চব্বিশের জুলাইয়ের অবিস্মরণীয় গণঅভ্যুত্থানের পর বছর ঘুরে আবার এসেছে জুলাই। দীর্ঘ দেড় দশকের বেশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ বিক্ষোভ, প্রতিরোধ ও জনবিস্ফোরণ যাবতীয় রাজনৈতিক সমীকরণ ভেঙে দেয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে ভারত-মার্কিন-চীন ইত্যাদি পরাশক্তির ভূমিকা, আওয়ামী লীগ কর্মীদের যুদ্ধংদেহী হিংস্র আচরণ কিংবা পুলিশ বাহিনীর চূড়ান্ত নৃশংসতা– কোনো কিছুই ছাত্র-জনতার দুর্ভেদ্য প্রতিরোধ থামিয়ে রাখতে পারেনি। খণ্ড খণ্ড মিছিলে প্রতিদিন যুক্ত হতে থাকে ক্ষুব্ধ, অত্যাচারিত মানুষের ঢল। 

৫ জুন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্রন্থাগারের সামনে গুটিকয় শিক্ষার্থীর ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ সরকারি চাকরিতে কোটার বিরুদ্ধে যে সমাবেশ শুরু, তা পরবর্তী এক মাসের মধ্যে আকারে ও প্রত্যয়ে সুবিশাল হয়ে ওঠে। পর্যায়ক্রমে এই আন্দোলন দেশের ওপর চেপে বসা শেখ হাসিনা সরকারের দুঃশাসনের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ শক্তিতে গর্জে ওঠে। স্বৈরাচারী সরকার নিজের দেশের মানুষের বুকেই নির্বিচারে গুলি ছোড়ে, অন্তত দেড় হাজার নিহত হন। চোখ-হাত-পাসহ নানা অঙ্গহানির শিকার হন আরও ২০ হাজার মানুষ। মানুষের মুক্তির আকাঙ্ক্ষা স্বৈরাচারের গুলিতে স্তব্ধ হয় না, এর প্রমাণ মেলে আরেকবার; যত গুলি ছোড়ে পুলিশ, মিছিলে মানুষ তত বাড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশকে পিছু হটতে হয়, মানুষের মিছিল সব কল্পনার সীমা ছাড়িয়ে যেতে থাকে। ৫ আগস্ট মহাপরাক্রমশালী শেখ হাসিনার সরকার তাসের ঘরের মতো লুটিয়ে পড়ে; তিনি সরকারি হেলিকপ্টারে দেশত্যাগ করেন। বিজয়ী মানুষের ঢল পৌঁছে যায় গণভবন, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। 

চব্বিশের জুলাই কি কেবল শেষ পর্যন্ত সরকারবিরোধী বৃহৎ ও সফল আন্দোলনের স্মৃতিবাহী? না, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান প্রবল ক্ষমতাবানের চোখে চোখ রেখে সাধারণ মানুষের কথা বলবার অপ্রতিরোধ্য শক্তির অনন্য উদাহরণ। চীন থেকে দেশে ফিরে ১৪ জুলাই শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে চলমান ছাত্র আন্দোলন প্রসঙ্গে বলেন, ‘চাকরি মুক্তিযোদ্ধার নাতিরা পাবে; নাকি রাজাকারের নাতিরা পাবে!’ দাম্ভিক এই উক্তির ভেতরের তুচ্ছার্থে ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ছাত্রীদের সুদীর্ঘ মিছিল বের হয় মধ্যরাতে। ‘তুমি কে আমি কে? রাজাকার, রাজাকার/ কে বলেছে? কে বলেছে?/ স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।’ সেই প্রথম রক্তচক্ষু শাসককে সরাসরি স্বৈরাচার হিসেবে প্রকাশ্যে উচ্চারণ করে ছাত্রসমাজ। এরপর দ্রুত ঘটনা ঘটতে থাকে। ১৬ জুলাই রংপুরে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্দোলনরত ছাত্র আবু সাঈদের বুকে সরাসরি গুলি করে পুলিশ। সেদিন ৬ ছাত্র নিহত হয় সারাদেশে। আন্দোলন ঘন হয়ে ওঠে। ছাত্রদের মিছিলে যুক্ত হতে থাকে সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। পুলিশ, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগসহ প্রবল ক্ষমতাবান সরকারের সকল অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের ধমক-হুমকি-গুলি কোনো কিছুই আর দমিয়ে রাখতে পারেনি সম্মিলিত ছাত্র-জনতাকে। এক পর্যায়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন তাদের ৯ দফা দাবি পেশ করে, যার প্রথমটি ছিল– নিজের বলা কথার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে শেখ হাসিনাকে।

ক্ষমতাকে এত বড় প্রশ্ন করবে সাধারণ মানুষ? আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের এ প্রসঙ্গে দম্ভভরে বলেন, ‘এত বড় স্পর্ধা তারা পায় কোথায়?’ স্পর্ধা? দেশের প্রধানমন্ত্রী ও সাধারণ নাগরিক যে টেবিলের এপ্রান্তে ওপ্রান্তে বসা দু’জন একই সমতলের মানুষ– এই সাধারণ ধারণাই ক্ষমতার দম্ভে তারা বিস্মৃত হয়েছিল। চব্বিশের গণঅভ্যুত্থান কর্তৃত্ববাদী দম্ভের বিরুদ্ধে জনরায়, গুলি-হেলিকপ্টার-গ্রেপ্তার-ক্রসফায়ার-গুম-খুন-চাকরি খাওয়া ইত্যাদি দমনপীড়নে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখবার বিরুদ্ধে জনতার সুস্পষ্ট অবস্থান। এই অবস্থানের মানে সাহস। এই জনরায়ের মানে গণতন্ত্র, নিজের দেশে সব মানুষের মৌলিক অধিকার সমুন্নত করবার প্রতি জনতার অবিচল আকাঙ্ক্ষা। 

২.


চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের পরপরই যদি অভ্যুত্থানজয়ী ছাত্ররা জুলাই সনদ তৈরি করে তাতে অটল থাকতে সমর্থ হতো, তবে বর্তমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও সংশয় সৃষ্টি হয় না। সম্ভবত আন্দোলনরত ছাত্ররা নিজেরাই জানত না, পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে! অথবা ঘটনার প্রবহমানতা এতই তীব্র ও অবিশ্বাস্য ছিল যে, তাদের পক্ষে আগে থেকে প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব ছিল না। তাই অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরপরই সরকার ১১টি বিষয়ে কমিশন গঠন করে। জাতীয় ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার প্রক্রিয়া শুরু হয়। কমিশনের সুপারিশের কোন বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলো একমত কিংবা ভিন্নমত, তা আলোচনার মাধ্যমে অদ্যাবধি সমাধানের চেষ্টা চলছে। একই সঙ্গে সৃষ্টি হয়েছে অনিশ্চয়তা ও সংশয়। 
জুলাই সনদের আলোচনার মূলে রয়েছে প্রচলিত রাজনৈতিক ক্ষমতাকাঠামো এবং পদ্ধতির মধ্যে অগণতান্ত্রিক ও স্বৈরতন্ত্রের পথ বিস্তৃতকারী বিধিগুলো বাদ দিয়ে জবাবদিহিমূলক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রবর্তন করা। আরও সহজ করে বললে, সরকারের প্রধান ব্যক্তি যেন নিজেকে রাজা মনে না করেন, তার উপায় বের করে কিছু বন্দোবস্ত বিহিত করা। যতই বিধি-বিধান তৈরি হোক, গণতান্ত্রিক পদ্ধতি ক্রিয়াশীল না হলে জবাবদিহি দৃশ্যমান হয় না। সুনির্দিষ্ট সময় অন্তর অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত সংসদে প্রত্যেক দায়িত্বপ্রাপ্তের জবাবদিহি নিশ্চিত করতে পারলে গণতান্ত্রিক যাত্রাপথ অবারিত হয়। আর রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ঐকমত্য তৈরির কূট ক্যাচালে নির্বাচন অনিশ্চিত করে, ঢাকঢাক গুড়গুড়ের নির্বাচনকে অনিশ্চয়তার মধ্যে ফেলে যেনতেনভাবে ক্ষমতা দীর্ঘ করবার বাসনা সাফল্য পেলে; তাতে যে সনদই তৈরি হোক না কেন, জুলাইয়ের শক্তি ও প্রেরণার সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে। অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের পথনকশা সরকার দ্রুত দেবে– এ পর্যায়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই বিষয়ে ন্যূনতম 
ঐক্য তৈরি হলে নির্বাচন-উত্তর সংসদে পরবর্তী ক্ষমতাকাঠামো সংস্কার প্রশ্নে আলোচনা ও সমাধান করা সম্ভব। 

৩.
যদিও প্রত্যাশা আর বাস্তবতার মধ্যে দূরত্ব অনেক, আমরা জানি। একে-তাকে ফ্যাসিস্টের সহযোগী শনাক্ত করে মব সন্ত্রাস থেকে হত্যা, ডাকাতি, অপহরণ, ছিনতাই, ধর্ষণের ঘটনা বেড়েই চলেছে। পুলিশ সদরদপ্তরের তথ্যে বলা হচ্ছে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ১ হাজার ১৩৯টি ডাকাতি ও দস্যুতার মামলা হয়েছে। পাঁচ মাসে হত্যা মামলা হয়েছে ৫৮৭টি, নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা হয়েছে ৯ হাজার ১০০। ৩০ জুন সমকালে ধর্ষণ-সংক্রান্ত প্রকাশিত সংবাদের তালিকা: (ক).  মুরাদনগরে নিপীড়নের শিকার নারীর আকুতি: সম্মান গেছে, এখন দুটি শিশুসন্তান নিয়ে বাঁচতে চাই, (খ) গাইবান্ধায় শিশুকে ধর্ষণ, পিটুনিতে নিহত অভিযুক্ত, (গ) নোয়াখালীর হাতিয়ায় কিশোরীকে পাঁচ মাস আটকে ধর্ষণ, (ঘ) চট্টগ্রামে কিশোরীকে ধর্ষণ, (ঙ) ফেনীর দাগনভূঞায় যৌন হয়রানির অভিযোগে শিক্ষক গ্রেপ্তার। এর মধ্যে কুমিল্লার মুরাদনগরের নারীকে ধর্ষণের পর মারধর করে ভিডিও করে তা ফেসবুকে ছড়িয়ে দিয়েছে কয়েকজন।

সংবাদপত্রের দপ্তর পর্যন্ত যে সংবাদগুলো পৌঁছুতে পেরেছে, সেগুলো পড়েই মনে হয়, দেশ কি আদিম অন্ধকারে ডুবে যাচ্ছে? রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গোষ্ঠীস্বার্থ অপরাধ সংঘটনে প্রধান ভূমিকা রাখে, বর্তমানে আদিম যাবতীয় কর্মকাণ্ড গণঅভ্যুত্থানের অর্জনকে ম্লান করে দেয়। সামাজিক অস্থিরতা ও অপরাধ দমনে সরকারের অকর্মণ্য আচরণ যেমন প্রশ্ন জাগায়, অভীষ্ট রাজনৈতিক লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্যে সরকারের দোদুল্যমানতা একই সঙ্গে উদ্বেগ তৈরি করে। জুলাইয়ের সুস্পষ্ট প্রত্যয় ও সাহসের সঙ্গে সরকারের এই আচরণ বেমানান। একইভাবে সংসদ নির্বাচন প্রশ্নে রাজনৈতিক দলগুলোর পারস্পরিক অনাস্থা গণঅভ্যুত্থানের অসামান্য শক্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।  

মাহবুব আজীজ: উপসম্পাদক, সমকাল ও সাহিত্যিক
mahbub aziz01@mail.com

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: জ ল ই অভ য ত থ ন গণঅভ য ত থ ন র সরক র র ক ষমত ক অন শ চ পর য য় আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

নতুন কুঁড়ির শিশুশিল্পীরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জ

তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম বলেছেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পীরা পরিশ্রমের মাধ্যমে বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জন করবে।”

শনিবার ঢাকার রামপুরায় বাংলাদেশ টেলিভিশনের (বিটিভি) অডিটোরিয়ামে ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু-কিশোরদের অভিনন্দন জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “দেশের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম হিসেবে নতুন কুঁড়ির শিশু শিল্পীদের সংস্কৃতিচর্চা চালিয়ে যেতে হবে। একইসঙ্গে অন্যান্য বিষয়েও শিশু শিল্পীদের প্রতিভা বিকশিত করতে হবে।”

শিশু-কিশোরদের প্রতিভা বিকাশে অভিভাবক ও শিক্ষকদের ভূমিকা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় শিশু শিল্পীরা যে সাফল্য দেখিয়েছে, তার মূলে রয়েছে অভিভাবক ও শিক্ষকদের অবদান।” 

তিনি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিল্পীদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান।

শিশু-কিশোরদের উদ্দেশে উপদেষ্টা বলেন, “তোমরা অনেকেই জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সাক্ষী হয়েছ। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ অনেকেই হয়তো তোমাদের পরিচিত। গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতরা যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখেছিলেন, সেই স্বপ্নের পথে হাঁটার জন্য আমরা এই আয়োজনটা (নতুন কুঁড়ি) করেছি।”

২০ বছর পর নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা শুরুর প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, “গত জুলাই মাসে এই প্রতিযোগিতা চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়। দীর্ঘ প্রক্রিয়া শেষে বিজয়ী শিশুশিল্পীদের পুরস্কার প্রদানের মাধ্যমে এই প্রতিযোগিতা আনুষ্ঠানিকভাবে শেষ হলো।”

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা সফলভাবে আয়োজনের জন্য তিনি বিটিভির মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানান।

মাহফুজ আলম বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার মাধ্যমে একটা আশার সঞ্চার হয়েছে যে, বাংলাদেশের সংস্কৃতি টিকে থাকবে এবং সারা দুনিয়ায় মাথা উঁচু করে দাঁড়াবে।”

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “আগামী সরকারও নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ধারাবাহিকতা বজায় রাখবে।”

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশু শিল্পীরা শিল্প-সাহিত্য অঙ্গনে নেতৃত্ব দেবে। এই শিশু শিল্পীরা বাংলাদেশের শিল্প-সাহিত্যকে অনেক দূর এগিয়ে নিয়ে যাবে।”

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তৃতায় বিটিভির মহাপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম বলেন, “তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টার প্রত্যক্ষ নির্দেশনা ও আন্তরিক পদক্ষেপের কারণে মাত্র দেড় মাসের মধ্যে নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতা সম্পন্ন হয়েছে।”

প্রতিযোগিতায় বিজয়ী শিশুশিল্পীদের নিয়ে বিটিভির পরিকল্পনার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার সব শাখার সেরা দশ জন সরাসরি বিটিভির শিল্পী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে। এছাড়া বিটিভি আয়োজিত ‘শিশুপ্রহর’ অনুষ্ঠানে শুধু নতুন কুঁড়ির সেরা দশের শিল্পীরা অংশগ্রহণ করবে। অনুষ্ঠানটি প্রতি শুক্রবার প্রচারিত হবে।”

বাংলাদেশ টেলিভিশন আয়োজিত পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে ‘নতুন কুঁড়ি ২০২৫’ প্রতিযোগিতায় ‘ক’ ও ‘খ’ বিভাগের প্রতি বিষয়ে ১ম, ২য় ও ৩য় স্থান অর্জনকারী মোট ৭৩ জন শিশুশিল্পী পুরস্কৃত হয়। 

পুরস্কারপ্রাপ্ত শিশুশিল্পীরা হলো
‘ক’ বিভাগ :
অভিনয়ে ১ম আরহাম হাসান আরিয়ান; ২য় রুফাইদা আফরা; ৩য় মুগ্ধতা মল্লিক। আধুনিক গানে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় স্মিতা বাড়ই; ৩য় শেখ রোদসী রায়ান। আবৃত্তিতে ১ম আরিশা দানীন মাহা; ২য় মো. ইছা আল মাহিম; ৩য় নাভীদ হাসান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মোছা. আদৃতা তাসনিম লাবণ্য; ২য় শৌনক কুন্ডু; ৩য় আর্যশ্রী বিশ্বাস পৃথা। কৌতুকে ১ম সাবিক সাদত; ২য় জেরাল্ড বিশ্বাস; ৩য় মাহিরা। গল্প বলায় ১ম রোহিনী হাসান হৃদ্ধি; ২য় আয়েশা সিদ্দিকা; ৩য় নুসরাত তাসনিম। দেশাত্মবোধক গানে ১ম অংকিতা সরকার; ২য় মো. ইহানুর রহমান; ৩য় তোজো মণ্ডল। নজরুল সংগীতে ১ম অরিত্রা বসাক; ২য় শ্রেয়া রায়; ৩য় অংকিতা সরকার। রবীন্দ্রসংগীতে ১ম প্রিয়সী চক্রবর্তী; ২য় আরিশা দানীন মাহা; ৩য় শুভশ্রী সরকার। লোকসংগীতে ১ম চিশতি রহমতুল্লাহ সাফীন মন্ডল; ২য় আইয়ান রেজা; ৩য় মো. ইহানুর রহমান। সাধারণ নৃত্যে ১ম ঐশ্বর্য্য জিতা স্পর্শ; ২য় নাজিফা হোসেন (স্বাধিকা); ৩য় দীপশিখা দে। হামদ-নাতে ১ম সুরাইয়া আক্তার; ২য় তাসবিহা আয়ান তানহা; ৩য় শুহাদা।

খ বিভাগ:
অভিনয়ে ১ম হুমায়রা আসিফা; ২য় মাহিমা জামান কথা; ৩য় মুরাদুস সালিহীন। আধুনিক গানে ১ম রোদসী নূর সিদ্দিকী; ২য় তুষ্মি দাস; ৩য় শ্রীতমা রায়। আবৃত্তিতে ১ম সাবিলা সুলতান বাণী; ২য় আফিয়া সাইয়ারা ত্বাহা; ৩য় নাহিনা বিনতে জামান। উচ্চাঙ্গ নৃত্যে ১ম মৃনময়া পাল ও তুলি মল্লিক (যৌথভাবে); ২য় তনুশ্রী মন্ডল; ৩য় কায়নাত বিনতে মোর্শেদ রাই। কৌতুকে ১ম দিশান রায় দুর্জয়; ২য় এহসানুল হক; ৩য় তাসফিয়া মুনতাহা। গল্প বলায় ১ম ফাইরুজ বারী মালিহা; ২য় সমহৃদ্ধি সূচনা স্বর্গ; ৩য় মাহিমা জামান কথা। দেশাত্মবোধক গানে ১ম শ্রেয়া সাহা; ২য় শ্রদ্ধা কর্মকার; ৩য় অন্বেষা বর্মন।

নজরুল সংগীতে ১ম আজমাইন আরহাম; ২য় শুভমিতা তালুকদার; ৩য় অন্বেষা বর্মন। রবীন্দ্র সংগীতে ১ম শুভমিতা তালুকদার; ২য় শ্রীতমা রায়; ৩য় অন্বেষা বর্মন। লোক সংগীতে ১ম কুমারী রিয়া ব্যাধ; ২য় মো. বাইজিদ আহমেদ; ৩য় তানিশা ইসলাম হিয়া। সাধারণ নৃত্যে ১ম রাওজা করিম রোজা; ২য় রাধিকা তাছাল্লুম রিয়ন্তি; ৩য় ইউশা শাহিরা আনুভা। হামদ-নাতে ১ম আহনাফ আদিল; ২য় তাসনিম জাহান; ৩য় রোদসী নূর সিদ্দিকী।

অনুষ্ঠানে ১ম স্থান অর্জনকারীকে ২ লাখ টাকা, ২য় স্থান অর্জনকারীকে ১ লাখ টাকা এবং ৩য় স্থান অর্জনকারীকে ৫০ হাজার টাকার চেকসহ ট্রফি ও সনদ প্রদান করা হয়।

নতুন কুঁড়ি প্রতিযোগিতার ‘ক’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন প্রিয়সী চক্রবর্তী এবং ‘খ’ বিভাগের চ্যাম্পিয়ন শুভমিতা তালুকদার গত ১৩ নভেম্বর প্রধান উপদেষ্টার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকার চেক ও ট্রফি গ্রহণ করে।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রায় শুনতে ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আহত যোদ্ধারা 
  • ঢাকায় বড় পর্দায় দেখা যাবে শেখ হাসিনার মামলার রায়
  • শেখ হাসিনার মামলার রায়: ন্যায়বিচার ও স্বচ্ছতার দাবি ফখরুলের
  • বেওয়ারিশ জুলাই শহীদদের শনাক্তে আসছে বিদেশি ফরেনসিক টিম
  • নতুন কুঁড়ির শিশুশিল্পীরা বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে খ্যাতি অর্জ