খালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিন ইসলামের মুক্তির দাবিতে নীলফামারীতে বিক্ষোভ
Published: 4th, May 2025 GMT
নীলফামারী–১ (ডোমার–ডিমলা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বিএনপি নেতা শাহরিন ইসলাম চৌধুরীর (তুহিন) নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা। আজ রোববার বেলা ১১টার দিকে ডিমলায় ও দুপুর ১২টার দিকে ডোমারে উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে এবং বিকেলে জেলা শহরে যুবদলের উদ্যোগে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
শাহরিন ইসলাম চৌধুরী বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ভাগনে। আয়কর ফাঁকির মামলায় ১৭ বছর আগে শাহরিনের জেল–জরিমানা হয়। সম্প্রতি দেশে ফিরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত–৬–এ আত্মসমর্পণ করে তিনি জামিনের আবেদন করেন। আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আজ বেলা ১১টার দিকে ডিমলা উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে দলীয় কার্যালয় থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বিজয় স্মৃতি চত্বরে সমাবেশে মিলিত হয়। ডিমলা উপজেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ মনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে এতে সাধারণ সম্পাদক মো.
অন্যদিকে দুপুর ১২টার দিকে ডোমার উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বাটার মোড়ে সমাবেশে মিলিত হয়। উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেয়াজুল ইসলামের সভাপতিত্বে সমাবেশে সাধারণ সম্পাদক মো. আখতারুজ্জামান, পৌর বিএনপির সভাপতি আনিছুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক মোজাফফর আলী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এদিকে জেলা যুবদলের উদ্যোগে বিকেলে জেলা বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে সেখানে ফিরে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি মীর সেলিম ফারুক, মোস্তফা হক প্রধান, জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন চৌধুরী প্রমুখ।
আরও পড়ুনখালেদা জিয়ার ভাগনে শাহরিনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ২৯ এপ্রিল ২০২৫এসব সমাবেশে বক্তারা সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি শাহরিন ইসলাম চৌধুরীর বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহারসহ নিঃশর্ত মুক্তির দাবি জানান। অন্যথায় বৃহত্তর আন্দোলনের মাধ্যমে রংপুর বিভাগ অচল করার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এসব কর্মসূচিতে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা অংশ নেন।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘প্রশ্ন করতেই হবে’
সংবাদমাধ্যমের প্রশ্নের কারণে রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা আরও দায়িত্বশীল আচরণ করতে বাধ্য হন বলে উল্লেখ করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেছেন, সংবাদমাধ্যমকে প্রশ্ন করতেই হবে, প্রশ্ন তুলতে হবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার সংবাদমাধ্যমের প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।
বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম দিবস উপলক্ষে রোববার ঢাকায় ‘ব্রেভ নিউ বাংলাদেশ: রিফর্ম রোডম্যাপ ফর প্রেস ফ্রিডম’ (সাহসী নতুন বাংলাদেশ: মুক্ত গণমাধ্যমের জন্য সংস্কারের পথনকশা) শীর্ষক এক সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।
যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে ইউনেসকো ঢাকা অফিস, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) ও সুইডেন দূতাবাস। রাজধানীর ধানমন্ডিতে টিআইবি কার্যালয়ে এ সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।
সেমিনারে তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বলেন, ‘আমরা ন্যূনতম কিছুই করতে চাই না সংবাদমাধ্যমকে। সংবাদমাধ্যম যতটুকু যা ইচ্ছা লেখার অধিকার রাখে। সংবাদমাধ্যমকে অবশ্যই প্রশ্ন করতে হবে।’
তবে প্রশ্নের ক্ষেত্রে জবাবদিহি করাটাই মুখ্য নাকি আরও দশটা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সেখানে থাকতে পারে, তা নিয়ে ভাবা দরকার বলে মনে করেন তথ্য উপদেষ্টা।
এরপরও প্রশ্ন করার ওপর জোর দিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার প্রশ্ন নিতে রাজি আছে।’
সংবাদমাধ্যমের যাঁরা নীতিনির্ধারক আছেন, যেখান থেকে সংবাদ বা মতামত তৈরি হয়, সেটাকে অবশ্যই প্রশ্ন করার সুযোগ থাকা উচিত বলেও মনে করেন মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, সংসদ সদস্যদের প্রশ্ন করা যাবে, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের প্রশ্ন করা যাবে, গোয়েন্দা সংস্থাকে প্রশ্ন করা যাবে কিন্তু সাংবাদিকদের প্রশ্ন করা যাবে না—এই জিনিসটা থাকুক, তা তিনি চান না। বিগত সরকারের সময় গণমাধ্যমগুলোর কার্যকলাপ নিয়ে ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ দরকার বলে মন্তব্য করেন তিনি।
আরও পড়ুনগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা কার্যকরে দরকার গণমাধ্যমের স্বাধীনতা১৬ মিনিট আগেসাংবাদিকদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা নিয়ে সরকার বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছে বলেও সেমিনারে উল্লেখ করেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। তিনি বলেন, যে অভিযোগটি সত্য, সে মামলা হচ্ছে না, দেওয়া হচ্ছে হত্যা মামলা। এটা নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে আছেন বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
সাংবাদিকতা সুরক্ষা আইন, বাসস, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে একটি সম্প্রচার প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করা, বিজ্ঞাপন হার মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য করা এবং মিডিয়া তালিকা ও লাইসেন্স পুনর্মূল্যায়ন নিয়ে সরকার কাজ করছে বলে জানান তথ্য উপদেষ্টা। পাশাপাশি মিথ্যা প্রচারসংখ্যা দেখিয়ে রাষ্ট্রের টাকা লুটপাটকারীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, যার (সংবাদপত্র) প্রচারসংখ্যা দুই হাজারও না, তাদের এক–দুই লাখ দেখিয়ে যাঁরা রাষ্ট্রের টাকা লুটপাট করেছেন, তাঁদের তথ্য উন্মোচন করা হবে।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন গণমাধ্যম সংস্কার কমিশনের প্রধান কামাল আহমেদ।