যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল তাদের পণ্য ভারতে উৎপাদন করুক, তা চান না মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই পণ্যগুলো যেন যুক্তরাষ্ট্রে উৎপাদন করা হয়, সে জন্য প্রতিষ্ঠানটির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

মধ্যপ্রাচ্য সফরের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার কাতার থেকে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যান ট্রাম্প। কাতারে অবস্থানের সময় তিনি বলেন, ‘টিম কুকের (অ্যাপলের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা) সঙ্গে আমার সামান্য সমস্যা হয়েছিল। আমি বলেছিলাম, টিম, আমরা আপনাকে ভালোই সহযোগিতা করেছি। আপনি বছরের পর বছর ধরে চীনে যতগুলো কারখানা বানিয়েছেন, আমরা সেগুলো মেনে নিয়েছি।’

এরপরই টিম কুকের উদ্দেশে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আমরা চাই না আপনি ভারতে (কারখানা) তৈরি করেন। আমরা চাই আপনি সেগুলো এখানে—যুক্তরাষ্ট্রে নির্মাণ করেন। আর তাঁরা যুক্তরাষ্ট্রে তাঁদের উৎপাদন বৃদ্ধি করতে যাচ্ছেন।’

গত এপ্রিলের শুরুর দিকে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর উচ্চ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। পরে সেই শুল্ক ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হলেও পার পায়নি চীন। দেশটির ওপর শুল্ক বাড়িয়ে ১৪৫ শতাংশ করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের ওপর পাল্টা ১২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করে বেইজিংও। এতে বড় শঙ্কার মুখে পড়ে অ্যাপল। কারণ, বেশির ভাগ পণ্য চীনে উৎপাদন করে তারা।

যদিও পাল্টাপাল্টি আরোপ করা এই উচ্চ শুল্ক গত সোমবার ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন। এতে বিশ্ববাণিজ্যে সৃষ্টি হওয়া অস্থিতিশীলতা আরও কমে এসেছে। তবে এ ঘোষণার আগে চলতি মাসের শুরুর দিকে টিম কুক বলেছিলেন, তিনি আশা করছেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিক্রি হওয়া বেশির ভাগ আইফোন উৎপাদনের দেশ হবে ভারত।

ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণা করার আগে গত ফেব্রুয়ারি মাসেই যুক্তরাষ্ট্রে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছিল অ্যাপল। দেশটিতে ২০ হাজার জনকে নিয়োগ দেওয়ার কথাও বলেছিল। সেদিকে ইঙ্গিত করে বৃহস্পতিবার ট্রাম্প বলেন, ‘অ্যাপল এরই মধ্যে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের কথা বলেছে। তবে তাদের উৎপাদন এখানে (যুক্তরাষ্ট্রে) করতে হবে। সেটি চমৎকার হবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অ য পল

এছাড়াও পড়ুন:

নবাববাড়ি থেকে পাতরাইল: নাঈমের রুপালি–যাত্রা

ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহ খানের বংশধর নাঈম। বাবার সঙ্গে যেতেন আহসান মঞ্জিলে। আগেই জাদুঘরে রূপান্তরিত হয়ে গেছে নবাবের বাড়ি। পুরান ঢাকায় যাতায়াত ছিল তাঁর, ছিল না আবাস। নাঈম বেড়ে উঠেছেন শাহবাগে। ছেলেবেলা কেটেছে মগবাজার এলাকায়। তাঁর মা টাঙ্গাইলের করটিয়া জমিদারবাড়ির মেয়ে। বাবা বাড়ি করেছিলেন দেলদুয়ারের পাতরাইলে। সেখানে টাঙ্গাইলের বিখ্যাত সব শাড়ির কারখানা। নানাবাড়ি আর বাবার বাড়িতে ছেলেবেলায় যেতেন নাঈম। তখন থেকেই গ্রামের সঙ্গে তাঁর আত্মার সম্পর্ক। এ সম্পর্কের বয়স ৪০ বছরের বেশি।
১৯৯৪ সালে বাবার মৃত্যুর পর আরও বেশি গ্রামমুখী হয়ে ওঠেন নাঈম। সিনেমা ছাড়ার পর গ্রামই তাঁর ধ্যানজ্ঞান হয়ে ওঠে। তাঁর এখনকার জগৎজুড়ে অনেকটাই পাতরাইল। গ্রামে তাঁর পুকুর আছে। পুকুরে মাছ চাষ করেন। আছে আম, লিচু, কাঁঠাল ইত্যাদি ফলের বাগান। আছে পশুর খামার। কৃষিজমিতে চাষাবাদও করেন। সবকিছুই পুরোপুরি বাণিজ্যিক। আর আছে তাঁতের কারখানা। মাসে সপ্তাহখানেক সেখানেই কাটাতে হয় তাঁকে। জড়িয়ে গেছেন গ্রামের মানুষের সুখ-দুঃখের সঙ্গে।

আরও পড়ুন৩০ বছরের সংসারে একে অন্যের চোখে কেমন নাঈম-শাবনাজ০৫ অক্টোবর ২০২৪

গ্রামের সঙ্গে তাঁর সম্পর্কটা মায়া–মমতায় মিশে অন্য এক রূপ ধারণ করেছে। গ্রামে একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করেছেন। সেখানে প্রতিবছরের জানুয়ারিতে মাসব্যাপী ক্রিকেট প্রতিযোগিতা হয়। সেই আসরে ঢাকা থেকে শিল্পীরা যান। সেলিব্রিটিদের হাজিরায় অন্য মাত্রা লাভ করে গ্রামীণ ক্রিকেট। এই তো কিছুদিন আগে নাঈমের গ্রামের বাড়িতে নানা অঙ্গনের শিল্পীরা গিয়েছিলেন। সে আয়োজনের ছোট ছোট ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরালও হয়।

আরও পড়ুনকেমন আছেন ‘চাঁদনী’,‘চোখে চোখে’ সিনেমার নায়িকা শাবনাজ২৮ আগস্ট ২০২৩

নানা সাংস্কৃতিক-সামাজিক কাজে জড়িয়ে আছেন নাঈম। গ্রামের মানুষের সঙ্গে জীবন বাঁধলেও রাজনীতিতে আসার পরিকল্পনা নেই নাঈমের। কখনো ভাবেনওনি রাজনীতি নিয়ে। সবার ডাকেই সাড়া দেন নাঈম। তবে একটা প্ল্যাটফর্ম দাঁড় করানোর ইচ্ছা ভবিষ্যতে আছে। তাঁর সেবামূলক কাজগুলো যেন ছন্দ না হারায় ভবিষ্যতে, সে জন্য প্রতিষ্ঠান গড়ার ইচ্ছা হৃদয়ে পুষে রেখেছেন। গ্রামের মানুষ শহরের অনেক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ জন্য তাঁদের পাশে দাঁড়ানোর তাগিদ অনুভব করেন নাঈম।
নাঈম জানান, তিনি যাঁদের সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁদের সঙ্গেই যোগাযোগটা ধরে রাখা গেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকে না-ফেরার দেশে চলে গেছেন। মাঝখানে দীর্ঘদিন এফডিসিতে যাওয়া হয়নি ব্যস্ততার কারণে। সম্প্রতি নাঈমকে দেখা গেছে এফডিসিতে। এমনিতে সাংগঠনিক কোনো উৎসব থাকলে যাওয়া হয়। তাঁদের পেলে সিনেমার মানুষেরা খুশিতে নেচে ওঠেন। নাঈম-শাবনাজ অল্পসংখ্যক ছবিতে অভিনয় করেছেন। অথচ এ ছবিগুলোর জনপ্রিয়তা বিপুল। তাঁদের ছবির কথা ঘুরেফিরেই আড্ডা-আলোচনায় আসে। অমন ছবি এখন হচ্ছে না বলে আফসোস শোনা যায় লোকের মুখে। কী সেই রহস্য, যার জন্য ছবিগুলোর আজও এত কদর!

মুখ খোলেন নাঈম, ‘আসলে আমি কোয়ান্টিটি থেকে কোয়ালিটিতে বেশি বিশ্বাস করতাম। বছরে ১০-২০টি ছবি করে তো লাভ হচ্ছে না। আমার যখন একটা ছবি হিট হয়ে যায়, তখন একের পর এক ছবির অফার আসে। প্রচুর ছবি রিফিউজ করেছি। আমি চিন্তা করে দেখেছি, বছরে চার-পাঁচটার বেশি ছবি করা ঠিক হবে না। গণহারে ছবি করে শুধু স্ক্রিনে আমি থাকব, এর কোনো মানে হয় না।

শাবনাজ, দিলীপ কুমার ও নাঈম। ছবি: ফেসবুক থেকে

সম্পর্কিত নিবন্ধ