এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষাব্যবস্থা পেছনে রেখে পাঞ্জাবের আদমপুর বিমানঘাঁটি থেকে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি বলেন, পাকিস্তান শুধু ভারতের কোনো সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানতে ব্যর্থই হয়নি, যদি তাদের মাটি থেকে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চলতে থাকে, তাহলে তাদের নিশ্চিহ্ন করা হবে।

‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর সশস্ত্র বাহিনীর উদ্দেশে এটিই ছিল নরেন্দ্র মোদির প্রথম ভাষণ। তিনি চার দিনের অভিযানে নয়টি ‘সন্ত্রাসী ঘাঁটি’ ধ্বংস এবং পাকিস্তানের আটটি সামরিক স্থাপনায় আঘাত হানায় সেনাবাহিনীর ভূয়সী প্রশংসা করেন।

প্রায় ২৭ মিনিট দীর্ঘ ওই ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, ‘আপনারা যা করেছেন, তা অভূতপূর্ব, অকল্পনীয় ও বিস্ময়কর।’ তাঁর এই বক্তব্যে কার্যত সোমবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া মোদির ভাষণের বার্তাই প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

তবে মোদির এই ভাষণের তাৎপর্য অনেক। ভাষণটি পাঞ্জাবের আদমপুর বিমানঘাঁটি থেকে দেওয়া হয়। এটি পাকিস্তান সীমান্ত থেকে মাত্র ১০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। পাকিস্তান দাবি করেছিল, তারা এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ–ব্যবস্থাসহ ঘাঁটিটি ধ্বংস করেছে। ভারত এসব দাবি সরাসরি উড়িয়ে দেয়।

নরেন্দ্র মোদি বলেন, অপারেশন সিঁদুর এখন পাকিস্তানের জন্য একটি স্পষ্ট ‘লক্ষ্মণরেখা (চূড়ান্তসীমা)’ টেনে দিয়েছে। পূর্বঘোষণা ছাড়াই মঙ্গলবার ভোরে তিনি বিমানঘাঁটিতে পৌঁছান এবং ইউনিফর্মে থাকা বিমানবাহিনীর সেনাদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় সেনারা ‘ভারত মাতা কি জয়’ ধ্বনি দেন।

সেনাদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর নরেন্দ্র মোদি ভাষণ দেন। এ সময় পেছনে দৃশ্যমান ছিল এস-৪০০ ক্ষেপণাস্ত্রব্যবস্থা আর তাঁর মাথায় ছিল ‘ত্রিশূল’ চিহ্ন–সংবলিত দেশটির বিমান বাহিনীর ওয়েস্টার্ন এয়ার কমান্ডের টুপি।

সেনা, বিমান ও নৌবাহিনীর সদস্যদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সন্ত্রাসবাদের পৃষ্ঠপোষকরা এখন বুঝে গেছে, ভারতের দিকে দৃষ্টি দেওয়া মানেই তাদের নিজের ধ্বংস ডেকে আনা।’

উল্লেখ্য, আদমপুর ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমানঘাঁটি। এখানে রাফাল ও মিগ-২৯ স্কোয়াড্রন মোতায়েন রয়েছে। ১৯৬৫ ও ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে এই বিমানঘাঁটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আদমপ র

এছাড়াও পড়ুন:

আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কথা ভেবে পাকিস্তান অনেকদিন ঘুমাতে পারবে না: মোদি

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বলেছেন, “আমাদের ড্রোন, ক্ষেপণাস্ত্রের কথা ভেবে পাকিস্তান অনেকদিন ঘুমাতে পারবে না।” মঙ্গলবার আদমপুর বিমানঘাঁটিতে সেনাদের উদ্দেশে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেছেন।

পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি হওয়ার দুদিন পর মোদি আদমপুর বিমানঘাঁটি পরিদর্শনে যান। বক্তৃতার পুরো সময় তিনি ভারতীয় সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেছেন এবং পাকিস্তানকে হুমকি দিয়েছেন।

সেনাদের উদ্দেশে মোদি বলেছেন, ‘ভারতবাসী আপনাদের জন্য গর্বিত... আপনারা ইতিহাস রচনা করেছ। আমি আপনাদের আশীর্বাদের জন্য এসেছি... সন্ত্রাসীরা আমাদের সাহস দেখিয়েছিল... কিন্তু আপনারা তাদের উপর সরাসরি আঘাত করেছেন। আপনারা তাদের ঘাঁটি ধ্বংস করে দিয়েছেন এবং ১০০ জন সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছেন। তারা বুঝতে পেরেছে যে যদি তারা আমাদের উপর আক্রমণ করার চেষ্টা করে, তাহলে তাদের ধ্বংস হবে।”

এসময় মোদি হিন্দুত্ববাদী স্লোগান ‘ভারত মাতা কি জয়’ নিয়েও কথা বলেন।

তিনি বলেন, “ভারত মাতা কি জয় কোনো শপথ নয়... এটি দেশের প্রতিটি সৈনিকের শপথ, যারা ভারত মাতার সম্মান ও মর্যাদার জন্য নিজের জীবন বাজী রাখে... এটি যুদ্ধক্ষেত্র এবং অভিযানে প্রতিধ্বনিত হয়। যখন ভারতের সেনারা ভারত মাতা কি জয় বলে, তখন শত্রুর হৃদয় কেঁপে ওঠে।”

মোদি বলেন, ভারতের সেনারা পাকিস্তানকে বলেছে যে সন্ত্রাসীরা বসে স্বাধীনভাবে শ্বাস নিতে পারে এমন কোনো ‘নিরাপদ জায়গা নেই। আমরা তাদের বাড়িতে ঢুকে তাদের হত্যা করব এবং তাদের পালানোর কোনো সুযোগ দেব না।”

প্রসঙ্গত, ৭ মে পাকিস্তানের ওপর হামলা চালায় ভারত। যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় শনিবার ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হয়। ৭ তারিখ থেকে ১১ তারিখ পুরো পরিস্থিতি নিয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি মোদি। ১২ মে তিনি টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। সেখানে পাকিস্তানের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন এবং হামলায় ভারতীয় সেনাদের কৃতিত্ব তুলে ধরেন।

ঢাকা/শাহেদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আমাদের ক্ষেপণাস্ত্রের কথা ভেবে পাকিস্তান অনেকদিন ঘুমাতে পারবে না: মোদি