কান: প্রতিযোগিতা বিভাগে লড়বে ২২ চলচ্চিত্র
Published: 13th, May 2025 GMT
বিশ্ব চলচ্চিত্রের অন্যতম জমজমাট আসর ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’। সোমবার (১৩ মে) পর্দা উঠবে এই উৎসবের। বরাবরের মতো হলিউড, বলিউডসহ বিশ্বের নানা প্রান্তের তারকা অভিনয়শিল্পী ও নির্মাতারা এতে যোগ দেবেন।
পৃথিবীর অন্যতম বড় এ উৎসবের মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে লড়বে ২২টি সিনেমা। বাংলাদেশের ‘আলী’ সিনেমাও কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শিত হবে। তবে আদনান আল রাজীব নির্মিত এই চলচ্চিত্র স্বল্পদৈর্ঘ্য বিভাগে লড়বে।
সেরার লড়াইয়ে মূল প্রতিযোগিতা বিভাগে ২২টি চলচ্চিত্র রয়েছে। এ তালিকায়— জুলিয়া দুকোর্নোর ‘আলফা’, লিন র্যামসের ‘ডাই মাই লাভ’, ডোমিনিক মলের ‘দোসি ১৩৭’, তারিক সালেহের ‘ঈগলস অব দ্য রিপাবলিক’, আরি অ্যাস্টারের ‘এডিংটন’, মারিও মারতোনের ‘ফুঅরি’, জিন-পিয়েরে দার্দেন, লুক দার্দেনের ‘জুন মেহ’, পাই কানের ‘কুং ই সি দাই’, হাফসিয়া হার্জির ‘লা পেতিত দেহনিয়া’, রিচার্ড লিংকলেটারের ‘নুবেল ভাগ’, ক্লেবার মেন্ডোঞ্চা ফিলও-এর ‘ও এজেন্ট সিক্রেতু’
আরো পড়ুন:
বলিউড তারকারা কেন সরকারবিরোধী কথা বলেন না?
শিল্পী সমিতি নিয়ে অমিত হাসানের বিস্ফোরক মন্তব্য
হায়াকাওয়া সিয়ের ‘রোনোয়া’, কার্লস সাইমনের ‘রোমেরিয়াঁ’, অলিভার ল্যাক্সের ‘সিরাট’, মাসার ‘সাউন্ড অব ফলিং’, অলিভার হারমানাসের ‘দ্য হিস্টোরি অব সাউন্ড’, কেলি রাইহার্ডের ‘দ্য মাস্টারমাইন্ড’, ওয়েস অ্যান্ডারসনের ‘ফোনিশিয়ান স্কিম’, সের্গেই লোজনিতজার ‘টু প্রসিকিউটর’, জাফর পানাহির ‘আন সিম্পল অ্যাকসিডেন্ট’, সাঈদের ‘জাম ও বাচি’।
৭৮তম এই আসরে ফরাসি অভিনেত্রী জুলিয়েট বিনোশের নেতৃত্বাধীন জুরি টিমে রয়েছেন আটজন। সবচেয়ে বড় চমক পায়েল কাপাডিয়া। গত বছর এই ভারতীয় নির্মাতার সিনেমা অল উই ইমাজিন অ্যাজ লাইট গ্রাঁ প্রি জিতেছিল। এ ছাড়া আছেন অস্কারজয়ী অভিনেত্রী হ্যালি বেরি।
তাছাড়াও রয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার নির্মাতা হং সাং-সু, কঙ্গোর নির্মাতা দিওদো হামাদি, মেক্সিকোর নির্মাতা কার্লোস ইয়োয়াজ, ইতালিয়ান অভিনেত্রী অ্যালবা রোরভাকের, ফরাসি-মরোক্কান লেখক ও সাংবাদিক লেইলা স্লিমানি এবং মার্কিন অভিনেতা জেরেমি স্ট্রং। আগামী ২৪ মে এ প্রতিযোগিতার ফলাফল জানা যাবে।
তথ্যসূত্র: ফেস্টিভ্যাল-কানস ডটকম
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর চলচ চ ত র চলচ চ ত র
এছাড়াও পড়ুন:
এক ঢেউয়ে নিভে গেছে মুন্ডাদের কারাম উৎসবের প্রদীপ
খুলনার সুন্দরবনসংলগ্ন কয়রার কয়েকটি গ্রামে ছড়িয়ে আছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী মুন্ডাদের দেড় হাজারের বেশি পরিবার। নিজেদের পরিচয়ে গর্বিত এই জনগোষ্ঠীর গ্রামীণ সংস্কৃতির বড় আয়োজন ছিল কারাম উৎসব। একসময় বছরের নির্দিষ্ট সময়ে ঢাকঢোল, করতাল আর মাদল তালে মেতে উঠতেন মুন্ডা তরুণ-তরুণীরা। হতো নাচ–গান, পূজা ও খাওয়াদাওয়া, যা চলত গভীর রাত পর্যন্ত। এখন সে উৎসব নেই, শুধু গল্প হয়ে বেঁচে আছে মানুষের স্মৃতিতে।
এ অবস্থায় আজ ৯ আগস্ট শনিবার পালিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক আদিবাসী দিবস। ১৯৯৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ দিবসটিকে স্বীকৃতি দেয়। তখন থেকে প্রতিবছর আদিবাসীদের অধিকার, সম্মান ও সংস্কৃতি রক্ষায় এদিন পালন করা হয়।
কয়রার নলপাড়া গ্রামের নমিতা রানী মুন্ডা এখনো আশায় বুক বাঁধেন, হয়তো কোনো এক ভোরে আবার কারাম উৎসব ফিরবে। তাঁর ভাঙা ঘরের বারান্দায় বসে কারাম উৎসবের কথা তুলতেই আকাশের দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘২০০৯ সালের আইলার আগেই শেষবার হইছিল। এরপর আর হয়নি। কারামগাছই তো নেই, উৎসব হবে কীভাবে?’
কারামগাছ—যেটাকে স্থানীয়ভাবে খিলকদম বলা হয়। এই গাছের ডাল ছাড়া কারাম উৎসব অপূর্ণ। মুন্ডারা বিশ্বাস করেন, এই গাছের ডালে লুকানো আছে সমৃদ্ধি আর মঙ্গল।
সম্প্রতি কয়রা উপজেলার মুন্ডাপাড়ার উঠান থেকে উঠান ঘুরে জানা গেল, গল্পের মতো—কীভাবে এক ঢেউয়ে, এক ঝড়ে হারিয়ে গেছে একটি গোটা উৎসব। তাঁদের কথায়, ২০০৯ সালে ঘূর্ণিঝড় আইলায় বাঁধভাঙা নোনাপানির ঢেউয়ে ডুবে যায় উৎসবের মাঠ, উঠান আর বেদি। জমির লবণাক্ততা এমনভাবে জমে বসে, যে কারামগাছ আর বাঁচে না। মাঝেরপাড়ার পরশুরাম মুন্ডা বলেন, ‘গাছ নাই, উদ্যোগী মানুষও নাই। এই গ্রামের নকুল মুন্ডা বাইচে থাকলি হয়তো উৎসব কুরত। নকুল মুন্ডার ছাওয়ালডাও (ছেলে) বেকার হুয়ি পাড়ি দেছে পাশের দেশ ভারতে।’
কয়রার বতুলবাজার এলাকায় গিয়ে কথা হয় স্বপন মুন্ডার সঙ্গে। তিনি পেশায় দিনমজুর। ঘরের ছাউনি ঠিক করার ফাঁকে বললেন, ‘আগে কত আনন্দ হইতো! নাচ-গান, খাওয়াদাওয়া। এক রাত এক দিন চইলতো কারাম উৎসব। কিন্তু আইলার পর সব শেষ।’ পাশ থেকে স্ত্রী রেনু বালা মুন্ডা শোনালেন তেতো বাস্তবতা, ‘উৎসব করতে কত টাকা লাগে জানেন? একটু আগে আলু ধার কইরে আনছি, উনি আছে উৎসবের চিন্তায়! গরিবের আবার উৎসব?’
কাটকাটা গ্রামের লক্ষী রানী মুন্ডার শৈশব কেটেছে শ্যামনগরের গাবুরা ইউনিয়নে। বিয়ের পর কয়রায় এসে আর দেখেননি সেই উৎসব। তিনি বলেন, ‘বাপের বাড়িতে ছোটবেলায় কত দেখিছি। এখন আর হয় না। শুনিছি উত্তরাঞ্চলের দিকিত্তে কেউ কারামগাছের চারা আইনে এলাকায় লাগাইল, কিন্তু বাঁচানো যায়নি।’
যে জায়গায় কারাম উৎসবের বেদি সাজানো হতো, সেখানে এখন কেবল শূন্যতা। কয়রার মাঝেরপাড়া গ্রামের নকুল মুন্ডার বাড়ি–সংলগ্ন কারাম উৎসবের স্থান। সম্প্রতি তোলা