নোয়াখালীতে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতির বিরুদ্ধে শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ
Published: 6th, May 2025 GMT
নোয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলামের বিরুদ্ধে কলেজের এক শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে। গতকাল সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে কলেজ ক্যাম্পাসে এ ঘটনা ঘটে। এর প্রতিবাদে আজ মঙ্গলবার সভা ডেকেছে কলেজের শিক্ষক পরিষদ।
ভুক্তভোগী শিক্ষকের নাম আনোয়ার হোছাইন। তিনি কলেজের ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল দুপুরে তিনি ক্যাম্পাস মসজিদ থেকে জোহরের নামাজ পড়ে কলা ভবনে নিজ বিভাগের দিকে যাচ্ছিলেন। এ সময় কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম তাঁর পথ আটকে দুই ছাত্রকে কলেজের হোস্টেলে আসন বরাদ্দ দিতে অনুরোধ করেন। তখন তিনি রাশেদুলকে নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করার পরামর্শ দিলে রাশেদুল তর্ক করতে থাকেন।
শিক্ষক আনোয়ার হোছাইনের অভিযোগ, এরপর তিনি বিভাগে চলে যান। রাশেদুলও তাঁর পিছু নিয়ে বিভাগে যান। সেখানে তাঁর সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। একপর্যায়ে বিভাগের একটি টেবিলের কাচ ভেঙে ফেলেন রাশেদুল। এরপর নানা হুমকি দিয়ে কক্ষ ত্যাগ করেন।
কলেজশিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এম এ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষক আনোয়ার হোছাইনকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি লাঞ্ছিত করার বিষয়ে আজ প্রতিবাদ সভা ডাকা হয়েছে। শিক্ষকের সঙ্গে ছাত্রদল নেতার এ ধরনের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি রাশেদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি হলে সিটের ব্যাপারে কথা বলতে গেলে ওই শিক্ষক আমাকে বলেন, ১৬ বছর কোথায় ছিলাম। নানা কথা বলে আমাকে অপমান করেন। এ সময় টেবিলে হালকা থাপ্পড় দিয়েছি। টেবিলের কাচটি আগেই ভাঙা ছিল। আমি কোনো দুর্ব্যবহার করিনি।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
এনসিপি নেতাকে ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’ চিরকুটের সঙ্গে কাফনের কাপড় পাঠিয়ে হুমকি
রাজশাহীতে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) এক নেতার বাড়ির সামনে ‘প্রস্তুত হ রাজাকার’ লেখা একটি চিরকুটের সঙ্গে কাফনের কাপড় ফেলে গেছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল শনিবার রাতে জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
ওই নেতার নাম খালিদ হাসান ওরফে মিলু। তিনি এনসিপির রাজশাহী জেলা সমন্বয় কমিটির সদস্য এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সংগঠক। জেলার মোহনপুর উপজেলার ধুরইল গ্রামে তাঁর বাড়ি।
চিরকুটে লেখা ছিল, ‘প্রস্তুত হ রাজাকার। বাপ-মায়ের দোয়া নে। তোদের দিন শেষ। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’ ওই রাতে খালিদ হাসানের বাড়িতে পেট্রল ঢেলে অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করা হয় বলেও তিনি অভিযোগ করেন।
এনসিপি নেতা খালিদ হাসান জানান, শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১১টার দিকে তিনি বাড়িতে যান। এরপর ঘরের মধ্যে বসে ছিলেন। হঠাৎ জানালার পাশ দিয়ে অপরিচিত একজন বলেন, ‘বাইরে বের হয়ে দেখ।’ এরপর তিনি বারান্দায় গিয়ে দেখেন, টিনের সঙ্গে থাকা কাঠের আড়ায় আগুন জ্বলছে। এ সময় তিনি পেট্রলের গন্ধ পান।
খালিদ হাসান বলেন, এ ঘটনার পর তিনি বাড়ি থেকে বের না হয়ে প্রতিবেশীদের ডাকেন। ধুরইল বাজারের নৈশপ্রহরীও আসেন। ইতিমধ্যে পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এরপর তিনি বাড়ি থেকে বের হলে সামনে একটি পলিথিন দেখতে পান। পলিথিনে কী আছে না জেনে তাঁরা সেটিতে হাত দেননি। পুলিশ আসার পর সেটি দেখে। তখন ভেতরে একটি কাফনের কাপড় ও চিরকুট পাওয়া যায়। পরে চিরকুট ও কাফনের কাপড়টি পুলিশ নিয়ে যায়।
খালিদ হাসান বলেন, ‘বৃষ্টির কারণে বাড়ি ভেজা অবস্থায় আছে। এ জন্য পেট্রল ঢাললেও আগুন ছড়িয়ে পড়েনি। যেটুকু আগুন লেগেছিল, সেটা আমরা নিভিয়ে ফেলতে পেরেছিলাম। এখন এমন হুমকি পাওয়ায় আমি উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। চিরকুটে জয় বাংলা লেখা আছে। তাতে বোঝা যায়, কারা করেছে। এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করব।’
মোহনপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতাউর রহমান বলেন, ‘রাত পৌনে ১২টার দিকে খবর পেয়েই সেখানে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। আমি খালিদ হাসানকে অভিযোগ দিতে বলেছি। অভিযোগ পাওয়ার পর সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা ঘটনাটি তদন্ত করছি।’
এনসিপির রাজশাহী জেলার যুগ্ম সমন্বয়কারী নাহিদুল ইসলাম আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, আপাতত থানায় একটি জিডি করা হবে। তারপর পুলিশ তদন্ত করে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন করবে।