কোরবানি–সম্পর্কিত বিষয়ের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতে ১৭ সদস্যের কমিটি
Published: 13th, May 2025 GMT
বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীনকে আহ্বায়ক করে ১৭ সদস্যের ‘কোরবানি–সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিতকরণ কমিটি’ করেছে সরকার। আজ মঙ্গলবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ ব্যাপারে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৪ মে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় আসন্ন পবিত্র ঈদুল আজহার সময় কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিতকরণ, পশু আনা–নেওয়া, বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ সার্বিক বিষয়ে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে একটি উচ্চপর্যায়ের কমিটি গঠনের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এ নির্দেশনার ৯ দিনের মাথায় আজ এ কমিটি গঠিত হলো।
ওই বৈঠক শেষে মুহাম্মদ ইউনূস বলেছিলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই আমরা দেখছি মানুষ কোরবানির পশুর চামড়ার ন্যায্যমূল্য পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এর ফলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমাজের হতদরিদ্র মানুষেরা, যারা এ চামড়া বিক্রির টাকার ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এই অব্যবস্থাপনার অবসান হওয়া প্রয়োজন।’
কমিটিতে ৯ জন উপদেষ্টা থাকবেন। তাঁরা হচ্ছেন স্বরাষ্ট্র; শিল্প; সড়ক পরিবহন ও সেতু; পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন; স্থানীয় সরকার, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ; ধর্মবিষয়ক এবং তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা।
এ ছাড়া থাকবেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়), বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব, বাণিজ্যসচিব, শিল্পসচিব, এনজিও প্রতিনিধি, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি এবং সরকার মনোনীত বেসরকারি প্রতিনিধি। সদস্যসচিব থাকবেন বাণিজ্যসচিব।
কমিটির কার্যপরিধি হচ্ছে
সঠিকভাবে চামড়া সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং এ জন্য পর্যাপ্ত লবণের সরবরাহ নিশ্চিত করার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করা; চামড়ার উপযুক্ত মূল্য নিশ্চিত করা এবং কোরবানির সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়াদির সুষ্ঠু ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা; চামড়ার বিক্রয়লব্ধ অর্থপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর স্বার্থ সুরক্ষার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া; কোরবানির হাট, পশু পরিবহন এবং পরিবহনের সময় নিষ্ঠুরতা প্রতিরোধের বিষয়ে নির্দেশনা জারি এবং সাভারের চামড়াশিল্প নগরীসহ সারা দেশে দ্রুত ও যথাযথভাবে বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, প্রয়োজন অনুসারে এ কমিটি সভা ডাকবে। আর প্রয়োজনে নতুন সদস্য নিতে পারবে (কো-অপ্ট)।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন শ চ ত কর ন উপদ ষ ট ক রব ন র সদস য সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা আজও বাস্তবায়িত হয়নি: সিপিবি
গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও জন–আকাঙ্ক্ষা আজও বাস্তবায়িত হয়নি, বরং স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও রাষ্ট্রের চার মূলনীতি লক্ষ্য করে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতারা এ কথাগুলো বলেছেন।
শুক্রবার বিকেলে পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম। এতে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, রাগীব আহসান মুন্না, হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল, সদস্য জাহিদ হোসেন খান, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম সভায় বক্তব্য দেন।
সভায় নেতারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ছিল একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, যার মধ্য দিয়ে দেশে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির উত্থান ঘটে। তাঁরা অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলগুলো, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর নীতি থেকে সরে গিয়ে মোশতাক-জিয়া-এরশাদের অনুসৃত পথে হেঁটেছে।
সিপিবির নেতারা বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার ও টিকে থাকার জন্য তারা বারবার স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেছে। তারা ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম না টেনে বরং লুটেরা ধনিক শ্রেণিকে রক্ষা করতে সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দিয়েছে।’ তাঁরা বলেন, এসব কারণেই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন ঘটে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তবে দুঃখজনকভাবে এক বছর পার হলেও সেই অভ্যুত্থানের মূল দাবি ও লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
আলোচনায় নেতারা আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সমাবেশ। তাঁদের ভাষায়, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নয়, মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।’