লক্ষ্মীপুরে আল-মঈন ইসলামী একাডেমিতে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইনকে (৮) হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, অধ্যক্ষ বশির আহমেদ ও ফয়সাল নামে তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পরে আটক মাহমুদকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার (১৪ মে) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।

জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় মাদ্রাসা থেকে সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এর আগে, দুপুরে সানিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।

নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের ব্যবসায়ী হুমায়ন কবির মাতব্বরের ছেলে ও মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে ২০ পারা কোরআনে হাফেজ ছিল। ঘটনার রাতেই সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে সদর থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচজনের নামে মামলা করেন।

আরো পড়ুন:

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্য হত্যা: তথ্য চেয়ে অনুরোধ তদন্ত কমিটির 

সাম্য হত্যা: গ্রেপ্তার তামিমের বাড়িতে আগুন

পরিবারের অভিযোগ, তিন-চার দিন আগে পরিবারকে জানানো হয়, সানিম হুজুরের কথা শোনে না, এমনকি হুজুরের নামে বদনাম করে। এ নিয়ে হুজুর তার ওপর রেগেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়, সানিম টয়লেটে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তবে, স্বজনেরা এসে তার মরদেহ টয়লেটে পায়নি। তার মরদেহ মাদ্রাসার নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পাওয়া গেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে।

শিক্ষকদের দাবি, সানিম মাদ্রাসা ভবনের তিন তলায় টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা করেছে। পরে শিক্ষকরা তার মরদেহ সেখান থেকে নিচতলায় নামিয়ে একটি কক্ষের বিছানায় রাখেন। তবে, মাদ্রাসা কক্ষের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নামানোর ভিডিও দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে, সানিমকে গামছা নিয়ে টয়লেটে ঢুকতে দেখা গেলেও বাইর হওয়ার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।

সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিচার চাই।’’

ঘটনার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদ বলেন, ‘‘ক্লাস শেষে সবাইকে নামাজ আর খাওয়ার বিরতি দেওয়া হয়। নামাজ পড়ে সবাই খাইতে যায়। কিন্তু, সানিম যাইনি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সে গামছা নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করে। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’’

লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘‘সানিমকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা মামলা করেছেন। ঘটনার পর আটক শিক্ষক মাহমুদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’’

ঢাকা/লিটন/রাজীব

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ত র মরদ হ টয়ল ট ঘটন র

এছাড়াও পড়ুন:

গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষা আজও বাস্তবায়িত হয়নি: সিপিবি

গণ–অভ্যুত্থানের এক বছর পেরিয়ে গেলেও জন–আকাঙ্ক্ষা আজও বাস্তবায়িত হয়নি, বরং স্বাধীনতাবিরোধী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও রাষ্ট্রের চার মূলনীতি লক্ষ্য করে লাগাতার আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ডের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) নেতারা এ কথাগুলো বলেছেন।

শুক্রবার বিকেলে পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে আয়োজিত ওই আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি ও বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. শাহ আলম। এতে সিপিবির কেন্দ্রীয় কমিটির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষ, সম্পাদক আনোয়ার হোসেন রেজা, রাগীব আহসান মুন্না, হাসান তারিক চৌধুরী সোহেল, সদস্য জাহিদ হোসেন খান, ডক্টরস ফর হেলথ অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের সভাপতি অধ্যাপক ডা. শফিকুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ যুব ইউনিয়নের সভাপতি খান আসাদুজ্জামান মাসুম সভায় বক্তব্য দেন।

সভায় নেতারা বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ছিল একটি রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড, যার মধ্য দিয়ে দেশে প্রতিক্রিয়াশীল শক্তির উত্থান ঘটে। তাঁরা অভিযোগ করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর দীর্ঘ সময় রাষ্ট্রক্ষমতায় থাকা দলগুলো, বিশেষ করে আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধুর নীতি থেকে সরে গিয়ে মোশতাক-জিয়া-এরশাদের অনুসৃত পথে হেঁটেছে।

সিপিবির নেতারা বলেন, ‘ক্ষমতায় যাওয়ার ও টিকে থাকার জন্য তারা বারবার স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে আপস করেছে। তারা ভোটাধিকার ও গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির লাগাম না টেনে বরং লুটেরা ধনিক শ্রেণিকে রক্ষা করতে সিন্ডিকেটকে প্রশ্রয় দিয়েছে।’ তাঁরা বলেন, এসব কারণেই ২০২৪ সালের জুলাইয়ে ছাত্র-শ্রমিক-জনতার গণ–অভ্যুত্থানের মাধ্যমে শেখ হাসিনার পতন ঘটে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। তবে দুঃখজনকভাবে এক বছর পার হলেও সেই অভ্যুত্থানের মূল দাবি ও লক্ষ্য পূরণ হয়নি।

আলোচনায় নেতারা আরও বলেন, আজকের বাংলাদেশে প্রয়োজন একটি শক্তিশালী বাম গণতান্ত্রিক বিকল্প শক্তির সমাবেশ। তাঁদের ভাষায়, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নয়, মুক্তিযুদ্ধের ধারায় বাংলাদেশকে ফিরিয়ে আনাই হবে বঙ্গবন্ধুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধা।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ