দিনে অন্তত আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন। সঙ্গে পানির বোতল রাখুন এবং মাঝেমধ্যে লবণ-চিনির মিশ্রণ বা ওআরএস পান করুন, যাতে ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় থাকে
গ্রীষ্মকালে ভ্রমণ অনেকের কাছে রোমাঞ্চকর হলেও, প্রচণ্ড গরম ও রোদের কারণে শারীরিক অস্বস্তি, পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই গরমে ভ্রমণের আগে ও ভ্রমণের সময় কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে আপনার ভ্রমণ হবে নিরাপদ, স্বাস্থ্যকর ও আনন্দময়।
হাইড্রেটেড থাকুন
গরমের ভ্রমণে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো শরীরের পানির ভারসাম্য রক্ষা করা। দিনে অন্তত আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন। সঙ্গে পানির বোতল রাখুন এবং মাঝেমধ্যে লবণ-চিনির মিশ্রণ বা ওআরএস পান করুন, যাতে ইলেক্ট্রোলাইট ব্যালান্স বজায় থাকে। এ ছাড়া মনে রাখবেন যদি আপনি আগের চেয়ে শুষ্ক আবহাওয়ায় ভ্রমণ করেন, তাহলে আপনাকে বেশি বেশি পানি পান করতে হবে।
হালকা ও ঢিলেঢালা পোশাক বেছে নিন
সাদা বা হালকা রঙের সুতির পোশাক গরমে স্বস্তি দেয়। আঁটসাঁট পোশাক এড়িয়ে চলুন। কারণ এগুলো শরীরে তাপ আটকে রাখে। হ্যাট বা ক্যাপ, রোদচশমা ও ছাতা ব্যবহার করুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকের জন্য ক্ষতিকর। বাইরে বের হওয়ার কমপক্ষে ২০ মিনিট আগে এসপিএফ ৩০ বা তার বেশি সানস্ক্রিন লাগান এবং প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর তা ব্যবহার করুন।
দুপুরের তীব্র রোদ এড়িয়ে চলুন
দুপুর ১২টা থেকে ৩টার মধ্যে সূর্যের তাপ সবচেয়ে বেশি থাকে। এ সময় ভ্রমণ বা বাইরে হাঁটা এড়িয়ে চলুন। সম্ভব হলে সকাল বা বিকেলের দিকে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন।
গন্তব্যস্থল সম্পর্কে ধারণা
যাত্রা শুরু করার আগে আপনার গন্তব্যস্থল সম্পর্কে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে জেনে নিন। স্থানীয় রীতিনীতি, আবহাওয়ার অবস্থা এবং সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো সম্পর্কে ধারণা রাখবেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা তাপপ্রবাহের সতর্কতা থাকলে পরিকল্পনা পরিবর্তন করুন। পর্যটকদের জন্য কোন এলাকাগুলো নিরাপদ এবং কোনগুলো এড়িয়ে চলা উচিত তা জেনে নিতে হবে।
খাবার নিয়ে সতর্কতা
গরমে পচনশীল খাবার থেকে ফুড পয়জনিংয়ের ঝুঁকি বেশি থাকে। বাইরের খোলা খাবার না খাওয়াই ভালো। নিজের তৈরি শুকনো খাবার যেমন– চিড়া, বাদাম, বিস্কুট, খেজুর সঙ্গে রাখতে পারেন। তাছাড়া কিছু হোমমেইড খাবার সঙ্গে রাখবেন। চেষ্টা করবেন পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার জন্য, যা আপনার শরীরে শক্তি দেয়।
শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করুন
যদি উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হিট সেনসিটিভিটি বা অন্য কোনো শারীরিক সমস্যা থাকে, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভ্রমণের পরিকল্পনা করুন। প্রয়োজনীয় ওষুধ সঙ্গে নিন। ওরস্যালাইন এবং ফাস্টএইড বক্স সবসময় সঙ্গে রাখবেন।
মূল্যবান জিনিসপত্রের সুরক্ষা
আপনার গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র সবসময় নিরাপদে রাখুন। আপনার পাসপোর্ট, ক্রেডিট কার্ড এবং নগদ টাকা রাখার জন্য একটি মানি বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন। পকেটমারদের ব্যাপারে সতর্ক থাকুন– বিশেষ করে বাজার, গণপরিবহন এবং পর্যটন আকর্ষণের মতো জনাকীর্ণ এলাকায়। নগদ টাকা ও ক্রেডিট/ডেবিট কার্ড আলাদা আলাদা জায়গায় রাখুন।
বিশ্রাম ও ঘুম
ভ্রমণের আগে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীর ক্লান্ত হয়ে পড়ে, যা গরমে অসুস্থতা ডেকে আনতে পারে। তাই পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করতে হবে এবং ভ্রমণের মাঝপথে বিশ্রামের যথাযথ ব্যবস্থা করবেন।
যে কোনো আবহাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকুন
গরমের মধ্যে হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টির আভাস হরহামেশা দেখা যায়। বৃষ্টির পর আবহাওয়া একটু ঠান্ডা থাকে; তাই আপনার সঙ্গে ছোট বাচ্চা থাকলে তার জন্য তুলনামূলক গরম কাপড় নিতে ভুলবেন না।
হ্যান্ড স্যানিটাইজার
ভ্রমণে সবসময় সঙ্গে হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখবেন। খাবারের আগে হাত ভালোভাবে স্যানিটাইজ করে নেবেন, এটি আপনাকে পেটের সমস্যা হওয়া থাকা মুক্তি দেবে। v
সূত্র: বে হেলথ, লোকাল অ্যাডভেঞ্চারার
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: গরম ব যবহ র কর প ন কর ন ভ রমণ র র জন য সতর ক আপন র
এছাড়াও পড়ুন:
স্মিথের এ কেমন ‘কুসংস্কার’!
কুসংস্কার এমন এক জিনিস যা শিক্ষিত-অশিক্ষিত কিংবা ধনী-গরীব কোনোকিছুই মানে না। ক্রীড়াক্ষেত্রে বিচিত্র সব কুসংস্কার আছে। ফুটবলে যেমন আছে, ক্রিকেটেও আছে।
হালের স্টিভ স্মিথ-স্টুয়ার্ট ব্রড থেকে শুরু করে সেকালের শচীন টেন্ডুলকার, ইমরান খান; সবাই নিজেদের ক্যারিয়ারে কিছু না কিছু কুসংস্কারে বিশ্বাসী ছিলেন।
শচীন সবসময় ব্যাট করতে নামার তাঁর বাঁ পায়ের প্যাড আগে পরতেন সবসময়। এরপরই ডান পায়ের প্যাড পরতেন। স্টিভ ওয়াহ আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের প্রায় পুরোটা সময় পকেটে একটা লাল রঙয়ের ছেঁড়া কাপড় রাখতেন। শ্রীলঙ্কার বিধ্বংসী ফাস্ট বোলার লাসিথ মালিঙ্গা প্রতি বলের আগে বলে চুমু খেতেন। এরকম উদাহরণ ভুড়িভুড়ি রয়েছে। তবে স্টিভেন স্মিথ এমন এক কুসংস্কারের কথা বললেন তা বিশ্বাস-ই করতে কষ্ট হবে যে কারো।
অস্ট্রেলিয়ান তারকা স্টিভ স্মিথের একটি অদ্ভুত কুসংস্কার আছে, টেস্ট ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ব্যাট না করা পর্যন্ত তিনি ঘুমান না।
স্মিথ সম্প্রতি ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেনের সাথে 'দ্য সুইচ' (The Switch) নামক একটি পর্বে এই কুসংস্কার নিয়ে মুখ খুলেছেন। যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে।
স্মিথ পিটারসেনকে বলেছেন, "প্রথম ইনিংসে ব্যাট না করা পর্যন্ত আমার সম্ভবত (ঘুমাতে) কষ্ট হয় এবং তারপর আমি বেশ শান্ত থাকি। এমনকি যদি আমি প্রথম ইনিংসে গিয়ে মাত্র পাঁচটি বলও খেলি এবং সেটা যদি রাতের শেষ হয়, তবুও আমার কোনো সমস্যা হয় না। কিন্তু আমি যতক্ষণ না আসলে গিয়ে সেই প্রথম ইনিংসটা খেলেছি, ততক্ষণ পর্যন্ত জানি না আমার কেন যেন ঘুমাতে কষ্ট হয়। শুধু একবারই নয়, আমার সবসময় কষ্ট হয়েছে।"
পরবর্তীতে পিটারসেন জানতে চান যে, এটা কি ম্যাচের আগের স্নায়ুচাপের কারণে হয়? পিটারসেন আরও যোগ করেন যে, তিনি অনেক গল্প শুনেছেন, স্মিথ কীভাবে তার ঘরে ব্যাট হাতে শুধু শ্যাডো ব্যাটিং করতেন…
স্মিথ জবাব দেন, "না, এটা উত্তেজনা (ঘুমাতে না পারা)। আমি সবসময় এই সময়টাকে কাজে লাগিয়ে কল্পনা করার চেষ্টা করি... হ্যাঁ, আমি কিছু শ্যাডো ব্যাটিং করি। কিছু, আগের মতো অতটা না, তবে আমার বেশিরভাগ ভিজ্যুয়ালাইজেশন তখন ঘটে যখন আমি ঘুমাতে যাই।’’
‘‘এটা হয়তো এমন কিছু নয় যা আপনি স্বাভাবিক বলবেন বা যা আপনি লোকেদের করতে বলবেন। কিন্তু সেখানেই আমি আমার ভিজ্যুয়ালাইজেশন করি এবং একবার যখন আমি সেখানে যাই এবং খেলা শুরু করি, তখন আমি ঠিক থাকি এবং তার পরে আমি ঘুমাই এবং আমার ঘুম-ও হয়।’’
স্মিথ এরপর বলতে থাকেন, "আমি খুব বেশি কুসংস্কারাচ্ছন্ন নই, জানেন? আমি আমার জুতার ফিতে আমার মোজার সাথে বেঁধে রাখি। এটাই!’’
পিটারসেন আবার বলেন যে, তিনি আরেকটি গল্প শুনেছেন যে, একবার দিনের খেলা শুরু হওয়ার আগে ব্র্যাড হ্যাডিন তাকে বল ছুঁড়ে দিচ্ছিলেন এবং ওই ম্যাচে স্মিথ একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন। তারপর প্রতিদিন বল ছুঁড়তে হয়েছিল হ্যাডিনকে…
স্মিথ মাথা নাড়িয়ে উত্তর দেন, "এটা ভারতের বিপক্ষে ছিল। গ্রীষ্মের শুরুতে। আমি চারটি টেস্ট ম্যাচে চারটি সেঞ্চুরি করেছিলাম। তাই আমি তাকে বলেছিলাম আমাকে বল ছুঁড়ে যেতে। এই তো।’’
ঢাকা/ইয়াসিন