লক্ষ্মীপুরে মাদ্রাসাছাত্রকে হত্যার অভিযোগে মামলা, শিক্ষক কারাগারে
Published: 14th, May 2025 GMT
লক্ষ্মীপুরে আল-মঈন ইসলামী একাডেমিতে হেফজ বিভাগের ছাত্র সানিম হোসাইনকে (৮) হত্যার অভিযোগে মামলা হয়েছে। এতে মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মাহমুদুর রহমান মাহমুদ, অধ্যক্ষ বশির আহমেদ ও ফয়সাল নামে তিন জনকে আসামি করা হয়েছে। ঘটনার পরে আটক মাহমুদকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার (১৪ মে) দুপুরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
জানা গেছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে জেলা শহরের উত্তর তেমুহনী এলাকায় মাদ্রাসা থেকে সানিমের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠায় পুলিশ। এর আগে, দুপুরে সানিমের রহস্যজনক মৃত্যু হয়।
নিহত সানিম রায়পুর উপজেলার উত্তর চরবংশী ইউনিয়নের চরবংশী গ্রামের ব্যবসায়ী হুমায়ন কবির মাতব্বরের ছেলে ও মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। সে ২০ পারা কোরআনে হাফেজ ছিল। ঘটনার রাতেই সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির বাদী হয়ে সদর থানায় তিন জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পাঁচজনের নামে মামলা করেন।
আরো পড়ুন:
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
সাম্য হত্যা: তথ্য চেয়ে অনুরোধ তদন্ত কমিটির
সাম্য হত্যা: গ্রেপ্তার তামিমের বাড়িতে আগুন
পরিবারের অভিযোগ, তিন-চার দিন আগে পরিবারকে জানানো হয়, সানিম হুজুরের কথা শোনে না, এমনকি হুজুরের নামে বদনাম করে। এ নিয়ে হুজুর তার ওপর রেগেছিলেন। মঙ্গলবার দুপুরে পরিবারকে খবর দেওয়া হয়, সানিম টয়লেটে ঢুকে গলায় ফাঁস দিয়েছে। তবে, স্বজনেরা এসে তার মরদেহ টয়লেটে পায়নি। তার মরদেহ মাদ্রাসার নিচতলার একটি কক্ষে বিছানায় পাওয়া গেছে। তাকে হত্যা করা হয়েছে।
শিক্ষকদের দাবি, সানিম মাদ্রাসা ভবনের তিন তলায় টয়লেটে ঢুকে আত্মহত্যা করেছে। পরে শিক্ষকরা তার মরদেহ সেখান থেকে নিচতলায় নামিয়ে একটি কক্ষের বিছানায় রাখেন। তবে, মাদ্রাসা কক্ষের সিসি ক্যামেরার ফুটেজে নামানোর ভিডিও দেখাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে, সানিমকে গামছা নিয়ে টয়লেটে ঢুকতে দেখা গেলেও বাইর হওয়ার কোনো দৃশ্য দেখা যায়নি।
সানিমের বাবা হুমায়ুন কবির বলেন, ‘‘আমার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আসামিদের বিচার চাই।’’
ঘটনার পর মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বশির আহমেদ বলেন, ‘‘ক্লাস শেষে সবাইকে নামাজ আর খাওয়ার বিরতি দেওয়া হয়। নামাজ পড়ে সবাই খাইতে যায়। কিন্তু, সানিম যাইনি। সিসি ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়, সে গামছা নিয়ে টয়লেটে প্রবেশ করে। সেখান থেকেই তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।’’
লক্ষ্মীপুর সদর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল মোন্নাফ বলেন, ‘‘সানিমকে হত্যার অভিযোগে তার বাবা মামলা করেছেন। ঘটনার পর আটক শিক্ষক মাহমুদকে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন।’’
ঢাকা/লিটন/রাজীব
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর হত য ত র মরদ হ টয়ল ট ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
সাত বছর আগে সাংবাদিক খাসোগি হত্যার পর প্রথম যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছেন সৌদি যুবরাজ
যুক্তরাষ্ট্র সফরে যাচ্ছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। আগামীকাল মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে তিনি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন। বৈঠকের লক্ষ্য তেল ও নিরাপত্তা খাতে দুদেশের বহু দশকের সহযোগিতার সম্পর্ক আরও গভীর করা। একই সঙ্গে বাণিজ্য, প্রযুক্তি এবং সম্ভাব্য পারমাণবিক জ্বালানি খাতে সম্পর্ক আরও বিস্তৃত করা।
২০১৮ সালে ইস্তাম্বুলে সাংবাদিক এবং সৌদি রাজপরিবারের কট্টর সমালোচক জামাল খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পর এটাই যুবরাজ সালমানের প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফর।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের যুবরাজের সঙ্গে বৈঠক করলেন ট্রাম্প১৩ মে ২০২৫সৌদি আরবের গোয়েন্দারা ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসের ভেতর খাসোগিকে হত্যা করেছিলেন বলে অভিযোগ। এ হত্যাকাণ্ড বিশ্বজুড়ে তুমুল আলোড়ন তুলেছিল। অনেকে অভিযোগ করেছিলেন, খাসোগি হত্যাকাণ্ডের পেছনে যুবরাজ সালমানের হাত রয়েছে।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের গোয়েন্দা সংস্থাগুলো এ সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিল, যুবরাজই খাসোগিকে অপহরণ বা হত্যার অনুমোদন দিয়েছিলেন।
যুবরাজ সালমান খাসোগিকে হত্যার নির্দেশ দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেন। তবে তিনি সৌদি আরব সরকারের একজন শীর্ষ কর্মকর্তা হিসেবে এ হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন।
খাসোগি হত্যার পর সাত বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বড় অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্র এবং সবচেয়ে বেশি তেল উত্তোলনকারী দেশ সৌদি আরব নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক নতুন করে এগিয়ে নিতে চাইছে।
আরও পড়ুনসৌদি আরবের সঙ্গে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অস্ত্র বিক্রির চুক্তি’ যুক্তরাষ্ট্রের১৩ মে ২০২৫ট্রাম্প গত মে মাসে সৌদি আরবে তাঁর সফরের সময় দেওয়া ৬০ হাজার কোটি ডলারের সৌদি বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতির সুযোগ কাজে লাগাতে চাইছেন।
মে মাসের ওই সফরে ট্রাম্প সৌদি আরবে মানবাধিকার–সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা স্পষ্টভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলেন। এবারও তিনি একই পথে হাঁটবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
অন্যদিকে যুবরাজ মোহাম্মদ আঞ্চলিক অস্থিরতার মধ্যে নিজ দেশের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চাইছেন। একই সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তি (এআই) এবং বেসামরিক খাতে একটি পারমাণবিক প্রকল্প চুক্তির পথে অগ্রসর হতে চাইছেন।
আরও পড়ুনখাসোগি হত্যা সবচেয়ে জঘন্য ধামাচাপার ঘটনা: ট্রাম্প২৪ অক্টোবর ২০১৮যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব দীর্ঘদিন ধরেই এমন একটি সম্পর্ক বজায় রেখেছে, যেখানে সৌদি আরব যুক্তরাষ্ট্রের কাছে তাদের পছন্দমতো দামে তেল বিক্রি করবে এবং যুক্তরাষ্ট্র সৌদি আরবকে নিরাপত্তা দেবে।
আরও পড়ুনখাসোগিকে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে: সৌদি আরব২৬ অক্টোবর ২০১৮