স্থগিত হওয়া আইপিএল ১৭ মে থেকে শুরু হচ্ছে। তবে বিদেশি তারকা ক্রিকেটারদের অনেকে ফ্র্যাঞ্জাইজি এই টুর্নামেন্টে ফিরে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দিল্লি ক্যাপিটালসের অস্ট্রেলিয়ান পেসার মিশেল স্টার্ক তেমনই একজন।
তিনি দিল্লির ক্যাম্পে যোগ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। দলকে সিদ্ধান্ত জানিয়েও দিয়েছেন। ১১ ম্যাচে দিল্লির হয়ে সর্বাধিক ১৪ উইকেট নিয়েছেন গত মৌসুমে কেকেআরে খেলা এই পেসার। ১১ জুন টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলবে অস্ট্রেলিয়া। ওই কারণ দেখিয়ে মূলত তিনি আইপিএলের বাকি অংশে যোগ দিচ্ছেন না।
তবে নিরাপত্তা শঙ্কার বিষয়ও যে আছে তা বোঝা যায় ফ্রেশার ম্যাকগার্গের আইপিএল খেলতে না আসার সিদ্ধান্তে। তার জায়গায় দিল্লি মুস্তাফিজকে দলে নিয়েছে। তবে বিসিবির কাছে দিল্লি তিন ম্যাচের জন্য ছাড়পত্র চাইলেও তা পাওয়া নিয়ে শঙ্কা আছে।
স্টার্ক, ম্যাকগার্গ আইপিএলের বাকি অংশে না আসলেও অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট দলের অধিনায়ক প্যাট কামিন্স যোগ দিচ্ছেন। আসছেন টেস্ট দলের অন্যতম সদস্য ট্রাভিস হেডও। তারা সানরাইজার্স হায়দরাবাদে খেলবে। যদিও হায়দরাবাদের প্লে অফের আশা শেষ।
যোগ দিচ্ছেন মিশেল মার্শ, জস ইংলিশও। তবে ফ্যাফ ডু প্লেসির অংশগ্রহণ নিয়ে এখনো পরিষ্কার বার্তা পায়নি তার ফ্র্যাঞ্জাইজি। আবার দক্ষিণ আফ্রিকার ত্রিস্টান স্টাবস আইপিএলে আসলেও বেশি ক’জন প্রোটিয়া ক্রিকেটার টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের কারণে না আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
ভারত-পাকিস্তান সংঘাতের কারণে আইপিএল এক সপ্তাহের জন্য স্থগিত করা হয়েছিল। ধর্মশালায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কথা বলে একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত করা হয়। পাকিস্তান পাল্টা হিসেবে ভারতের জম্মু-কাশ্মীরে হামলা করে। যেখান থেকে ধর্মশালা দূরে নয়। একারণেই স্থগিত হয় আইপিএল। রাওয়ালপিন্ডি স্টেডিয়াম সংলগ্ন ফুডকোর্টে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানোয় স্থগিত হয় পিএসএলও। যা ১৭ মে শুরুর ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাতিল করা ৩৭ সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প পুনর্মূল্যায়নের পরামর্শ
অন্তর্বর্তী সরকারের বাতিল করা ৩৭টি সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। প্রাথমিক অনুমোদনের এলওআই বা সম্মতিপত্র ইস্যুকৃত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কোনো কোনোটিতে ইতোমধ্যে ৩০ কোটি ডলারের মতো বিনিয়োগ করা হয়েছে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যাবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ উন্নয়নের চেয়ে এ-সংক্রান্ত সেবা নিশ্চিত করার বিষয়ে সরকারকে মনোযোগ দিতে হবে।
সোমবার রাজধানীর গুলশানের লেকশোর হোটেলে ‘বাংলাদেশের নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে চীনের বিদেশি বিনিয়োগের সাম্প্রতিক চ্যালেঞ্জ : অগ্রগতির পথ’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব পরামর্শ দেন। যৌথভাবে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি) ও বাংলাদেশ-চীন নবায়নযোগ্য জ্বালানি ফোরাম এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
রাজনৈতিক বিবেচনা ও অনিয়মের অভিযোগে বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে অনুমোদন দেওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ৩৭টি প্রকল্পের এলওআই (লেটার অব ইনটেন্ট) অর্থাৎ ইস্যুকৃত প্রাথমিক অনুমতিপত্র বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। ১৪টি দেশের অর্থায়নের এসব প্রকল্পের মধ্যে চীনের চারটি, সিঙ্গাপুরের সাতটি এবং ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের রয়েছে একটি করে। এসব প্রকল্পে ছয় বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগের কথা ছিল। ইতোমধ্যে ৩০ কোটি ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ, চীনের ব্যবসায়ী সংগঠন চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের সভাপতি হান কুন, সিপিডির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির গবেষক আবরার আহমেদ।
প্রবন্ধে বলা হয়, প্রযুক্তিগত মূল্যায়নের পরে প্রস্তাবগুলো নিয়ে বিপিডিবি, মন্ত্রণালয়, সরকারি কেনাকাটা সম্পর্কিত মন্ত্রিপরিষদ কমিটির মাধ্যমে এগোতে হয়। এই বাড়তি ছাড়পত্রের সময়সীমা বিনিয়োগকারীদের অনুৎসাহিত করে। ভারতে এসব বাস্তবায়নে যেখানে তিন-চার মাস সময় লাগে, সেখানে বাংলাদেশে এক বছরের বেশি সময় লেগে যায়। ফলে আর্থিক ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। নানান ধরনের নথি, একাধিক লাইসেন্স সার্টিফিকেট, তথ্যপ্রাপ্তিতে বাধা নবায়নযোগ্য বিনিয়োগের বড় চ্যালেঞ্জ।
বিইআরসির চেয়ারম্যান জালাল আহমেদ বলেন, নতুন নীতিমালা অনুযায়ী ২০৩০ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুতের ২০ শতাংশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে মোট বিদ্যুতের ৩০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। যদি এই খাতের বাধাগুলো দূর করা যায় তাহলে লক্ষ্য পূরণ করা সম্ভব। অন্তর্বর্তী সরকার এলওআই ইস্যুকৃত সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো যে বাতিল করেছে, সেগুলো পুনর্মূল্যায়ন করা উচিত। কারণ ইতোমধ্যে বিনিয়োগকারীরা এখানে ৩০ কোটি ডলারের মতো বিনিয়োগ করেছেন।
খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের বিনিয়োগ আকর্ষণে বিনিয়োগ উন্নয়নের চেয়ে বিনিয়োগ সুবিধা বাড়ানোর দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। এ-সংক্রান্ত সব বাধা দূর করা দরকার। এ সমস্যার সমাধানে বিডাকে এগিয়ে আসতে হবে। বিনিয়োগকারীদের সব সুবিধা নিশ্চিতে বিডা সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারে। একাধিক লাইসেন্স জটিলতা নিরসনে সরকারকে কাজ করতে হবে। না হলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে নেতিবাচক বার্তা যাবে।
চাইনিজ এন্টারপ্রাইজ অ্যাসোসিয়েশন ইন বাংলাদেশের সভাপতি বলেন, নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে এশিয়ায় প্রায় ৫৫ শতাংশ চীনা বিনিয়োগ রয়েছে। বাংলাদেশেও উল্লেখযোগ্য তাদের বিনিয়োগ আছে। ২০৩০ সাল নাগাদ মোট বিদ্যুতের ২০ শতাংশ নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাত থেকে উৎপাদনের যে লক্ষ্য, তা অর্জনে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ পরিবেশ আরও উন্নত করতে হবে।