ময়মনসিংহে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ, সব হারিয়েছে ব্যবসায়ীরা
Published: 14th, May 2025 GMT
ময়মনসিংহে রেলওয়ের জায়গায় অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। বুধবার (১৪ মে) সকাল থেকে শুরু হওয়া উচ্ছেদ অভিযান চলে দুপুর পর্যন্ত। অভিযানে দোকান ও মালামাল হারিয়ে নির্বাক ব্যবসায়ীরা।
রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, তাদের জায়গায় গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের পর তারা সিদ্ধান্ত নেবে, সেই জায়গা ব্যবসায়ীদের পুনরায় লিজ দেয়া যায় কি-না।
পূর্ব নির্ধারিত উচ্ছেদ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বুধবার (১৪ মে) সকালে ময়মনসিংহ নগরের সানকিপাড়া বাজারের রেলওয়ের দুইপাশে দীর্ঘদিন ধরে গড়ে তোলা অবৈধ স্থাপনায় উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। উচ্ছেদ অভিযানে তাদের সহযোগিতা করে সেনাবাহিনী, পুলিশ এবং রেলওয়ে থানা পুলিশ। জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা উপ-সচিব নাসির উদ্দিন মাহমুদের নেতৃত্বে উচ্ছেদ অভিযান চলে।
আরো পড়ুন:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ১১ ঘণ্টা পর ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক
সেলফি তুলতে গিয়ে ট্রেনের ধাক্কায় নবদম্পতি নিহত
এই উচ্ছেদ অভিযানে সিটি করপোরেশন থেকে জমি লিজ নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ব্যবসা পরিচালনা করে আসা ব্যবসায়ীদের দোকান ও মালামাল হারিয়ে পথে বসার উপক্রম হয়েছে। এমন উচ্ছেদ অভিযানে ব্যবসায়ীদের পথে বসার উপক্রম হওয়ায় সাধারণ মানুষ ক্ষোভ জানিয়েছেন। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছেদ অভিযান হবে তা জানলেও গুরুত্ব না দেয়ায় মালামাল সরাননি ব্যবসায়ীরা। যার কারণে সবকিছুই গুঁড়িয়ে দেয়া হয়েছে।
ভাঙারি ব্যবসায়ী মামুন মিয়া বলেন, ‘’২০-৩০ বছর ধরে এখানে ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছি। নিয়মিত খাজনাও দিয়ে আসছি। কিন্তু আজকে জানতে পারলাম, তা রেলের জায়গা। জায়গাটি নিজের মনে করে মালামাল সরায়নি। তাই ভেকু দিয়ে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। কোনো প্রতিবাদও করতে পারিনি। শুধু চেয়ে চেয়ে দেখেছি।’’
ডিম ব্যবসায়ী মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘‘প্রায় সময় শুনে থাকি অভিযান হবে কিন্তু হয়নি। আজ এত বড় পরিসরে অভিযান হবে ভাবতেও পারিনি। ব্যবসা করে সংসারটা কোনোরকম চালাতে পারলেও এখন কী করব, ভেবে পাচ্ছি না।’’
রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা উপ-সচিব নাসির উদ্দিন মাহমুদ বলেন, ‘‘রেলের জায়গা একটি প্রভাবশালী মহল যুগ যুগ ধরে তাদের দখলে নিয়ে সাধারণ ব্যবসায়ীদের কাছে লিজ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুস সচেতন না হয়ে রেলের জায়গা সিটি করপোরেশন থেকে লিজ নিয়েছে, এতে তাদেরও দায় রয়েছে। আমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ নিয়ে এই জায়গায় অভিযান পরিচালনা করছি। দেশের সকল জায়গায় আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে। জায়গাটি প্রথমে খালি করে পরে সিদ্ধান্ত হবে সেটি ব্যবসায়ীদের কাছে লিজ দেয়া যায় কি-না।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘রেললাইনের দুইপাশে অভিযান পরিচালনা করা হবে। এরমধ্যে যত স্থাপনা আছে সবকিছুই গুঁড়িয়ে দেয়া হবে।’’
ঢাকা/মিলন/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ল স ট শন ব যবস য় দ র র লওয় র
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহে গারো স্কুলছাত্রী ধর্ষণের অভিযোগে মামলা, একজন গ্রেপ্তার
ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে গারো স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত ব্যক্তির এক সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল রাত ১০টার দিকে জুগলি ইউনিয়নের নয়াপাগা গ্রাম থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার ব্যক্তির নাম মিলন মিয়া (২১)। তিনি একই এলাকার বাসিন্দা ও পেশায় অটোরিকশাচালক। এর আগে গতকাল রাতেই মূল অভিযুক্ত আবুল বাশার (২৫) ও তাঁর সহযোগী মিলন মিয়াকে আসামি করে হালুয়াঘাট থানায় মামলা করেন ওই ছাত্রীর মা। তবে মামলার প্রধান আসামিকে আজ সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার করা যায়নি।
আরও পড়ুনহালুয়াঘাটে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগ১৫ ঘণ্টা আগেপুলিশ, স্থানীয় বাসিন্দা ওই কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, ওই কিশোরী (১৫) নবম শ্রেণিতে পড়ে। গত সোমবার দুপুরে মিলন মিয়ার (২১) সঙ্গে সে একটি পার্কে বেড়াতে যায়। বিকেলের দিকে সেখান থেকে বাড়ি পৌঁছে দিতে কিশোরীটিকে বাশারের অটোরিকশায় তুলে দেন মিলন। এ সময় বাশার হালুয়াঘাট উপজেলা শহরে পূজামণ্ডপ দেখানোর কথা বলে মেয়েটিকে নিয়ে ঘুরতে থাকেন। একপর্যায়ে একটি নির্জন স্থানে নিয়ে স্কুলছাত্রীটিকে ধর্ষণ করেন। এরপর রাত ১১টার দিকে গামারীতলা এলাকায় তাকে নামিয়ে দিয়ে অটোরিকশাচালক চলে যান। পরে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাকে বাড়িতে নিয়ে যান।
খবর পেয়ে পুলিশ গতকাল রাতেই আবুল বাশারের (২৫) বাড়িতে অভিযান চালায়। তবে তাঁকে পাওয়া যায়নি। ওই সময় অটোরিকশাটি জব্দ করে থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।
হালুয়াঘাট থাকার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুল ইসলাম বলেন, ‘প্রধান অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারে আমাদের চেষ্টা চলছে। তাঁর সহযোগী মিলনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মিলন জানিয়াছেন, মেয়েটি তাঁর বন্ধু।’
এদিকে হালুয়াঘাটে গারো ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশের ডাক দিয়েছে ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী ছাত্র ও যুব সংগঠনগুলো। আজ বেলা তিনটায় ঢাকা শাহবাগের জাতীয় জাদুঘরের সামনে এ কর্মসূচি আয়োজন করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) কেন্দ্রীয় সদস্য সাবেক যুগ্ম মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) অলিক মৃ।
আজ বুধবার সকালে নিজের ফেসবুকে পেজে পোস্ট দিয়ে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ওই ঘটনার নিন্দা ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, মেয়েটি জীবনের সবচেয়ে বড় ক্ষতি ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন। মেয়েটির মা বিএনপি পরিবারের সদস্য ও গত ৩ সেপ্টেম্বর বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর মিছিলেও অন্য গারো নারীদের সঙ্গে অংশ নিয়েছেন। অবশ্যই এই ধর্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হতে হবে।