কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি থেকে ৫৬ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তারা এ ঘোষণা দেন। 

জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মামলা বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তারা পদত্যাগ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। একইসঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি বাতিলের দাবিও জানান তারা। পদত্যাগকারীদের মধ্যে আটজন যুগ্ম-আহ্বায়ক ও আটজন যুগ্ম-সদস্য সচিব রয়েছেন।

পদত্যাগকারী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তারা জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনের জন্য মিলনায়তন ভাড়া করেছিলেন। তবে দুপুরের দিকে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরি তালাবদ্ধ করে চলে যায়। এ কারণে তারা লাইব্রেরিতে ঢুকতে না পেরে লাইব্রেরির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন।

আরো পড়ুন:

জাতীয় পার্টি ছাড়লেন খুলনার সাবেক এমপিসহ ৩ নেতা

ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ  

তাদের অভিযোগ, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে মিলনায়তনটি বন্ধ করে দেয়। এ কারণে তারা অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করতে পারেননি।

লাইব্রেরির সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আলী রাইয়ান জোহান (পদত্যাগকারী যুগ্ম-আহ্বায়ক), হাসিবুল হোসইন (পদত্যাগকরী সদস্য), মামুন মিয়া (বহিষ্কৃত যুগ্ম- সদস্য সচিব) ও শারমিন আক্তার মিতু (পদত্যাগকারী সংগঠক)।

তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্প্রতি সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সদস্য সচিব মামুন মিয়া ও সংগঠক রিয়াদ আহমেদ উল্লাসকে মিথ্যা অভিযোগে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে তারা সবাই পদত্যাগ করেছেন।

লিখিত বক্তব্যে ওই চার নেতাকর্মী বলেন, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য, নিরীহ মানুষকে হয়রানি, দখল বাণিজ্য, অবৈধভাবে হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল, সংগঠনের ভেতর থেকে এর প্রতিবাদ উঠে। আর এ কারণে মামুন ও রিয়াদকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। তারা দুজন স্বৈরাচারী কায়দায় সংগঠন চালাচ্ছেন। 

তাদের অভিযোগ, ৩২১ সদস্যের জেলা কমিটিতে ১০০ জনের নামই ভুয়া। বাস্তবে তাদের অস্তিত্ব নেই। তাছাড়া জুলাই অন্দোলনে সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের কেনো অংশগ্রহণ ছিল না। তিনি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কমিটির সদস্য সচিব বনে যান। সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগকারী প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন।

সংগঠনের ৫৬ জন নেতাকর্মীর পদত্যাগ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘‘বহিষ্কৃত মামুন ও রিয়াদই মূলত মামলা বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চার-পাঁচজন সংগঠনের সদস্য, বাকিরা ভুয়া। আর আমি কোনো অনিয়ম দুর্নীতিতে যুক্ত নই। স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগঠন চালাচ্ছি।’’

পাবলিক লাইব্রেরি বুকিং বাতিল করা প্রসঙ্গে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মু.

আ লতিফ বলেন, ‘‘সংবাদ সম্মেলন নিয়ে দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থানের কারণ ও এ সব নিয়ে হাঙ্গামার আশঙ্কায় সংবাদ সম্মেলনের বুকিং বাতিল করা হয়।’’
 

ঢাকা/রুমন/বকুল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ ন ত কর ম ও সদস য পদত য গ স গঠন র কম ট র

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ফের উত্তাল কেনিয়া, নিহত ৮

কেনিয়াজুড়ে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম রুটোর সরকারের বিরুদ্ধে এক দিনের বিক্ষোভে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসার পর, পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে কমপক্ষে আটজন নিহত এবং ৪০০ জন আহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২৪ সালে কেনিয়ায় মারাত্মক সরকারবিরোধী বিক্ষোভের ঢেউয়ের ঠিক এক বছর পর, গতকাল বুধবার (২৪ জুন) রাজধানী নাইরোবি ও অন্যান্য শহরে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

বিক্ষোভকারীদের অনেকেই ‘রুটোকে যেতে হবে’ বলে স্লোগান দেন এবং তার শাসনের শান্তিপূর্ণ বিরোধিতার প্রতীক হিসেবে পাম গাছের পাতা নিয়ে মিছিল করেন।

সরকার বিক্ষোভের সরাসরি টিভি ও রেডিও সম্প্রচার নিষিদ্ধ করেছিল, কিন্তু রাজধানী নাইরোবির হাইকোর্ট সেই ডিক্রি বাতিল করে দেয়।

রুটো বিক্ষোভকারীদের শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি না দেওয়ার আহ্বান জানান, কারণ জনতা তার সরকারি বাসভবনে পৌঁছানোর চেষ্টা করেছিল কিন্তু পুলিশ তাদের পিছু হটিয়ে দেয়।

রুটো উপকূলীয় কাউন্টি কিলিফিতে একটি অনুষ্ঠানে বলেন, “কেনিয়ায় শান্তি নষ্ট করার জন্য বিক্ষোভ করা উচিত নয়। যখন কিছু ভুল হয় তখন আমাদের অন্য কোনো দেশে যাওয়ার দরকার নেই। আমাদের দেশকে নিরাপদ রাখা আমাদের দায়িত্ব।”

রুটো বুধবার তার সরকারি বাসভবন স্টেট হাউসে ছিলেন না। কারণ বিক্ষোভকারীরা সেখানে হামলা চালানোর হুমকি দিয়েছিল।

বিক্ষোভকারীদের আটকাতেই খণ্ডযুদ্ধ বাধে পুলিশের সঙ্গে। তাদের আটকাতে জলকামান এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। চালানো হয় গুলিও। নিরাপত্তাজনিত কারণে বন্ধ করে দেওয়া হয় পার্লামেন্টের সঙ্গে মূল সড়কের সংযোগকারী রাস্তা। বন্ধ করে দেওয়া আশপাশের সব রাস্তা, ব্যাংক এবং দোকান। 

বুধবারের বিক্ষোভে হতাহতের কোনো পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষ এখনও দেয়নি, তবে কেনিয়া মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন, ল সোসাইটি অব কেনিয়া এবং পুলিশ রিফর্মস ওয়ার্কিং গ্রুপ এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, কমপক্ষে আটজন বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছেন।

আহত ৪০০ জনের মধ্যে ৮৩ জনের ‘বিশেষ চিকিৎসা’ প্রয়োজন এবং আটজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বিবৃতিতে আরো বলা হয়েছে, আহতদের মধ্যে তিনজন পুলিশ কর্মকর্তাও রয়েছেন।

মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি কেনিয়া নিহতের সংখ্যা ১৬ জন বলে জানিয়েছে। 

প্রসঙ্গত, গত বছর ২৫ জুন কর বাড়ানোর বিতর্কিত আর্থিক বিল পাসের প্রতিবাদে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয় কেনিয়ায়। রাজধানী নাইরোবি-সহ দেশের বিভিন্ন শহরে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে অন্তত ৬০ জন নিহত হওয়ার খবর জানা গিয়েছিল। ঠিক এক বছর পর ফের উত্তপ্ত হলো কেনিয়া।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ফের উত্তাল কেনিয়া, নিহত ৮