গরু পালনের পাশাপাশি জলাশয়ে শ্রমিক হিসেবে মাছ ধরে সংসার চালান আমের আলী (৪৫)। এ উপার্জন দিয়ে সংসার সামলে এক ছেলেকে শহরে রেখে পড়াচ্ছেন। তবে তাঁর গোয়ালঘরে আগুন লেগে ৪টি গরু দগ্ধ হয়ে মারা গেছে। পবিত্র ঈদুল আজহার আগে এমন দুর্ঘটনায় সংসার ও ছেলের পড়াশোনার চালিয়ে যাওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

আজ বুধবার ভোরে রাজশাহীর বাগমারার নরদাশ ইউনিয়নের চণ্ডীপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। কয়েলের আগুন থেকে এর সূত্রপাত হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাড়ির পাশে টিনের বেড়া দিয়ে গোয়ালঘর তৈরি করে সেখানে গরু রাখতেন আমের আলী। আজ ভোরে গোয়াল ঘরে আগুন লাগার বিষয়টি টের পান পরিবারের সদস্যরা। পরে তাঁদের চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এলে দেখতে পান, আমের আলীর চারটি গরু মারা গেছে।

স্বজনদের ভাষ্য, মশার উপদ্রব থেকে রক্ষায় গোয়ালঘরে কয়েল জ্বালিয়ে মশা তাড়ানো হয়। সেখান থেকে কোনোভাবে গোয়ালঘরে আগুন ছড়িয়ে যেতে পাড়তে পারে।

কোরবানির ঈদের আগে নিজেদের ৪টি গরু হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন আমের আলী ও তাঁর স্ত্রী। আমের আলী কাঁদতে কাঁদতে বলেন, ‘আমি আমার ছেলেকে কীভাবে পড়াব? সব শেষ হইয়্যা গেল।’

এ ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য রফিকুল ইসলাম বলেন, আমের আলী ঈদে বিক্রির জন্য গরু চারটি রেখেছিলেন। এর আগেই আগুনে সব শেষ হয়ে গেল।

বাগমারা ফায়ার স্টেশনের লিডার ইব্রাহিম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের বিষয়টি জানানো হয়নি। আজ সকালে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিষয়টি জানার পর পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন।

পরিবারটি আবেদন করলে সহযোগিতার চেষ্টা করা হবে বলে জানান বাগমারা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা তরিকুল ইসলাম।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ য় লঘর

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ