ডেভিড বেকহাম। ইংল্যান্ডের ফুটবল ইতিহাসেই সবচেয়ে গ্ল্যামারাস তারকা বলা যায় তাঁকে, সম্ভবত ইংল্যান্ডের সর্বকালের সেরাদের একজনও। ফ্রি-কিকে তো ফুটবল ইতিহাসেরই অন্যতম সেরা। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে ১৯৯২ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত ক্যারিয়ারে জিতেছেন ক্লাব ফুটবলের সম্ভাব্য সব শিরোপা, পরে রিয়াল মাদ্রিদে ছিলেন বিখ্যাত গ্যালাকটিকো দলের অংশও। বেকহামের মতোই বিখ্যাত তাঁর স্ত্রী পশ—ভিক্টোরিয়া অ্যাডামস, একসময়ের সাড়া জাগানো পপ ব্যান্ড স্পাইস গার্লসের তারকা। দুজনের প্রেম ও বিয়ের গল্পও দুর্দান্ত। যে গল্প বেকহাম লিখেছেন তাঁর আত্মজীবনী ডেভিড বেকহাম: মাই সাইড বইয়ে। পাঠকদের জন্য আজ থাকছে বেকহাম-ভিক্টোরিয়ার প্রথম ডেটের গল্প।কী লিখেছেন বেকহাম

নভেম্বর, ১৯৯৬। তিবলিসি, জর্জিয়া। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ম্যাচের আগের রাত। হোটেল রুমে বসে আছি। আমার রুমমেট গ্যারি নেভিল পাশের বিছানায় হেলান দিয়ে শুয়ে আছে।

খেলার জন্য বিদেশে যাওয়া, সেটা ক্লাবের হয়েই হোক বা ইংল্যান্ডের হয়ে, আমার খুব পছন্দের কিছু না। কী আর দেখব, কী আর করব? খাও, ঘুমাও আর ট্রেনিং করো। হোটেল বদলায়, কিন্তু রুমগুলো সব একই রকম দেখতে।

এই হোটেলটাও এমনই। সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর এটা ছিল জর্জিয়ার একমাত্র আন্তর্জাতিক মানের হোটেল। কিন্তু মনে হচ্ছিল, যেন কোনো কারাগারে আটকে আছি। সব কটি বেডরুমের দরজা একটা অন্যটার দিকে মুখ করা, চারদিকে শুধু ধাতব কাঠামো আর কাচ। জানালা দিয়ে বাইরে তাকালে ধূসর এক নদী, পাশে আধা তৈরি হাইওয়ে। হাঁটতে যাওয়ার ইচ্ছে তো দূরে থাক, জানালা দিয়ে বাইরে চোখ রাখতেও ইচ্ছা করত না।

প্রিয় পশ স্পাইস, আপনি আমাকে চেনেন না। তবে আমার মনে হচ্ছে, যদি আমরা কখনো দেখা করতাম, আমাদের দারুণ জমত। আমাকে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে পাওয়া যাবে, প্রতি শনিবার.

..ডেভিড বেকহাম

তো, আমি আর গ্যারি গল্প করছি। টিভিতে একটা মিউজিক চ্যানেল চলছে। হঠাৎ স্ক্রিনে ভেসে উঠল স্পাইস গার্লসদের নতুন ভিডিও—“সে ইউ’ল বি দেয়ার”। ওরা মরুভূমিতে নাচছে। পশ (ভিক্টোরিয়া) পরেছে একটা কালো ক্যাটস্যুট। তাকে আমার দেখা সবচেয়ে আকর্ষণীয় নারীদের একজন বলে মনে হচ্ছিল। স্পাইস গার্লস আমি আগেও দেখেছি। কে না দেখেছে! যখনই বন্ধুবান্ধবের আড্ডায় কেউ বলত, ‘কাকে তোর ভালো লাগে?’ আমি সব সময় বলতাম, ‘ওই পশ মেয়েটা। যার ববকাট চুল। পা দুটো দারুণ সুন্দর।’

সেই সন্ধ্যায়, সেই দমবন্ধ করা হোটেলের ঘরে, প্রথমবার আমার মনে হলো—পশ স্পাইস অসাধারণ, তার সঙ্গে দেখা করার একটা রাস্তা আমার খুঁজে বের করতেই হবে। ‘লরেন্স অব অ্যারাবিয়া’ সেজে গেলে কেমন হয়! আমাকে কি কেউ একটা উট ধার দেবে?

স্ত্রী ভিক্টোরিয়ার সঙ্গে ডেভিড বেকহাম

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ফায়ারফক্সে আসছে এআই উইন্ডো

কৃত্রিমবুদ্ধিমত্তা বা এআইকেন্দ্রিক ব্রাউজারের বাজার দিন দিন বিস্তৃত হচ্ছে। এই প্রতিযোগিতার মধ্যেই ফায়ারফক্সে নতুন এআই উইন্ডো নামের বিশেষ সুবিধা যুক্ত করার ঘোষণা দিয়েছে মজিলা। সুবিধাটির মাধ্যমে ব্যবহারকারীরা ওয়েবসাইট ব্রাউজ করার সময় প্রয়োজন অনুসারে একটি সমন্বিত এআই সহকারীর সাহায্য নিতে পারবেন। পুরো প্রক্রিয়াই থাকবে ব্যবহারকারীর নিয়ন্ত্রণে।

এক ব্লগ বার্তায় মজিলা জানায়, এআই উইন্ডো ব্রাউজিংয়ে ক্ষেত্রে এআই নির্দেশনা ও ব্যক্তিগত সহায়তার সুবিধা দেবে। সুবিধাটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সক্রিয় থাকবে না। আগ্রহী ব্যবহারকারীরা চাইলে নিজে থেকেই চালু করবেন। যেকোনো সময় বন্ধ করা যাবে। এআইনির্ভর এই সুবিধা ওপেন সোর্স প্রযুক্তির ভিত্তিতে তৈরি করা হচ্ছে।

ফিচারটি পরীক্ষামূলক সংস্করণ কিছু ব্যবহারকারীর কাছে উপলব্ধ হয়েছে। মজিলা জানিয়েছে, যে কেউ চাইলে আগের মতোই ফায়ারফক্স ব্যবহার করে নিজের পছন্দমতো কাস্টমাইজড অভিজ্ঞতা পাবেন। আরও বেশি গোপনীয়তা চাইলে প্রাইভেট উইন্ডো ব্যবহার করতে পারবেন। এআই উইন্ডো ব্রাউজিংকে আরও ব্যক্তিগত উপায়ে ব্যবহারের সুযোগ দেবে।

এআই চালিত ব্রাউজারের ব্যবহার বাড়তে থাকায় বিভিন্ন প্রযুক্তি কোম্পানি এখন সার্চবারের জায়গায় চ্যাটবট যুক্ত করা বা সম্পূর্ণ এআইনির্ভর ব্রাউজার তৈরিতে মনোযোগ দিচ্ছে। ওপেনএআইয়ের চ্যাটজিপিটি অ্যাটলাস বা পারপ্লেক্সিটির কমেট পুরোপুরি এআই এজেন্টকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়েছে।

ভবিষ্যতে লার্জ ল্যাঙ্গুয়েজ মডেলনির্ভর ব্রাউজারের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। প্রতিযোগিতার মধ্যেও ভিন্ন অবস্থান তৈরি করতে চেষ্টা করছে মজিলা। তারা বলছে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ব্যবহারকারীর স্বাধীনতা—এই তিন নীতি সামনে রেখে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা দেওয়া হচ্ছে। ওয়েবকে সবার জন্য উন্মুক্ত, মুক্ত ও নিরাপদ রাখতে চায় মজিলা। মজিলার ভাষ্য অনুযায়ী, ফায়ারফক্সে কোনো একক ইকোসিস্টেমে ব্যবহারকারীকে আটকে রাখা হবে না। এআই ব্যবহারের ওপর কোনো বাধ্যবাধকতাও থাকবে না। কখন, কীভাবে বা আদৌ এটি ব্যবহার করবেন কি না, এমন সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণ ব্যবহারকারীর।

এ বছরের জুনে ফায়ারফক্সের অ্যাড্রেসবারে থাকা ইউনিফায়েড সার্চ সুবিধায় সরাসরি পারপ্লেক্সিটি এআইয়ের মাধ্যমে অনুসন্ধানের অপশন যুক্ত করে মজিলা। নতুন এআই উইন্ডো ফিচার যুক্ত হলে ব্রাউজিং অভিজ্ঞতা আরও বহুমাত্রিক হয়ে উঠবে বলে মনে করছে সংস্থাটি।

সূত্র: ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস

সম্পর্কিত নিবন্ধ