নড়াইল জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন
Published: 12th, May 2025 GMT
নড়াইল জেলা হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল গফফারের বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ এনে তাঁর অপসারণ দাবিতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা হয়েছে। আজ সোমবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে জেলা হাসপাতালের সামনের সড়কে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।
বাংলাদেশ প্রাইভেট হাসপাতাল-ক্লিনিক অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নড়াইল জেলা শাখা, নড়াইল ড্রাগ সমিতি এবং স্থানীয় জনসাধারণের ব্যানারে এ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের জেলা শাখার সভাপতি বিদ্যুৎ সান্ন্যাল। বক্তব্য দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক এস এম সাজ্জাদ হোসেন, সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম, সোহেল রানা ও কামরুল বিশ্বাস।
বক্তারা বলেন, আবদুল গফফার সরকারি নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে হাসপাতালে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতিতে জড়িত। তাঁর সঙ্গে খাদ্য সরবরাহকারীদের গোপন আঁতাতের ফলে রোগীদের নিম্নমানের খাবার পরিবেশন করা হচ্ছে। হাসপাতালের সরকারি আলট্রাসনো মেশিন বিকল দেখিয়ে তিনি নিচতলায় এনজিও পরিচালিত আরএইচ স্টেপে নিয়মিত অর্থের বিনিময়ে আলট্রাসনো করে যাচ্ছেন। তাঁর কক্ষে আসা রোগীদেরও সেখানে পাঠানো হয়। এ ছাড়া ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে।
তাঁরা আরও বলেন, ওষুধ ও চিকিৎসাসামগ্রী চুরির মাধ্যমে বিক্রির অভিযোগও রয়েছে তত্ত্বাবধায়কের বিরুদ্ধে। একই সঙ্গে হাসপাতালের দালাল চক্র নির্মূল, মানসম্মত খাবার সরবরাহ ও জরুরি সেবাসমূহ ২৪ ঘণ্টা চালু রাখার দাবি জানান বক্তারা। এ ছাড়া দ্রুত ২৫০ শয্যার হাসপাতাল চালুর দাবিও ওঠে মানববন্ধন থেকে।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন চিকিৎসক আবদুল গফফার। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে মিথ্যা অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। আমি কোনো অনিয়মে জড়িত নই।’ তিনি দাবি করেন, জেলা উন্নয়ন সমন্বয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দালালদের হাসপাতাল থেকে দূরে রাখতে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এরপরই কিছু ক্লিনিক মালিক ও স্বার্থান্বেষী মহল তাঁর বিরুদ্ধে অপপ্রচার শুরু করেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ দেওয়ার দাবি, অন্যথায় পদ্মা সেতু ব্লকেডের ঘোষণা
পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ ও এর আশপাশে ভাঙন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ, গৃহহীনদের পুনর্বাসনের দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জাজিরার নাওডোবা ইউনিয়নের মঙ্গলমাঝি–সাত্তার মাদবর বাজারে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে স্থানীয় বাসিন্দাসহ বিএনপি, জামায়াত, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা অংশ নেন।
সমাবেশে জাজিরায় ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে বাঁধ নির্মাণের দাবি জানানো হয়। আগামী তিন দিনের মধ্যে বাঁধ নির্মাণের প্রকল্প অনুমোদনের ঘোষণা দেওয়া না হলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করার ঘোষণা দেন নেতারা।
সমাবেশে বক্তব্য দেন শরীয়তপুর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরদার নাসির উদ্দিন, সাবেক অর্থ সম্পাদক (কোষাধক্ষ) মজিুবর রহমান, জামায়াতের জাজিরা উপজেলা আমির মাসুম বিল্লাহ, গণ অধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ মুন্সি, এনসিপির যুগ্ম সমন্বয়কারী সবুজ তালুকদার, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির, জাতীয় যুবশক্তির কেন্দ্রীয় কমিটির সংগঠক আকরাম হোসেন প্রমুখ।
গত বছর নভেম্বর থেকে কয়েক দফায় ভাঙনে পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধের এক কিলোমিটার এলাকা বিলীন হয়ে গেছে। বাঁধের পাশে থাকা ৩৫টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও ৫৭টি বসতবাড়ি গত দুই মাসে বিলীন হয়েছে। ভাঙন আতঙ্কে অন্তত ২৫০টি বসতঘর সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ভাঙন বৃদ্ধি পাওয়ায় বাঁধের পাশের তিনটি গ্রামের ৬০০ পরিবার ও মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর ঘাট ও বাজারের ২৪০টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ঝুঁকিতে পড়েছে।
গতকাল বিকেলে জাজিরার মঙ্গলমাঝি-সাত্তার মাদবর বাজারে সমাবেশে নদীভাঙনের শিকার ভুক্তভোগী লোকজন অংশ নেন। পরে সন্ধ্যার দিকে নদীর তীরে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করা হয়।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক আহ্বায়ক ইমরান আল নাজির বলেন, ‘ভাঙনে শত শত মানুষ ভিটেমাটি হারিয়েছেন। ভাঙন রোধে কোনো কার্যকর ভূমিকা নেওয়া হচ্ছে না। গত দেড় মাসে ১ লাখ ৩০ হাজার বালুভর্তি জিওব্যগ ফেলার দাবি করেছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এ তথ্য আমাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য নয়। আমরা এর স্বচ্ছ হিসাব দাবি করছি। দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের পদক্ষেপ না নিলে পদ্মা সেতু ব্লকেড করে দক্ষিণাঞ্চলের ২২ জেলার যোগাযোগব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হবে।’
এ বিষয়ে শরীয়তপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী তারেক হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্প এলাকা রক্ষা বাঁধ সংস্কারের জন্য একটি প্রকল্প প্রস্তাব পানি উন্নয়ন বোর্ডে জমা দেওয়া হয়েছে। এটি যাচাই-বাছাই শেষে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন দিলে দ্রুততম সময়ে সংস্কার কাজ শুরু করা হবে। দুই মাস ধরে ভাঙন ঠেকানোর জন্য বালুভর্তি জিওব্যাগ ফেলা হচ্ছে। জিওব্যাগ ফেলার হিসাব স্বচ্ছতার সঙ্গে রাখা হচ্ছে।