মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার ঘটনা বললেন নানি
Published: 5th, May 2025 GMT
ঘণ্টা নবীন বাবু। কৈশোরে স্বপ্ন দেখতেন অভিনেতা হওয়ার। যার কারণে ওই সময়ে প্রিয় তারকাদের সিনেমা দেখতে ছুটে যেতেন প্রেক্ষাগৃহে। স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে পরিশ্রমকে পুঁজি করে এই মাধ্যমে হাঁটতে শুরু করেন তিনি। সহকারী পরিচালক হিসেবে রঙিন দুনিয়া পথচলা শুরু হয় তার। এরপর নাম লেখান অভিনয়ে। রুপালি জগতে নানি নামে খ্যাতি কুড়ান ঘণ্টা নবীন বাবু।
কৈশোরের সেই স্বপ্নবাজ ঘণ্টা নবীন বাবু তেলেগু ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে ১৬ বছর পার করছেন। উপহার দিয়েছেন অনেক ব্যবসাসফল সিনেমা। আর দর্শকের মুঠো মুঠো ভালোবাসা কুড়িয়েছেন। এক বছর আগে নানি বাস্তব জীবনে বড় ধরনের সড়ক দুর্ঘটনার কবলে পড়েছিলেন। সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন। সেই ঘটনা তার জীবনের সবকিছু বদলে দিয়েছে। রাজ শামামির পডকাস্টে উপস্থিত হয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন এই অভিনেতা।
এ আলাপচারিতায় দুর্ঘটনার বিষয়ে নানি বলেন, “আমার প্রথম গাড়ি কেনার আগের ঘটনা এটি। এক বন্ধুর গাড়ি চালিয়ে যাওয়ার সময়ে একটা দুর্ঘটনা ঘটেছিল। আমরা হাইওয়ে ধরে যাচ্ছিলাম। হাইওয়ের মাঝখানে বাঁক নেওয়ার পর.
নানিকে বহনকারী গাড়িটি ট্রাকের ভেতরে ঢুকে যায়। তা বর্ণনা করে নানি বলেন, “আমি যখন গাড়ি ঘুরালাম, তখনই ট্রাকের আলো দেখতে পেলাম। যখন আমি ঘুরলাম, তখন ট্রাকটি আমার সামনে, গাড়ির গতি তখন ১০০। আমাদের গাড়িটি ট্রাকের পিছনের অংশের নিচে ঢুকে গেল। লরিটির শিল্ড গ্লাস ভেঙে গেল। সমস্ত গ্লাস ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল। তখন আমি ড্রাইভিং সিটে ছিলাম। আমার পাশে বসা বন্ধুকে বললাম, তুমি রক্তের স্রোত অনুভব করতে পারছো! রক্তের স্রোতের ওপর সবকিছু ঘটেছে। আমি দরজা ধাক্কা দিলাম, দরজা খুলতে পারছিলাম না। দেখতে পাচ্ছিলাম, হাইওয়েতে দূরে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আছে, কী হয়েছে তা তারা দেখার চেষ্টা করছে।”
গাড়ি থেকে নামার ঘটনা বর্ণনা করে নানি বলেন, “আমাদের গাড়ির পেছনের সিটে একজন বন্ধু ছিল, সে ঠিক ছিল। দরজা ধাক্কা দিয়ে নেমে পড়লাম। আমি পড়ে যাওয়ার উপক্রম। হঠাৎ পিছনের সিটের বন্ধুটির ডাক শুনতে পেলাম। সে ‘প্রশান্ত, প্রশান্ত’ বলে ডাকছে। সামনের সিটে বসা বন্ধুটির নাম প্রশান্ত। সে আমার সঙ্গে আছে, সে আমাকে সাহার্য করছে।”
দুর্ঘটনার পর পেছনের সিটে বসা নানির বন্ধু জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তাকে উদ্ধারের ঘটনা জানিয়ে নানি বলেন, “যখন সে চিৎকার করতে শুরু করল, তখন আমি খুব ভয় পেয়ে গেলাম। আমি গাড়ি চালাচ্ছিলাম আর আমার বন্ধু ওখানে বসে ছিল। কিছু একটা হয়েছিল। আমি গাড়ির চারপাশে ঘুরে বেড়ালাম, জানি না কী হচ্ছিল! গাড়ির চারপাশে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম, গাড়ি টানছিলাম। কিন্তু সে বাম পাশের সিটে ছিল, কোনো প্রতিক্রিয়া দেখাচ্ছিল না। এরপর আমরা তাকে টেনে বের করে আনলাম আর ‘প্রশান্ত, প্রশান্ত, প্রশান্ত, প্রশান্ত’ বলে চিৎকার করছিলাম। সর্বশেষ তার জ্ঞান ফিরল।”
আহত নানি ও তার বন্ধুদের বহনকারী অ্যাম্বুলেন্স হাসপাতালে যাওয়ার পথে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে। তা জানিয়ে এই অভিনেতা বলেন, “তারপর আমাদের কাছের একটি কোম্পানিতে নিয়ে যাওয়া হয়। তারা আমাদের একটি অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেয়। পথে আরো একটি দুর্ঘটনা ঘটে, একটি ভ্যান ধাক্কা খায়। অ্যাম্বুলেন্সের লোকেরা জিজ্ঞাসা করে, ‘আমরা কি তাদের (ভ্যানের আহত যাত্রী) হাসপাতালে নিয়ে যেতে পারি?’ আমরা বললাম, ‘অবশ্যই।’ আর ওটা একটা বড় পরিবার ছিল। সবাই সুন্দর করে সাজগোজ করেছিল, যেন কোনো বিয়ে বা অন্যকোনো অনুষ্ঠানে যাচ্ছিল, সবাই রক্তাক্ত হয়েছিল। তাদের সঙ্গে একটা বাচ্চাও ছিল। এটা একটা খারাপ দুর্ঘটনা ছিল।”
এই দুর্ঘটনা নানির জীবনের সবকিছু বদলে দিয়েছে। পরের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে নানি বলেন, “আহত সবাই অ্যাম্বুলেন্সে উঠে এলো। আর সেই বাচ্চাটাকে দেখে আমার সবকিছু অসাড় হয়ে গেল, আমি কিছুই অনুভব করতে পারছিলাম না, আমি কেবল তাদের কথা শুনছিলাম। পরে বাচ্চাটাকে আইসিইউতে নেওয়া হয়েছিল। কারণ খুব গুরুতর আঘাত ছিল। আমি হাসপাতালের বাইরে দাঁড়িয়ে রইলাম, ডাক্তারের কাছে যাইনি এবং সকাল পর্যন্ত অপেক্ষা করছিলাম। কারণ আমি জানতে চাইছিলাম কী হয়েছে। তারা বলল, ‘এটা খুবই ক্রিটিক্যাল।’ সেই একটি রাত আমার সবকিছু বদলে দিয়েছে। আমি জীবনকে কীভাবে দেখি, ব্যথা— সবকিছু বদলে দিয়েছে।”
নানি অভিনীত সর্বশেষ মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমা ‘হিট: দ্য থার্ড কেস’। শৈলেশ কোলানু পরিচালিত সিনেমাটি গত ১ মে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পেয়েছে। এতে নানির বিপরীতে অভিনয় করেছেন শ্রীনিধি শেঠি। ৬৫ কোটি রুপি বাজেটের এ সিনেমা ৩ দিনে আয় করেছে ৮২ কোটি রুপি।
তথ্যসূত্র: টাইমস নাউ
ঢাকা/শান্ত
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর দ র ঘটন র র সবক ছ আম দ র র বন ধ আম র স
এছাড়াও পড়ুন:
এসএসসি পরীক্ষা-২০২৫: অর্থনীতিতে বেশি নম্বর পাওয়ার ৮টি উপায়
প্রিয় এসএসসি পরীক্ষার্থী, অর্থনীতিতে ভালো নম্বর পাওয়া বেশ সহজ। সারা বছর তোমরা মনোযোগ দিয়ে পড়েছ, প্রস্তুতিও নিয়েছ সঠিকভাবে। তাই এ বিষয়ে বেশি নম্বর পাওয়া তোমার জন্য বেশ সহজ। এ বছর পুরো বইয়ের সব অধ্যায় থেকে প্রশ্ন আসবে।
১.
বহুনির্বাচনিতে ভালো করতে হলে পুরো বইয়ের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও তত্ত্বগুলো মনে রাখবে। সারা বছর পাঠ্যবইয়ের পাতায় পাতায় গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলোর নিচে দাগ দিয়েছ, সেগুলোতে ভালো করে চোখ বুলিয়ে নেবে। যাতে খুব সহজে সে তথ্যগুলো নজরে পড়ে।
২.
দ্বিতীয় অধ্যায়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি, অর্থনীতির জনক, ধর্মতান্ত্রিক অর্থব্যবস্থা, মিশ্র অর্থব্যবস্থা, আয়ের বৃত্তাকার প্রবাহ দরকারি বিষয়ে তা ভালো করে পড়বে। এ অধ্যায় থেকে বহুনির্বাচনি ও সৃজনশীল—দুই ধরনের প্রশ্ন পরীক্ষায় আসবে। এটি বেশ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়।
৩.
প্রায় প্রতিটি অধ্যায়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সূত্র রয়েছে। সূত্রগুলো মনে রাখবে, বুঝে পড়বে।
যেমন-গড় উৎপাদন = মোট উৎপাদন মোট শ্রম উপকরণ; S= y-c; মাথাপিছু জিডিপি = কোনো নির্দিষ্ট বছরে মোট দেশজ উৎপাদন /ওই বছরের মধ্য সময়ের মোট সংখ্যা; সুষম বাজেট = মোট আয়-মোট ব্যয় = 0 হয়
৩.
পঞ্চম অধ্যায়ে বাজার অধ্যায়ের একচেটিয়া বাজার, অলিগোপলি বাজার, একচেটিয়া প্রতিযোগিতামূলক বাজার সম্পর্কে ভালো ধারণা রাখবে।
৪.
ষষ্ঠ অধ্যায়ে মোট দেশজ উৎপাদন, মোট জাতীয় আয়, নিট জাতীয় আয় বিষয়গুলো একই ধরনের। অনেকে এ অধ্যায়ে প্রশ্ন গুলিয়ে ফেলে। তাই এগুলো বুঝে পড়বে।
৫.
সপ্তম অধ্যায়ের অর্থ ও ব্যাংক ব্যবস্থা অধ্যায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক, বাণিজ্যিক ব্যাংক, নিকাশ ঘর, রেমিট্যান্সের বিষয়ে ভালো করে পড়বে। দারিদ্র্যের দৃষ্টান্ত, সামাজিক ব্যয়, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, মৌসুমি বেকারত্ব এবং এনজিও সম্পর্কে বিস্তারিত পড়বে।
৬.
দশম অধ্যায়ের বাংলাদেশের সরকারের অর্থব্যবস্থা অধ্যায়টি বেশ গুরুত্বপূর্ণ । তা ছাড়া কর রাজস্ব, মূল্য সংযোজন কর, আয় ও মুনাফার ওপর কর, করবহির্ভূত রাজস্ব নিয়ে পরিষ্কার ধারণা রাখবে। সুষম বাজেট, অসুষম বাজেট উদ্বৃত্ত বাজেট, ঘাটতি বাজেট অংশ ভালো করে পড়বে।
৭.
সারা পাঠ্যবইয়ের মধ্যে অনেক অর্থনীতিবিদের নাম, বইয়ের নাম, সূত্র, সাল, পরিমাণ ইত্যাদি রয়েছে। প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর লেখার ক্ষেত্রে এসব তথ্য তোমার দরকার পড়বেই। তাই এসব যেন ভুল না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবে।
৮.
পরীক্ষার খাতায় লেখা শেষে রিভিশন দিতে ভুলবে না। কারণ, কোনো প্রশ্নের উত্তর রেখার সময় তাড়াতাড়ির কারণে কিছু ভুল হতে পারে, রিভিশন দিলে সে ভুল সহজেই চোখে পড়বে। আর ঠিক করাটা সহজ হবে।
১. অর্থনীতির জনক—অ্যাডাম স্মিথ।
২. অর্থনীতির ১০টি নীতির ধারণা দেন—গ্রেগরি ম্যানইউ।
৩. অর্থনীতিতে সম্পদের বৈশিষ্ট্য হলো—৪টি।
৪. আয় ও ভোগের পার্থক্যকে বলা হয়—সঞ্চয়।
৫. বাংলাদেশের অর্থনীতি নির্ভরশীল—৩টি খাতের ওপর।
৬. দাম ও জোগানের সম্পর্ক—সমমুখী।
৭. উৎপাদনের প্রধান উপকরণ—৪টি।
৮. বাংলাদেশের অর্থনীতিকে বিভক্ত করা হয়—১৫টি খাতে।
৯. দারিদ্র্যের দুষ্টচক্র ধারণার প্রবর্তক হলেন—অধ্যাপক রাগনার নার্কস।
১০. উন্নত দেশের বৈশিষ্ট্য হলো—দক্ষ জনশক্তি।
লেখক: মিজানুর রহমান, প্রভাষক, ধানমন্ডি সরকারি বালিকা বিদ্যালয়, ঢাকা