দায়ীদের শাস্তি পেতেই হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
Published: 10th, May 2025 GMT
সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের দেশত্যাগে কারা জড়িত, তা জানতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে সরকার।তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে কমিটিকে। তদন্তে যারা দায়ী প্রমাণিত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
তিনি বলেন, “কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।”
শনিবার (১০ মে) দুপুরে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জরুরি অবস্থা জারি নিয়ে গুজব ছড়ানো হচ্ছে: স্বরাষ্ট্র সচিব
ঈদ ও স্বাধীনতা দিবস ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকি নেই: স্বরাষ্ট্র সচিব
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “ইতিমধ্যে কয়েক জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। কেউ কেউ সংযুক্ত রয়েছেন।তদন্ত কমিটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিষয়টি দেখবে। যারা দায়ী, শাস্তি তাদের পেতেই হবে।”
উপদেষ্টা বলেন, “বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপনা আগের চেয়ে অনেক ভালো হয়েছে। সেখানে কীভাবে নিরাপত্তা বলয় পেরিয়ে সাবেক রাষ্ট্রপতি থাইল্যান্ড গেলেন সেটির তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি করা হয়েছে। এছাড়া আবদুল হামিদের বিষয়ে এসবি থেকে মন্ত্রণালয়ে কোনো কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে কিনা এ বিষয়েও আমরা খতিয়ে দেখব।”
তিনি আরো বলেন, “সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরানোর বিষয়ে আইনি প্রক্রিয়া অব্যাহত আছে। এছাড়াও আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে রাস্তা বন্ধ করতে না করার অনুরোধও জানাচ্ছি। এতে জন ভোগান্তি দেখা দেয়। আন্দোলনকারীদের বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত।”
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ষ ট রপত উপদ ষ ট স বর ষ ট র উপদ ষ ট তদন ত
এছাড়াও পড়ুন:
গরুর মাংস ইস্যুতে বিতর্কে অভিনেত্রী: যা বললেন জুন-শ্রীলেখা-রুদ্রনীল
গত বছর বাংলাদেশের একটি টিভি অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন কলকাতার অভিনেত্রী-সঞ্চালক সুদীপা চ্যাটার্জি। এ অনুষ্ঠানে গরুর মাংসের একটি পদ রান্না হয়েছিল। এ নিয়ে তুমুল বিতর্কের মুখে পড়েছিলেন সুদীপা। এবার বিতর্কের মুখে পড়েছেন কলকাতার অভিনেত্রী স্বরলিপি।
মূলত, কয়েক দিন আগে গোয়ায় বেড়াতে যান স্বরলিপি। সমুদ্রপারের একটি রেস্তোরাঁয় বসে ‘বিফ স্টেক’ (গরুর মাংসের একটি পদ) খাওয়ার ছবি তুলে নিজের সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তারপর শুরু হয় সমালোচনা। এ নিয়ে ‘নোংরা’ মন্তব্যেরও শিকার হয়েছেন। তারপর প্রশ্ন উঠেছে—সমাজে ব্যক্তিস্বাধীনতার ভবিষ্যৎ নিয়ে।
আরো পড়ুন:
লোকজন বিয়ে করছে, আমি প্রেমও করতে পারছি না: শ্রীলেখা
আমার যদি কিছু হয়, তার দায়িত্ব পশ্চিমবঙ্গ সরকার নেবে, প্রশ্ন শ্রীলেখার
গত ৭ ডিসেম্বর কলকাতায় এক প্যাটিস বিক্রেতাকে মারধর করা হয়। কারণ গরুর মাংস দিয়ে তৈরি প্যাটিস বিক্রি করছিলেন তিনি। ফলে কলকাতায় বিষয়টি এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ভারতীয় একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন ভারতীয় বাংলা সিনেমার জনপ্রিয় অভিনেত্রী জুন মালিয়া, শ্রীলেখা মিত্র ও রুদ্রনীল ঘোষ।
তৃণমূলের সংসদ সদস্য অভিনেত্রী জুন মালিয়া বলেন, “ধর্ম নিয়ে মেরুকরণ অনেক দিন ধরে চলছে। ইদানীং সেই প্রবণতা আরো বেড়েছে। ভারত গণতান্ত্রিক দেশ। এখানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়। কিন্তু এখন ধর্ম নিয়ে যে বিভাজন করা হচ্ছে, তা খুবই দুঃখের। গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমাদের এটুকু স্বাধীনতা থাকা উচিত যে, আমরা কী খাব, কী পরব, কোথায় যাব, কোন ভাষায় কথা বলব।”
জুন মালিয়ার ভাবনার সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অভিনেত্রী শ্রীলেখা মিত্রও। এ বিষয়ে তার ভাষ্য—“পৃথিবীর যে জায়গায় ধর্ম-রাজনীতি একসঙ্গে হয়েছে সেখানেই ক্ষতি অনিবার্য। কোনো ধর্মগুরু কখনো হিংসা প্রচার করেন না। তবে মানুষ যাতে বেআইনি কাজ না করেন, সেজন্য যেমন আইনের দরকার, তেমনই ধর্মেরও দরকার; যাতে মানুষ বিপথে চালিত না হয়। সেখানেই ধর্মকে কেন্দ্র করে কিছু মানুষ রাজনীতি করছেন। অবাঙালি সংস্কৃতি কলকাতাকেও গ্রাস করছে। মানুষের স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করবে কেন্দ্রীয় সরকার। শক্তভাবে এই পরিস্থিতির বিরুদ্ধে রুখে না দাঁড়ালে সাংঘাতিক বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হবে। ধর্ম, রাজনীতি-দেশ চালানো এক হতে পারে না।”
জুন মালিয়া ও শ্রীলেখা মিত্রর বক্তব্য থেকে সরে গিয়ে ভিন্ন ভাবনার কথা জানিয়েছেন রুদ্রনীল ঘোষ। তার বক্তব্যে ধর্মনিরপেক্ষতার পাঠ উঠে এসেছে। এ অভিনেতা বলেন, “ধর্মনিরপেক্ষতার মানে স্বধর্মে প্রীতি এবং অন্য ধর্মে সম্প্রীতি। হিন্দু মানে ধর্মনিরপেক্ষ হতেই হবে। কিন্তু অন্য ধর্মে এ ধরনের কথা বলা হয় না। এটা আসলে হিন্দুদের কথা নয়। যে হিন্দুরা বামপন্থী রাজনীতি করতেন, তাদের নেতারা এই কথা শিখিয়েছে।”
অভিনেত্রী স্বরলিপির ঘটনায় নেটিজেনদের প্রতিক্রিয়া খানিকটা ব্যাখ্যা করেছেন রুদ্রনীল ঘোষ। এ অভিনেতা বলেন, “একজন হিন্দু মানুষ হিসেবে গরুর মাংস খাওয়া ঠিক নয় ধর্মীয় কারণে। হিন্দুদের ভাবাবেগে আঘাত লাগে। যেমন মুসলমানেরা শুয়োরের মাংস থেকে দূরে থাকেন। তবে এই বিষয়ে কটাক্ষ বা কটু মন্তব্যের যৌক্তিকতা আমি মানি না। কিন্তু হিন্দু ধর্মের মানুষের ভাবাবেগে আঘাত লাগা থেকেই এই প্রতিক্রিয়া বলে আমার মনে হয়।”
সোশ্যাল মিডিয়ায় স্বরলিপি এখন অনেকের চক্ষুশূল। এ অভিনেত্রীর বিভিন্ন পোস্টে গিয়ে আক্রমণ করে মন্তব্য করছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমে স্বরলিপি বলেন, “আমি সত্যি জানি না কেন মানুষ এই ধরনের কমেন্ট করছেন। আমি তো অনেক পরিচিত মুসলিমকে চিনি, যারা গরুর মাংস খান না। আমার পারিবারিক চিকিৎসক থেকে গৃহ সহায়িকা অনেকেই কিন্তু খান না। এর জন্য মানুষ আমার সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন পোস্ট খুঁজে খুঁজে কমেন্ট করবেন? আমার সঙ্গে এমন ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি। খুব অদ্ভুত একটা ব্যাপার।”
ঢাকা/শান্ত