Prothomalo:
2025-11-17@11:12:40 GMT

বই পড়ার সময় মস্তিষ্কে কী ঘটে

Published: 13th, May 2025 GMT

বই পড়ার সময় মস্তিষ্কে আসলে কী ঘটে, তা দীর্ঘদিন ধরে জানার চেষ্টা করছেন বিজ্ঞানীরা। জার্মানির ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান কগনিটিভ অ্যান্ড ব্রেন সায়েন্সেসের স্নায়ুবিজ্ঞানী সাবরিনা টার্কার জানিয়েছেন, মানুষের মস্তিষ্কে ভাষার প্রভাব সম্পর্কে খুব কম তথ্য রয়েছে। আমরা যা জানি তার বেশির ভাগই অল্পসংখ্যক বিষয় নিয়ে একক গবেষণার ফলাফল।

বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের কার্যক্রম সম্পর্কে জানতে বিজ্ঞানীরা ৩ হাজার ৩১ জন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মস্তিষ্ক স্ক্যান করে তথ্য পর্যালোচনা করেছেন। সব মিলিয়ে ১৬৩টি পরীক্ষার ফলাফল একত্র করে নীরবে ও জোরে বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের কাজের ধরন বোঝার চেষ্টা করেছেন বিজ্ঞানীরা। এরই মধ্যে মস্তিষ্কে বই পড়ার প্রভাব জানতে পরিচালিত এ গবেষণা ফলাফল নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড বায়োবিহেভিয়রাল রিভিউস সাময়িকীতে প্রকাশ করেছেন তাঁরা।

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, বই পড়ার সময় মস্তিষ্কের কোন কোন অঞ্চল সক্রিয় হয়ে ওঠে তা শনাক্ত করা হয়েছে। আমাদের মস্তিষ্কের বাঁ পাশ ভাষা প্রক্রিয়াকরণের কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। অক্ষর, বাক্য বা সম্পূর্ণ লেখা পড়লে মস্তিষ্কের এই অংশ সক্রিয় হয়। এত দিন স্নায়ুবিজ্ঞানীরা মস্তিষ্কের সেরিবেলাম অংশের ভূমিকা কিছুটা উপেক্ষা করেছেন। নতুন গবেষণায় দেখা গেছে, সেরিবেলাম শুধু শব্দ প্রক্রিয়াকরণই নয় অর্থ তৈরিতেও জড়িত। তাই ডান পাশের সেরিবেলাম সব ধরনের পড়ার কাজে সক্রিয় থাকে। শুধু তা–ই নয়, জোরে পড়ার সময় ডান পাশের সেরিবেলামের কিছু অংশ অনেক বেশি সক্রিয় হয়ে ওঠে। অর্থাৎ লিখিত শব্দকে কথায় রূপান্তরের জন্য এই অংশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।

গবেষণা ফলাফলে বলা হয়েছে, বাঁ পাশের সেরিবেলাম শব্দ পড়ার সময় বিশেষভাবে ব্যস্ত থাকে। তাই বই পড়ার সময় শব্দের অর্থ বের করার কাজে বাঁ পাশের সেরিবেলামের জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশি। ডান পাশের সেরিবেলাম মূলত সামগ্রিক পাঠ প্রক্রিয়ায় অবদান রাখে। শব্দ নীরবে পাঠ করলে বাঁ অরবিটোফ্রন্টাল, সেরিবেলার ও টেম্পোরাল কর্টিস ধারাবাহিকভাবে সক্রিয় হয়ে ওঠে।

সূত্র: সায়েন্স অ্যালার্ট

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর ছ ন ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

আর্কটিকের জীবাশ্মে ডাইনোসর যুগের সমুদ্রবাসী সরীসৃপের সন্ধান

পৃথিবীর ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী বিলুপ্তির কারণে ডাইনোসররা বহু কোটি বছর আগে হারিয়ে যায়। এরপর কীভাবে প্রাণের প্রত্যাবর্তন ঘটেছিল, তা বুঝতে বিজ্ঞানীরা নতুন কিছু আবিষ্কার করেছেন। গবেষকেরা আর্কটিকের স্পিটসবার্গেন দ্বীপ থেকে ৩০ হাজারের বেশি জীবাশ্মের সন্ধান পেয়েছেন। এই জীবাশ্ম পুরোনো পৃথিবীর অনেক তথ্য সামনে তুলে ধরছে।

প্রায় ২৪ কোটি ৯০ লাখ বছর আগে এই প্রাণীরা বাস করত। আর্কটিকে পাওয়া জীবাশ্মের মধ্যে রয়েছে প্রাচীন সামুদ্রিক সরীসৃপ, উভচর প্রাণী, অস্থিবিশিষ্ট মাছ ও হাঙরের দাঁত, হাড় ও অন্যান্য দেহাবশেষ। এই আবিষ্কার থেকে জানা গেছে, ডাইনোসর যুগের প্রারম্ভে ভয়ংকর বৈশ্বিক উষ্ণায়ন ও গণবিলুপ্তির পরপরই স্থলচর প্রাণীরা দ্রুত সমুদ্রের জীবনযাত্রার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে শুরু করে।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন জীবাশ্ম প্রথম আবিষ্কৃত হয় ২০১৫ সালে। সেগুলো খনন, পরিষ্কার, বিশ্লেষণ, শনাক্তকরণ ও বিস্তারিত পরীক্ষার জন্য বিজ্ঞানীদের প্রায় এক দশক সময় লেগে যায়। নরওয়ের অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক ইতিহাস জাদুঘর ও স্টকহোমের সুইডিশ মিউজিয়াম অব ন্যাচারাল হিস্টরি থেকে স্ক্যান্ডিনেভিয়ান বিশেষজ্ঞদের একটি দল সম্প্রতি এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করেছে। গবেষণাপত্রটি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।

স্পিটসবার্গেন দ্বীপটি স্ভালবার্ড দ্বীপপুঞ্জের অংশ। এটি ডাইনোসর যুগের প্রথম দিকের জীবাশ্মের জন্য সুপরিচিত। এই দেহাবশেষ এমন শিলাস্তরে পাওয়া গেছে যা একসময় বিশাল প্যানথালাসা মহাসাগরের কাছাকাছি কাদাভরা সমুদ্রতল ছিল। বিভিন্ন জীবাশ্ম স্থলচর প্রাণীর সমুদ্রের জীবন শুরু করার প্রথম পর্যায়কে তুলে ধরছে।

সে সময় বিবর্তনীয় পরিবর্তন ঘটেছিল পার্মিয়ান-ট্রায়াসিক বিলুপ্তি নামক ঘটনার পর। সে ঘটনা প্রায় ২৫ কোটি ২০ লাখ বছর আগে ঘটেছিল। ‘দ্য গ্রেট ডায়িং’ বা ‘সবচেয়ে বড় মৃত্যু’ নামে পরিচিত সেই ঘটনায় প্যানজিয়া মহাদেশ ভাঙার সময় বিশাল আগ্নেয়গিরির উদ্‌গিরণ ঘটে। এর ফলে মহাসাগরে অক্সিজেন হ্রাস, অম্লতা বৃদ্ধি ও চরম উষ্ণতার সৃষ্টি হয়। এর ফলে ৯০ শতাংশের বেশি সামুদ্রিক প্রজাতি বিলুপ্ত হয়ে যায় তখন।

দীর্ঘদিন ধরে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, সেই ঘটনার পর সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরতে প্রায় আশি লাখ বছর সময় লেগেছিল। এরপর উভচর ও সরীসৃপ প্রাণীরা ধীরে ধীরে গভীর সমুদ্রে চলে যায়। স্পিটসবার্গেনে আবিষ্কৃত জীবাশ্ম সেই ধারণাকে ভুল প্রমাণ করছে। সেখানে দেখা যায়, পাহাড়ের ঢালে একটি দৃশ্যমান বোনবেড বা জীবাশ্মসমৃদ্ধ স্তর, যা অল্প সময়ের মধ্যেই তৈরি হয়েছিল। স্তরভিত্তিক গবেষণা থেকে দেখা যায়, এর বয়স প্রায় ২৪ কোটি ৯০ লাখ বছর। গণবিলুপ্তির মাত্র ৩০ লাখ বছর পরের সময়ে তৈরি হয় সেই বোনবেড।

গবেষণার অংশ হিসেবে, প্রায় ৩৬ বর্গমিটার এলাকা থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ৮০০ কিলোগ্রামের বেশি উপাদান উদ্ধার হয়। এর মধ্যে ছোট মাছের আঁশ, হাঙরের দাঁত, বড় সামুদ্রিক সরীসৃপের হাড় ও ফসিল হয়ে যাওয়া মলের সন্ধান মিলেছে। এই সব আবিষ্কার ইঙ্গিত দেয়, সেখানে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র নিয়ে আগে যা ভাবা হয়েছিল, তার চেয়ে অনেক দ্রুত পুনর্গঠিত হয় সবকিছু। প্রাথমিক সময়ের মধ্যেই জটিল খাদ্যশৃঙ্খল গঠিত হয়। দ্রুতই বিভিন্ন শিকারি সরীসৃপ ও উভচর প্রাণী সাগরে সক্রিয় হয়।

সূত্র: এনডিটিভি

সম্পর্কিত নিবন্ধ