রাতে হঠাৎ ঘুম ভেঙে গেলে আবার ঘুম না এলে এসব নিয়ম আপনার জন্য
Published: 8th, May 2025 GMT
১. বিরক্তিকর আওয়াজ: রাতে অনেকের ঘুম ভাঙে কোনো কিছুর আওয়াজ শুনে। হতে পারে সেটা জানালা, টিভি বা মুঠোফোনের নোটিফিকেশনের আওয়াজ। তাই ঘুমানোর আগে জানালা, টিভি বা অন্যান্য ডিভাইস সম্ভব হলে বন্ধ করে ঘুমান। তা ছাড়া আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যদি অনবরত শব্দ হতেই থাকে, তাহলে ইয়ারফোনে প্রশান্তিদায়ক কোনো মিউজিক; হোয়াইট বা পিংক নয়েজ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতে পারেন।
২.
বিছানা ছেড়ে ওঠা: ঘুম ভেঙে গেল কিন্তু শুয়ে আছেন ১৫-২০ মিনিট ধরে; তবু ঘুমের কোনো নামগন্ধ নেই। এ সময় অন্য ঘরে চলে যান। সেখানে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। মনটাকে শান্ত করুন এবং প্রশান্তিদায়ক কিছুর কথা ভাবুন, এতে ঘুম আসবে।
৩. বারবার ঘড়ি দেখবেন না: ঘুম আসছে না, কিন্তু বারবার ঘড়ি দেখছেন। অন্যদিকে দুশ্চিন্তাও করছেন—সকালের কাজগুলো সময়মতো করতে পারব তো? বারবার সময় দেখে আপনি আপনার উদ্বিগ্নতা বাড়াচ্ছেন। আর উদ্বিগ্ন থাকলে সহজে ঘুমও আসবে না। গবেষণা বলে, উদ্বিগ্নতা সঠিক সময়ে ঘুম না আসার প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দেয়।
আরও পড়ুনআপনার বয়স কত? জেনে নিন দিনে আপনার কতটুকু ঘুম প্রয়োজন০৭ নভেম্বর ২০২৪৪. ডিজিটাল ডিভাইসের পর্দা এড়িয়ে চলা: এই ভুল আমরা বেশির ভাগ সময়ই করি। ঘুম না এলেই মুঠোফোন স্ক্রল বা ল্যাপটপ অন করি। আর এই স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর নীল রশ্মি আমাদের দেহের মেলাটোনিন তৈরিতে বিঘ্ন ঘটায়। এতে ঘুমের আবেশ কেটে যায়। মেলাটোনিন হলো আমাদের দেহের উপকারী হরমোন, যা ঘুমের প্যাটার্ন বা সার্কেল অর্থাৎ সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক রাখে। তাই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে হুট করেই ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রল করা যাবে না।
৫. শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম: শ্বাসপ্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম আছে, যা মনোযোগ বাড়িয়ে ঘুমের বিঘ্নতা দূর করতে সাহায্য করে। এসবের মধ্যে ৪-৭-৮ পদ্ধতিটি খুব উপকারী। নাক দিয়ে ৪ সেকেন্ড শ্বাস নিন, ৭ সেকেন্ড তা ধরে রাখুন, সেই শ্বাস ৮ সেকেন্ড ধরে ছাড়ুন। ঘুম না এলে এই ব্যায়াম করতে পারেন।
৬.শিথিলতা: ঘুমানোর সময় পুরো শরীর শিথিল ও শান্ত রাখতে হবে। এই শিথিলতার সঙ্গে মস্তিষ্ক এবং পেশির একটা সংযোগ কাজ করে। চোখ বন্ধ করে, ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। আপনার মুখের দিকে ফোকাস করুন এবং মুখের প্রতিটি পেশিকে শিথিল করুন। পরবর্তী সময় দেহের প্রতি অঙ্গ এবং শেষমেশ পায়ের পেশিগুলোকে শিথিল করুন।
আরও পড়ুনসারা দিন শুধু ঘুম পায়, কী করব?১৪ ডিসেম্বর ২০২৪৭. বাতি নেভান: ঘুম ভেঙে গেল, কিছুক্ষণ শুয়ে আছেন কিন্তু ঘুম আসছে না। তাই বলে ঘরের বাতি অন করে ঘুমের পরিবেশটা নষ্ট করবেন না। শোবার ঘরের বাতি বা মুঠোফোনের পর্দার আলো, এমনকি ডিম লাইটও অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুম ভেঙে গেলেও আপনার শোবার ঘরে সব সময় ঘুমের উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
৮. বিরক্তিকর কিছু করা: রাতে ঘুম ঠিকঠাক না হলে যেমন সারা দিন অবসাদ লাগে, আবার মেজাজও হয় খিটখিটে। তাই ঘুম ভেঙে গেলে আবার ঘুম ঘুম ভাব আনার জন্য কিছু বিরক্তিকর বিষয়েও নজর দিতে পারেন। খুবই প্রচলিত একটা হলো ভেড়া গোনা।
৯. মিউজিক শোনা: প্রশান্তিদায়ক কিছু মিউজিক আছে, যেসব ঘুমাতে সাহায্য করে। প্রকৃতির বা কৃত্রিম সুরেলা এসব মিউজিক শুনতে পারেন। অনেকেই ঘুমানোর জন্য হোয়াইট নয়েজ পছন্দ করেন। হোয়াইট নয়েজ বিরক্তিকর শব্দগুলো ব্লক করে ঘুমাতে সাহায্য করে। অনেকে আবার ঘুমানোর জন্য পিংক নয়েজ ও সুর পছন্দ করেন।
১০. ঘুমের জন্য অ্যাপ: ঘুমের অনিয়ন্ত্রিত প্যাটার্ন অনেক সময় অনিদ্রারোগের কারণ হয়। মুঠোফোনে কিছু অ্যাপ আছে, যা আপনার ঘুমের মান, সময়, কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত—এসব টুকে রেখে বিশ্লেষণ করে। এ ছাড়া এসব অ্যাপে অনিদ্রা কাটাতে বিভিন্ন গল্প, গান বা মিউজিক থাকে। নিজের বডি ক্লক জেনে নিয়ে ঘুম ঠিক করার জন্য এসব অ্যাপ অনেকটাই কার্যকর।
সূত্র: ফেমিনা
আরও পড়ুনমাত্র এক রাত ঘুম কম হলে কী হয়, জানেন?৩০ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
যমুনার সামনে এনসিপি, আপ বাংলাদেশ, শিবির, জুলাই ঐক্য, ইনকিলাব মঞ্চ
আওয়ামী লীগের বিচার ও দলটির রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সুস্পষ্ট রোডম্যাপ (পথনকশা) ঘোষণার দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন যমুনার সামনে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। বৃহস্পতিবার রাত দশটা থেকে অবস্থান কর্মসূচি শুরু হয়েছে। রাত দেড়টা পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা অবস্থান চালিয়ে যাচ্ছেন।
এতে জাতীয় নাগরিক পার্টি, জুলাই ঐক্য, শিবির, আপ বাংলাদেশ, গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, কওমী মাদরাসার শিক্ষার্থী, ইনকিলাব মঞ্চ, ছাত্র পক্ষের নেতাকর্মীরা অংশ নিয়েছেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন সংগঠন উপস্থিত হচ্ছেন। ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে মিছিল।
এ দিকে প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের সামনে পুলিশ-র্যাব অবস্থান নিয়েছে। অন্যদিকে শিক্ষার্থীরা সড়কে অবস্থান করছেন। তারা নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তারা 'ওয়ান টু থ্রি ফোর, আওয়ামীলীগ নো মোর', খুনি লীগের ঠিকানা এই বাংলায় হবে না, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে হবে, ক্ষমতা না জনতা, জনতা জনতা' ইত্যাদি স্লোগান দেন।
কর্মসূচিতে এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্য সচিব আখতার হোসেন, আপ বাংলাদেশের আলী আহসান জুনায়েদ, রাফে সালমান রিফাত, মোহাম্মদ হিযবুল্লাহ, শিবিরের দপ্তর সম্পাদক সিবগাতুল্লাহ, ইনকিলাব মঞ্চের শরীফ ওসমান হাদিসহ কওমী মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন।
এ ছাড়া এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক তাসনীম জারা, যুগ্ম আহবায়ক মনিরা শারমিন, নুসরাত তাবাসসুম, তাজনূভা জাবীন, সারোয়ার তুষার অংশ নিয়েছেন।
ছাত্রসংগঠনের মধ্যে সমন্বয়ক আব্দুল কাদের, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সদস্যসচিব জাহিদ আহসান, জুলাই ঐক্যের এবি জুবায়ের, মুসাদ্দিক আলী ইবনে মুহাম্মদ প্রমুখ উপস্থিত আছেন।
শিক্ষার্থীদের অবস্থানকে কেন্দ্র করে ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলের সামনের সড়কে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে পুলিশ। এই সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
কর্মসূচিতে এনসিপির যুব উইংয়ের প্রধান তারিকুল ইসলাম বলেন, আমরা দীর্ঘ সময় এখানে অপেক্ষা করবো। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের আগে আমরা যমুনার সামনে থেকে যাচ্ছি না।
ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদি বলেন, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের প্রশ্নে ইন্টেরিমকে আর সময় দিতে রাজি নই, লাশ হয়ে ফিরবো না হয় আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করতে হবে।
কর্মসূচিতে এনসিপির যুগ্ম আহবায়ক সারোয়ার তুষার বলেন, নয় মাস কেটে গেছে দৃশ্যমান বিচার কার্যক্রম নেই। আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা পালিয়ে যাচ্ছে। আমরা দেখেছি- বিচার না করে ছয়শতাধিক আওয়ামী লীগ নেতাদের পালিয়ে যেতে দেওয়া হয়েছে। এজন্য আমরা দাবি জানিয়েছি, আওয়ামীলীগের রাজনীতি নিষিদ্ধ করতে হবে। উপদেষ্টা পরিষদ পুনর্গঠন করতে হবে।
এ দিকে বৃহস্পতিবার রাতে নিজের ফেরিফায়েড ফেসবুক পেজে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া বলেছেন, নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ। সপ্তাহ খানেক আগে থেকেই প্রসেস করে সব ফরমালিটি শেষ করে এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে আছে।
এ দিকে নাহিদ ইসলাম ফেসবুক পোস্টে উল্লেখ করেছেন যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ নিষিদ্ধ করার প্রহসন মেনে নেওয়া হবে না। আওয়ামী লীগকে সন্ত্রাসী ও ফ্যাসিস্ট সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করে নিষিদ্ধ করতে হবে। আইসিটি আইনে দল হিসেবে বিচার করার বিধান যুক্ত করতে হবে।