১. বিরক্তিকর আওয়াজ: রাতে অনেকের ঘুম ভাঙে কোনো কিছুর আওয়াজ শুনে। হতে পারে সেটা জানালা, টিভি বা মুঠোফোনের নোটিফিকেশনের আওয়াজ। তাই ঘুমানোর আগে জানালা, টিভি বা অন্যান্য ডিভাইস সম্ভব হলে বন্ধ করে ঘুমান। তা ছাড়া আপনার নিয়ন্ত্রণের বাইরে যদি অনবরত শব্দ হতেই থাকে, তাহলে ইয়ারফোনে প্রশান্তিদায়ক কোনো মিউজিক; হোয়াইট বা পিংক নয়েজ শুনতে শুনতে ঘুমিয়ে যেতে পারেন।

২.

বিছানা ছেড়ে ওঠা: ঘুম ভেঙে গেল কিন্তু শুয়ে আছেন ১৫-২০ মিনিট ধরে; তবু ঘুমের কোনো নামগন্ধ নেই। এ সময় অন্য ঘরে চলে যান। সেখানে ঘুমানোর চেষ্টা করুন। মনটাকে শান্ত করুন এবং প্রশান্তিদায়ক কিছুর কথা ভাবুন, এতে ঘুম আসবে।

৩. বারবার ঘড়ি দেখবেন না: ঘুম আসছে না, কিন্তু বারবার ঘড়ি দেখছেন। অন্যদিকে দুশ্চিন্তাও করছেন—সকালের কাজগুলো সময়মতো করতে পারব তো? বারবার সময় দেখে আপনি আপনার উদ্বিগ্নতা বাড়াচ্ছেন। আর উদ্বিগ্ন থাকলে সহজে ঘুমও আসবে না। গবেষণা বলে, উদ্বিগ্নতা সঠিক সময়ে ঘুম না আসার প্রবণতা আরও বাড়িয়ে দেয়।

আরও পড়ুনআপনার বয়স কত? জেনে নিন দিনে আপনার কতটুকু ঘুম প্রয়োজন০৭ নভেম্বর ২০২৪

৪. ডিজিটাল ডিভাইসের পর্দা এড়িয়ে চলা: এই ভুল আমরা বেশির ভাগ সময়ই করি। ঘুম না এলেই মুঠোফোন স্ক্রল বা ল্যাপটপ অন করি। আর এই স্মার্টফোন বা ডিজিটাল ডিভাইসগুলোর নীল রশ্মি আমাদের দেহের মেলাটোনিন তৈরিতে বিঘ্ন ঘটায়। এতে ঘুমের আবেশ কেটে যায়। মেলাটোনিন হলো আমাদের দেহের উপকারী হরমোন, যা ঘুমের প্যাটার্ন বা সার্কেল অর্থাৎ সার্কেডিয়ান রিদম ঠিক রাখে। তাই মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে হুট করেই ফোন হাতে নিয়ে স্ক্রল করা যাবে না।

৫. শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম: শ্বাসপ্রশ্বাসের কিছু ব্যায়াম আছে, যা মনোযোগ বাড়িয়ে ঘুমের বিঘ্নতা দূর করতে সাহায্য করে। এসবের মধ্যে ৪-৭-৮ পদ্ধতিটি খুব উপকারী। নাক দিয়ে ৪ সেকেন্ড শ্বাস নিন, ৭ সেকেন্ড তা ধরে রাখুন, সেই শ্বাস ৮ সেকেন্ড ধরে ছাড়ুন। ঘুম না এলে এই ব্যায়াম করতে পারেন।

৬.শিথিলতা: ঘুমানোর সময় পুরো শরীর শিথিল ও শান্ত রাখতে হবে। এই শিথিলতার সঙ্গে মস্তিষ্ক এবং পেশির একটা সংযোগ কাজ করে। চোখ বন্ধ করে, ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। আপনার মুখের দিকে ফোকাস করুন এবং মুখের প্রতিটি পেশিকে শিথিল করুন। পরবর্তী সময় দেহের প্রতি অঙ্গ এবং শেষমেশ পায়ের পেশিগুলোকে শিথিল করুন।

আরও পড়ুনসারা দিন শুধু ঘুম পায়, কী করব?১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

৭. বাতি নেভান: ঘুম ভেঙে গেল, কিছুক্ষণ শুয়ে আছেন কিন্তু ঘুম আসছে না। তাই বলে ঘরের বাতি অন করে ঘুমের পরিবেশটা নষ্ট করবেন না। শোবার ঘরের বাতি বা মুঠোফোনের পর্দার আলো, এমনকি ডিম লাইটও অনেক সময় ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায়। তাই ঘুম ভেঙে গেলেও আপনার শোবার ঘরে সব সময় ঘুমের উপযোগী পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করুন।

৮. বিরক্তিকর কিছু করা: রাতে ঘুম ঠিকঠাক না হলে যেমন সারা দিন অবসাদ লাগে, আবার মেজাজও হয় খিটখিটে। তাই ঘুম ভেঙে গেলে আবার ঘুম ঘুম ভাব আনার জন্য কিছু বিরক্তিকর বিষয়েও নজর দিতে পারেন। খুবই প্রচলিত একটা হলো ভেড়া গোনা।

৯. মিউজিক শোনা: প্রশান্তিদায়ক কিছু মিউজিক আছে, যেসব ঘুমাতে সাহায্য করে। প্রকৃতির বা কৃত্রিম সুরেলা এসব মিউজিক শুনতে পারেন। অনেকেই ঘুমানোর জন্য হোয়াইট নয়েজ পছন্দ করেন। হোয়াইট নয়েজ বিরক্তিকর শব্দগুলো ব্লক করে ঘুমাতে সাহায্য করে। অনেকে আবার ঘুমানোর জন্য পিংক নয়েজ ও সুর পছন্দ করেন।

১০. ঘুমের জন্য অ্যাপ: ঘুমের অনিয়ন্ত্রিত প্যাটার্ন অনেক সময় অনিদ্রারোগের কারণ হয়। মুঠোফোনে কিছু অ্যাপ আছে, যা আপনার ঘুমের মান, সময়, কত ঘণ্টা ঘুমানো উচিত—এসব টুকে রেখে বিশ্লেষণ করে। এ ছাড়া এসব অ্যাপে অনিদ্রা কাটাতে বিভিন্ন গল্প, গান বা মিউজিক থাকে। নিজের বডি ক্লক জেনে নিয়ে ঘুম ঠিক করার জন্য এসব অ্যাপ অনেকটাই কার্যকর।

সূত্র: ফেমিনা

আরও পড়ুনমাত্র এক রাত ঘুম কম হলে কী হয়, জানেন?৩০ জানুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র জন য আপন র

এছাড়াও পড়ুন:

ইরানে বিক্ষোভে ফুঁসে উঠেছে জনগণ, অংশ নিলেন প্রেসিডেন্টও

ইরানের তেহরানে যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক বিমান হামলার প্রতিবাদে হাজারো মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছেন। দেশটির রাজধানীজুড়ে রোববার সকাল থেকেই বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেখানে যোগ দেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান।

বিক্ষোভ ‘আমেরিকার আগ্রাসনের জবাব চাই’, ‘আমেরিকা নিপাত যাক’, ‘ইসরায়েল ধ্বংস হোক’- ইত্যাদি নানা স্লোগান দিতে দেখা যায়।

প্রতিবাদকারীদের হাতে ছিল ইরানি পতাকা, নিহতদের ছবি এবং ট্রাম্প ও ইসরায়েলি নেতাদের কুশপুতুল। অনেকে হাতে ধরে রেখেছিলেন ব্যানার যাতে লেখা ছিল:

‘আমরা প্রতিরোধ করবো, আত্মসমর্পণ নয়’, ‘হামলা হলে জবাব আসবেই’, ‘পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের রক্ত বৃথা যাবে না’

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া একজন শিক্ষার্থী বলেন, ‘এই হামলা কেবল ইরানের নয়, সমস্ত মুসলিম বিশ্বের ওপর আঘাত। আমেরিকা জানে না, ইরান কখনও মাথানত করে না।’

ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং স্থানীয় সংবাদমাধ্যমগুলো বিক্ষোভের লাইভ সম্প্রচার করে। অনেক জায়গায় ধর্মীয় নেতারা উপস্থিত থেকে জনগণকে ‍উদ্বুদ্ধ করেন প্রতিরোধে সক্রিয় থাকতে।

তেহরানের আজাদি স্কয়ার, ফার্দৌসি স্কয়ার, ইমাম হোমেইনি মসজিদের সামনে এবং পার্লামেন্ট ভবনের সামনে ছিল প্রধান বিক্ষোভস্থল। তবে দেশটির বিভিন্ন স্থানেও ছোটখাটো করে বিক্ষোভ হয়। তেহরানের আজাদি স্কয়ারে আসেন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। পরে তিনি বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অংশ নেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই বিক্ষোভগুলো শুধু সরকার সমর্থিত নয়—বিশেষ করে ইরানে পারমাণবিক বিজ্ঞানীদের ওপর হামলার পর সাধারণ জনগণের মধ্যেও জাতীয় ঐক্য ও ক্ষোভ উভয়ই দৃশ্যমান।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্রের ‘অপারেশন মিডনাইট হ্যামার’ নামে সামরিক অভিযানে ইরানের ফোর্দো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালানো হয়। এর পরই দেশজুড়ে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ