২০২৪ সালের জুনের শেষ ভাগ থেকে আন্দোলনটা দানা বাঁধে। জুলাইয়ের মাঝামাঝি এসে সেই আন্দোলনে রক্ত ঝরে। গুলি চালায় পুলিশ, শহীদ হন রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদসহ ছয়জন। সেই শুরু। এর পর থেকে তরুণদের সেই আন্দোলনে চলতে থাকে নির্যাতন–নিপীড়ন, গুলি, চলে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ।

শুরু থেকেই প্রথম আলো জুলাই গণ–অভ্যুত্থানের ঘটনাপ্রবাহ নিষ্ঠার সঙ্গে তুলে ধরেছে। রেখেছে মৃত্যুর হিসাব, করেছে মানবিক ও বিশ্লেষণধর্মী প্রতিবেদন। গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে বিদ্রোহ–বেদনা ও বীরত্বের কথা উঠে এসেছে সেসব প্রতিবেদনে। দমন–পীড়নের সাহসী ছবি প্রকাশিত হয়েছে অনলাইন ও পত্রিকায়।

প্রথম আলোতে প্রকাশিত সেসব প্রতিবেদন, সাক্ষাৎকার, মতামত, ছবি, ভিডিও জড়ো করা হয়েছে এক জায়গায়। যেখানে পাওয়া যাবে অভ্যুত্থান সময়ের খুঁটিনাটি তথ্য ও বিশ্লেষণ। প্রথম আলোর বিশেষ এই আর্কাইভ সাইটের নাম দেওয়া হয়েছে ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান ২০২৪’। সাইটটির ঠিকানা: https://services.

prothomalo.com/ bidrohe-biplobe/

আর্কাইভ সাইটটি সবার সামনে উপস্থাপন করতে গত শনিবার বিকেলে প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ কর্মীদের নিয়ে এক বৈঠকের আয়োজন করা হয়। শুরুতেই প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান সাইটটি নির্মাণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে বহু কাজ আমরা করেছি। আমরা আমাদের সেরা কাজ করেছি সে সময়। আমাদের সাংবাদিক, ফটোসাংবাদিক তাঁরা তাঁদের সেরা কাজটুকু দিয়েছেন। অনেকে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করেছেন।’

জুলাই জাগরণ নিয়ে প্রথম আলোর অনেক কাজের একটি ছিল ক্রোড়পত্র নিয়ে। প্রথম আলোর সম্পাদক বলেন, গণ–অভ্যুত্থানের পরপর গত বছরের ২২ আগস্ট প্রথম ক্রোড়পত্র করল প্রথম আলো। নাম ছিল ‘বিদ্রোহে–বিপ্লবে’। এরপর প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে গত নভেম্বরে একে একে আরও চারটি ক্রোড়পত্র করা হলো।

জুলাই জাগরণ নিয়ে পাঠকের তোলা ছবি ও ভিডিও নিয়ে প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে প্রথম আলো। সেই প্রতিযোগিতার নাম ছিল ‘ক্যামেরায় বিদ্রোহ’। সেখান থেকে বাছাই করে ২০ জনকে পুরস্কৃত করা হয়। বাছাই করা সেসব ছবি রাখা আছে প্রথম আলোর এই আর্কাইভ সাইটে।

জুলাই জাগরণের ছবি নিয়ে ফটো জার্নাল করা হয়েছে। প্রথমা প্রকাশন থেকে প্রকাশ করা হয় ছয়টি বই। বানানো হয় তিনটি তথ্যচিত্র। গত জানুয়ারিতে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে একটি বিশেষ প্রদর্শনীর আয়োজন করে প্রথম আলো। সেখানে আট শহীদের নানা স্মারকও ছিল। যে কেউ চাইলে সাইটটিতে ঢুকে গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে প্রথম আলোর এ আয়োজন দেখে আসতে পারেন।

সম্পাদক মতিউর রহমান বললেন, এই সাইটটি জুলাই গণ–অভ্যুত্থান নিয়ে করা প্রথম আলোর সব কাজের পূর্ণাঙ্গ এক উপস্থাপনা।

বৈঠক শেষে সাইটটি সবাইকে দেখানো হয়।

কী কী আছে সাইটে

আর্কাইভ সাইটটিতে মোট ১৪টি সেকশন ও সাব–সেকশন আছে। শুরুতেই আছে ৩৬ দিনের আন্দোলনের দিনপঞ্জি। কবে, কোথায় উল্লেখযোগ্য কী কী ঘটনা ঘটেছে, ছবিসহ তার সংক্ষিপ্ত বিবরণ আছে। সেসব দিনে উল্লেখযোগ্য কী কী ঘটনা ঘটেছিল এবং সেসব নিয়ে প্রথম আলো যে প্রতিবেদন ও ছবি ছেপেছিল, তা–ও দেখা যাবে ওই সেকশনে। তার নিচে একনজরে চোখ বুলিয়ে নিতে পারেন জুলাই জাগরণে হতাহতের তথ্য–উপাত্তে।

আন্দোলনের শুরুর দিকে প্রথম যে স্লোগানটি স্বৈরাচার সরকারের ভিত নাড়িয়ে দেয়, সেই স্লোগান ছড়িয়ে পড়েছিল সবার মুখে মুখে, ‘আমি কে তুমি কে, রাজাকার, রাজাকার; কে বলেছে কে বলেছে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ এমনি আরও স্লোগান তখন হয়ে উঠেছিল গণমানুষের কথা। ঘটনার ক্রমানুসারে বাছাই করা সেসব স্লোগান নিয়ে করা হয়েছে একটি সাব–সেকশন, নাম দেওয়া হয়েছে ‘মুক্তির স্লোগান’। আছে প্রথম আলোর সংবাদকর্মীদের করা তিনটি তথ্যচিত্র।

মৃত্যুঞ্জয়ীদের বাছাই করা ২৪টি গল্প রয়েছে। আবু সাঈদ থেকে শুরু করে মুগ্ধ, ফারহানদের কথা আছে সেখানে। আছে দেশের বিজ্ঞজন ও প্রাগ্রসর চিন্তার মানুষদের চিন্তাভাবনা ও তাঁদের মতামত। আছে নবীন–প্রবীণদের কিছু সাক্ষাৎকারও।

৩৬ দিনের আন্দোলনে ঘটে যাওয়া উল্লেখযোগ্য ঘটনাপ্রবাহের ছবিও রাখা আছে এই সাইটে। পৃথক বাটনে ক্লিক করে অনেকগুলো গ্রাফিতির ছবিও দেখতে পাবেন। যেগুলো প্রথম আলোর ফটোসাংবাদিকদের ক্যামেরায় উঠে এসেছিল। ভিডিও আছে কিছু।

সাইটটির শেষ ভাগে আছে জুলাই জাগরণ নিয়ে প্রথম আলোর বিশেষ প্রদর্শনী। গত জানুয়ারিতে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমিতে ওই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। সেখানে জুলাই জাগরণের শহীদদের নানা স্মৃতি স্মারক ঠাঁই পায়। এসবই কম্পিউটারের সামনে বসে দেখা যাবে। প্রদর্শনীর ৩৬০ ডিগ্রি ভার্চ্যুয়াল উপস্থাপনাটিও বেশ দৃষ্টিনন্দন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল র স জ ল ই জ গরণ ব ছ ই কর স ইটট স কশন

এছাড়াও পড়ুন:

সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ ফাঁকা

সরকারি চাকরিতে বিপুল সংখ্যক পদ শূন্য রয়েছে। অনুমোদিত পদের মধ্যে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ২২০টি পদ শূন্য, যা মোট অনুমোদিত পদের ২৪ দশমিক ৪০ শতাংশ। সোমবার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে প্রকাশিত ২০২৪ সালের সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান থেকে এ তথ্য জানা গেছে। 

সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান-২০২৪ এ বলা হয়, বর্তমানে সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদ আছে ১৯ লাখ ১৯ হাজার ১১১টি। এর মধ্যে কর্মরত আছেন ১৪ লাখ ৫০ হাজার ৮৯১ জন।

দেশে অসংখ্য শিক্ষিত তরুণ-তরুণী চাকরি খুঁজছেন। এমন অবস্থায় সরকারি চাকরির বিপুল সংখ্যক পদ ফাঁকা পড়ে আছে। অবশ্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় প্রতিবছর যে পরিসংখ্যান প্রকাশ করে, তাতে দেখা যায় পদ ফাঁকা থাকার হারটি প্রায় একই রকমের। যেমন সরকারি কর্মচারীদের পরিসংখ্যান-২০২২–এর তথ্য বলছে, তখনও সরকারি চাকরিতে অনুমোদিত পদের প্রায় ২৬ শতাংশ পদ শূন্য ছিল, যা সংখ্যায় প্রায় ৫ লাখ।

সরকারি চাকরিতে ২০১৮ সালে ৩ লাখ ৯৩ হাজার ২৪৭টি, ২০১৯ সালে ৩ লাখ ৮৭ হাজার ৩৩৮টি, ২০২০ সালে ৩ লাখ ৮০ হাজার ৯৫৫ এবং ২০২১ সালে ৩ লাখ ৫৮ হাজার ১২৫টি, ২০২২ সালে ৪ লাখ ৮৯ হাজার ৯৭৬টি এবং ২০২৩ সালে ৪ লাখ ৭৩ হাজার একটি পদ ফাঁকা ছিল।
 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ ফাঁকা: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
  • সরকারি চাকরিতে ৪ লাখ ৬৮ হাজার পদ ফাঁকা
  • শাবিপ্রবিতে প্রথম বর্ষের ক্লাস শুরু ৭ জুলাই
  • ন্যাশনাল হাউজিংয়ের ১০ শতাংশ লভ্যাংশ ঘোষণা
  • দ্বিতীয় ধাপে জগন্নাথের ৫০০ ছাত্রের আবাসনের ব্যবস্থা করবে আস-সুন্নাহ ফাউন্ডেশন
  • সিটি ব্যাংক ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেবে
  • ঢাবিতে নবীনদের আবাসন সংকট নিরসনে ছাত্রশিবিরের ৪ দাবি
  • জামিন নামঞ্জুর, কারাগারে সাবেক সিইসি
  • কোহলি, রোনালদো, মেসি—প্রতিটি ইনস্টাগ্রাম পোস্টে কে কত টাকা পান
  • যমুনা ব্যাংকের ২৪ শতাংশ লভ্যাংশ অনুমোদন