আত্মহত্যা প্রতিরোধে জবিতে সচেতনতামূলক সভা
Published: 4th, May 2025 GMT
আত্মহত্যা প্রতিরোধে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) ব্যতিক্রমী গণসচেতনতামূলক অনুষ্ঠান ‘আপনি কেমন আছেন?’ আয়োজিত হয়েছে।
রবিবার (৪ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সাজিদ একাডেমিক ভবনের নিচে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করেন। শুরুতেই আত্মহননকারী শিক্ষার্থীদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
আইন বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আলম মারুফের সঞ্চালনায় ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্ধার্থ রায় গত ৪ বছরে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের আত্মহত্যার চিত্র উপস্থাপন করেন।
আরো পড়ুন:
মেহেদির রং না শুকাতেই লাশ হলেন কলি
সাতক্ষীরায় কলেজছাত্রীর গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যা
গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী অরুণাভ আশরাফ বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের থাকা-খাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা দিতে পারেনি। ফলে আমাদের অনেককেই খরচ মেটাতে পড়াশোনার পাশাপাশি কাজ করতে হয়, যা অত্যন্ত কষ্টকর। এতে শিক্ষাজীবন যেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তেমনি মানসিক চাপে ভোগে শিক্ষার্থীরা। প্রশাসন যদি এই সংকট সমাধানে উদ্যোগ না নেয়, তাহলে তাদের প্রয়োজনীয়তা নিয়েই প্রশ্ন থেকে যায়।”
ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন বিভাগের শিক্ষার্থী সামিরা মৌ আত্মহত্যাকে ‘আত্মহনন’ নয়, বরং ‘অবকাঠামোগত হত্যা’ হিসেবে আখ্যা দেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে পূর্ণাঙ্গ মেডিকেল ও মানসিক কাউন্সেলিং সেবা নিশ্চিত করতে হবে। শিক্ষকদেরও স্ট্যান্ডার্ড নম্বর প্রথা নয়, বরং মূল্যবোধ ও মানবিকতা-ভিত্তিক শিক্ষা পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে।”
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ইভান তাহসীব বলেন, “আত্মহত্যা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এটি আমাদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ব্যবস্থার অংশ। শিক্ষার্থীদের বিচ্ছিন্ন জীবনযাপন, নিরাপত্তাহীনতা ও ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা মানসিক অবসাদে রূপ নেয়। এসব সংকটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের মধ্যেই টিকে থাকার সাহস খুঁজে পেতে হবে।”
এ অনুষ্ঠান থেকে প্রশাসনের প্রতি অবিলম্বে আবাসন সংকট নিরসন, মানসিক স্বাস্থ্য সেবা জোরদার এবং শিক্ষার্থীবান্ধব নীতিমালা গ্রহণের মাধ্যমে একটি নিরাপদ ও সহনশীল শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানান শিক্ষার্থীরা।
ঢাকা/লিমন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
বিবিসির বিশ্লেষণ: শেখ হাসিনার ফাঁসির রায় কেন ভারতকে বিব্রত করবে
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেওয়া আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মৃত্যুদণ্ডের রায় ভারতকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলে দিয়েছে বলে মনে করছেন বিবিসির গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স রিপোর্টার অ্যানবারাসান ইথিরাজান।
তিনি লিখেছেন, এখন আশা করা হচ্ছে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় হাসিনাকে ফেরানোর জন্য প্রত্যর্পণের অনুরোধ পাঠাবে। ২০২৪ সালের আগস্টে দেশ ছাড়ার পর থেকে তিনি ভারতে বসবাস করছেন।
আরো পড়ুন:
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে ভারতের প্রতিক্রিয়া
বিচার স্বচ্ছ ও আন্তর্জাতিকমানের, প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই: জামায়াত
ঢাকার আগের দাবিগুলোর জবাব ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে দেয়নি। দুই দেশের মধ্যে একটি প্রত্যর্পণ চুক্তিও রয়েছে।
তবে আইনি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি মনে হয় হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা সৎউদ্দেশ্যে করা হয়নি, তাহলে ভারত সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
ক্ষমতাচ্যুত শেখ হাসিনার প্রধানমন্ত্রিত্বের সময়ে তিনি ভারতের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলেছিলেন। ভারতে তাকে ফেরত না পাঠানোর ব্যাপারে দেশটির সর্বদলীয় রাজনৈতিক পর্যায়েও এক ধরনের ঐকমত্য রয়েছে।
দিল্লির কাছে বাংলাদেশ শুধু প্রতিবেশী নয়, এটি কৌশলগতভাবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষ করে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সীমান্ত নিরাপত্তার জন্য।
অ্যানবারাসান ইথিরাজান লিখেছেন, ভারত যেন টানটান করে বাঁধা দড়ির ওপর হাঁটছে; কারণ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকার করলে তা কূটনৈতিক অবজ্ঞা হিসেবে দেখা যেতে পারে, যা দুই দেশের সম্পর্ককে আরো খারাপ করতে পারে।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধে মামলায় সোমবার (১৭ নভেম্বর) ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকেও মৃত্যুদণ্ডাদেশ এবং পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে ৫ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বিচারপতি গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।
এর আগে গত ১৩ নভেম্বর রায় ঘোষণার জন্য আজকের তারিখ নির্ধারণ করেন আদালত।
ঢাকা/রাসেল