কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৫৬ নেতার পদত্যাগ
Published: 8th, May 2025 GMT
কিশোরগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি থেকে ৫৬ জন নেতাকর্মী পদত্যাগ করেছেন। বৃহস্পতিবার (৮ মে) বিকেলে সংবাদ সম্মেলন ডেকে তারা এ ঘোষণা দেন।
জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের বিরুদ্ধে দুর্নীতি, মামলা বাণিজ্য ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ এনে তারা পদত্যাগ করেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়। একইসঙ্গে দুর্নীতিগ্রস্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা কমিটি বাতিলের দাবিও জানান তারা। পদত্যাগকারীদের মধ্যে আটজন যুগ্ম-আহ্বায়ক ও আটজন যুগ্ম-সদস্য সচিব রয়েছেন।
পদত্যাগকারী নেতাকর্মীদের অভিযোগ, তারা জেলা পাবলিক লাইব্রেরিতে বিকেল ৪টায় সংবাদ সম্মেলনের জন্য মিলনায়তন ভাড়া করেছিলেন। তবে দুপুরের দিকে লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষ লাইব্রেরি তালাবদ্ধ করে চলে যায়। এ কারণে তারা লাইব্রেরিতে ঢুকতে না পেরে লাইব্রেরির সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে সংবাদ সম্মেলন করছেন।
আরো পড়ুন:
জাতীয় পার্টি ছাড়লেন খুলনার সাবেক এমপিসহ ৩ নেতা
ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগ নেতার পদত্যাগ
তাদের অভিযোগ, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ও সদস্যসচিব লাইব্রেরি কর্তৃপক্ষকে চাপ দিয়ে মিলনায়তনটি বন্ধ করে দেয়। এ কারণে তারা অডিটোরিয়ামে সংবাদ সম্মেলন করতে পারেননি।
লাইব্রেরির সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন, আলী রাইয়ান জোহান (পদত্যাগকারী যুগ্ম-আহ্বায়ক), হাসিবুল হোসইন (পদত্যাগকরী সদস্য), মামুন মিয়া (বহিষ্কৃত যুগ্ম- সদস্য সচিব) ও শারমিন আক্তার মিতু (পদত্যাগকারী সংগঠক)।
তারা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সম্প্রতি সংগঠনের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-সদস্য সচিব মামুন মিয়া ও সংগঠক রিয়াদ আহমেদ উল্লাসকে মিথ্যা অভিযোগে বহিষ্কার করার প্রতিবাদে তারা সবাই পদত্যাগ করেছেন।
লিখিত বক্তব্যে ওই চার নেতাকর্মী বলেন, জেলা কমিটির আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন ও সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের দুর্নীতি, চাঁদাবাজি, মামলা বাণিজ্য, নিরীহ মানুষকে হয়রানি, দখল বাণিজ্য, অবৈধভাবে হাটবাজার নিয়ন্ত্রণ এতটাই বেপরোয়া হয়ে উঠেছিল, সংগঠনের ভেতর থেকে এর প্রতিবাদ উঠে। আর এ কারণে মামুন ও রিয়াদকে অবৈধভাবে বহিষ্কার করেন আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। তারা দুজন স্বৈরাচারী কায়দায় সংগঠন চালাচ্ছেন।
তাদের অভিযোগ, ৩২১ সদস্যের জেলা কমিটিতে ১০০ জনের নামই ভুয়া। বাস্তবে তাদের অস্তিত্ব নেই। তাছাড়া জুলাই অন্দোলনে সদস্য সচিব ফয়সাল প্রিন্সের কেনো অংশগ্রহণ ছিল না। তিনি পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কমিটির সদস্য সচিব বনে যান। সংবাদ সম্মেলনে পদত্যাগকারী প্রায় সবাই উপস্থিত ছিলেন।
সংগঠনের ৫৬ জন নেতাকর্মীর পদত্যাগ বিষয়ে কিশোরগঞ্জ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক ইকরাম হোসেন বলেন, ‘‘বহিষ্কৃত মামুন ও রিয়াদই মূলত মামলা বাণিজ্য ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। আর সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত চার-পাঁচজন সংগঠনের সদস্য, বাকিরা ভুয়া। আর আমি কোনো অনিয়ম দুর্নীতিতে যুক্ত নই। স্বচ্ছ ও গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সংগঠন চালাচ্ছি।’’
পাবলিক লাইব্রেরি বুকিং বাতিল করা প্রসঙ্গে জেলা পাবলিক লাইব্রেরির সাধারণ সম্পাদক মু.
ঢাকা/রুমন/বকুল
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পদত য গ ন ত কর ম ও সদস য পদত য গ স গঠন র কম ট র
এছাড়াও পড়ুন:
নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের আগে বিএনপি নেতার প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা
১৫ বছর পর নওগাঁ জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আগামীকাল সোমবার নওগাঁ কনভেনশন সেন্টারে জেলার ১১টি উপজেলা ও ৩টি পৌর কমিটির ১ হাজার ৪১৪ জন কাউন্সিলরের ভোটে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক—এই তিন পদে নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।
এদিকে আজ রোববার বেলা দুইটায় জেলা প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কাউন্সিলর বা ভোটার তালিকাকে বিতর্কিত অভিযোগ করে সাধারণ সম্পাদকের পদ থেকে প্রার্থিতা প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম (বেলাল)।
সংবাদ সম্মেলনে জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আমিনুল ইসলাম অভিযোগ করেন, সম্মেলনের কাউন্সিলরদের যে তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে, তাতে নেতা–কর্মীদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয়নি। যাঁরা দীর্ঘদিনের ত্যাগী ও পরীক্ষিত, অনেক মামলা-মোকদ্দমায় আসামি হয়েছেন এবং দলের প্রতিটি কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকেন, এমন অনেক নেতার নাম কাউন্সিলর তালিকায় নেই। অন্যদিকে যাঁরা দুর্দিনে দলের মিছিল ও সভায় আসেননি, তাঁদের নাম তালিকায় রাখা হয়েছে।
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিতর্কিত কাউন্সিলর তালিকার বিষয়ে জেলা বিএনপির সম্মেলন প্রস্তুতি কমিটির প্রধান সমন্বয়কারীর কাছে অভিযোগ করার পরও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এ পরিস্থিতিতে ওই তালিকার অধীনে সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
জানতে চাইলে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সাবেক সদস্যসচিব ও দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী বায়েজিদ হোসেন পলাশ প্রথম আলোকে বলেন, ‘১১টি উপজেলা ও ৩টি পৌর কমিটি দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী গঠন করা হয়েছে। ১৪টি ইউনিটের নিয়ামতপুর ও মান্দা উপজেলা কমিটি ছাড়া বাকি ১২টি কমিটি নির্বাচনের মাধ্যমে সাভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হয়েছে। পরবর্তী সময়ে নির্বাচিত সভাপতি, সাধারণ সম্পদক ও সাংগঠনিক সম্পাদকেরা পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করে জেলা কমিটির কাছে তালিকা পাঠিয়েছেন। আমরা সেই কমিটির অনুমোদন দিয়েছি। এখানে আমাদের নিজেদের লোককে কমিটিতে রাখার কোনো সুযোগ নেই।’
জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সম্মেলন পরিচালনা কমিটির সদস্য শেখ রেজাউল ইসলাম বলেন, সভাপতি পদে আটজন, সাধারণ সম্পাদক পদে চারজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদকের দুটি পদের জন্য আটজন মনোনয়নপত্র তুলেছেন। সম্পূর্ণ গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে কাউন্সিলরদের প্রত্যক্ষ ভোটে এই তিন পদে নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে।
উল্লেখ্য, সর্বশেষ ২০১০ সালে জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে কাউন্সিলরদের ভোটে সভাপতি নির্বাচিত হন সামসুজ্জোহা খান, সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ধলু এবং সাংগঠনিক সম্পাদক মামুনুর রহমান রিপন। ২০১৫ সালে ওই কমিটি বিলুপ্ত হওয়ার পর সম্মেলনের মাধ্যমে আর কোনো কমিটি গঠন করা হয়নি। ২০২২ সালে গঠিত আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক কার্যক্রম চলছে।