দিনাজপুরের হাকিমপুর (হিলি) থানার ওসি সুজন মিঞাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।

রবিবার (৪ মে) সকালে তাকে স্ট্র্যান্ড রিলিজ করে দিনাজপুর পুলিশ লাইনে ক্লোজ করা হয়েছে। প্রশাসনিক কাজে তাকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানান দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন।

মহান মে দিবস উপলক্ষে গত ১ মে  শ্রমিক দলের একটি র‌্যালিতে ওসি সুজন মিঞা ব্যানার ধরে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করেন। ওই ঘটনার ভিডিও মুহূর্তে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে সমালোচনা শুরু হয়।

আরো পড়ুন:

শাশুড়িকে হত্যার অভিযোগে মেয়ের জামাই গ্রেপ্তার

চুরির অভিযোগে দুই কিশোরের মাকে ‘নাকে খত’ দেওয়ালেন বিএনপি নেতা

ভিডিওতে দেখা যায়, হিলির চারমাথা মোড়ে শ্রমিক দলের কার্যলয় থেকে জাতীয়তাবাদী পৌর শ্রমিক দলের ব্যানারে র‌্যালি বের হয়। সেটি হিলি স্থলবন্দর এলাকার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। র‌্যালির প্রথম সারির মাঝখানে ওসি সুজন মিয়া এবং তার দুই পাশে বিএনপিসহ শ্রমিক দলের নেতাকর্মীদের দেখা যায়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, র‌্যালি বা বিক্ষোভ মিছিলে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে সাধারণত পুলিশ বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত থাকেন। তারা র‌্যালি ও মিছিল থেকে কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান করেন। মে দিবসে ওসি সুজন মিঞা পৌর শ্রমিক দলের ব্যানার ধরে র‌্যালির সামনের সারিতে ছিলেন।

আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার সানী আব্দুল হক বলেন, হাকিমপুর থানার ওসি সুজন মিঞার দলীয় র‌্যালিতে অংশগ্রহণ করার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেখেছি। ওসি পুলিশের পোষাক পরে র‌্যালিতে অংশ নেন। একজন ওসি প্রজাতন্ত্রের প্রশাসনিক কর্মকর্তা, তিনি দলীয় ব্যানারে কোনো র‌্যালিতে বা স্লোগানে থাকতে পারেন না। কিন্তু তিনি সেই কাজটিই করেছেন। প্রশাসনের উচ্চ পর্যায় থেকে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এমনটাই চাই।” 

হাকিমপুর থানা ওসি সুজন মিঞা জানান, তাকে হাকিমপুর থানা থেকে ক্লোজড করা হয়নি, তবে দিনাজপুর অপরাধ বিভাগে বদলি করা হয়েছে। 

মিছিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, মোবাইল ফোনে কথা বলতে বলতে তিনি মিছিলে প্রবেশ করেন। এটি তার ভুলবসত হয়েছে। 

দিনাজপুরের পুলিশ সুপার মারুফাত হুসাইন বলেন, “জনস্বার্থে রবিবার সকালে তাকে (হাকিমপুর থানার ওসি) স্ট্র্যান্ড রিলিজ করে দিনাজপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। শুধু একটি বিষয়ে না নানা বিষয়ে এমন বদলি হয়ে থাকে।”

ঢাকা/মোসলেম/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স জন ম ঞ

এছাড়াও পড়ুন:

‘প্রশ্ন করতেই হবে’

সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের কারণে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য হন বলে উল্লেখ করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে, প্রশ্ন তুলতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।

বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকায় ‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ (সাহসী নতুন বাংলাদেশ: মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য সংস্কারের পথনকশা) শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে ইউনেসকো ঢাকা অফিস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুইডেন দূতাবাস। রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।

সেমিনারে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা ন্যূনতম কিছুই করতে চাই না সংবাদমাধ্যমকে। সংবাদমাধ্যম যতটুকু যা ইচ্ছা লেখার অধিকার রাখে। সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে।’

তবে প্রশ্নের ক্ষেত্রে জবাবদিহি করাটাই মুখ্য নাকি আরও দশটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেখানে থাকতে পারে, তা নিয়ে ভাবা দরকার বলে মনে করেন তথ্য উপদেষ্টা।

এরপরও প্রশ্ন করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।’

সংবাদমাধ্যমের যাঁরা নীতিনির্ধারক আছেন, যেখান থেকে সংবাদ বা মতামত তৈরি হয়, সেটাকে অবশ্যই প্রশ্ন করার সুযোগ থাকা উচিত বলেও মনে করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন করা যাবে, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করা যাবে, গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রশ্ন করা যাবে কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না—এই জিনিসটা থাকুক, তা তিনি চান না। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমগুলোর কার্যকলাপ নিয়ে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।

আরও পড়ুনগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কার্যকরে দরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা১৬ মিনিট আগে

সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে বলেও সেমিনারে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, যে অভিযোগটি সত্য, সে মামলা হচ্ছে না, দেওয়া হচ্ছে হত্যা মামলা। এটা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন, বাসস, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে একটি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা, বিজ্ঞাপন হার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এবং মিডিয়া তালিকা ও লাইসেন্স পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। পাশাপাশি মিথ্যা প্রচারসংখ্যা দেখিয়ে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাটকারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যার (সংবাদপত্র) প্রচারসংখ্যা দুই হাজারও না, তাদের এক–দুই লাখ দেখিয়ে যাঁরা রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করেছেন, তাঁদের তথ্য উন্মোচন করা হবে।

সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ