁর ভাই আলহাজ মুহাম্মদ মোখতার, আলহাজ মুহাম্মদ আবু তাহের।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রব স ব যবস য় প রব স সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
সড়ক নদীতে দুর্ভোগে ১০ গ্রামের মানুষ
নদীতে বিলীন হয়েছে গ্রামীণ সড়ক। এতে ১০ গ্রামের মানুষ দুর্ভোগে পড়েছেন। ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে তাদের চলাফেরা করতে হচ্ছে।
টুঙ্গিপাড়ার ডুমরিয়া ইউনিয়নে ডুমরিয়া-সড়াবাড়ী সড়কের চিতলিয়া নামক স্থানে গত বুধবার দুপুরে ফাটল ধরে। সড়কটির ২৫০ ফুট শৈলদহ নদীতে বিলীন হয়ে যায়। এতে ১০ গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন।
টুঙ্গিপাড়ার ইউএনও পরদিন বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। দ্রুত সড়ক সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ডুমরিয়ার চিতলিয়া গ্রামের সুধীর বিশ্বাস ও লতা বেগম বলেন, বুধবার থেকে এ সড়ক দিয়ে মানুষ ও যানবাহন চলাচল বন্ধ। ডুমরিয়া, ভৈরবনগর, তারইল, জামাইবাজার, মামারবাজার, চিতলিয়া, সড়াবাড়ী, পাকুরতিয়াসহ ১০ গ্রামের মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করতে পারছেন না। তাদের বাঁশবাড়িয়া হয়ে ১০ থেকে ১৫ কিলোমিটার ঘুরে চলাচল করতে হচ্ছে।
একই গ্রামের রহমত মল্লিক বলেন, শৈলদহ নদীর ভাঙনের কবলে পড়ে গত ৩০ ডিসেম্বর এ সড়কের সেতু ভেঙে যায়। এর চার মাস পর সড়কটি ভেঙে পড়ল। এতে একটি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই পরিবারকে ইউএনও খাদ্যসহ অন্যান্য সহায়তা করেছেন। ভাঙনকবলিত এলাকার অন্তত ২৫টি বসতবাড়ি, গাছপালা, ফসলি জমিসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ইউনিয়নের পানি সরবরাহ লাইন নদীভাঙনের ঝুঁকিতে পড়েছে। তাই দ্রুত নদীভাঙন প্রতিরোধে পদক্ষেপ নিতে হবে। তা না হলে চিতলিয়া গ্রামের মানুষ সহায়সম্পদ হারিয়ে নিঃস্ব হয়ে পড়বে। মানচিত্র থেকে চিতলিয়া গ্রাম হারিয়ে যাওয়ার আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।
চিতলিয়া গ্রামের অমর বিশ্বাস বলেন, এই সড়ক দিয়ে তারা ডুমরিয়া ইউনিয়ন পরিষদ ও বাজারে যাতায়াত করেন। সড়ক ভেঙে যাওয়ায় তারা সহজে যাতায়াত করতে পারছেন না।
টুঙ্গিপাড়ার ইউএনও মঈনুল হক বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত লতা বেগমের পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে এ পরিবারকে একটি বসতঘর করে দেওয়া হবে। এ ছাড়া ডুমরিয়া ও পাটগাতী ইউনিয়নের সংযোগ সড়ক ভেঙে যাতায়াতের ক্ষেত্রে মানুষকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়কে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। নদীভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই সঙ্গে সড়কটিও দ্রুত সংস্কার করে দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।