কাশ্মীরে হামলার সন্দেহভাজনেরা কি ভারত থেকে পালিয়েছেন
Published: 4th, May 2025 GMT
কাশ্মীরের পেহেলগামে গত মাসে পর্যটক হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সন্দেহভাজনদের এখনো গ্রেপ্তার করতে না পারায় সমালোচনার মুখে পড়েছে ভারত সরকার। এমন পরিস্থিতিতে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে যে অপরাধীরা অন্য কোনো দেশে পালিয়ে যেতে পারেন।
শনিবার চেন্নাই থেকে কলম্বোগামী শ্রীলঙ্কান এয়ারলাইনসের একটি ফ্লাইট পৌঁছানোর পর কলম্বো পুলিশ তাতে ব্যাপক তল্লাশি চালায়। এর আগে চেন্নাই কন্ট্রোল সেন্টার কলম্বো কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে জানায়, পেহেলগাম হামলায় সন্দেহভাজন ব্যক্তিরা এই ফ্লাইটে থাকতে পারে।
বিমান সংস্থাটি জানায়, চেন্নাই থেকে আসা ফ্লাইট ইউএল১২২ বেলা ১১টা ৫৯ মিনিটে কলম্বোতে অবতরণ করে এবং অবতরণের পর এটিতে ‘ব্যাপক নিরাপত্তা তল্লাশি’ চালানো হয়।
তারা আরও জানায়, চেন্নাই এরিয়া কন্ট্রোল সেন্টার থেকে সতর্কবার্তা পাওয়ার পর স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয় করে এ তল্লাশি চালানো হয়। বার্তায় বলা হয়, ভারত খুঁজছে এমন এক সন্দেহভাজন ব্যক্তি ওই ফ্লাইটে রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পেহেলগামে হত্যাকাণ্ডের প্রায় ১০ দিন পর ভারতের রাজনৈতিক দল কংগ্রেসের এক নেতা সন্দেহ প্রকাশ করেছেন যে হামলাকারীদের ধরার সক্ষমতা নরেন্দ্র মোদি সরকারের আছে কি না। তাঁর এমন মন্তব্যকে সেনাবাহিনীর সমালোচনা হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। পরে তিনি নিজের বক্তব্য প্রত্যাহারে বাধ্য হন।
৯০ মিনিটের বিলম্ব নিয়ে প্রশ্নভারতের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, পেহেলগামে হামলার স্থলে সেনাবাহিনী পৌঁছাতে ৯০ মিনিটের দেরি করাটা একটি কৌশলগত সিদ্ধান্ত ছিল। এটা করা হয়েছিল যেন নিজেদের মধ্যে অনিচ্ছাকৃত ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায়। ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দু দেশটির আরেকজন কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বলেছে, নিরাপত্তা বাহিনীর পর্যাপ্তসংখ্যক সদস্যকে প্রস্তুত করতে দীর্ঘ সময় লেগে যাওয়ায় এ বিলম্ব হয়েছিল।
নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা যখন বৈসারনে পৌঁছান, ততক্ষণে হামলাকারীরা জঙ্গলে পালিয়ে গিয়েছিল।
আরও পড়ুনভারত কি পাকিস্তানে পানির প্রবাহ আটকে দিতে পারবে২৫ এপ্রিল ২০২৫হামলার দুই দিন পর ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ সর্বদলীয় এক বৈঠকে সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার সময় আশপাশের হোটেলগুলোকে দোষারোপ করেন। তাঁর ভাষ্যমতে, পুলিশকে না জানিয়েই পর্যটকদের বৈসারনে পাঠিয়েছিল হোটেলগুলো।
তিনি স্বীকার করেছিলেন, হামলার দিন সেখানে নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন ছিল না। যদিও সাধারণত জুলাই মাসে অমরনাথ যাত্রা শুরুর আগে এই পর্যটন এলাকায় নিরাপত্তার ব্যবস্থা থাকে।
তবে দ্য হিন্দুর প্রতিবেদনে এক কর্মকর্তাকে উদ্ধৃত করে বলা হয়, অমরনাথ যাত্রার সময় ছাড়া সারা বছর বৈসারন চারণভূমি উন্মুক্ত থাকে।
আরও পড়ুনপাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনার মধ্যে পরীক্ষার মুখে ভারতের সামরিক বাহিনী২৮ এপ্রিল ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা: কী ঘটেছিল ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট
কী ঘটেছিল সেদিন
দিনটি ছিল রোববার। তারিখের হিসাবে ১৯৮৪ সালের ৫ আগস্ট। দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে মর্মান্তিক বিমান দুর্ঘটনা ঘটে সেদিন। চট্টগ্রাম থেকে ৪৪ জন যাত্রী নিয়ে বিজি-৪২৬ নম্বরের ফ্লাইটটি ঢাকায় জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণের চেষ্টা করে। বিমানটি ছিল ফকার ফ্রেন্ডশিপ বা সংক্ষেপে এফ-২৭ । ওই সময় আবহাওয়া ছিল দুর্যোগপূর্ণ। শ্রাবণ মাস থাকায় সকাল থেকেই বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়া বইছিল। বিমানটি চালাচ্ছিলেন ক্যাপ্টেন কায়েস আহমদ মজুমদার, সঙ্গে ছিলেন কো-পাইলট সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা। প্রচুর বৃষ্টির মধ্যে বেলা আড়াইটার দিকে বিমানটি দুই দফা অবতরণ করতে ব্যর্থ হয়। পরে তৃতীয় দফার চেষ্টায় ২টা ৩৫ মিনিটের দিকে রানওয়ে থেকে কিছুটা দূরে অবতরণ করতে গিয়ে বাউনিয়া বিলের মধ্যে বিমানটি বিধ্বস্ত হয়। শুধু তা–ই নয়, বিমানটি প্রায় ২০ থেকে ২৫ ফুট পানির গভীরে ডুবে যায়। মৃত্যু হয় হতভাগ্য ৪৪ যাত্রী, দুই পাইলট, তিন ক্রুসহ ৪৯ জনের। অর্থাৎ দুর্ঘটনায় কেউ বেঁচে ছিলেন না। যাত্রীদের মধ্যে একজন ব্রিটিশ, একজন জাপানি ও বাকিরা বাংলাদেশি নাগরিক ছিলেন। জানা যায়, যাত্রীদের বেশির ভাগ মধ্যপ্রাচ্যে যাওয়ার জন্য একটি সংযোগ ফ্লাইট ধরতে ঢাকায় আসছিলেন। এটিই বাংলাদেশের মধ্যে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় বিমান দুর্ঘটনা। বিমানটির ৪৪ যাত্রীর মধ্যে ১২ জন মাসকাট, ১০ জন দুবাই ও আবুধাবি এবং একজন বাহরাইন যাওয়ার যাত্রী ছিলেন। তাঁরা ট্রানজিট প্যাসেঞ্জার হিসেবে চট্টগ্রামের পতেঙ্গা বিমানবন্দর থেকে জিয়া আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আসছিলেন।
বাংলাদেশের প্রথম মহিলা পাইলট সৈয়দা কানিজ ফাতেমা রোকসানা