চার জেলায় বজ্রপাতে প্রাণ গেল শিশুসহ ১০ জনের
Published: 11th, May 2025 GMT
দেশের চার জেলায় রোববার বজ্রপাতে শিশুসহ ১০ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পৃথক স্থানে বজ্রপাতে প্রাণ হারিয়েছেন পাঁচজন। এ ছাড়া কিশোরগঞ্জে কলেজছাত্রসহ তিনজন এবং নওগাঁ ও হবিগঞ্জে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মৃতরা হলেন– জাকিয়া আক্তার (৮), শামসুল হুদা (৬৫), আব্দুর রাজ্জাক (৪০), সেলিম মিয়া (৬০) ও জমির খান (২২)। তাদের মধ্যে তিনজন নাসিরনগর উপজেলার বাসিন্দা। জানা গেছে, বিকেলে ধানক্ষেত দেখতে গিয়ে গোকর্ণ গ্রামের শামসুল হুদা, টেকানগর এলাকায় ধান কাটতে গিয়ে সরাইল উপজেলার কালিকচ্ছ গ্রামের রাজ্জাক মিয়া এবং ফুপুর বাড়িতে খেলার সময় চাতলপাড় ইউনিয়নের কচুয়া গ্রামের শিশু জাকিয়া প্রাণ হারায়। এ সময় ভলাকুট ইউনিয়নের হামিদা বেগম (৪৫) নামে এক নারী ধান শুকাতে গিয়ে বজ্রপাতে আহত হয়েছেন। তাঁর কণ্ঠনালি পুড়ে গেছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসক। হামিদা বেগম ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
নাসিরনগরের ইউএনও শাহিনা নাসরিন বলেন, বজ্রপাতে এক দিনে উপজেলায় তিনজনের মৃত্যুর ঘটনা দুঃখজনক। এ ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জনগণকে আরও সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
নাসিরনগর থানার ওসি খায়রুল আলম জানান, মৃতদের পরিবারের অভিযোগ না থাকায় ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে আখাউড়ায় বজ্রপাতে দু’জন মারা গেছেন। তারা হলেন ধরখার ইউনিয়নের রুটি গ্রামের সেলিম মিয়া ও বনগজ এলাকার জমির খান। বিকেলে নিজ জমিতে ধান কাটার পর খড় শুকিয়ে গুছিয়ে রাখার সময় বজ্রপাতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সেলিম। এদিন দুপুরে বনগজ এলাকায় মাঠে গরু চরানোর সময় বজ্রপাতে জমির খানের মৃত্যু হয়।
কিশোরগঞ্জে প্রাণ গেল তিনজনের
কিশোরগঞ্জে পৃথক স্থানে রোববার বজ্রপাতে তিনজন মারা গেছেন। এর মধ্যে ভৈরবে দু’জন ও কুলিয়ারচর উপজেলায় একজন প্রাণ হারান। মৃত ব্যক্তিরা হলেন ভৈরব উপজেলার সাদেকপুর ইউনিয়নের রসুলপুর এলাকার আফসার উদ্দিন মিয়ার ছেলে ফারুক মিয়া (৬০), শ্রীনগরের ইউনুছ মিয়ার ছেলে ফয়সাল মিয়া তৌহিদ (২৮) ও কুলিয়ারচরের হাজারীনগর এলাকার সফিক ইসলাম সফু মিয়ার ছেলে কলেজছাত্র কবির মিয়া (২৫)।
ফারুক মিয়ার ভাতিজা খোকন মিয়া বলেন, রোববার বাড়ির পশ্চিম পাশে জমিতে কাজ করছিলেন তাঁর চাচা। আকাশ মেঘলা দেখে বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে বাড়িতে আসার আগে তিনি বজ্রপাতে আহত হন। স্থানীয়রা তাঁকে ভৈরব উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
মৃত ফয়সালের স্বজন জানান, বাড়ির পাশের জমিতে বিকেলে ধান কাটার সময় বজ্রপাতে আহত হন তিনি। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
কবির মিয়ার ফুপাতো ভাই ডা.
এদিকে নওগাঁর মান্দা উপজেলায় মাঠে শুকানো ধান জড়ো করার সময় বজ্রপাতে জিল্লুর রহমান (৪০) নামে এক কৃষকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে কুসুম্বা দিয়াড়াপাড়া গ্রামে এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরেক কৃষক। তাঁর নাম শফিকুল ইসলাম। দু’জনই কুসুম্বা দিয়াড়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জ উপজেলায় বাড়ির পাশে জমিতে পানি দেওয়ার নালায় গোসলের সময় বজ্রপাতে সাজু মিয়া (২০) নামে এক যুবকের মৃত্যু হয়েছে। রোববার বিকেলে কাকাইলছেও ইউনিয়নের ডেমিকান্দি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। সাজু ওই গ্রামের তজম আলী মিয়ার ছেলে।
(প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধি ও সংবাদদাতা)
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: উপজ ল য় চ ক ৎসক ত নজন
এছাড়াও পড়ুন:
নোয়াখালীতে পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মেঘনা গ্রুপের কর্মকর্তাসহ দুজন নিহত
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদী ও কবিরহাট উপজেলায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় মেঘনা গ্রুপের এক কর্মকর্তাসহ দুই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে সাড়ে ৯টার মধ্যে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে দুর্ঘটনা দুটি ঘটে।
পুলিশ জানায়, দুর্ঘটনায় নিহত দুই ব্যক্তি হলেন মেঘনা গ্রুপের (ফ্রেশ) আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক গোলাম ছারওয়ার (৪৫)। তিনি রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার আবদুস সাত্তার মণ্ডলের ছেলে। নিহত অপরজন হলেন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বিরাহিমপুর গ্রামের বাসিন্দা বেলাল হায়দার (৫২)।
পুলিশ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ সকাল ৯টার দিকে শহরের পশ্চিম মাইজদী এলাকায় মাইজদী-রাজগঞ্জ-ছয়ানী সড়কের নাহার কটেজের মোড়ে মোটরসাইকেল আরোহী মেঘনা গ্রুপের আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক গোলাম ছারওয়ারকে পেছন থেকে চাপা দেয় একটি পণ্যবাহী গাড়ি। এ সময় তিনি মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে ওই গাড়ির পেছনের চাকার নিচে পড়ে ঘটনাস্থলে নিহত হন। পরে সুধারাম থানার পুলিশ গিয়ে নিহত ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করে এবং গাড়িটি আটক করে।
সুধারাম থানার উপরিদর্শক (এসআই) লন্ডন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সড়কের মোড় ঘুরতে গিয়ে সম্ভবত পণ্যবাহী গাড়িটি মোটরসাইকেলকে চাপা দিয়েছে। এতে মোটরসাইকেল থেকে আরোহী গোলাম ছারওয়ার ছিটকে গাড়ির পেছনের চাকার নিচে পড়ে যান। গাড়িটি আটক করা হয়েছে। চালক পালিয়ে গেছেন। নিহত ব্যক্তির পরিবারের অভিযোগের আলোকে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
অপর দিকে আজ সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কবিরহাটের গ্রামের বাড়ি থেকে কিডনি ডায়ালাইসিস করানোর জন্য জেলা শহরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যাচ্ছিলেন বেলাল হায়দার (৫২) নামের এক ব্যক্তি। পথে সুন্দলপুর ইউনিয়নের হাতাইল্লা পোল নামের স্থানে বিপরীত দিক হতে আসা একটি প্রাইভেট কারের সঙ্গে বেলালকে বহনকারী অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় তিনি গুরুতর আহত হন। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারের পর বেলাল হায়দারকে জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় আহত হন বেলালের স্ত্রী, অটোরিকশার চালক, প্রাইভেট কারের চালক, আরোহীসহ কমপক্ষে আরও পাঁচজন। তাঁরা জেলা শহরের বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতাল থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন।
কবিরহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহিন মিয়া দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, খবর পেয়ে কবিরহাট থানার পুলিশ দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি দুটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায়। নিহত ব্যক্তির লাশ পরিবার বাড়িতে নিয়ে গেছে।