শিক্ষার্থীদের পেটানোর পরিকল্পনা রাবি ছাত্রদলের, স্ক্রিনশট ভাইরাল
Published: 5th, May 2025 GMT
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের পেটানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে কথোপকথনের স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসজুড়ে ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (৫ মে) সকালে হোয়াটস অ্যাপের একটি গ্রুপের দুইটি স্ক্রিনশট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ঘুরতে দেখা যায়। গ্রুপের নাম দেওয়া আছে ‘রাবি ছাত্রদল’। অনেকে এ ঘটনাকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার জন্য হুমকি হিসেবে বিবেচনা করছেন।
ভাইরাল স্ক্রিনশটে কথোপকথন করতে দেখা যায়, রাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো.
আরো পড়ুন:
রোডম্যাপ অনুযায়ী রাকসু নির্বাচনের দাবি
রাবি রেজিস্ট্রারের নেতৃত্বে তদন্তে ‘গড়িমসি’, সদস্যের পদত্যাগ
সেখানে হাসিবুল ইসলামকে বলতে দেখা গেছে, “আগামীকাল ক্যাম্পাসে আসেন এই বট বাহিনীর ছেলেগুলাকে চিহ্নিত করে দিন। এক সালাকেও ছাড় হবে না। ক্যাম্পাসের বাইরে বের হবে না? সবগুলারে একটা একটা করে ধরে ছিড়ে ফেলে দিবো।”
আহসান হাবিবকে বলতে দেখা গেছে, “যাচাই-বাছাই ছাড়াই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সংগঠন ও ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানহানিকর ও মিথ্যা পোস্ট এপ্রুভ করায় এদের বিরুদ্ধেও মামলা করা যাবে।”
তুষার শেখকে বলতে দেখা গেছে, “আগামীকাল ক্যাম্পাসে আসেন, এই বট বাহিনীর ছেলেগুলাকে চিহ্নিত করে দিন। এক সালাকেও ছাড় হবে না। ক্যাম্পাসের বাইরে ভেতরে না মামা, এদেরকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই পিটাতে হবে।”
আহসান হাবিব আবার বলেন, “কিন্তু বাদী হবে কে? এদের বিরুদ্ধে মামলা করা মানে শিবিরের বিরুদ্ধে মামলা করা।”
অন্য আরেকটি স্ক্রিনশটে দেখা গেছে, অধিকাংশ মেসেজগুলো মুছে ফেলা হয়েছে। তবে একটি মেসেজ দেখা যায়। সেখানে তুষার শেখ লিখেছেন, “গায়ে হাত দেওয়া অন্যায় ঠিক। কিন্তু এদেরকে পিটানো ছাড়া কোনভাবেই সোজা করা সম্ভব নয়। এদেরকে পিটোনি দিলে সব ঠিক।”
এ বিষয়ে জানতে ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. তুষার শেখকে একাধিকবার কল দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।
রাবি ছাত্রদলের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের স্ক্রিনশট ভাইরাল হওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে ছাত্রদলের যুগ্ম-আহ্বায়ক আহসান হাবীব বলেন, “আমি শুধু আমার মতামত দিয়েছি। গ্রুপে এমন অনেক ছেলেরা আছে যারা ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত না। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সংগঠনের বক্তব্য নিয়ে ফেইক আইডি দিয়ে বিভিন্ন পোস্ট গ্রুপে অ্যাপ্রুভ করা হয় যেগুলো মানহানিকর। গ্রুপে এক ছোট ভাইয়ের প্রশ্নের উত্তরে আমি মামলা করার বিষয়ে বলি।”
ফাঁস হওয়া স্ক্রিনশট এডিট করা উল্লেখ করে ছাত্রদল কর্মী হাসিবুল হাসান বলেন, “রাবি ছাত্রদল’ নামের গ্রুপটি ছাত্রদলের সঙ্গে সম্পৃক্ত কারোর না। মেসেজগুলো এডিট করা। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আমাদেরই ভাই-বোন। আমরা শিক্ষার্থীদের হুমকি দিয়ে কোনো কথা বলিনি।”
বট বাহিনী বলতে কাদের বুঝানো হয়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “যারা ক্যাম্পাসে উল্টাপাল্টা গুজব ছড়ায় তাদেরকে বুঝানো হয়েছে।”
সার্বিক বিষয়ে রাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবার গ্রুপে আমি একটা স্কিনশর্ট দেখলাম এবং আমি কয়েকজনকে এই বিষয়ে জিজ্ঞেসা করেছি। কিন্তু তারা তা অস্বীকার করেছে। দ্বিতীয়ত হলো যাদের নামে এই তথ্য পাওয়া গেছে, তারা কেউ ছাত্রদলের দলীয় লোক নয়। তাদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিকভাবে ব্যবস্থা নেওয়া আছে।”
তিনি আরো বলেন, “এটা যদি কেউ করে থাকে, সেটি তাদের ব্যক্তিগত আলোচনা। এটা সংগঠনের আলোচনা না। এমনটি যদি কেউ করে থাকে, তাহলে নেতা, কর্মী বা সমর্থক যেই হোক, তার সংগঠনে থাকার কোনো সুযোগ নাই। সরাসরি বহিষ্কার করা হবে।”
ঢাকা/ফাহিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল আহস ন হ ব ব স ক র নশট ছ ত রদল র স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
মাদক সেবনের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীর ওপর হামলা, মহাসড়ক অবরোধ
মাদারীপুর সরকারি কলেজ মাঠে মাদক সেবনের প্রতিবাদ করায় ইকবাল আমিন সম্রাট (২০) নামে এক শিক্ষার্থীকে পিটিয়ে আহত করে বহিরাগত কয়েকজন যুবক। এ ঘটনার প্রতিবাদে তিন দফা দাবিতে মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
বুধবার সন্ধ্যায় কলেজ গেট এলাকায় মাদারীপুর-শরীয়তপুর-চাঁদপুর আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তারা। এতে সড়কের দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। সাধারণ যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েন।
শিক্ষার্থী ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর কলেজের মাঠে কয়েকজন বহিরাগত যুবক মাদক সেবন করছিল। এ সময় শিক্ষার্থী ইকবালসহ কয়েকজন প্রতিবাদ জানালে তাদের সঙ্গে বাকবিতণ্ডা হয়। এর জেরে বুধবার বিকেলে মাঠে খেলতে গেলে ইকবালকে একা পেয়ে তারা বেদম মারধর করে। পরে গুরুতর অবস্থায় তাকে মাদারীপুর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ঘটনার প্রতিবাদে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ, সীমানা নির্ধারণ ও হামলাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভে নামেন শিক্ষার্থীরা। এক পর্যায়ে তারা মহাসড়ক অবরোধ করে স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরাও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেন।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল হোসেন বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং শান্ত থাকতে অনুরোধ জানায়। পরে কলেজ কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নিলে তারা অবরোধ তুলে নেয়।’’
ঢাকা/বেলাল//