আগুনে মরেছে ৪ গরু, ছেলের লেখাপড়া বন্ধের শঙ্কায় কাঁদছেন মালিক
Published: 14th, May 2025 GMT
গরু পালনের পাশাপাশি জলাশয়ে শ্রমিক হিসেবে মাছ ধরে সংসার চালান আমের আলী (৪৫)। এ উপার্জন দিয়ে সংসার সামলে এক ছেলেকে শহরে রেখে পড়াচ্ছেন। তবে তাঁর গোয়ালঘরে আগুন লেগে ৪টি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে এমন দুর্ঘটনায় সংসার ও ছেলের পড়াশোনার চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।
আজ বুধবার ভোরে রাজশাহীর বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কয়েলের আগুন থেকে এর সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির পাশে টিনের বেড়া দিয়ে গোয়ালঘর তৈরি করে সেখানে গরু রাখতেন আমের আলী। আজ ভোরে গোয়াল ঘরে আগুন লাগার বিষয়টি টের পান পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে দেখতে পান, আমের আলীর চারটি গরু মারা গেছে।
স্বজনদের ভাষ্য, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষায় গোয়ালঘরে কয়েল জ্বালিয়ে মশা তাড়ানো হয়। সেখান থেকে কোনোভাবে গোয়ালঘরে আগুন ছড়িয়ে যেতে পাড়তে পারে।
কোরবানির ঈদের আগে নিজেদের ৪টি গরু হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন আমের আলী ও তাঁর স্ত্রী। আমের আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে কীভাবে পড়াব? সব শেষ হইয়্যা গেল।’
এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমের আলী ঈদে বিক্রির জন্য গরু চারটি রেখেছিলেন। এর আগেই আগুনে সব শেষ হয়ে গেল।
বাগমারা ফায়ার স্টেশনের লিডার ইব্রাহিম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়নি। আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।
পরিবারটি আবেদন করলে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে বলে জানান বাগমারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ য় লঘর
এছাড়াও পড়ুন:
পেরুর প্রেসিডেন্ট নিজের বেতন দ্বিগুণ করায় সাধারণ মানুষের ক্ষোভ
পেরুর প্রেসিডেন্ট দিনা বলুয়ার্তে নিজের মাসিক বেতন দ্বিগুণ বাড়িয়ে প্রায় ১০ হাজার ডলার (প্রায় ১২ লাখ ২৬ হাজার টাকা) করায় দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। অনেকেই বলছেন, এই অর্থ দরিদ্র মানুষের জন্য ব্যয় করাই ছিল অধিক যুক্তিযুক্ত।
স্থানীয় সময় গত বুধবার রাতে পেরুর অর্থমন্ত্রী জানান, প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের নতুন বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৫৬৮ সোলেস (প্রায় ১০ হাজার ৬৭ ডলার), যা দেশটির ন্যূনতম মজুরির প্রায় ৩০ গুণ।
প্রেসিডেন্টের আগের বেতন ছিল ১৫ হাজার ৬০০ সোলেস (প্রায় ৪ হাজার ৪০০ ডলার), যা ২০০৬ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট অ্যালেন গার্সিয়া নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে প্রেসিডেন্টের বেতন ছিল ৪২ হাজার সোলেস।
সরকার বলেছে, লাতিন আমেরিকার ১২টি দেশের মধ্যে প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের আগের বেতন ছিল ১১তম স্থানে, যা শুধু বলিভিয়ার প্রেসিডেন্টের চেয়ে বেশি। রয়টার্স সরকারের এ দাবির সত্যতা যাচাই করতে পারেনি। তবে গত বছর রিও টাইমসের এক প্রতিবেদনে লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর প্রেসিডেন্টদের বেতন ৩ হাজার ডলার থেকে শুরু করে ২২ হাজার ডলার বলে উল্লেখ করা হয়।
এই সিদ্ধান্তকে ‘একেবারে রসিকতা’ বলে মন্তব্য করেন রাজধানী লিমায় একটি পত্রিকার স্টলের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পেনশনভোগী বাসিন্দা রোলান্দো ফনসেকা। তিনি বলেন, ‘পেরুজুড়ে চরম দারিদ্র্য বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে প্রেসিডেন্টের উচিত সবার সামনে ভালো দৃষ্টান্ত স্থাপন করা।’
বলুয়ার্তের জনপ্রিয়তা বর্তমানে তলানিতে নেমে এসেছে। সাম্প্রতিক এক জরিপ অনুযায়ী, তাঁর সমর্থন মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছে। তাঁর পূর্বসূরি পেদ্রো কাস্তিয়ো কংগ্রেস ভেঙে দেওয়ার চেষ্টা করায় তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয় এবং গ্রেপ্তার করা হয়।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বলুয়ার্তে নানা বিতর্কে জড়িয়ে পড়েন। অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ থেকে শুরু করে সরকারবিরোধী বিক্ষোভে ৫০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানির ঘটনায় তাঁর ভূমিকা নিয়ে তদন্ত হয়েছে। তবে ৬৩ বছর বয়সী এই রাজনীতিক সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
পেরুর দারিদ্র্যের হার এখনো প্রায় ৩০ শতাংশের কাছাকাছি, যা করোনা মহামারির সময় বেড়ে গিয়েছিল। পরবর্তী সময়ে অর্থনীতি কিছুটা ঘুরে দাঁড়ালেও জীবনমানে পরিবর্তন আসেনি বলেই মনে করছেন দক্ষিণ আমেরিকার দেশটির সাধারণ মানুষ।
প্রসঙ্গত, পেরু ২০১৮ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ছয়জন প্রেসিডেন্ট পেয়েছে, যাঁদের মধ্যে তিনজনই এখন কারাগারে। প্রেসিডেন্ট বলুয়ার্তের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ২০২৬ সালের জুলাইয়ে। এর আগে চলতি বছরের এপ্রিলে দেশটিতে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।